জ্বলদর্চি

বার্লিনের ডায়েরি --৩১ পর্ব /চিত্রা ভট্টাচার্য্য(মিলান শহরের পরবর্তী অংশ )

এসি মিলান ফুটবল ক্লাব

বার্লিনের ডায়েরি --৩১ পর্ব   চিত্রা ভট্টাচার্য্য
(মিলান শহরের পরবর্তী অংশ )

পূবের আকাশে  উজ্জ্বল সোনালী আলোর আভাস  দূরের পাহাড়ে  যেখানে  মিশেছে সেখানে    নীলদিগন্ত যেন দিশেহারা।  আকাশ ছোঁয়া রেডউডের বনের ঝাঁকড়া মাথায় কাঁপন তুলে বালক সূর্যের  কাঁচাসোনালী হলুদে প্রাণ চঞ্চল আবির্ভাব। নির্মল তাজা হাসির ঢেউয়ের নরম পরশে আঁকিবুকি কেটে    যায় স্তব্ধ রিক্ত ধূসর মরুর তামাটে কঠিন পাথরে । ভালোবাসার উষ্ণ পরশে জাগে জীবনের নতুন ছন্দ। ভ্রমণ পিয়াসী শ্রীময়ীর মনে সুদূরের হাতছানিতে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর অসীম ইচ্ছে । বিশ্ব প্রকৃতির সাথে পরিচয়ে ক্ষণিকের মিলন ঘটিয়ে চিত্ত কে উদার করে অনাবিল আনন্দে প্রতিমুহূর্তে বেঁচে থাকার রসদ যোগায়। ওর বিদেশ ভ্রমণের  প্রতিদিনের সঞ্চয়ের ঝুলিতে এমন পথ চলার অভিজ্ঞতার আনন্দ অপরিসীম।

 নর্থ ইতালী  ইউরোপের ইতিহাসের ঐতিহ্য ও শিল্প সংস্কৃতির এক অনন্য তীর্থ ক্ষেত্র।  প্রশস্ত রাস্তার ধারে  শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এখানেও বার্লিন বা প্রাগের মতই একই  ডিজাইনের একই মাপের বাড়ি এপার্টমেন্টগুলো হালকা ঘিয়ে রঙের ওপর গাঢ় খয়েরী রঙের বর্ডার আঁকা।  প্রথম দেখায় মনে হবে সবে মাত্র  শহর টি যেন গড়ে তোলা হয়েছে।  চওড়া আট দশ লেনের পরিষ্কার ঝকঝকে রাস্তায় চকচকে বিভিন্ন মডেলের ছোট বড় নানা আকারের প্রাইভেট কার থেকে শুরু করে পাব্লিক  ট্র্যান্সপোর্টের হর্ন ধোঁয়া পল্যুশন বিহীন শৃঙ্খলিত ভাবে সার বেঁধে চলেছে। শ্রী দুচোখ মেলে দেখে , গাছ পালা পার্ক লেক ও শহরটির অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ব্যবস্থা--বিভিন্ন স্থাপত্যের  সর্বাঙ্গীন সৌন্দর্যে মিলান  শহরটি  ইতালীর মানচিত্রে  আলাদা মাত্রা পেয়েছে।  আধুনিক সভ্যতার সাথে তাল মিলিয়ে বাণিজ্যিক এই  শিল্প নগরীটির   ঐতিহ্য  ইতালী দেশ টির সভ্যতা সংস্কৃতি  ও মূল্যবোধের এক অসাধারণ তাৎপর্য বহন করছে  ।    

