মৌসুমী ভট্টাচার্য্য
পর্ব-১
তৃষা ভয় পায়,প্রথমই মনে হয় অনীক কি বলবে!চেপে যাবে ব্যাপারটা।একটা প্রাইভেট স্কুলে পড়ায় সে,অংক শিক্ষিকা।অভিজাত ঘরের ছেলেমেয়েরা পড়তে আসে। আশ্চর্য তাদের মূল্যবোধ!ক্লাসে শৃঙ্খলা বজায় রাখাই রীতিমত চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। এদের কিছু বলা যাবে না,ক্লাসে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো আছে,প্রিন্সিপাল তার রুমে বসে নজর রাখেন।ক্যাথলিক সাউথ ইন্ডিয়ান আই.সি.এস সি বোর্ডের এই স্কুলে মাইনে ভালই,কিন্তু বহু অপমান হজম করে শিক্ষক শিক্ষিকারা চাকরী করে যাচ্ছেন।ছাত্র ছাত্রীদের কিছু বলা হয় না,পদে পদে কথা শুনতে হয় শিক্ষকদের। ক্লাস টেনে ক্লাস চলাকালীন পেছনের বেঞ্চিতে বসা কিছু ছেলেমেয়ে এত কথা বলে যে তৃষার ক্লাস নিতেই খুব অসুবিধা হয়।বহু বুঝিয়ে,অনুরোধ করেও কাজ হচ্ছে না।গতকাল কয়েকজনকে ক্লাসের বাইরে বের করে দেয়।পরীক্ষা সামনে,সিলেবাস বাকি।গত পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল হয় নি অনেকেরই।আজ স্কুলে আসার পর প্রিন্সিপাল ডেকে পাঠায়।তৃষাকে জানানো হয় যে এক গার্জিয়ান পুলিস কমপ্লেন করতে চেয়েছিল,প্রিন্সিপাল অনুরোধ করে বিরত করে। গার্জিয়ানেরা অন্য শিক্ষক চাইছে,তাদের ছেলেমেয়েদের অপমান করা হয়েছে।চিবিয়ে চিবিয়ে প্রিন্সিপাল বলল যে সামনের মাস থেকে আর আসতে হবে না।তৃষা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিল না,গরম শিসে ঢেলে দিয়েছে,মনে হচ্ছিল।
সুনামের সাথে এত দিন ধরে পড়িয়ে আসছে,ছাত্রছাত্রীরা পছন্দও করে,এক মূহূর্তে নাকচ হয়ে গেল!অপমানে,বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছল,কি ভাবে বেরিয়ে এসেছে জানে না। একটু ধাতস্থ হলে মনে হয় অনীক জানলে কি হবে!তার ক্ষতে লবণ ঘষে দেবার আনন্দে অনীক কি সব নিষ্ঠুর মন্তব্য করবে,ভেবেই জ্বর আসে। “তোমার সাথেই এ ঘটনা হয়,না অন্যদের সাথেও?তোমার কিছু সমস্যা তো আছে সিওরলি।পুলিশ কেস হলে আমি পারব না ছাড়াতে’’ অনীক যে এধরনের মন্তব্য করবে,সন্দেহ নেই এতে।হয়ত তৃষার টেকনিকটা ঠিক হচ্ছে না,কিন্তু এসব কথা শুনলে আত্মবিশ্বাসের বারোটা বেজে যায়। আগের প্রথাগত নিয়ম কানুন সবই পাল্টে গেছে।এখন ছাত্রদের প্রাধান্য দেয়া হয়,কিন্তু হিতে বিপরীত হচ্ছে।এখন মা বাবারা জিজ্ঞেস করে না,“কেন তুমি শাস্তি পেলে?তোমার আচরণ কি ঠিক ছিল?” ছেলেমেয়ের সামনে শিক্ষক সম্বন্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করাতে এদের কি ধরনের মূল্যবোধ তৈরী হচ্ছে?
