জ্বলদর্চি

কবিতার চেরি ব্লসম /স্বস্তিকা ধর

কবিতার চেরি ব্লসম
স্বস্তিকা ধর


১৮ ই কার্তিক , ১৪৩১

[ যে সব রাতে, অবগাহন চলে
মাটির মত মন পেয়েছে, ছেলে]

কথায় আর উপ-কথনে লেগে যায় কালাদিকাল.....
সময়, তার অনন্ত রূপ উজাড় করে,
আমায় বোঝায় ' ডুবে যাবার উপকারিতা ' 
সাহস যুগিয়ে বলে ' সকলেই এইভাবেই মরে ' ।

[ যে সব রাতে অবগাহন চলে, 
গাছের মতো মন পেয়েছে ছেলে ]

দীর্ঘ শ্বাস দীর্ঘতম হয়ে, পাঁজরে জড়ায় -
চলে বৃন্দাবনী সারং;
বারংবার বাধা পেয়ে, যে পাহাড়ি নদী , অস্থির -
সেও আজ গুছিয়ে উঠছে;
স্বতঃস্ফূর্ত , সুস্থির ।

[ যে সব রাতে অবগাহন চলে,
নদীর মতো মন পেয়েছে ছেলে ]

সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে রাত্রি গভীরে,
সাবেক কালের অচলায়তন ঠেলে ঠেলে,
জড়িয়ে - মড়িয়ে অঙ্কুরিত হচ্ছে,
অসহ্য অস্থির এক মেয়ে 
আর
নদীর মতো, গাছের মতো, মাটির মতো - ছেলে ।


মৌন মুখরতা

শহরের নিয়ন আলো, ঝাপসা হয়ে এলে, আমি নদীতে জড়াই।
আদরের লুকোনো মরাই...খুলে
একে একে বার হয়, নাকছাবি, কানপাশা
আদর গলাই 
সোহাগা - আদরে মোড়া বাজুবন্ধ
খুল খুল যায় !
তোমার বজ্রের কিনারে ছিলো যে আদর রেখা
অব্যক্ত অদেখা
ঠেকে শেখা? তাও বলতে পারো!
তবে কিনা দু দন্ড শ্বাস নিচ্ছি, এই!
প্রচ্ছন্ন; প্রকট হলে ; সেই - ক্ষণে 
রণে বনে আমাকেই শুধু তুমি খুঁজো....
জলে জঙ্গলে রেখে এসেছি
তোমারই মধুস্বরা অধরা আদরের কুঁজো 
কুঁজোয় আদর কালি 
নিবের শরমে মজে খৎ 
এ যাবৎ-এ নিয়ে কম শব্দ হয়নি কুরবান!
অতএব;
অসহ্য আদরের দিব্যি
আজও তুমি চুপ থেকো; জান!


যুদ্ধ বিরতির পক্ষে সওয়াল ১৪ ই জানুয়ারি
২০২৪


যখন মনে পড়ে,
তখনই মনে পড়ে;
বাকি সময় ভুলেই থাকি !

জানো না কি, ব্যস্ততা কত?
জলে আঁকি ,
যতসব,
বেঁচে যাওয়া রোজকার; 
টিকে থাকা ;
লিখি জলে....

স্থলে যুদ্ধ চলে -
শিশুদের সব -
শিশুদের শব - 
হাত, পা, ন্যাড়া মাথা, টুকরো-টাকরা বিক্ষিপ্ত বোমায়, 

এইসব দেখি , 
ভাতের টেবিলে বসি,
হাবিজাবি গল্প জুড়ি
হাসি স্বাভাবিক 
রোজ ! 
মাঝখানে বেজে ওঠে, 
আদিম,  উজবুক, 
 ' কুছ কুছ হোতা হ্যায়"'

ঠিক এই পর্বে এসে গোত্তা খায় 
আমার ভাবনা সারি সারি ;
পারি 
শুধু 
চপলতা 
চিরকাল 
জানোই তো নখ দর্পণে ! 

' একটু মানিয়ে নিও '
' তবুও মানিয়ে নিও ' 
এইকথা মনে মনে সেরে, 
মুখ তুলে
দেখি, 
পোঁটলা বন্দী, টুকরো টাকরা , হাত পা কুড়িয়ে , হাঁটা দিয়েছে বাবা !
পাউরুটি আঁটা ছোট থাবা, 
কবরের ভিতর পুরে,
 মাটি দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে , 
শরীরের জন্মদাতা বাবা l 
এতক্ষণে মনে পড়ে --
সন্ধ্যে, রাত - টাক্সি, তোমার কলকাতা l
চুম্বন আহত ঠোঁটে 
একমাত্র চুম্বন ক্ষত নিয়েই
বলা যেতে পারত 
শেষ যুদ্ধ বিরতির কথা l 
যখন মনে পড়ে , 
তখনই মনে পড়ে ! 
বাকি সব, হাবিজাবি কাজ 
শিশুদের শব গোনা! 

অস্ফুটে বলতে শুনি , তোমাকে :
' বারে বারে চলে যেতে চাই l
ফিরে না আসার মত , চলে যাওয়া হোক '
কোনো রোক টোক
করিনা তো!
শুধু ভবি, 
মুছে গেল নাকি ?
দুজনের ঠোঁটে আঁকা অমোঘ সে যুদ্ধ বিরতির চাবি 


ভালোবাসার চিঠি 

কেন যে মনে পড়ে!
কেন যে মনে পড়ে ?
কেন যে মনে পড়ে , জানিনা 

সেদিন ও সেই রাত 
সেদিন ও ঘরে ফেরা 
তুমি ই সুর দিলে 
চাঁদেও রং ছিল , ভুলিনি 

দুজনে পেরোলাম যোজন মরুভূমি 
পলাশ টুপটাপ 
তোমার ঠোঁট চুপ 
আমিও নিঃসাড়
হৃদয় অহমিকা, খুলিনি 

না বোঝা আছে কিছু 
খুঁজিনা ওই চোখ 
অদেয় আছে কোনো , মানিনা 

যদিও বড়ো দূর তবুও মনে পড়ে 
কেন যে মনে পড়ে , জানিনা

🍂

Post a Comment

1 Comments

  1. কমলিকা ভট্টাচার্যFebruary 9, 2025 at 11:28 AM

    ভালো লাগলো

    ReplyDelete