জ্বলদর্চি

কবিতার চেরিব্লসম ৭ /স্বস্তিকা ধর

চেরিব্লসম ৭ 
স্বস্তিকা ধর  

ঘৃণার বাগানে জলঝারি
২৮শে চৈত্র,১৪৩১  

মনের মধ্যে যখন 
অক্ষর বৃষ্টি হচ্ছে 
আপনাকে ঘিরে,  
বাইরে তখন 
এক আধখানা শব্দও 
ধরা দিচ্ছে না 
খাতার পাতায়!  

'যে চায়না , তার কাছে
 নিজেকে নিয়ে যেতে নেই'  
-এই কথার মতো সুন্দর ত্রুশবিদ্ধ কথা আমি এ জীবনে আর খুঁজে পাইনি!
আমার হাতের চেটোয়, পেরেকের  ক্ষত 
পায়ের পাতার হাড় ভেঙে হাঁ, হয়ে আছে গর্ত  
কিন্তু এসব দৃশ্যমান না!

কেবল মুখের হাসি আর কলমের কালি শুষে নিতে,  
ব্লটিং পেপারের সকাল, সন্ধ্যে, বিকেল, রাত্রি- 
সকলেই শুশ্রুষাভিমুখী- 
সকলেই নিত্যপথযাত্রী-  

'আমি তোমায় চাইনা' - ব্যাস, এই শব্দবন্ধ শুনবার আকাঙ্খায় আমি উইঢিবির আশেপাশে ঘুরঘুর করেছি  
তিন মাস...
বল্মীক ভেঙে, 
তপস্বী,গা ঝাড়া দিয়েই 
নিশ্চয়ই এইটুকু উচ্চারণে 
মুক্ত করবেন আমায়! 
 
কিন্তু ঠুকে ঠুকে ঠুকে 
হাতুড়ি দিয়ে;
এতো শত টুকরো 
হয়ে গিয়েছিলো 
তার মেরুদন্ডখানা,  
সে আর উঠে
দাঁড়াতে পারলোনা
উইঢিবির ভেতরে
তার পুনর্জন্ম ঘটে গেছে!

ঢিবির গা বেয়ে নামলো; তপস্বী নয়, নধর চন্দ্রবোড়া  
বিষের থলি নামিয়ে রাখলো আমার পায়ে,
বললো 'আমায় নেবে?'
'আমায় চিনেছো?'  

সেই থেকে দৌড়োচ্ছি আমি  
মেরুদন্ডহীন সরীসৃপে,
আমার বিবমিষা তীব্র যে! 

কোনো কোনো দিন রাত্তিরে, শরীরের সব রক্ত বিষ হয়ে যায় 
টের পাই আমি - 
বীভৎস চন্দ্রবোড়া সপাটে পেড়ে ফেলে আমাকে  
নড়তে পারিনা- 


ভাঙাচোরা কদাকার আমি  
আবারো নিজের গতজন্মের খোলস খুলে বসি 
হিসেবে নিকেশ কষি!   

ফুল পাতা ঝারিবৃষ্টি 
বসন্তের জল ও জঙ্গল  
কেউ সরিয়ে তুলতে পারেনা আমাকে!
শেষমেষ আমার ছাদ আমাকে শুশ্রূষা অফার করে!  
বলে-'এক কাপ চা, 
সাথে ভালোলাগা , ভালোথাকা সব ফ্রি!' 

'শুধু ভালোবাসা দিতে পারবোনা  
সাপের বিষে নীল শরীর তোমার!
ও জিনিস সইতে  পারবেনা আর  
আর তাছাড়া তুমি তো কোন ছার! 
আমি ভালোবাসা অফারে রাখা বন্ধ করেছি বহুকাল 
মন্দার বাজার’-  

ছাদটি আমার বড়ো মুখরা! 
প্রতি সন্ধ্যার তারা খসার সাথে সে আমাকে বিদ্রুপ করে আর মনে করিয়ে দেয় 
খসে পড়া তারার কাছে আমি আজন্ম ভিখারি!
এক সন্ধ্যা বেলা
একযুগ আগে  
আমার প্রথম প্রেমিক কে চেয়েছি - পেয়েছি - হারিয়েছি  

ছাদটি আমার
শুশ্রুষার সরোবর বটে!
বুক জল  হাওয়ায় ডুবে 
হেঁটে হেঁটে হেঁটে  
হাওয়া কাটছি আমি
উত্তর থেকে দক্ষিণে  
চারিপাশের গুটিকয়
টিমটিম আলো  
অন্ধকার মাটির
মাধ্যাকর্ষণ চুঁইয়ে
মুখ নিচু,
কাঁচুমাচু করুণ জ্বলে আছে- 

চাঁদের গায়ে আজ 
একটা কালো সুতোর বেড়! 
অনেক দেখেও বুঝে উঠলাম না  
শেষে হাল ছেড়ে দিলাম  
হুবহু যেভাবে নিশ্চুপে নির্বিবাদে  
আপনার হাত ছেড়ে  
নির্ঝঞ্ঝাট এগিয়ে যাচ্ছি  আমি  
ভালোবাসা সারা হলো ঢের

🍂
ad

Post a Comment

0 Comments