তৃষা নিজেও এক কিশোর ছেলের মা,এমন শিক্ষা তো দিচ্ছে না।বরং কয়েকবার তার ছেলে রনি অবিচারের শিকার হয়েছে। তারা তো কমপ্লেন করতে ছোটেনি! এক তো সময়ের বড় অভাব।রনির এক বন্ধুর মা একদিন বলল,“আপনাকে কখনো দেখি না ছেলের স্কুলে বা টিউটোরিয়লে যেতে?” মৃদু হেসে তৃষা এড়িয়ে যায়।কি করে বোঝাবে ওর জীবন সংগ্রাম!ঠিকে ঝি বাসন মেজে,ঘর মুছে দিয়ে যায়,বাকি সব একা হাতে,রান্না,ছেলে পড়ানো,তারপর স্কুল!নিজের জন্য সময় নেই।বাকি ব্যাংকের কাজকর্ম সব ওকেই দেখতে হয়।যাক্ সে সব করে অভ্যাস হয়ে গেছে,কিন্তু কি করে অনীকের থেকে লুকোনো যায়,তা নিয়ে চিন্তিত।মাসের প্রথমদিকের সব বিল তৃষা দিয়ে দেয়। দুধের,কাজের লোকের মাইনে,কাগজ,টেলিফোন,ইলেকট্রিসিটির বিল,মাসকাবারী বাজার সব মিটিয়ে দিলে অনীক ওর মাইনের অর্ধেক দশ তারিখ নাগাদ দেয়।সংসার কি করে চলছে,সেভিংস হচ্ছে কিনা,এসবের চেয়ে প্রাধান্য পায় কিছু খরচা হয়ে যাচ্ছে কিনা! তৃষা ভেবে নেয়,এ ক দিনের ভেতর একটা চাকরী খুঁজে নেবে।চাকরি পাওয়া যায়,অংকের ম্যাডাম বসে থাকে না,শুধু মাইনে কম বেশী!
🍂
বিয়ের পর থেকেই ‘টাকা নেই’ আর ধারদেনার কথা শুনে তৃষার কান ঝালাপালা। অনীকের মা,বোনেরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছে,অনীকের টাকায় তৃষার কোনো অধিকার নেই। কষ্ট করে ওরা ছেলে ইঞ্জিনীয়ার বানিয়েছে,এখন বৌ এসে ওড়াবে,পুড়াবে,এসব হবে না।
বাইশ বছরের নববিবাহিত তৃষা হতবাক হয়ে শোনে,একদিন এক সামান্য বিষয়ে শাশুড়ী যখন বললেন,“কোন্ গুণটা আছে শুনি? চাকরি-বাকরি করে না,বসে খাওয়া?” তৃষার মার্স্টাস তখনো শেষ হয়নি।অপমানিত তৃষা ঠিক করে চাকরী নিয়েই নেবে।তা পেয়ে গেল,তাতেও আক্ষেপ!শুধু গ্র্যাজুয়েট বৌ হবে,ভাবতেই পারেননি। “আরে আমার ছোটমেয়ের শ্বশুর বাড়িতে ওরা এম.এ পাস ছাড়া মেয়ে আনবেই না।আমারি মন্দ কপাল।’’ তৃষা যে পড়াশোনায় ভাল ছিল,ইঞ্জিনীয়ারিং পড়ল না,ম্যাথসের মত কঠিন বিষয় নিয়ে পড়ল,ভাল গান গাইত,এসব বলার সুযোগ পায় না।কেন যে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিল তাকে!কিন্তু তার জেদ তাকে মাস্টার ডিগ্রী করিয়েই ছাড়ে,অংকেই।খুব কষ্ট হয়েছিল,চাকরী,সংসার,রনি ছোট ছিল,কাজের লোকের পায়ে আক্ষরিক ভাবেই মাখন লাগানো হয়েছিল।
না অনীক,না মা কেউই সাহায্যের হাত বাড়ায়নি।কেউ বলেনি,‘তুমি পরীক্ষা ভালভাবে দাও,পড়া নিয়েই থাক।তোমার ছেলে,সংসারের দায়িত্ব এ কদিন আমি নিলাম!’ কেউ না।
