জ্বলদর্চি

বার্লিনের ডায়েরি —১৭ পর্ব /চিত্রা ভট্টাচার্য্য

ড্রেসড্রেন

বার্লিনের ডায়েরি 
১৭ পর্ব
চিত্রা ভট্টাচার্য্য

চলেছি ড্রেসড্রেন শহরে

পাহাড়ের নিরিবিলিতে প্রকৃতির উদারতায় শান্ত স্নিগ্ধ এলবের তীরে সুন্দর শহর ড্রেসড্রেন। আরো  কিছুটা ঢালু এগিয়ে নীচের দিকে নামলে নদী পাহাড়ের পা ছুঁয়েছে।সেখানে  পাহাড় নদীর অপরূপ মিলন সঙ্গম  --  বেশ লাগবে তোমার,সেখানে যাবো ।মল্লিকার নিমন্ত্রন পেয়েছি। --সকাল বেলার ব্রেকফাস্ট টেবিলে কফির মগ হাতে নিয়ে অদ্রিজা বলে ঠিক দুদিনের জন্য ব্যাগ প্যাক রেডি রেখো ,আগামীকাল আমরা ড্রেসড্রেন যাচ্ছি। অদ্রিজা কব্জি উল্টে ঘড়ি দেখে। কফির কাপে শেষ চুমুক দিয়ে কথা শেষ হয় না ,দৌড়য় বাসস্ট্যান্ডে । ম্যাক্সপ্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট পৌঁছতে ১৫ মিনিট লাগবে। সকল কাজের মাঝে শ্রী সারাদিন ভারী উত্তেজিত। ড্রেসড্রেন! ইতিহাস খ্যাত সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত শহর। চারতলার ওপর ঘরের সংলগ্ন খোলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে তিতিরের অপেক্ষায়। অনেকক্ষণ অন্ধকার হয়ে গেছে। এখনো সে ল্যাব থেকে ফেরেনি।   

, ঐ মহাশূন্যে জোৎস্না ভেজা রাতের আকাশে দিশেহারা চাঁদ হাঁপিয়ে উঠেছে।  মেঘদূতেদের কঠোর প্রহরাতে যক্ষপুরীর মেঘের কারাগারে বন্দিনী অসহায় কিশোরী। আকাশে রূপালী থালার মত চকচকে  চাঁদ কোথাও নেই,কিন্তু কালচে নীল মেঘের আবরণ ছিন্ন করে ভরা পূর্ণিমার জোয়ারের আলো। মেঘের সাধ্য কি তার গতি রোধ করার ? এই ছোট্ট ব্যালকনিতে ও তীব্র চাঁদের আলো হুমড়ি খেয়ে আছড়ে পড়েছে।  দূরের বরফে বোঝাই পাহাড় শীর্ষ মেঘাবৃত চাঁদের আলোয় সদ্য বিধবার সাদা ধবধবে থান গায়ে জড়িয়ে নির্বিকারে স্তদ্ধ পাষাণীর মত বসে আছে। ও ঋষভ কে ডাকে , কেমন করে একদম ভুলে গেলাম  আজ অঘ্রানের পূর্ণিমায় রাধাগোবিন্দের রাসযাত্রা ''। কলকাতার বাড়িতে রাশ উৎসব চলছে। এতো যোজন দূরেও রাতের আকাশে চন্দ্রলোকের ছায়ায়  ' অনিন্দ্য সুন্দর প্রকৃতির প্রকাশ মনে করিয়ে দিল আজ রাস পূর্ণিমা। .....              
ড্রেসড্রেন শহর

