জ্বলদর্চি

স্বাগতা রায় /গুচ্ছ কবিতা

স্বাগতা রায়, গুচ্ছ কবিতা



ঐ পরাস্ত নাবিক

অনন্ত নীর অগ্রসর হয়
    ঐ দেখা যায় এক পরাস্ত নাবিক,
কালপুরুষের মতো ধাবমান তার মূর্তি;
কলুষতা কে আলিঙ্গন করে সে বারবার ধ্বস্ত হয়।
তবু হাল ছাড়ে না !
মানব হৃদয়ের গোপন কুঠুরিতে আলেকজান্দ্রিয়ার মতো, ভিড় খুঁজে বেড়ায় সে!
নদীর খাড়িতে মিশে মৃত্যু হয় তার।
শতাব্দী তীক্ষ্ম হয়ে পড়ে -
এক কৃষকের সাথে দেখা হয় তার;
ঐ পরাস্ত নাবিক --
    শুরু করে দেবালয়ের খোঁজ!

🍂

না

আজকাল অবয়বের আড়াল থেকে দেখা পৃথিবী বড় ধূসর মনে হয় !
নীলচে কিছু দলছুট স্বপ্ন প্রত্যেক ছিটকে যাওয়া চিৎকারে জানান দেয় -"পারছি না "
এই তালাবন্ধ মড়কে কেন পচছে সভ্যতা ?
সংস্কার ,সংকট আর সংস্করণ ; 
যার মধ্যে জড় লুকিয়ে রাখা 
ফোটা ফোটা বিন্দু বিন্দু "না " জমতে জমতে এক হিমালয় "নারি " র সৃষ্টি 
কিছু অক্ষর অক্ষ রেখা বেয়ে কেবল দশ পঁচিশের ছকই হয়ে থেকে যায় !
তাই এক বিশ্বে নারী ,পুরুষ ,শিশু ,বৃদ্ধ সব ই দেখা যায় !
শুধু দেখা মেলে না মানুষ মানুষীর !
তারা কেবল ই "নারি "


আলেখ্য

রক্তলীন ভেজা কিছু  কাগজে  মৃত্যুমুখীন শব্দ হানা দেয়.
আশে পাশে জমে থাকা জমাট কান্না গুলো ভিড় করে আসে !
কিছু আবেগ দিয়ে আপাদমস্তক জড়ানো বিকেলে বই সাক্ষী রেখে ঘুম ঘরে আসতে চায় !
সেই সই পাতানো উঠোন গুলো চাবি খোঁজে রাত দুপুরের !

শুধু মৃত্যু নয় !

জীবন গুলোও শুধু অস্পষ্ট আলেখ্য হয়ে যায় ইতিহাসে



মেঝে

যার কোনো পিঠ নেই ,কেবলই মেঝে তে পড়ে থাকা তার.
কালি ,দোয়াত ; কিছু এঁটো বাসন আর ভিজে ন্যাতা -এই সব নিয়ে কবিতা সংসার পেতেছিল মেয়েটি !
একটা হলুদ খাতা ছিল তার জ্ঞানপীঠ পুরস্কার 
বিছানা পেতে সযত্নে যখন তার কলম চলত সেই খাতাটাতে ,যেন ইচ্ছে হত সবটা যেন শেষ না হয় তাড়াতাড়ি !
আলতো আলতো হাত বুলিয়ে অক্ষম অক্ষর গুলোকে সাজাতো পরম স্নেহে !
যেন প্রতিটা সৃষ্টি তার শরীর সঞ্জাত সন্তান.
একদিন সে খবর পেল নতুনের 
চোখ গেল ধাঁধিয়ে !বুক উঠল ফুলে.

এরপর ?

যা হয় !

হলুদ জ্ঞানপীঠ আজ এক হাঁড়ি ভাত !

           

Post a Comment

0 Comments