জ্বলদর্চি

ভাঙা আয়নার মন/ পর্ব -৩০/মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া

ভাঙা আয়নার মন 
পর্ব -৩০

মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া 

  || রাজপুত্র কে গিয়াছে পাশাবতীর পুর... ||

    
"রূপ দেখতে তরাস লাগে, বলতে করে ভয়/
কেমন করে’ রাক্ষসীরা মানুষ হয়ে রয়!/
চ-প্ চ-প্ চিবিয়ে খেলে আপন পেটের ছেলে/
সোনার ডিম লোহার ডিম কৃষাণ কোথায় পেলে!/
কেমন করে’ ধ্বংস হল খোক্কসের পাল/
কেমন করে উঠ্ল কেঁপে নেঙ্গা তরোয়াল!/
পায়ের নিচে কড়ির পাহাড় হাড়ের পাহাড় চুর/
রাজপুত্র কে গিয়াছে পাশাবতীর পুর?"
      বড়মাসি, দিদুন,ছোট পিসিমা বা সেজো জেঠাইমা  যাকে হোক ধরে পড়ে শুনে নেওয়া ছোটবেলার রূপ তরাসির কাহিনি থেকে যত সে দূরে সরে যাচ্ছে  তত সেই সব রূপকাহন তার পিছু পিছু তাদের সবটুক মায়া ও ম্যাজিক নিয়ে ছুটতে ছুটতে বলছে শোনো ঝিনি শুনে যাও,হারিয়ে ফেলা কথারা আসলে কিন্তু হারায় না। জলের মধ্যে, মেঘের মধ্যে, একলা কোনো একার মধ্যে সে আসলে লুকিয়ে থাকে।
     অথচ ধ্রুবদাকে বারণ করে দেওয়ার পর থেকে পদ্য টদ্যর বই তাকে উঠিয়ে, হারমোনিয়ামের বাক্স খাটের তলায় ঢুকিয়ে সে শুধু ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞানের রেফারেন্স বই পড়েছে।ট্রান্সলেশন আর জ্যামিতির এক্সট্রায় সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের পরপর সমান দুই বাহুর মধ্যে আটকে রেখেছে যত ভিতু আর বিশ্বস্ত কোণ।রাত জেগে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে ডাঁই করা পড়ার বইখাতার  মধ্যে প্রিয় কারো কবিতার বই উঁচু হয়ে জেগে উঠলে অস্থির সময় থেকে মুখ ঘুরিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়তেই চেয়েছে। 
       শুধু খুব বৃষ্টির কারণে চারদিক ঘন হয়ে আসে যেদিন, মনে হয় গোটা পৃথিবীই গুটিয়ে তাদের পুব দিকের ছোট ঘরে এসে ঢুকেছে যেন এই ঘরখানা ছাড়া আর কিছুই সত্যি না;এর বাইরে আর কিচ্ছু নেই তখন অজান্তেই ছটফট করে ওঠে চারদিক।     
      ঝিপঝিপ জলের শব্দে যা কিছু শর্ত ও মিথ্যের উঁচু পাঁচিল ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে যায়। ফোঁটা ফোঁটা জলের মধ্যে মিশে যাক তার নিজস্ব। বৃষ্টিরা এসে সব দাগ মুছে দিক!
        "হিল্ হিল্ হিল্ কাল্-নিশিতে-গর্জে কোথায় সাপ/সাজার পুরীর ধ্বংস কোথায় হাজার সিঁড়ির ধাপ!/আকাশ পাতাল সাপের হাঁ কোথায় পাহাড় বন/থর্ থর্ থর্ গাছের ডালে বন্ধু দুজন!/চরকা কোথায় ঘ্যাঁগোর ঘ্যাঁগোর পেঁচোর কিবা রূপ/
মণির আলোয় কোন কন্যার অগাধ জলে ডুব"। 
        শীতের কালের সন্ধেয় তাদের বাড়ি বা আশপাশে উনুনে আঁচ পড়ে যখন ধোঁয়া ঘিরে ধরে তাদের বাগানের গাছগাছালি,কুয়াশা উঁচু হয়ে ফের ঝুলে পড়ে উল্টোমুখো হয়ে তখন পরেশবাবু স্যারের চলে যাওয়া আর শিববাবু স্যারের আসার মাঝে এক চিলতে সময়ের ওপর বারান্দার গ্রিল ধরে চুপ করে দাঁড়িয়ে সে দেখতে পায় নিঝুম ধোঁয়া আর কুয়াশায় দূরের কথা লিখেছে কেউ। সে সব কথারা নরম ধুলো কণা ধরে ভাসতে ভাসতে  গেট পেরিয়ে পাকা রাস্তার ওইমুখে থমকেছে।
    যেন পরণকথার বইতে ছাপানো কাঠ খোদাই করা ছবিতে  দুধ সাগর  ডিঙিয়ে কত কত দূর সেই পাশাবতীর দেশ থেকে রাস্তাটা এই মুহুর্তেই ভেসে এলো।
    “হী হী হী!” হরিণ-মাথা রাক্ষস আকার/
আমের ভিতর রাজার ছেলে লুকিয়ে ছিল কে/
রাজকন্যা, নিয়ে এল সাগর পারে গে’!/
কবে কোথায় রাক্ষসীর হাড় মুড়মুড় করে/
রাজার ছেলের রসাল কচি মুন্ডু খাবার তরে!/
রাক্ষসের বংশ উজাড় রাজপুত্রের হাতে/
লেখা ছিল সে সব কথা ‘রূপতরাসী’র পাতে!"

