বার্লিনের ডায়েরি -৩৩ পর্ব
চিত্রা ভট্টাচার্য্য
মিলানো ক্যাথিড্রাল
স্বর্ণালোকিত ক্যাথিড্রালের মাথার ওপর নির্মল নীলাকাশের বুকে সহশ্র আলোর তরনী ভেসে চলেছে। সাদা মেঘের পানসী দল বেঁধে পাড়ি জমিয়েছে দেশান্তরের অভিযাত্রী হয়ে নিরুদ্দেশের ঠিকানায়। ডুমোর বিশাল চত্বরটিতে অবাধ গোলাপায়রার ঝাঁকের বকমবকম ও অসংখ্য জনতার ঢল পেরিয়ে ক্যাথিড্রালের সিঁড়ির পাশে অপেক্ষারত তিতিরের সামনে ধীরপায়ে শ্রী এসে দাঁড়াল। চিন্তিত মুখে দুই দেওয়ালের ফাঁকে রহস্যময় সরু অলিন্দপথের দিকে তর্জনী তুলে তিতির দেখায় কী ভয়ঙ্কর এই সিঁড়িটি মা ! একটি গলি পথের মত ডুমোর গা বেঁয়ে এঁকেবেঁকে ওপরে উঠে গিয়েছে। ধাপ গুলো কত উঁচুএবং এক সাথে দুজনের ওঠা নামা হয়তো কোনোমতে হবে। তিতির শঙ্কিত হয়ে বলে -মা ! এত উঁচু হাতল বিহীন কঠিন এই সিঁড়ির পথ কেমন করে উঠবে তুমি ? শ্রীময়ী ওকে ভরসা দিয়ে অসম্ভব জোরের সাথে বলে বেশ পারবো ! তোমরা এগিয়ে যাও। ছাদে দেখা হবে। চলতে গিয়ে শ্রী ভাবে এ যেন সাপ লুডোর বোর্ডের সিঁড়ি গুলোর মত বেঁকেচুরে ওপরে উঠছে। সিঁড়ির ধাপিতে পা দিয়ে এগোতে ই ওর মনে এক বদ্ধমূল ধারণা হলো,ঐ অত উঁচু ক্যাথিড্রালের নির্মাণের সময় পাথর কেটে বানানো রেলিং বিহীন রহস্যাবৃত এমন মারাত্মক সিঁড়ি গুলো নির্ঘাৎ শ্রমিকদের মালপত্র বহনের জন্য বানানো হয়েছিল।
ঋষভ ও অদ্রিজা ইতিমধ্যে তরতরিয়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। শ্রী ও সাবধানে উঠছে এবং যথারীতি হাঁপিয়ে চার পাঁচটা সিঁড়ি পার হলেই একটা স্কয়ার বা ত্রিভুজাকৃত ছোট্ট চাতালে দাঁড়িয়ে জিরিয়ে নেওয়ার সময় ওর পিছনের লোক নীচের থেকে ওপরে উঠে এসে এগিয়ে যাচ্ছে। ওর কাছে এ যেন এক অসাধ্য সাধনের চেষ্টা।এমন ভৌতিক সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠা যে কত দুরূহ ঘটনা প্রতিমুহূর্তে ওকে পরীক্ষায় ফেলছে। ওর এক্সিডেন্টের পর মাত্র দুমাস হয়েছে হাঁটাচলা একটু স্বাভাবিক হলে ও হাঁটু বা পায়ের জোর বিশেষ নেই যদিও ভোলিনি নিকাপ পেইনকিলার ব্যাগে ভরসা হয়ে আছে। সর্বোপরি ওর পরনে ভারতীয় ট্রাডিশনাল পোশাক কাশ্মীরি সিল্কের শাড়িটির কুচি ,আঁচল পায়ে যাতে না জড়ায় এবং সোয়েটার ওভারকোট মাফলার টুপি সামলে অন্তহীন এ সিঁড়ি যাত্রা অবর্ণনীয়। দেওয়ালের কুলুঙ্গিতে বৈদ্যুতিক টিমটিমে হলুদ আলো ছাড়া ও কাঁচের জানলা বা ঘুলঘুলির আলোয় আলোকিত সিঁড়ির পথ , শ্রী ভাবে এ যেন ঠিক সেই সাতকান্ড রামায়ণের সীতার পাতাল প্রবেশের বদলে স্বর্গারোহন। যদিও সিঁড়ির ওপর থেকে নীচে অবতরণের এ দৃশ্যটি অবশ্যই পাতাল প্রবেশের সামিল।
মিলানো ক্যাথিড্রালের ছাদ
