জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /দোলন গোস্বামী

গুচ্ছ কবিতা 

দোলন গোস্বামী


আত্মহনন

বিষন্নতায় আমি স্নান করে দেখেছি,
একটা লোমকূপেরও বিনাশ নেই।
সবই সমান তালে বিপন্ন বিন্যাসে।
আগুনের পথ ধরে হেঁটে দেখেছি,
আমার বিছানায় উড়ে এসেছে ছাই,
ভৎসনার কালিমাখা রক্ত আমার,
কোনো বন্যায় নয়তো খরায় বিভ্রান্ত।
প্রাসাদ বা পিরামিডে প্রেমের প্রশস্তি,
রচনায় ব্যস্ত যে প্রেমিক পুরুষ,
তাকে বরাবর লাঞ্ছিত করেছি শোকে।
ভুল স্রোতে বহমান জীবন মোহনায়,
নৈঃশব্দ হতে চায় আত্ম সম্বরণে।



সুমেরু

সূর্যের মতো তুমি
আমাকেও চিনলে না।
যেমন চেনা হয় না পৃথিবীকে।
সুমেরুর ইতিহাস কঠিন বরফে ,
ঢাকা পড়ে গেছে অদম্য আবেশে।
নিরক্ষরেখায় তোমার কোনো সন্তান
জন্ম নেয়নি বকুল বাতাসে।
স্পর্শহীন সংলাপে নেভেনা মনের আগুন।
তাই, কন্টকময় দ্রাঘিমা তোমার।
আমাকেই বারংবার মিথ্যে আকর্ষণে,
ঘুরিয়ে যাচ্ছো ঐ পৃথিবীর মতো ।
এক গোলার্ধ আলোকধারায় ,
অপর প্রান্ত অন্ধকারেই থাকে
আমার মতো।

🍂
ad

অভিসার

যে রথ আমাদের স্বর্গের দুয়ারে
পৌঁছে দিতে চেয়েছিল ,
কোনো যান্ত্রিক গোলযোগে
মাঝপথে থেমে গেলো সে।
ভর দুপুরে মাটি ফাটানো রোদ নিয়ে,
যে মেয়েটা রাধার মতো
অভিসারে গিয়েছিল।
তারও যাত্রা অজানা কারণে
থেমে গিয়েছিল হঠাৎ।
আবহাওয়া অফিসের বার্তায়
জানা গিয়েছিল আজ
তুমুল বৃষ্টি নিয়ে ভাঙবে আকাশ।
কোন বাউল আদুল গায়ে,
বৃষ্টিকে চুরি করে নিজের জমিতে
আজ ফসল ফলায় ।



 দহন

কোন অযান্ত্রিক মন্থনে
এক অতলান্ত বিষ ভান্ডার থেকে,
প্রতি নিয়ত নির্মিত হয় ,
নীলকন্ঠ পাখির ভ্রূণ।
ডানা কাটা, ,,ভোঁতা ঠোঁটের উপরে
প্রলেপ দিতে হয় আগুন।
তোমাকেই বলছি শুধু,
নামহীন ,উপমাহীন,রূপ হীন,
একটা অস্তিত্ব জানান দেয়
বোধের কারখানায় যে অগ্নিকাণ্ড ঘটে
তার আঁচ ঢোকেনা সভ্যতার মহল্লায়।



নীল তারা

তোমার অতল সৃষ্টি
আর অনন্ত উদ্ভবের কাছে,
চির পরাভূত যে নীল তারাটি
অভিষেকের অপেক্ষায়।
পথ আর পাথেয়
যার কৃষ্ণ কুটকে
গভীর মায়ায় আচ্ছন্ন।
তার ভালো মন্দ গড়িয়ে পড়ে
বর্ষার বাঁধানো ঘাটে।
কোন সাগ্নিক পুত বিভূতি
হোমানালের দগ্ধীভূত ছাই দিয়ে
পরিয়ে দেবে প্রেমের কাজল টিপ!
আবহমানের আবর্তনের
চিরচঞ্চল রাই ফিরে যায়।
কে তাকে ফেরাবে আর!

Post a Comment

0 Comments