🍂

         অথচ  নিজে খুব ভালো করেই জানে যে সে ওসব কথাদের মুখোমুখি হতে চায়না।রুপোলি জোছনা মেলে সারসার ওই যে এসেছে, ওরা তো কাগজের ওপর লেখা অদ্ভুত সব চিঠি ঠিকানাই লেখা হয়নি বেওয়ারিশ ডাঁই হয়ে পড়ে আছে।কুয়াশা মুছে দিক না ওদের। লেখাপড়া আর দাদাদের দেখানো অস্ফুট এক রাস্তায় লম্বা কোনো অজানা দৌড়ের জন্য তাকে জুতোর ফিতে বেঁধে নিতে হবে সুরে। যাবতীয় আলোর মাত্রা নিয়ে ওই যে বসে আছে পড়ার ঘর আর আলোর পেছনে ভুরু কুঁচকে বসে সবাই লক্ষ্য করছে তাকে যেন ওখান থেকে ডাকছে ওরা আর ভয়ঙ্কর কোনো রোগের ছোঁয়াচ বাঁচাতে বারান্দা থেকে খুব দ্রুত হুড়মুড়িয়ে সে ঢুকে পড়ে আলো জ্বালা ঘরের ভেতর। এখন বেশ নিশ্চিন্দি লাগে তার।এই পড়ার টেবিল তার খুব চেনা আর আরামদায়ক। সে এখন নিশ্চিন্তে ভৌত বিজ্ঞান বা ভূগোলের ম্যাপ নিয়ে কাটাতে পারে অনেকখানি সময়। এখন অন্য কেউ এমনকি নিজেও আর তাকে বিরক্ত করবে না। সে তো খুব ভেতরের এক ঘুরঘুট্টি অন্ধকার ঘরে সব রুপোকথাদের তালাবন্ধ করে রেখে নাঙ্গা এক তরোয়াল নিয়ে পাহারায় বসেছে নিজে। কপাটের ওধারে অবাধ্য ভাবনারা কেঁ জাঁগেঁ, কেঁ জাঁগেঁ আর এধারে "লাল কমলের আগে নীল কমল জাগে /আর জাগে তরোয়াল/দপদপ করে ঘিয়ের দীপ জাগে -/কার এসেছে কাল?"
       হ্যারে ঝিনি,লেখা টেখা তো চুলোর দোরে গেছে তোর, ছোড়দা বলে  তোর সেই  তারপর অনেক দিন কেটে গেছে কবিতা না পড়ে/বুকের মধ্যে শিমুল তুলোর ওড়াউড়ি নেই ...এটাই দিয়ে দিচ্ছি এবারের পত্রিকায়,ধ্রুবদা তো বলেছিল খুব ম্যাচিওরড লিখেছিস; ঝিনি অন্যদিক তাকিয়ে মাথা নেড়ে সায় দিয়ে দেয়।কলি বলে স্কুল ম্যাগাজিনে তোর সোনাঝুরি কবিতা একা একা প্রতীক্ষারত পড়ে পুলুদা বলছিল, ঝিনি মাঝপথেই কলিকে থামিয়ে দেয়। সে কিছুতেই কারো কাছে ধ্রুবদার কথা শুনতে চায় না মোটে।
