জ্বলদর্চি

'কীলক লিপিতে ভূমি ও ভূমা' প্রসঙ্গে গার্গী ভট্টাচার্য

'কীলক লিপিতে ভূমি ও ভূমা' 
প্রসঙ্গে 
গার্গী ভট্টাচার্য 
(ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষিকা) 

এই বইয়ের কিছু কিছু কবিতা পড়তে পড়তে অনুভব  করা যায় সীমা থেকে অসীমে  লেখকের অনায়াস মানসভ্রমণ। তাই তাঁর কবিতায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ড, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র এমনকি  উপমাবিহীন কৃষ্ণগহ্বর এর অনাস্বাদিত জগতে তিনি পাঠক কে নিয়ে যান। স্বনামধন্য সংসারে থাকা নশ্বরতার প্রখর রোদের নীচে দাঁড়িয়ে থেকেও কখনো তিনি পাঠককে নিয়ে যান অন্তহীন আলোয় আলোকিত নক্ষত্রপুঞ্জের জগতে, ঠিক যেমন উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস এর 'সেলিং টু বাইজান্টিয়াম' কবিতায় পার্থিব জগতের রূপ, রস, গন্ধ উপভোগের পরে লেখক যাত্রা করেন বাইজান্টিয়ামের কল্পলোকে।
"An aged man is but a paltry thing,
A tattered coat upon a stick, unless
Soul clap its hands and sing. For every tatter in its mortal dress, Nor is there
Singing school but studying Monuments
Of its own magnificence.And therefore I have sailed the seas and come to the holy city of Byzantium."
সেখানেও কবি বেশ কিছু প্রতীকি শব্দ ও মেটাফরের মাধ্যমে চিরন্তন সত্যকে উপলব্ধি করার বাসনা প্রকাশ করেছেন। তাঁর এই আত্মসমীক্ষা ও আত্মোপলব্ধির কবিতায় ব্যবহৃত শব্দগুলিও বিশেষভাবে অর্থবহ। ঋত্বিক ত্রিপাঠীর কবিতায় বেশ কিছু শব্দ পড়তে পড়তে মনে হয়েছে তাদের অর্থ বহুমাত্রিক। অর্থ কঠিন কিন্তু পাঠশেষে ভাবনার সাথে একটা আবেশ তৈরি হয়। "আমাদের আত্মস্বরূপ চিরকাল দু-হাতে ঢেকে রাখা", সাবলীল আত্মস্বীকার। কিন্তু আত্মোপলব্ধির সময় এলে কবিমানস যেতে চায় বাইজান্টিয়াম, নিজেকে জানতে, আত্মার স্বরূপ জানতে। 'ইচ্ছাপত্র' কবিতায় 'সময় চলে গিয়েছে আশ্চর্য চিতার আগুনে' তবু সময়হীন অন্ধকারে প্রত্যয়ী ইচ্ছাপুরুষ হয়ে কবি লিপিবদ্ধ করেন আত্মাহুতির মোহটান, উচ্ছ্বাস ও অঙ্গীকারের বহুবর্ণ চেতনা।

বাড়িতে বসেই সংগ্রহ করতে পারেন 👇
  কোথাও বা প্রত্যয়ের দৃঢ় উচ্চারণের পাশে প্রতিবাদে সোচ্চার কবি "আগুনে আগুন দিতেই শিখেছি আমরা" অথবা "চেয়েছি বলেই দেশ নইলে একটাই পৃথিবী হয়।"‌ সব কিছুর শেষে দ্বীপের মতো জেগে থাকে স্বপ্ন, আশা। ''কর্ষণ অযোগ্য জেনেও গড়ে ওঠে ভূমি ও ভূমা...।"

বইটি প্রকাশ করেছে- 'সিগনেট'(আনন্দ পাবলিশার্স) 
প্রচ্ছদ : দেবাশিস সাহা
মূল্য- ২৫০/-

🍂

Post a Comment

1 Comments