   পথে চলতে চলতে আদ্রিজা কে ও গল্প করে শোনায় ,সেই  ছোট বেলার স্কুল কলেজে পড়ার দিন গুলো থেকেই মনের খাতায় আধুনিক সভ্যতার সংবাদ শীর্ষে  ইউরোপ মহাদেশের বহুখ্যাত রোমনগরীর মত  ইতালীর মিলানো শহরের নাম ও  উজ্জ্বল হয়ে ওর মনের পাতায়  লেখা আছে। সেই কাঙ্খিত  ঐশ্বর্য্যমন্ডিত  শহরটিতে ক্ষণিকের অতিথি হয়ে এসেছি ভাবলেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। আজকাল পৃথিবীর যত অপরিচিত ছোট্ট শহরের কোণের বাসীন্দা হই না কেন--গুগুল,নেটের সৌজন্যে বা প্রাত্যহিক বিভিন্ন টিভি নিউজ চ্যানেলের কল্যানে সারা দুনিয়ার খবর হাতের মুঠোয় নিমেষে এসে যায়। এবং সব খবরের মত অত্যাধুনিক ফ্যাশন জগতে ইতালীর এই শহরটির নাম শীর্ষ তালিকায় বহুকাল ধরে   বিশ্বখ্যাত  হয়ে আছে । শুধু তাই নয় জগৎসেরা  চিত্রশিল্প রহস্য ময়ী মোনালিসার স্রষ্টা লিওনার্দো দাভিঞ্চির জন্ম ইতালীর ফ্লোরেন্সে। আজ তার ইতিহাস ,সভ্যতা সংস্কৃতি ও শিল্পের জগতের সাথে চাক্ষুষ পরিচয় হবে। কত অজানা সংবাদ অজানা গল্পের স্পর্শে মন ভরবে। এক অনিন্দ্য সুন্দর অচলায়তন বিশ্বসেরা  সৃষ্টি মিলানো ডুমো কে স্বচক্ষে দেখবো। তার অন্দরে প্রবেশের সুযোগ পাবো ,সে আশায় বেশ উৎসাহিত হয়ে আছি। অজানা তথ্য সংগ্রহের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মগ্ন হয়ে যাবো ইতিহাসের বিশেষ রোমাঞ্চকর করস্পর্শে। শ্রীময়ীর প্রতি মুহূর্তে নিজেকে ধন্য মনে হয়। 
এনরিকের  অটো

  মিলানো ডুমোর চত্বরের বেশ কাছেই হাঁটা পথে বড় রাস্তার ওপরে এপার্টমেন্ট টি সুন্দর সিজিন ফুলের  বাগান  পর্ণমোচী লার্চ ,পাহাড়ি বিচ, চিরহরিৎকর্ক-ওক,সাইপ্রাস  বেশ কিছু  বিশাল গাছের সমারোহে সবুজ হয়ে আছে।  দীর্ঘ দেহী জলপাইয়ের ডালে বসে দোল খেয়ে স্কাইলার্ক আর থ্রাশ মধুর আলাপনে  ঋষভ কে যেন স্বাগত জানালো।  সিঁড়ি বেয়ে  তিন তলায় একটা বেশ বড়ো বেড রুম  ড্রয়িংরুম ,  ব্যালকনি সব রুচি সম্মত আবলুশ কাঠের কালো বার্নিস করা দামী ফার্নিচারে সাজানো।  ঘরে ঢুকেই শ্ৰীময়ী  দুধ সাদা পালকের মত নরম  বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছিল। ওর  রাত জাগা  ক্লান্ত চোখের পাতায় ঘুমের মিছিল নেমে এক লহমায় নেমে এসেছিলো।  