       ততদিনে ঘাড়ের ওপর মাধ্যমিক পরীক্ষার ভোঁ বেজে গেছে।ঝিনির প্রাণের দোসর কণা একটু ক্ষ্যাপা ধরণের।কণার বাবা মেসোমশাই আরও একটু ক্ষ্যাপা। ওদের বাড়ি গেলে মেসো জাবদা একখানা খাতা নিয়ে রেডি হচ্ছে দেখেই কণা হ্যাঁচকা টানে তাকে নিয়ে বলে পটলের খেতে যাই চ'।দৌড়ো।কিছু না বুঝেই দৌড় লাগায় সেও। ব্যপারটা কি!  দৌড়তে দৌড়তে সে জিজ্ঞেস করলে  কণাও হাঁপাতে হাঁপাতে বলে বাবা কবিতা লেখে।সে তো ভালো কথা।রাবিশ!কণা বলল,মম হৃদয় ,অশ্রুজল টল নিয়ে সে লেখে একেবারে জঘন্য।আজকাল মা আর বোনও শুনতে  রিফিউজ করে  বলে কেউ এলেই তাকে ধরে।আর একটু হলেই তুই বধ হচ্ছিলি আজ।
   তা সেই কণার বাবা মেসোমশাই টেস্টের পর  সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তোরা তো মোটেও লেখাপড়া করিসনে দেখি।পড়া কারে বলে দেখগে যা আমাদের বাড়ি,কণু তো চার ঘন্টা মোটে ঘুমোয় আর এক ঘন্টা ওর চান খাওয়াদাওয়া ইত্যাদিতে খরচা করে। বাকি উনিশ ঘন্টা বই ছাড়া কিচ্ছু না। অ্যালার্ম ঘড়ি নিয়ে সব কারবার বুঝলি কিনা। মাধ্যমিক কি যে সে পরীক্ষে বাপু। তার প্রস্তুতি তোদের কম্মো না।তারা হাঁ হয়ে থাকে।উ-নি-শ ঘন্টা? কলি বললো মাতা খারাপ নাকি?মরে যাবে যে। বাঁচলে পরে না পরীক্ষে।আগে ওকে বাঁচাই চ'। 
       ফের তোরা অসময়ে এসিচিস? মেসোর প্রশ্নের তলা দিয়ে গুড়ি মেরে তারা কণার কাছে পৌঁছলে দল ধরে ওদের দেখে কণাও অবাক আর উনিশ ঘন্টার বিত্তান্ত শোনামাত্তোর কেঁদে ফেলে আর কি। বাবা আমায় বাঁচতে দেবে না বুঝলি আর বলিহারি তোদেরো! ওই কথা বিশ্বাস করলি। বাবাকে চিনিস না নাকি।জানিস নে গত বেস্পতিবার হাটে পাইকারি বাজারে কি নিয়ে মারামারি বাঁধলে কে এট্টা বলিছ আগুন লেগিছ আর বাবা সাইকেল, বাজারের থলে সব ফেলে দৌড়। দেখলোই না সত্যিকারের আগুন লেগিছ কিনা। হ্যাঁ হ্যাঁ বড় বুলাদা বলল তো মেসো নাকি তিন মাইল দৌড়ে গন্ধপপুর অব্দি চলে গিছলো? মোটেও অতদূর যায়নি কলির কথায় এবার কণাই বাঁধা দেয়।টিবিসকাটি পোন্ত গিছলো।তা সে ও তো মাইল দেড়েকের কম না! ঝিনি অবাক হয়ে বলে।ভয় পেয়ে মেসো স্রেফ দেড় মাইল দৌড়ে বেরিয়ে গেল?তালেই বল তোরা।এই মানুষের উনিশ ঘন্টা শুনে বিশ্বাস করলি তোরা?