সে দিন সন্ধ্যায় তৃষা দোতলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছিল,অদ্ভূত এক বিষণ্ণতা তাকে গ্রাস করেছে।কাঁদলে হাল্কা হওয়া যেত।কিন্তু কান্নাও আসছে না,জমাট হয়ে কষ্ট দিচ্ছে।বর্তমান ঘটনা সম্পর্কহীন বহু ঘটনা ঢেউ এর মত মনে আসতে থাকে।কেউ জানতে চাইবে না,কেন তার মন খারাপ! কোনো সহানুভূতির কথা তার জন্য নেই।সবদিক দিয়েই সে অবহেলিত।মা আর স্বামী কাউকেই কোনো সমস্যার কথা বলা যায় না। “সমস্যার কথা একদম বলবে না,নিজে সমাধান করবে,” তৃষার মায়ের এই ছিল মানসিকতা। ফলে স্কুল,কলেজে,রাস্তায় যত অবাঞ্ছিত ঘটনাই ঘটুক,সব তার ছোট্ট বুকে চেপে রাখতে হয়েছে। কখনো সমাধান করতে পেরেছে,কখনো পারেনি।মা ও বাবা দুজনেই খুব কঠিন পরিস্থিতিতে ,অনাদরে বড়ো হয়েছেন,দুজনেই তৃষার প্রতি অত্যন্ত কঠোর মনোভাব রাখেন।এখন তৃষা সাইকোলজি বিষ্লেষণ করে বুঝতে পারে,এদের কঠোর মনোভাবের কারণ।যে সুখ থেকে ওরা বঞ্চিত ছিলেন,তা তৃষাও পাবে না,এক স্যাডিস্টিক মনোভাব বোধহয় ওদের মধ্যে কাজ করত।তৃষার আত্মমন্থনের জাল ছিঁড়ে গেল,যখন রনি জানাল,“মা,দিদা ফোন করেছে,নীচে এস।” তৃষা বিরক্তিতে ভ্রু কোঁচকাল,এই মুহূর্তে তার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না,মায়ের সাথে তো নয়ই। নির্ঘাত ঘ্যানঘ্যান করে কাঁদুনি গাইবে। যখনি তৃষার মায়ের কোন কারণে মন খারাপ হয়,বা কারো ব্যবহারে দুঃখ পায়,তৃষাকে বলে হাল্কা হন।উল্টোটা কখনো হয় না।এক,ছোটবেলা থেকে না বলতে পেরে সেই হ্যাবিট হয়নি।
দুই,এখন নিজের সমস্যার কথা জানিয়ে আর বয়স্ক মা বাবাকে বিব্রত করতে মন চায় না।বেজার মুখে নিচে নেমে ফোন নেয়। “জানিস,তোর ভাইটা কেমন পাল্টে গেছে!বিয়ের পর পাল্টে যায়,কিন্তু এমন ভাবে?ওই বৌ টার জন্য।ছোটঘর থেকে এসেছে”, নাগাড়ে বলে যান উনি। তৃষার সম্মতি আশা করে,কিন্তু তৃষা চুপ করে থাকে। “কি হল মা,ঠিক আছ?” তৃষার মা উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বলেন।হঠাৎ মন ছলকে ওঠে তৃষার,কিন্তু সামলে নেয়। মায়ের মন খারাপ থাকলে তৃষা স্নেহভরা কথা কিছু শোনে,নইলে তো দুর্লভ। “আমি ঠিকই আছি,কাজ আছে কিছু। তুমি মন খারাপ করো না”, বলে ফোন কাটল। তৃষার মায়ের ছেলে অন্ত প্রাণ,বিয়ের পর তৃষার ভাইয়ের ব্যবহারে উনি দুঃখ পান। চিরন্তন সমস্যা,যদিও ভাই,ওর বৌ কোনো দুর্ব্যবহার পায় না,বরং উল্টোটা হয়। ‘আরো ছেলেকে অন্ধ প্রশ্রয় দিক’,মনে মনে কথাগুলো বলে তৃষা জোর করে নিজেকে ব্যস্ত করতে চাইল,রনির পড়ার খোঁজ নিল।তৃষার শুকনো মুখ দেখে কোমল সুরে রনি জিজ্ঞেস করে,“মা,তোমার কি শরীর খারাপ?”