অগুনিত সিঁড়ি পার হয়ে গীর্জা টির ছাদে অবশেষে হাঁপিয়ে ঘেমে নেয়ে শ্রী পৌঁছলে --ঋষভ ,অদ্রিজা উত্তেজিত হয়ে বলে তোমার জাস্ট ৪৫মিনিট লাগলো। মা। গ্রেট!তুমি পেরেছো। শ্রী স্তব্ধ বাকরুদ্ধ হয়ে এক পিলারের ওপর ধপ করে বসে পড়ে। এ এক অপরূপ সুন্দরের স্বপ্ননীল জগৎ। সুন্দরী রাজকন্যারা মায়াময় চোখে কল্পলোকের অনুপম স্বর্গশোভায় অনন্যা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অন্তহীন আকাশী নীলের মাঝে। মাথার ওপরে উজ্জ্বল দ্বিপ্রহরের নীলাম্বরী মেঘেদের সামিয়ানার তলে বিশাল উম্মুক্ত ছাদ জুড়ে অনবদ্য স্থাপত্য শৈলীর সম্ভার। অজস্র পরীর ভাস্কর্য্য গুলো প্রাণময় জীবন্ত রূপের প্রতীক। যদি ও অত উঁচুতে শীতল হাওয়ার তীব্র দংশন দাপাদাপি তে ওরা ক্ষত বিক্ষত হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এই অবিনশ্বর অপার্থিব শিল্পের সাম্রাজ্যে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভাবছিল চরম সৌভাগ্যশালী ভাবছিল ।
শ্রীময়ী আজ ও একাকী উদাস চোখে অতীতের সেই বেড়ানোর এলবামের পাতা উল্টে ছবি দেখতে গিয়ে ভাবে ভাগ্যিস সেদিন অত সিঁড়ি বেঁয়ে গীর্জার ছাদে উঠেছিলো বলেই এমন রহস্যাবৃত সিঁড়ির খবর জেনেছিল। বিপুলায়এ পৃথিবীর মানুষেরই সৃষ্টি কত বিস্ময় কত অপার চমৎকারিত্ব যে ছড়িয়ে আছে তার খবর কে রাখে ? ঐ দূরুহ সিঁড়ি চড়ার সময়ে যত কষ্টই হোক না কেন এই প্রাণময় শৈল্পিক সৌন্দর্যেভরা সৃষ্টির সান্নিধ্যে এসে সে কষ্ট ভারী তুচ্ছ লাগছিল।
শ্ৰীময়ীর বিস্ময়ের ঘোর কাটেনি অবাক হয়ে দেখে কী অনবদ্য শিল্প শৈলী গড়ে উঠেছে এখানে। নীচের দিকে তাকিয়ে দূরের চারদিকের শহরটি কে লাগছিল যেন গল্পে পড়া গ্যালিভারের লিলিপুটের দেশ । গাড়িগুলো হাইওয়ে তে ছুটছে যেন পিঁপড়ের সারি। চলমান মানুষ গুলো কে লাগছে ছোট্ট সাইজের পুতুলের মত। ঋষভের সাথে সদ্য আলাপ জমে উঠেছে সুদীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এই চার্চের ছাদের চত্বরে ঘুরে বেড়াতে অদ্ভুত মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দের অধিকারী গাইড সাহেব মিষ্টার রিচার্ডের। মিলানো ডুমোর অদৃশ্য আকর্ষণে এই চার্চের ছাদে তার ধারা বিবরণীতে শ্রী মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ক্যাথেড্রালের ইতিহাস এবং নির্মাণের বর্ণনা দিয়ে এক নিটোল চিত্র পরিপূর্ন রূপে বলে গেলেন।