     আর বর্ষায় এবার পটল খেত ডুবে গেলে মেসো নাকি জয় মা ক্ষেমঙ্করি জোড়া কুমড়ো বলি দোবো রক্ষে করো মা গো  বলে আলপথে উবু হয়ে কাকে নমস্কার দিচ্ছিলো তা বড় বুলাদা গিয়ে ও জেঠা ক্ষেমঙ্করিটা আবার কোন ঠাকুর জিজ্ঞেস করায়  বলেছে তোদের মতো নাস্তিকরা এসব জানবিই বা কি করি ?উচ্ছের দেবী নাকি ক্ষেমঙ্করি! সত্যি নাকি?উচ্ছেরও দেবী আছে? ধুসস,বড় বুলাদার গুল সব। তাছাড়া ডুবলো পটলের খেত আর উচ্ছের দেবীকে মানত করবে মেসো কলির কথায় হাসতে হাসতে তারা বাড়ি ফিরল যে যার।
     টেস্টের পর কার কি রেজাল্ট হলো,ফর্ম ফিল আপ, ইস্কুলে সবার সঙ্গে শেষ দিন কে কির'ম পড়ছে এইসবে তা না না না করে মাসখানেক বেরিয়ে গেলেই টনক নড়ল তার।কী সব্বোনাশ! হাতে মাত্তর ষাটখানা দিন!
       অমনিই বইপত্তর বগলে ছাদে উঠে পড়ল সে।
 আজম্ম ঘুমকাতুরে সে রাত জেগে দেয় একটা দুটো অবধি কিন্তু ভোরবেলা কস্মিনকালেও ওঠার জোর পায় না।ভোরবেলা উঠে খানিক সামনে পেছনে দুলে দুলে ওয়ার্ম আপ করে মাকে জিজ্ঞেস করে কটা বাজে। সাড়ে পাঁচটা। এখনো রাত্তির তো মা,তালে আর এট্টু ঘুমোই? ঠিক আছে ঘুমো বলার সাথে সাথে কাটা কলাগাছের মতো ধড়াম করে বিছানায় পড়ে যায় ফের।
        হামানদিস্তা নিয়ে  বড়মাসি রাত থাকতে উঠে পান ছেঁচতে বসে আর বকবক করে এগো ব্যানিয়মের নাগাল পাইব কেডা। অতফোর এট্টা পরীক্ষা তার হ্যালদোল আছেনি ছেমরির! পরীক্ষা আইয়া পড়ছে আর দ্যাহো ক্যামনে গুমাইয়া রইছে  বেলা আটটা অবোধি! দাঁতে রোদ না লাগাইয়া হ্যায় তো উডে বইতেই পারে না!কত কইসি মনু,বেহান বেলায়  মাতা থাহে এক্কেরে পরিস্কার।যা পড়বা ছবির লাহান গাঁইথ্যা যাইব মনে।ক্যারে ঝিনি?উডছস?দ্যাহো দেহি প্যাঁচাল পুডি মুই আর ছেমরি লিশ্চিন্দে কেমন গুম দিতাছে।গুমাইয়া গুমাইয়াই উনি পরীক্ষা দিব হনে। 
অরে তরা গেলি কই?উডা ছেমরিরে! বড়মাসির বকুনি আর হামানদিস্তার ঠুন ঠুন আওয়াজে বেশ একটা ঘুম পাড়ানি আমেজ আসে। খেয়াল করে দেখেছে ঝিনি ওই আওয়াজগুলোতেই তার ঘুম আরো খোলতাই হয়।
      রাত জেগে পড়ে তো বুঝলেন না বড়দি, সকালে একটু দেরি হলেও কিছু হবে না।মোটে না ঘুমোলে আবার পড়া মনেই তো থাকবে না তাই না? তাদের বাবা তার ঘুমের হয়ে ওকালতি করলে  মাসি তেড়ে ফুঁড়ে ওঠে এইডা কি কইলা তুমি!বাম্ম মুহূর্তের পড়াডা তয় হইব ক্যামনে?বিস্ময়ে বাক রোধ হয়ে যায় বড়মাসির। না গুমাইলে পড়া মনে থাকব না?তয় ছেমরির রাইত জাগনের দরকারডা কী? পোলাপাইনের বিহানে উডার ওব্যাস করাওনি আ্যহন কইয়া আইর হইব ডা কি? বড়মাসির পান ছেঁচার আওয়াজ বেড়ে যায়।