সারাটি দিন সূর্য্যদেব প্রায় আলস্যে কুয়াশার কম্বলে নিজেকে ঢেকে রেখে দিন যাপন করায় গোমড়া মুখো,অভিমানিনী আকাশ মেঘমেদুর। এই সান্ধ্য রাতের আলোর বন্যায় মুগ্ধ শ্রীময়ীর কথা শেষ না হতেই  --ল্যান্ডলাইনে  ফোন বেজে ওঠে --  জোৎস্নালোকিত কাব্যময়  আকাশকে  ব্যালকনিতে নিশব্দে ফেলে রেখে শ্রী ঘরে ফায়ার প্লেসের পাশে ফোন নিয়ে বসে পড়ে।  ও প্রান্তে একরাশ হাসি নিয়ে সিলিয়া ---কুশল আদান প্রদানের পর বলে পরশু দুসপ্তাহের জন্য ফ্রান্সে যাচ্ছি । তোমরা আসবে ফ্রান্সে ? শ্রী বলে দারুণ খবর সিলিয়া। কিন্তু  যতদূর জানি তিতির আগের থেকে বেড়ানোর প্রোগ্রাম  ওর সুবিধা মত করে রেখেছে। এই  উইকেন্ডে মানে কালকেই ড্রেসড্রেন যাবার প্ল্যান । ওর লম্বা ছুটিও নেই। তোমার সাথে ফ্রান্স হলো না। অনেক দিনপর সিলিয়ার সাথে বেশ কিছুটা সময় ওদের নানান হাসি ঠাট্টায় আড্ডা জমে উঠলো ।  

 তিতির সপ্তাহের ছুটির দিন গুলো তে নিজের সুবিধা মত অনেক আগের থেকেই শ্রী ও ঋষভ কে নিয়ে বার্লিনের ও তার কাছের ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ শহর নগর ঘোরার জন্য যাবতীয় টিকিটের ব্যবস্থা এবং হোটেল বুকিং ইত্যাদি  নিখুঁত ভাবে সেরে রেখেছিল। ওর ব্যবস্থাপনা দেখে শ্রী ঋষভ দুজনেই হতবাক ,এইতো সেদিনের তিতির ,আজ কত বড়ো হয়ে গিয়েছে।  রাতের আলো আঁধারি পেরিয়ে আবার এক নতুন সকাল এলো। কোনো বাঁধন না মেনে এতো উঁচুতে হলুদ মেঘেরা বিনা দ্বিধায় রবাহূতের মত দরজায় কড়াঘাত করে একেবারে ভিতরে ঢুকতে চায়। নরম আলোর মায়াবী পরশে সুদূরের পিয়াসী মন পথের ডাকে মেতে ওঠে। সপ্তাহ শেষের ছুটির দিনটি এলেই বেড়ানোর খেয়াল পোকারা অদ্রিজা সাথে শ্রীময়ীর মাথায় ও সমান গুঞ্জন তোলে। 

🍂

 যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিন জনের নিত্য প্রয়োজনীয় ট্যুরিস্ট ব্যাগে লাঞ্চ বক্সের সাথে টুকটাক খাবারের প্যাকেট গুছিয়ে নিয়ে শ্রী প্রাসাদোপম বাড়িটির চারতলার বিশাল চওড়া সিঁড়ি পর্ব নিমেষে শেষ করে তেমনই পিতলের ঝকঝকে ভারী হ্যান্ডেলওয়ালা গেট টেনে পার হয়ে একেবারে রাস্তায়। তিতির ও ঋষভ অন্য কাজে আগেই বেরিয়ে যাওয়ায় ওদের নির্দেশ মত সকাল ৯ টার মধ্যে খুব কাছেই ইউরোপা সেন্টারে পর্যটন অফিসের ট্রেন স্টেশনে চলতে শুরু করে। ওর সোয়েটার কোট শাল মাফলার নিয়ে জবরজং অবস্থা তবুও ,মনে অপার খুশি ,অলিভ পাতার মিষ্টি গন্ধ বুক ভরে নিয়ে ম্যাপেল গাছে ঘেরা চেনা পথ টিতে শুকনো পাতা মর্মরিয়ে একাকী হাঁটতে ভালো লাগার অন্ত নেই।                                                                                            বার্লিন উ -বান বা উন্টার বান এবং বার্লিন এস-বান এই শহরটির জনসাধারণের পরিবহন ব্যবস্থার অন্যতম প্রাণ কেন্দ্র। এই উ -বান ,এস -বান রেল সিষ্টেমটি পাঁচ সাত মিনিটের ব্যবধানে নির্ধারিত সময় সরণি মেনে অতি সুলভে খুব দ্রূত ,জার্মানির একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাতায়াত করে। অপামর জনগণের যাত্রা প্রকল্পের উন্নতির জন্য দেশের সর্বত্র চক্রাকারে ছড়িয়ে থেকে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ  যান বাহনের ভূমিকা পালন করতে এই রেল সড়ক হয়ে উঠেছে প্রতিমুহূর্তের সফরের অতি প্রয়োজনীয় প্রিয় নিত্যসঙ্গী। শহরের মধ্যে ,শহর তলীর বা রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থার সমান গুরুত্বের অধিকারী ও অংশীদার। স্টেশনে পৌঁছতেই সামনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটি টি এক ঝাকুনি দিয়ে  ছুটতে শুরু করলো।ঋষভ সানগ্লাস টা মুছে আবার চোখে পড়ে বলে যা একটুর জন্য মিস হয়ে গেল। 
চলার পথে