ক্যাথেড্রাল বিল্ডিঙের উচ্চতা ১৫৭ মিটার প্রায় ৫০তলা বিল্ডিংটির ছাদে দাঁড়িয়ে শ্রীময়ীর অবিশ্বাস্য লাগে এই নির্মানটি কেবল গ্র্যান্ডিজ যা পুরো শীর্ষে অসংখ্য স্পায়ার এবং ট্যারিট খোদাই করা অলংকার দিয়ে সজ্জিত হয়ে আছে। যাকে সূর্যের আলোর ছটায় উজ্জ্বল অনেকটা হাল্কা জরির সুতোর কাজের মত দেখতে লাগছিল। এই ডুমোয় উৎসর্গীকৃত সেন্ট ম্যাডোনার সোনার মূর্তিটি সর্বোচ্চ স্পায়ারে মাউন্ট করা হয়েছে ১০৮.৫মিটার উচ্চতায়। মিলান ক্যাথেড্রালের একটি আশ্চর্য জনক বৈশিষ্ট এই বিশাল ছাদ টি একটি টেরেস হিসেবে সুসজ্জিত হয়ে আছে। এখানে ১৩৫টি স্পায়ার এবং ৩২০০টি মূর্তি রয়েছে। প্রত্যেক টি নিখুঁত শিল্প শোভার অপরূপ নিদর্শন। ক্যাথেড্রালের ২২৪৫টি বিভিন্ন এবং খুব উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য্য রয়েছে। যে গুলো বাইবেলের চরিত্র এবং ঘটনাগুলো নিয়ে রচিত।
🍂
ছাদে সেই মুহূর্তে হাজারের অধিক দর্শনার্থী ,সবাই নির্বাক শ্রোতা। একমাত্র গাইড সাহেবদের গলার আওয়াজ বাতাসে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। এবং কত যে সময় নিঃশব্দে বেহিসেবী কেটে গিয়েছিলো তার কোনো হিসেব ছিলনা। ঋষভের মনেহলো এই শৈল্পিক সৌন্দর্য শিল্প সম্বন্ধে একেবারে অনভিজ্ঞ অনুৎসাহী মানুষের মনে ও এই শৈল্পিক সৃষ্টি চেতনা গভীর রেখাপাত করবে। অদ্রিজা ও বলে শিল্পের বিশ্লেষণ ব্যাখ্যা গুরুতত্ব কিছুই বুঝিনা কিন্তু এর কারুকার্য শিল্পীর হাতের ছোঁয়া আমাকে চুম্বকের মত আকর্ষণ করে চলেছে।
রাতের আঁধারে ডুমো
দেবদূত চিমেরাস ও বাইবেলে বর্ণিত সন্তদের চরিত্র নিয়ে মূর্তি গুলি এত নিখুঁত ভাবে সৃষ্টি দেখে শিল্পির শিল্পকলার ব্যাকরণ তেমন না বুঝলেও মুগ্ধ আবেগে প্রতিটি ভাস্কর্য্য তাদের মুখের ভাব পরিধেয় বস্ত্র এত সূক্ষ্ণ পরিপাটি করে গড়ে তোলা যে বাকরুদ্ধ হয়ে দেখতেই সময় নিঃশব্দে কেটে গিয়েছিলো। এই নিখুঁত কারুকার্য্য ও এই অনবদ্য শৈল্পিক সৌন্দর্য অনভিজ্ঞ অনুৎসাহী মানুষের মনে ও শিল্প চেতনা সম্পর্কে গভীর রেখাপাত করবেই । ছাদে সাজানো সব স্প্যায়ার গুলো এক অমোঘ আকর্ষণে অনবরত টেনে নিয়ে চলেছিল ওরা ও চর্কির মত স্ট্যাচু গুলোর চারপাশে ঘুরে বেড়াতে লাগলো ।
শহরের প্রাণবিন্দু গথিক চার্চ টি নির্মাণের প্রথম পাথর গুলো ১৩৮৬ সালে সে যুগের মিলানোর শাসক জিয়ান গালিয়াজো ভিসকোন্টি দ্বারা গ্রথিত হয়েছিল। তিনি এই ফ্যাশনেবল গথিক স্টাইলে ভবনটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৮০৫সালে নেপোলিয়ান বোনাপার্ট এই চার্চটির সামনের মুখের নকশা অনুমোদন করেছিলেন। গথিক স্টাইলে চার্চ তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞ দের জার্মানি ও ফ্রান্স থেকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যদি ও প্রথমে ইতালীয় স্থপতি সাইমন ডি আর্সেনিগো প্রকল্পটিতে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী কালে ১৪৭০সালে জুনিফোর্ট সোলারি প্রধান স্থপতি পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি ব্র্যামান্তে ও লিওনার্দো দা ভিঞ্চি কে সাহায্যের জন্য আমন্ত্রণ জানানোয় ,তারা গথিক রীতির পুনর্জাগরণের সাথে সংমিশ্রনের প্রস্তাব করেছিলেন যার ফলস্বরূপ একটি অষ্টভুজ গম্বুজ নির্মিত হয়েছিল।