“না তো,ঠিক আছি।কি পড়ছ বাবাম?”
রনি করুণ ভাবে মায়ের দিকে তাকায়,বুঝতে চেষ্টা করে।মা বাবার দূরত্ব,বাবার নিরাসক্তি,সবই তাকে বয়সের তুলনায় ম্যাচিওরড করে দিয়েছে।
তৃষা কিচেনে গেল,অনীকের আসার সময় হয়েছে। এসেই ডিনার করে নেবে,ঘি জবজবে পাতলা দু-তিনটে রুটি,তরকারি,ডিমের পোচ। তৃষা সাবধান করতে চেষ্টা করেছে যে চল্লিশ পার হবার পর রোজ ঘি খাওয়া ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু অনীক শুনবেই না এবং রূঢ় সুরে বলে,“জ্ঞান দিতে এসো না তো!আমার কি সে ভাল আমি বুঝি।” কোন সময় তৃষা পাল্টা জবাব দিলে,অনীক খাবার মেঝেতে আছড়ে ফেলেছে। রাগ হলেই ছুঁড়ে ফেলা,গায়ের গেঞ্জি মাঝখান দিয়ে ফালা করা…,তৃষা আর নিতে পারে না।এক তো অপরিসীম ক্লান্তি,দুই,রনি ডিসটার্বড হয়। ক্লাস টেনে পড়ে,ওকে কিছুতেই ডিসটার্ব করা যাবে না।গৃহ শান্তির জন্য মৌনতা,এতে অনীকের সুবিধে।ডিনার সেরেই সে দরজা বন্ধ করে ডেস্ক টপে কাজ করে। তৃষা আর রনি নীরবে ডিনার করে,কখনো অনীক এসে পাশে বসে জানতে চাইবে না,ওদের দিনটা কেমন কাটল!কি অদ্ভূত ভাবে সংসারে থেকেও ডিটাচড্ থাকে!তৃষা একটা বইতে পড়েছে,এত এল্যুফনেস,ডিটাচমেন্ট স্বাভাবিক নয়।এধরনের ব্যাক্তিকে ‘সিজয়েড পার্সন’ বলা হয়।
পরদিন সকালে তৃষার এত ব্যস্ততা নেই,অনীক,রনি বেরিয়ে গেলে সে-ও বেরোবে। ওকে রেডি না হতে দেখে অনীক শুধোল,“তৈরী হলে না,যাবে না স্কুলে?”
তৃষা মাথা নাড়ল। অনীক বিরক্তিতে কাঁধ ঝাঁকাল,জানতে চাইল না কারণ।তার কাছে কাজের প্রতি কমিটেড,ডেডিকেটেড হওয়া সবচেয়ে জরুরী।তৃষা কিছু জানায় না,সেও খুব সিনসিয়ারলি কাজ করে,ঘরেও,বাইরেও।
কয়েক মাস ধরেই সে ভীষণ গাইনো সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছে।জরায়ুতে ফাইব্রয়েড আছে,পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত স্রাব তাকে রক্তাল্পতা,লো প্রেশারের রোগিনী বানিয়ে দিয়েছে।গাইনোকোলোজিস্ট জরায়ু কেটে বাদ দিতে সাজেস্ট করেছে।তৃষা প্ল্যান করেছিল,গরমের ছুটীতে অপারেশন করাবে।এখন নূতন চাকরী,তার কি পরিস্থিতি হবে,কে জানে!