 ট্রেন আসতে আবার সাত মিনিট । প্লাটফর্মে পায়চারি করার সময় ভেন্ডিং মেশিন টা শ্রীর নজর কেড়ে নেওয়ায় তিতির শেখায় কেমন করে ডেলি টিকিট ও মন্থলী টিকিট ইচ্ছেমত কিনে নেওয়ার পদ্ধতি।যার ফলে ট্রেনে করে শহর বা শহর ছাড়িয়ে রাজ্যের নির্দিষ্ট সীমানা পর্যন্ত যাতায়াতে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। এবং লাল বা হলুদ মেশিনে টিকিট টির ব্যবহার করার আগে যাচাই করে নেবার ও ব্যবস্থা রয়েছে ।   তিতিরের অনলাইনে আগের থেকেই  টিকিট কেনা তাই শ্রীর  টিকিট কাটার শখ পূর্ণ হয় না।  ওর মনে হয় ,আমাদের দেশে ও প্রতিটি স্টেশনে  এমন স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন  চালু হলে বেশ হয়। স্টেশন গুলোর টিকিট কাউন্টারে এত ভীড় থাকে ,টিকিট কাটতে না কাটতেই কত ট্রেন নাকের ডগার ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। তখন যে কী বিরক্ত লাগে !  ওর মনে তখন কিশোরীর অনুসন্ধিৎসা।স্টেশন টি ঘুরে ঘুরে দেখে , বাপরে ! কত ট্রেন লাইন চক্রাকারে এদিক ওদিক ঘুরে কোথায় লম্বা দৌড় লাগিয়েছে। কি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নিখুঁত ভাবে সাজানো ষ্টেশন ও প্লাটফর্ম  চত্বর । খুব কড়া আইন শৃঙ্খলার নিয়মে অধ্যুষিত। ষ্টেশনের ইনফরমেশন ডেস্ক থেকে রেলওয়ের সব তথ্য জানা যায়। একটু বাদেই ট্রেন এলো ফাঁকা ট্রেনের জানলার ধারে সিটে বসতেই ট্রেনটি হুইসিল বাজিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটলো। 

শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামড়ায় ঠান্ডা নেই। আধুনিক জীবনের সব রকম সুবিধা টাইম পাসের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সংবাদ পত্র থেকে শুরু করে  ল্যাপটপ মোবাইলে চার্জ দেবার ব্যাবস্থা এই দ্রূত গামী লোকাল ট্রেন গুলোতে ও রয়েছে। ট্রেন ছুটছে রাইন নদী পেরিয়ে , লাইনের দু ধারে ফার্ন গাছের ঝোপ ,ছোট নীল হলদে বেগুনী বুনো ফুলের লতাপাতা ,সারি বদ্ধ পাইন ফারের জঙ্গলের পাস দিয়ে শহর নগর গ্রামগঞ্জ দোকান পাট পিছনে ফেলে। পাহাড়ের পেট কেটে সুড়ঙ্গ পথ পার হয়ে মাঝে মাঝে মাটির ওপরে পাতা লাইনে বন্য সৌন্দর্যে ভরা পথের পাশ দিয়ে নিজস্ব গতিতে সে ছুটছে । আদিগন্ত বিস্তৃত নীলাম্বরী আকাশের "অমল ধবল পালে " দোলা লাগিয়ে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে হালকা সাদা মেঘের ভেলা ভাসে। সবুজে সবুজ ঢিবির মত ছোট্ট পাহাড় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে তারই স্নেহচ্ছায়ায়।কোথাও  পাহাড়ি ঝর্ণা  কোথাও বা জঙ্গল দুই ধারে ফসলের ক্ষেত ফুলের বাগান , উদাসী  পাইন, ওক.বার্চ সুদীর্ঘ ইউক্যালিপ্টাস গাছের সারি। কখনো বা দিগন্ত বিস্তৃত ভুট্টার ক্ষেত ঝোড়ো হাওয়ার মত পার হয়ে ,কখনো সুড়ঙ্গের অন্ধকারের ভিতর দিয়ে হুস করে জনপদে দেখা দিয়ে পাহাড়ের গায়ের পাস্ দিয়ে অবিরাম চলেছে। শ্ৰীময়ীর মনে হয় এই গাড়ির বুঝি কোথাও থামার ইচ্ছে নেই ।
বার্লিনের লোকাল ট্রেন

 আপাততঃ ফাঁকা ট্রেনের কামরা। কখোনো স্টপেজ এলে মিনিট খানেক মত থামে , শ্রী বিস্ময়ে ভরা জিজ্ঞাসা নিয়ে গতির সাথে মন কে ও ছুটিয়ে চলেছে । ট্রেনের বয়স্ক সহ যাত্রীরা বৃদ্ধ ,বৃদ্ধার দল কত শান্ত উদ্বেগ হীন ,প্রাণে তাদের আনন্দ ধারা বইছে। সবাই চুপচাপ ,খুব মৃদু লয়ে কথা  বলছে।  লালচে বা সোনালী চুল নীল বা  বাদামী চোখের তারা ,কুঞ্চিত গোলাপী ফর্সা ত্বকের মুখে সাজানো সাদা দাঁতের সারল্যের হাসি। সেখানে আভিজাত্যের অহংকার থাকলেও  ক্লান্তি নেই। বার্ধক্য, জরা ব্যাধি এসে অকালে গ্রাস করেনি ওদের মননে ,চেহারায়। পাশে বসা এক জার্মানি ৮৩ বছরের বৃদ্ধা মিসেস জেসিকা পরিবেশ বিদের সাথে শ্রীর আলাপ জমে ওঠে । উনি চলেছেন ড্রেসডেনের ইউনিভার্সিটিতে বর্তমান আবহাওয়া ও পরিবেশ সংক্রান্ত সেমিনারে যোগ দিতে। এত বয়সে ও অটুট শরীর স্বাস্থ্য , শ্রীর অবাক লাগে ভাবে আমার দেশের মানুষ গুলো এই বয়সে জীবনী শক্তি হারিয়ে ফেলে ,ছাদের কড়ি বর্গার দিকে তাকিয়ে হরিনাম জপ করে । 