🍂

প্রায় ঘন্টা দুয়েক  ঘুমে অচেতনে কেটে গেলে , তিতিরের  ডাকে  ঘুম ভাঙলো। লাঞ্চ টাইমে পেরিয়ে  যাওয়ায়  নীচে নেমে রাস্তার ওপরেই বাংলাদেশী ছোট্ট রেস্তোরাঁ আজনবি তে ফ্রায়েড রাইস ভাপা চিংড়ি আর ভিনদেশী মসলায় তৈরী চিকেনকারি দিয়ে দুপুরের খাওয়া বেশ জমে গিয়েছিলো। যদিও ইতালীয়ান ডিস টেস্ট করার খুব ইচ্ছে ছিল ঋষভ ,তিতিরের। অনেকদিন বাদে পরদেশে স্বদেশী রান্নার স্বাদ মন ভরলো ।   রেস্তোরাঁর  বাংলা দেশী কর্মচারীর সাথে স্বদেশী ভাষার  জাদুতে অবর্ণনীয় সুখে  শ্রী ঋষভের গল্প জমে উঠেছিল বাংলাদেশী  কর্মচারীর সাথে। একটু পরেই সেখানে হ্যাট কোটে সুসজ্জিত তীক্ষ্ণ নাসা লম্বা ফর্সা মেদহীন চেহারার এক সাহেব উপস্থিত হলেন। পরিচয় হলো  রেস্তোরাঁর  মালিকের সাথে । ঝরঝরে ইংলিশে ওর আপ্যায়নে শ্রী তিতির রীতিমত মুগ্ধ। পরে জানা গেল আশিক ভাই এ দেশে প্রায় ২৫বছর আগে ইউনিভার্সিটির ছাত্র হয়ে পড়তে এসেছিলেন। তারপর ভাগ্যক্রমে এদেশেরই ইতালিয়ান মেয়ে ক্রিস্টিনা কে বিয়ে করে ,পড়ার জগৎ থেকে বিদায় নিয়ে খেতে আর খাওয়াতে ভালোবেসে   এখানের একজন হোটেল মালিক হয়ে গিয়েছেন। ওর নিজের হাতে গড়া আজনবির দ্রুত উত্থানে বিভিন্ন শহরে তিনটে রেস্তোরাঁ কে নিয়ে সারাদিন ওদের ব্যস্ততায় কেটে যায়। ওর  কাছেই জানাগেল ইতালী তে প্রায় পঞ্চাশ হাজার বাংলাদেশী মানুষ বসবাস করছে।এনারা বেশীর ভাগই সেনজেন ভিসায়  এসেছে  এবং যে কোনো ছোট ছোট কাজ , শপিং সেন্টার বা মলে  কোনো  হোটেল বা মোটেলে অথবা রেস্তোরাঁর কাজে বা ছোট ব্যবসার সূত্রে যুক্ত হয়ে কিছু অর্থ উপার্জন করে সময় কাটিয়ে দেশে ফিরে যান।   

অদ্রিজা  বলে লাঞ্চ হয়ে গেছে  চলো এবার শহর ঘুরবো। একটু এগিয়েই এক অটো চালক এর সাথে পরিচয় জমলো। পশ্চিম ইতালীর ছেলে বছর ২৩এর এনরিক ইতালীর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র। যদিও সে স্কলারশিপ পায় এবং অবসরে অটো চালিয়ে নিজের আনুষাঙ্গিক জীবন যাপনের খরচ সংগ্রহ করে । এখানের মানুষ গুলো দেখেছি ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে বেশ কর্মঠ ও আত্মনির্ভর শীল।কাজের কোনো শ্রেণী বিভাগ নেই সব কাজ ই সম্মানের এবং খুব ছোটো বয়স থেকেই তারা যে কোনো কাজে আত্ম নিয়োগ করে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সচেষ্ট হয়। কি অর্থনৈতিক কি সামাজিক সব ক্ষেত্রেই এক স্বাধীন ও মুক্ত মনের মানুষ হয়ে ওঠা ওদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও অসম্ভব দৃঢ়তার পরিচয়।  
     শহরের ঘর বাড়ি
                                       