যেহেতু চার্চটির নির্মাণ কয়েক শতক ধরে চলেছিল তাই বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন রাজা স্থপতি ও শিল্পীর হাত ধরে ক্রমশ পূর্ণাঙ্গ অবয়ব পেয়ে গড়ে উঠেছে তামাম দুনিয়ার স্মরণীয় এই অমর শিল্প সৃষ্টি টি । সেই কারণে শাসকরা একে অপরকে সাফল্য ও দিয়েছিলেন। কথিত আছে এই ক্যাথিড্রালের অন্দরে এক সাথে প্রায় ৩৫থেকে ৪০হাজার মানুষের সমাবেশ হতে পারে। এই চার্চ টির অন্যতম আকর্ষণ এর বিশাল সিংহদরজা আর আকাশ চুম্বি সুউচ্চ মিনার গুলো। এবং প্রত্যেকেই এই প্রকল্পে তার নিজস্ব ঐতিহ্যের গরীমা অনুযায়ী পরিবর্তন সাধন করে ক্যাথেড্রালটি কে ডিউকের শক্তির মর্যদার প্রতীক করে তুলতে চেয়েছিলেন। তারই ঐতিহ্যের জ্বলন্ত স্বাক্ষর যুগেযুগে বহন করে চলেছে ক্যাথিড্রালটির সর্বাঙ্গে ।
মিষ্টার রিচার্ড সবিস্তারে ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন কেবল মাত্র ইতালীয় শিল্পীবৃন্দই এই অপরূপ সুন্দর স্থপত্য টি তৈরীতে অংশ গ্রহণ করেন নি , শোনাযায় ফরাসি এবং জার্মানী স্থপতিরা ও ছিলেন এখানে সমান কৃতিত্বের অধিকারী। এখনো এই ক্যাথেড্রাল গুলোকে প্রয়োজনে নিয়মিত আপডেট করতে হয় ,এবং সেখানে এই কাঠামো গুলোর রক্ষনা বেক্ষনের জন্য দেশ বিদেশের সুদক্ষ ভাস্কর শিল্পীর দ্বারা যত্ন ও পুনর্গঠন করা হয়ে থাকে। শ্রী ঋষভ কে বলে লক্ষ্য করে দেখ চার্চটির সামনের বারান্দায় রক্ষিত নারী মূর্তি গুলো তে আমেরিকার নিউয়র্কের স্ট্যাচু অফ লিবার্টির সাথে খুব মিল দেখা যাচ্ছে।স্প্যায়ার গুলিতে অনেক গুলো চিত্র আছে যা সম্পূর্ণ ক্যাথেড্রালটির বৈশিষ্টের পরিচায়ক। প্রথম দর্শনে সামনের ওয়ালের দৃশ্য গুলো জীবন যৌবনের কামতত্ব ও শারীরিক মিলন সুখের আবেদন বহন করে । অদ্রিজা বলে, গতকাল পড়ন্ত বিকেলেগোধূলির রাঙা আলোয় ক্যাথিড্রাল চার্চের এ অংশ টি দুধেআলতা মেশানো গোলাপী রঙে অপরূপ সাজে সেজে উঠেছিল। আজ দেখ দ্বিপ্রহরের আলোয় মনেহচ্ছে সহস্রাধিক সোনার জরির সূতো ওর গায়ে জড়িয়ে আছে।
