বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস (৭ই এপ্রিল)
দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস নিয়ে লিখতে গেলে, প্রথমেই বলতে হয় স্বাস্থ্য সম্বন্ধে কিছু কথা।
স্বাস্থ্য বলতে, শুধুমাত্র শরীরের নয়, মনের স্বাস্থ্যকেউ বুঝতে হয়, কারণ শরীর ও মন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, একটি খারাপ হলে, অপরটিও খারাপ হয়ে পড়ে। অর্থাৎ সুস্বাস্থ্য বলতে বোঝায়, সুস্থ শরীর ও মন।
'বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস' হল একটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সচেতনতা দিবস, যা প্রতি বছর ৭ই এপ্রিল ১৯৫০ সাল থেকে পালিত হচ্ছে। এই বছর থেকেই বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশ স্বাস্থ্য দিবস পালন করা শুরু করে।
আজ ৭ই এপ্রিল "বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস"। এই দিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৫০ সালের ৭ই এপ্রিল থেকে বিশ্বজুড়ে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার ও সকলকে সুস্থ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার জন্য এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। এই দিবস টি পালনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, বিশ্বের সকল দেশে সমান স্বাস্থ্য সুবিধা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মানুষকে সচেতন করা, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত মিথগুলি দূর করা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা গুলি বিবেচনা করা ও সেই ধারণাগুলি নিয়ে কাজ করা।এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করাও এই দিবস পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধীনে স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়। এই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য কাজ করে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘের একটি সংস্থা, সরকারি স্বাস্থ্য প্রশাসন, পেশাদার গোষ্ঠী এবং অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতায় স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কাজ করে। দেশের সরকারের অনুরোধে স্বাস্থ্য পরিষেবা শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হয়। মূলত, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সমস্যা সম্পর্কে ব্যক্তিকে সচেতন করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)র নেতৃত্বে সমগ্র বিশ্বে এই দিনটি পালন করা হয়।
🍂
অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসেরও একটা ইতিহাস আছে। ১৯৪৮ সালের ৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য সমস্যায় নজর রাখা ও তার নিবারণ এই সংস্থার মুখ্য উদ্দেশ্য, তবে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৫০ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হচ্ছে। বিশ্বের প্রত্যেকটি নাগরিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি সাধন এই দিনটি পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য,কারণ একমাত্র সচেতনতা প্রসারের মাধ্যমেই নানান রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
প্রতি বছর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসের কোন না কোন থিম থাকে, অনুরূপভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসও কোননা কোন থিম কে কেন্দ্র করে পালিত হয়। বিশ্ব গত কয়েক বছর ধরে করোনা সংক্রমণ প্রত্যক্ষ করেছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলের সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তাও টের পাওয়া গিয়েছে। ২০২৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের থিম ছিল, 'সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা দিবসেই পালিত হয় "বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস",যা স্বাস্থ্য সমস্যা কোন নির্দিষ্ট বছরকে প্রভাবিত করে, সেই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য দিবসেরও নির্ধারণ করা হয়। তাই এ বছরের থিমও সকলের সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়েছে। কারণ এতদিনে এটি ভালো করে বোঝা গিয়েছে যে, একজনের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সকলের স্বাস্থ্যের সূত্র জড়িয়ে রয়েছে। এছাড়াও ২০২২ সালের থিম ছিল, "আমাদের গ্রহ, আমাদের স্বাস্থ্য"২০২১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের থিম ছিল, "একটি সুন্দর, স্বাস্থ্যকর বিশ্ব গড়ে তোলা'।২০২০ সালে বিশ্ব দিবসের থিম ছিল, "সাপোর্ট নার্স এবং মিডওয়াইভস"। ২০১৮ ও ২০১৯ সালের থিম ছিল"সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ: সবাই, সর্বত্র। ২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থিম হিসেবে বেছে নিয়েছিল মনকে, কারণ স্বাস্থ্য মানে শুধুমাত্র শরীরের নয়, মনের স্বাস্থ্যের কথাও বলা হয়। তাই এবছরের থিম ছিল, "বিষন্নতা: আসুন কথা বলি"।
বিশ্বের সমস্ত নাগরিক যাতে সুষ্ঠ স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করতে পারেন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হন, তা নিশ্চিত করাই হলো এই দিনটির উদ্দেশ্য।
বাড়িতে বসেই সংগ্রহ করতে পারেন 👇
0 Comments