অমূল্য সহজিয়া
কর গুজরান গরীবী মেঁ সাধুভাই: সন্ত কবীর
জীবন সম্পর্কে সম্যক কথা শোনাচ্ছেন সন্ত কবীর,
শতকের পর শতক সেই সব বাণী আমার দেশের হাওয়াবাতাসে ভাসছে,
কখনো কখনো সাংসারিক মাকড়শার জাল ভেদ করে আমাদের স্থবির কানেও ঢুকে যায়;
কারুর কারুর চোখ ভিজে আসে নিশ্চয়-
সামান্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হ'বে,
দারিদ্র স্বীকার করে হাসিমুখে বাঁচো,
নত হয়ে থাকো বিরাটের কাছে,
বিনা হুঙ্কারে নীরবে নিভৃতে উপাসনা
এবং নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের কর্মটি করে যাও।
পাঁচশো বছরের ব্যবধান উড়ে যায় নম্রতা ও সহজভক্তির সামনে,
শবনম ভিরমানির কন্ঠে কবীর জীবন্ত হয়ে ওঠেন....
আচরণীয় নিয়ে সঙ্ঘবদ্ধ গর্জন পিছু হটে।
বালক ও দাঁড়কাক
চিরাচরিত চাঁদটাঁদ নিজেদের নয় তা ঠিক,
তবুও জানি না কেমন করে ভাবছি-
অনাথ শিশুটির জন্য চাঁদ ছিঁড়ে নেব আকাশ থেকে,
যার জন্য জ্যোৎস্না এখনো কিছুটা মায়া ছড়িয়ে রাখে পূর্ণিমার আগে পরে,
তার শৈশবকে কোন সামাজিক একক খুন করবে?!
ছেঁড়া চটির পায়ে পায়ে তার লাথি খাওয়া ছেলেবেলা,
এ দিক ও দিক কিম্তু সুদূর হাসছে সহস্র খেলা,
বাবা-মাকে আবছা মনে করে কখনো কখনো চোখে নুনের পুকুর;
গোপন জায়গায় ঠুকরে দেয় অনাথাশ্রমের দাঁড়কাক,
তবু চাঁদপ্রবণ বালক ঠিক করেছে কুঁকড়েমুকড়েই বড় হবে
তাও হ'বে না দাঁড়কাক।
ছড়িয়ে পড়ছে, মুখ থুবড়ে পড়ে যাছে কুচিকুচি স্বপ্ন,
ধার বড়, কেটে যায় তুলতুলে জীবন্ত শব;
ক্ষমা নিয়ে তুমি বড় হওনি কেন?
প্রশ্ন করতে পারে যাদের শৈশব বলতে কিছু একটা ছিল,
অপরূপ না হোক, সরলরেখার স্থিতিতে সঙ্গত।
সারাংশ
তোমার আমার ভেতর এখন একটুও যুদ্ধ নেই
সারাংশে আপাতত আমাদের সম্পর্ক শুদ্ধ নেই,
গরহাজির দেখি অপেক্ষা বা টানাপোড়ন কোনো;
তেমন বাঁধন তৈরির জন্য কেনই বা দিন গোনো?
আমাদের ভেতর আর বাইরে ঘরের একই রং,
তা সত্বেও মনের মহল ধরে নিয়েছে বিশ্রী জং,
রয়েছে অবশিষ্ট বহুমুখী দিনযাপনের এটা ওটা;
হৃদয় খুঁটে নয়, ধারাবাহিকে সাংসারিক গোটা।
🍂
পোষ্য চলে যাওয়ার পর
দৃষ্টি যেখানে দিগন্তকে ছুঁয়ে থাকে
সেইখানে সে লাফিয়ে লাফিয়ে খেলাধুলো করে আজকাল,
আলোয় ভরা সেই মাঠে তার অবিরাম চঞ্চলতা,
এত দিন তো ঘাসে মোটেই লাফাতে পারেনি
মাঝারি ফ্ল্যাট জুড়ে যত খেলাধুলো আর লাফালাফি
আর এখন তার কোনো শারীরিক কষ্ট নেই;
জায়গাটা অসহনীয় গরমও নয় বলে
আমার সোনার ফূর্তি দেখে কে?
তার ক্লান্ত লাগলে চুপকথার চাঁদ টুপ করে তাকে কোলে তুলে নেয়,
সেইখান থেকে আমাকে দেখে সে মহানন্দে টুউকি বলে লুকিয়ে পড়ে
তবে বড় বড় কানদুটোর জন্য দূর-আভাস পেয়েই যাই।
চাঁদের একান্ত খরগোশ,
চাঁদেরই ভূমিতে ফিরে গেছে,
মাঝখানে কয়েকটা বছর মায়ের হৃদয়ে নরম ঘর করে কোনো রকমে বাস করেছিল;
0 Comments