       শীতের বেলা এমনিতেই ছোট। ঘুম থেকে উঠে স্নান করে খেয়ে  মাদুর বগলে তার পড়তে বসতে বসতে নটা বেজে যায়। মাঝখানে উঠতে বললেও আর  কিছুই তার কানে যায় না। বিকেল পেরিয়ে পেটে খুব জোর ছুঁচোর লাফালাফি শুরু হলে নেমে আসে বইখাতা গুটিয়ে। খেয়ে দেয়ে পড়ার ঘরে আলো জ্বেলে আবার বসে যায়। এই রুটিনের মধ্যেই কেটে গেছে ষাটখানা চব্বিশ ঘণ্টা।
      আর আজ কিনা মাধ্যমিক পরীক্ষারই শেষ দিন।সেকেন্ড হাফের আধঘন্টা তখনও বাকি।বন্ধুরা অনেকেই পেপার জমা দিয়ে করিডোরে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। কণা র্হেঁকে বলল এবার ক্ষ্যামা দে মা, অনেক নিকেচিস! নিকুচি করেছে বলে ঝিনিও উঠে দাঁড়াল।
      গার্ড দিচ্ছিলেন যিনি,এতই অবাক হলেন যে প্রথমে রাগতেই ভুলে গেলেন। তোমার না ম্যাথ আ্যডিশনাল? হ্যা স্যার,ইয়ে আর মিলছে না অংক। সম্বিত ফিরে পেয়ে কড়া তর্জনী ফের নির্দিষ্ট বেঞ্চ দেখিয়ে দিল।যাও রিভাইস দাও। ঘন্টা না পড়া অবধি কোনও ম্যাথ পেপার আমি জমা নেবো না।
       অগত্যা বেঞ্চে বসে করুণ চোখে বন্ধুদের দিকে তাকাল সে ।ঝকঝকে সব মুখ একইরকম শয়তানিতে চকচক করছে।কেউ কেউ হাতঘড়ি (মাধ্যমিক দেবার সুবাদে সব্বাই মা বা দিদির ঘড়ি পরে এসেছে,ঝিনির হাতেও তার মায়ের এইচ এম টি ঘড়ি বাঁধা) দেখিয়ে ইশারায় বলতে লাগলো স্বপ্নপুরী হলে চারটে-সাতটা শো শুরু হয়ে গেছে।
       ঘন্টা পড়তেই ছুট ছুট। কাছেই বয়েজ ইস্কুলে তাদের সেন্টার পড়েছিল। তবু নিতান্তই মাধ্যমিক বলে বাড়ির কেউ না কেউ তাকে পরীক্ষার হলে পৌঁছে দিয়ে গেছে।দুই হাফে পরীক্ষা বলে টিফিন খাইয়ে গেছে।
          শেষ দিন দানি গেছিল আনতে তাকে। দানি দানি, দুটো টাকা দে না রে বলে ভ্যাবাচাকা দাদামনির কাছ থেকে দু'টাকা হাতিয়ে পরীক্ষা ভালো হ-য়ে-ছে-এ...সিনেমা-য় যাচ্ছিইই বলে স্কুলড্রেসেই তারা দেড়ঘন্টা হয়ে যাওয়া সিনেমা দেখতে দৌড় লাগায়।

Post a Comment

0 Comments