ডুমোর কেন্দ্রীয় প্রবেশ পথটি বন্ধ থাকাতে ডান পাশের দরজা দিয়ে অন্দরে প্রবেশ করে আবারো বিস্ময়ে অভিভূত হওয়ার পালা ।এর আভ্যন্তরীন অঞ্চল টি ও সুবৃহৎ ১১,৭০০বর্গ মিটার। সাদা মার্বেলের ফ্লোরটি কালো এবং লাল মার্বেলের বারোক নিদর্শন গুলির সাজে সজ্জিত। বিখ্যাত ইতালীয়ান চিত্র শিল্পী পেলেগ্রিনো তিবলদির কল্পনা প্রসূত। অভ্যন্তরের সাজ সজ্জাতে এখানেও এক অমূল্য নিপুন শিল্প প্রতিভার পরিপূর্ণ রূপের পরিচয় রয়েছে। যা শিল্পীর সৃষ্টির দক্ষতায় অপরূপ সমৃদ্ধ বৃদ্ধির পরিচায়ক। আশ্চর্য জনক কারুকার্য্য ময় উঁচু সিলিং এবং খিলান গুলো। ডুমোর বিখ্যাত বিশাল অঙ্গ যার মধ্যে ১৮০ টি রেজিস্টার এবং ১৩,২০০ পাইপ রয়েছে। ক্যাথেড্রালের অভ্যন্তরের প্রধান আকর্ষণ গুলির মধ্যে শহীদ সেন্ট বার্থলোমিউয়ের মূর্তি ,চতুর্থ শতাব্দীর একটি "মিশরীয় হোলী স্নান পর্ব " যা বর্তমানে ব্যাপ্টিজিমের জন্য ব্যবহৃত হয় ,এবং একটি ৫মিটার দীর্ঘ সুদৃশ্য ব্রোঞ্জের মোমবাতি দেখে অদ্রিজা ভারী অবাক হয়ে গিয়েছিল। শ্রী বলে , অবর্ণনীয় এই শিল্প সৃষ্টি যা দেখছি তাতেই বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যাচ্ছি । গোধূলির আলোয় ক্যাথিড্রাল।
এ ছাড়াও চার্চের অভ্যন্তরে একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো মিলানোর ক্যাথেড্রালের একটি বিশেষ ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষিত আছে। কথিত আছে খৃস্ট কে KRUSH বিদ্ধ করা হয়েছিল এমন তিনটি নখ বা পেরেক আছে তাদের মধ্যে একটি সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত করে সামুদ্রিক প্রলয় ঝড় কে শান্ত করা হয়। , দ্বিতীয় পেরেক টি মনজার ক্যাথেড্রাল এবং তৃতীয় পেরেক টি সম্রাটের জন্য ঘোড়ার বিটে রূপান্তরিত হয়েছিল। সম্রাট থিওডোসিয়াস এই হোলি পেরেকটি পরবর্তী কালে কিছু পরিবর্তন করে উপহার দিয়েছিলেন মেডিওলান আম্ব্রোসের বিশপ কে । খ্রিস্টের এই ধ্বংসাবশেষ টি ক্যাথিড্রালের একেবারে মূল কেন্দ্রে বেদির ওপর প্রতিস্থাপিত করাছিল। এবং আটটি ব্রোঞ্জের গিল্ডযুক্ত কলাম গুলির ওপর বিজয়ী যিশু খ্রিস্টের চিত্র যুক্ত একটি গম্বুজ ও রয়েছে।
ডাইনিং টেবিলে বসে ডায়েরির পাতায় মন দিয়ে শ্রী ল্যাপটপে লিখছিল ক্যাথিড্রালের অবিস্মরণীয় গল্প। জানলার বাইরে আকাশ কালো করে ঝমঝমিয়ে ঝরছে নব আষাঢ়ের বৃষ্টি ধারা। লাঞ্চের সময় হয়ে গিয়েছে। ঋষভ অধৈর্য্য হয়ে বলে আর কত বাকী মিলানোর গল্প?
প্লেটে গরম খিচুড়ি ডিম ভাজা পরিবেশন করে মৃদু হেসে,শ্রী বলে অজানা ইতিহাসের বিস্তর ঘটনা -- এখনো স্টেইন্ড কাঁচের উইন্ডো ,লা স্কালা অপেরা রেনেসাঁ যুগের বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত চিত্র "দা লাস্ট সাপার" দি গ্রেট লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির গল্পই বলা হয়নি । কাহিনীর ঘন ঘটা পূর্ণ সুদীর্ঘ সে পথ যাত্রা। চল আপাততঃ লাঞ্চপর্বের পাট সমাধা করি। , ক্রমশঃ
সংগ্রহ করতে পারেন। হোয়াটসঅ্যাপ -৯৭৩২৫৩৪৪৮৪
0 Comments