অদ্রিজা ঋষভের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে এই রাজ্যের মানুষ জন মোটেই সুবিধের নয় বাবা, একটুও মিশুকে নয় ,বেশ অহংকারী , ব্যাজার মুখের ,বাংলার পাঁচের মত। মুখে হাসি নেই,ভারী উন্নাসিক। নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে । কিন্তু মা ,দেখ  কেমন ভাব জমিয়েছে ? ঋষভ ,অদ্রিজাকে বোঝায় সব্বাই সমান নয় ,তবুও ব্যতিক্রম তো আছে। ঐ যেমন সিলিয়া আন্টি ,ফ্লোরা ,তোমার ক্লাস মেট ওর্লি। অদ্রিজা বলে ,আসলে ওরা অন্যরকম তোমাদের অনেক দিনের পরিচিত পারিবারিক বন্ধু যে।                                              
 ম্যাডাম জেসিকা খুব নিম্ন স্বরেই শ্রীময়ীর মত নির্বাক আগ্রহী শ্রোতা পেয়ে পরিবেশের স্বচ্ছতার লম্বা বিবরণ দিয়ে চলেছেন ।যেন সেমিনারে ওর গুরুত্ব পূর্ণ টক শুরু হয়ে গিয়েছে ,শ্রোতারা মুগ্ধ বিস্ময়ে আবিষ্ট।  তিনি বোঝাতে চাইছেন জাতি হিসাবে জার্মানীরা কত উন্নত। এবং কত পরিবেশ সচেতন। বিশ্ব পরিবেশের তালিকায় বিভিন্ন দিক দিয়ে ,কেমন করে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। ওদের প্রতিটি জন সাধারন বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ সচেতন তাই ক্ষতি কর গ্যাসের স্বল্প ছড়ানোর সম্ভবনা এখানে থাকলে ও ,আকাশ বাতাস বিষাক্ত কালো ধোঁয়া দূষণ মুক্ত। জলে স্থলে মুক্ত বায়ু তে তার প্রকাশ। বিস্তর পরিশ্রমের পর ও এদের মুক্ত বিশুদ্ধ পরিবেশে প্রাণ চঞ্চল জীবন বেশ আনন্দ দায়ক। ঋষভ বলে উনি কিন্তু খুব সত্যি কথা বলছেন , নিউজ পেপারে প্রায়ই দেখি , বাস্তবিকই জার্মান সরকার দূষণ প্রতিরোধের মোকাবিলায় প্রতিনিয়ত খুব সচেতন।                                                                                         ট্রেন চলেছে  বার্লিনের থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ড্রেসডেনের দিকে । দূরে কোথায় শহর ছাড়িয়ে প্রায় একঘন্টা বাদে নির্জন এক শান্ত নিরিবিলি গ্রামের প্রান্ত সীমায় এসে ট্রেনটি পৌঁছলে শ্রী হাতের রুট ম্যাপ খুলে বেশ বুঝতে পারে গল্পের তালে গতির আনন্দে চললেও ,  ওরা অনেক এগিয়ে এসেছে  বার্লিনের দক্ষিণ দিকে ড্রেসডেন শহরের পথে। ম্যাডাম জেসিকা বললেন আরো প্রায় প্রায় ৪০মিনিট লাগবে  ড্রেসডেন  শহরে পৌঁছতে । বদ্ধ কামরার কাঁচের জানলায় পাহাড়ি রোদ্দুর উঁকি দিয়ে যায়.সবুজ গাছপালার দল নতুন অতিথি কে হাত নাড়ে ,উদাসী মিঠে বাতাস টোকা দিয়ে বলে ''এসো আমার ঘরে এসো আমার ঘরে। '' এমন  শান্ত নিঝুম পরিবেশে লোকাল ট্রেন জার্নি ; শ্রীর স্মৃতিতে স্মরণীয় হয়ে থাকলো। শহরের উপকণ্ঠের সহজ সারল্যে ভরা মায়াবী রূপ ;কেমন নিবিড় ভাবে ওর মনের জানালায় ধরা দিল। অনেকদিন পর এমন সুন্দর এক ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতার টুকরো টুকরো গল্প গুলো শ্রীময়ীর ডায়েরির পাতায় নিঃসন্দেহে স্মরণীয় হয়ে রইলো।
                                         ক্রমশ:

Post a Comment

0 Comments