তৃষা রেডি হয়ে বেরলো,তার বায়োডাটা টাইপ করতে হবে। এসব কাজ নিজে করলে ঐরকম ভাল হয় না। দূরে কোথাও গিয়ে করাতে হবে।
এক সাইবার শপ থেকে বেরোতেই তনুজার মুখোমুখি। তনুজা আগে তৃষাদের কমপ্লেক্সেই থাকত,পরে দূরে চলে যায়। ইতিহাসের শিক্ষিকা, কোন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়ায়। “আরে তৃষা, তুমি এখানে?” তনুজা এগিয়ে আসে।
“এই কিছু টাইপ করানো,প্রিন্ট নেবার ছিল”,ম্লান হেসে তৃষা এড়াতে চেষ্টা করে।
“তুমি এখানে?স্কুলে যাওনি?”
“আমি এখানে কাছাকাছি থাকি।ঐ চাকরীটা ছেড়ে দিয়েছি।চল,আমার ফ্ল্যাটে,কফি খেতে খেতে গল্প করবো।”
তৃষার কোন আপত্তি শুনল না,তনুজা জোর করেই ওর ফ্ল্যাটে নিয়ে গেল।এত সুন্দর গোছানো ফ্ল্যাট,সুরুচির ছাপ স্পষ্ট।খুব সুন্দর ইনটিরিয়র ডেকোরেশন করানো হয়েছে। তৃষা মুগ্ধ হয়ে দেখছিল,খুব সখ ছিল এ ভাবে ঘর সাজানোর। কিন্তু তার ইচ্ছে অনুযায়ী কি হয় সংসারে!অনীক এপ্রুভ না করলে হবে না,আর পয়সা খরচে তার এপ্রুভাল একদম নয়।
কফি খেতে খেতে তনুজা বলল,“বোর লাগে খুব।এতদিনের চাকরীর অভ্যেস!আর চাকরী করাতে ঘরের কাজ দ্রুত করার অভ্যেস!ফলে দুপুরটা কাটতে চায় না। বিকেলে কয়েকটা বাচ্চাকে পড়াই,তখন টুবলু রেস্ট নেয়।সন্ধ্যায় মাঝেমাঝে টুবলুকে হিস্ট্রি,জিওগ্রাফি পড়াই।সামনে বোর্ড দেবে তো! শিক্ষকতা চলছে ঠিকই।’’
“তা তুমি ছাড়লে কেন?’’
“এত চাপ আর পারছিলাম না নিতে।সকাল থেকে সন্ধ্যে,স্কুলই খেয়ে নিত। ঘরে ফিরে আর এনার্জি থাকত না কিছু করার।রান্নার লোক,ছেলেকে টিউশনে নিয়ে যাওয়া,এর জন্য ড্রাইভার রাখা..এসব খরচাও কম নয়। হাজব্যাণ্ডের একটুও সময় হয় না। টুবলুকে একটু দেখা দরকার।’’ একটু থেমে আবার বলল,“ছেলে ভাল হলে মায়ের ক্রেডিট হোক না হোক,খারাপ হলে মা-ই দায়ী।স্কুল যত পারে,খাটিয়ে নিতে চেষ্টা করে।এমনকি ছুটীর দিনেও কাজ থাকে।বাড়ির লোকজন ভাবে,ভারি তো মাস্টারি!এর এত কি কাজ!আর পারছিলাম না।টুবলু স্কুল শেষ করলে আবার জয়েন করব।’’
তৃষা মাথা নাড়ল,“ঠিক করেছ।আমিও ভাবছি,ব্রেক নেব কিনা!আমার পরিস্থিতিও এমনই।”
আরও কিছুক্ষণ গল্প করে তৃষা বাড়ি ফিরল ঠিকই,কিন্তু তনুজার কথাগুলো তাকে ভাবাচ্ছে। ভাবছে অনীকের সাথে কথা বলেই নেবে এ ব্যাপারে। তা হলে আর লুকোচুরি করতে হয় না। কয়েক মাসের ব্রেক তো নিতেই পারে। রনিকেও একটু দেখা দরকার। যদিও এই আলোচনা একতরফাই হবে।
0 Comments