 এনরিক  ঋষভ কে বলে  'এই ভারী সুন্দর ইতালী রাজ্যটি ম্যাপে দেখতে ঠিক একটি বুট জুতোর মত লাগে আমরা তারই  লোম্বার্ডি শহরের যাচ্ছি । ও তিন  ঘন্টার মত সময়ে মিলানো শহরের কিছুটা অংশ  ঘুরে দেখাবে।''  বার্লিনে ,প্রাগে বা  ইতালীতে- ইউরোপীয় মানুষজন  খুব আত্মকেন্দ্রিক, গর্বিত এবং অহংকারী হয়। অদ্রিজা বলে  ব্যতিক্রম চরিত্রের  মানুষ ও আছে  যেমন এই এনরিক কী অমায়িক ওর ব্যবহার। কথা বার্তা কী সুন্দর । শ্রী বলে  ও ট্যুরিষ্ট গাইড। ওর কাজটাই তো কথার মাধ্যমে মানুষের নিকট সান্নিধ্যে আসার ।  এনরিক  বলেছিল ,জায়গা গুলোর দেখানোর সাথে শপিং ও করতে চাইলে মলে ও নিয়ে যেতে পারে। মা ও মেয়ে , শুনে বেশ আহ্লাদিত। শপিং সেন্টারে বিদেশী ঘর সাজানো জিনিস গুলো বিশেষ করে কাঁচের পুতুল মেমসাহেব খুব মন টানে-- তা ছাড়া ,ইতালীয়ান কাঁচের বাটি গ্লাস ল্যাম্প শেড গুলোর ডিজাইন বেশ মনোহারি , শ্রীর যে তাদের প্রতি অসম্ভব দূর্বলতা।                                                                                                                         পথ চলা শুরু হোলো। প্রাগের মত এই শহরের ও মসৃণ কালো পাথুরে পথে চলতে চলতে সহজেই বোঝা গেলো বিলাস,ব্যসনে ডুবে থাকা জীবন কাকে বলে ? প্রাচীন ঐতিহাসিক ঘটনা ও অর্থ নীতিতে সমৃদ্ধ এবং সুবৃহৎ আড়ম্বরে বিলাস ব্যসনময় জাঁকজমক পূর্ণ পৃথিবীর এক অন্যতম বিখ্যাত নগরীর পথে  মধ্য গগনের সূর্য কে মাথায় নিয়ে চলা শুরু হলো। ঘটনা বহুল পশ আর ফ্যাশনেবল লাইফ স্টাইলে আদ্যন্ত মোড়া ,অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশাল সমৃদ্ধ শালী ইতালীর দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী বিখ্যাত আধুনিক ডিজাইনের ফ্যাশানের শহর।একেক টি পার্কে বা চত্বরের কাছে গাড়ি থামিয়ে মিলানো শহরের বর্ণনা দিয়েবলে ---মিলান কালক্রমে দেশের সর্বাধিক জনবহুল শহর তো বটেই এবং ইতালীর বৃহত্তম নগর ও মহানগর অঞ্চলের প্রাণ কেন্দ্র হয়ে উঠছে।  ,ইউরোপের অন্যান্য শহরের মত  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বোমার আঘাতে মিলানো শহর বহু দিক থেকে ছিন্ন ভিন্ন এবং ক্ষতি গ্রস্থ হয়ে বেশ বড়ো অংশ বিধ্বস্ত ও ধ্বংস প্রাপ্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিটা ধ্বংস প্রাপ্ত নগরীকে নতুন রূপে নির্মাণ করে পুনরায় আগের রূপে শহর কে গড়ে তোলার মতই এই মিলানো শহরটি ও ক্ষয় ক্ষতির পুনরুদ্ধার করে নিজেকে মহাবিশ্বের দরবারে একটি সমৃদ্ধশালী আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক রাজধানীতে পরিণত করে তুলেছে। 

এখন তো তার সাথে যুক্ত হয়েছে ফুটবল প্রেম। এই খেলার প্রতি বিশেষ উন্মাদনায় গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক ঐতিহ্যশালী বিখ্যাত দুটি ক্লাব এসি মিলান ও ইন্টার মিলান ফুটবল ক্লাব। শ্রী প্রমাদ গোনে ওর সংসারের ফুটবল প্রেমের বন্যা এখানেও শুরু হলো বলে। পিতা পুত্রী দুজনেই যে ফুটবল পিয়াসী। তারপর সে যদি হয় পৃথিবী শ্রেষ্ঠ মিলান ফুটবল ক্লাব। অদ্রিজা বলে ভাবতে ভালো লাগছে  "মা" --আজ আমরা হবো ফুটবলের এই রাজার শহরের ক্ষণকালের অতিথি। এনরিক সোজা  নিয়ে এলো ফুটবল ক্লাব দেখাতে ও অনেক খবর রাখে। ঋষভ অদ্রিজার মিলানের ফুটবল ক্লাব নিয়ে কৌতূহল অপার।এনরিক বলে ইতালীর অধিকাংশ জনগণ বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ নারী পুরুষ নির্বিশেষে এখানে ফুটবল প্রেমী অনেকটা ইন্ডিয়ার বিখ্যাত শহর তোমাদের কলকাতার মত। ঋষভ বলে একদম ঠিক এবার বলো তো , এসি মিলান ও ইন্টার মিলানের মধ্যে পার্থক্য কি? অদ্রিজা বলে যতদূর জানি, ১৮৯৯ সালে এসি মিলান ক্লাবের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই ১৯০৮সালে এদের মধ্যে মতান্তর হয়ে বিরোধ দেখা দিলে  অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু এবং বেশ ফাটল ধরে। এনরিক বলে that'sright,--  .বিদেশী প্লেয়ারদের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে মত পার্থক্যের কারণে সদস্যদের অংশ আলাদা হয়ে যায় এবং ইন্টার মিলান হিসাবে চালিয়ে যায়।

 ক্লাবের বাইরে থেকে দেখা গেল বিরাট আকারের সোনার ফুটবল ও জয়ের প্রতীক সোনালী কাপ গুলোর রিপ্লিকা। তা ছাড়া বিভিন্ন মডেলের ছবির সাথে বিখ্যাত প্লেয়ার দের কাটাউট যেন বল পায়ে জীবন্ত ফুটবল কিংবদন্তী তারকারা ছুটছে। স্বর্ণজ্জল  প্লেয়ার্স দের মূর্তি। তখন কার মত তাদের নাম জানলেও আজ  শ্রীর ধূসর স্মৃতি তে কিছুই মনে পড়ে না। চোখে ভাসে পান্না সবুজমাঠ সুসজ্জিত গ্যালারি ঘিরে রাখা ক্লাব হাউসটি। এনরিক বলে ডার্বি ডেলা ম্যাডেনিনা ,ডার্বি ডি মিলানো হলো দুটি মিলানিজ ক্লাব যেখানে মিলান শহরের অন্যতম প্রধান দর্শনীয় স্থানের সম্মানে এটিকে ডার্বি ডেলা ম্যাডোনিনা বলা হয়। ঐ মিলান ক্যাথিড্রাল ডুমো টির শীর্ষটিতে সুশোভিত  যে ভার্জিন মেরীর ম্যাডোনিনা মূর্তি টি আছে ,ইতালীয় ভাষায় যাকে লিটিল ম্যাডোনা ও বলা হয় তাঁর ই সম্মনার্থে এই নামকরণ।এই ফুট বল ম্যাচ নিয়ে সারা ইতালী ময় সামাজিক বিভাজন ,উত্তেজনা তো বটেই, সমগ্র  ইউরোপদেশ ই মেতে থাকে। বছরে অন্ততঃ দুবার লীগ ম্যাচের মাধ্যমে এই ক্রস টাউন প্রতিদ্বন্দ্বীতা টি চলে কোপা ইতালীয়া ,চ্যাম্পিয়ন লীগ এবং সুপার কোপা ইতালীয়ানা সেই সাথে ছোটছোট টুর্নামেন্ট এবং প্রীতিম্যাচ পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। ঋষভ হেসে বলে সেই যে আমাদের ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের লড়াইয়ের মত। 

  শহরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব, ফুটবল প্রেম ছাড়াও ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে এর ঝাঁ চকচকে জীবনধারা ,অজস্র রেস্তোরাঁ ,ফুডহাব , শপিংসেন্টার ,অপেরা নাইট ক্লাব এবং জীবন উপভোগের দেদার  উপকরণ বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদির জন্য মিলান নিজেকে ক্রমশঃ এক স্বর্গ রাজ্যতে পরিণত করেছে।    বিশেষ ভাবে "শহুরে অত্যাধুনিক বিলাসী " জীবন যাত্রা ভ্রমণার্থীর কাছে অত্যন্ত স্মরণীয় আবেদন রাখে।  ইতালীয় ফ্যাশন দুনিয়াতে বিশেষ প্ৰতিষ্ঠা পেয়ে সারা বিশ্বের ফ্যাশন জগতে আধুনিক কালের নিরিখে বিশ্ব বিখ্যাত নাম আজ ও এই মিলান মহানগরীর'। চলার পথে প্রতিটি স্কোয়ারে,রাস্তার মোড়ে বিশাল বড় হোর্ডিং,বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে শুধুই উজ্জ্বল গরিমা।  বিষ্মিত শ্রীময়ী  অভিভূত হয়ে তাকিয়ে থাকে ।            (ক্রমশ)

জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করুন। 👇

Post a Comment

0 Comments