কবি সুধীর দত্ত-র সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
পার্থজিৎ চন্দ
পার্থজিৎ চন্দ- ১৯৮৭-তে আপনার ‘ব্যাবেল টাওয়ারের চূড়া’ প্রকাশিত হয়। এরপর ‘আরশি টাওয়ার’, ‘প্রাক্পুরাণ’। ‘দাহপুঁথি’র (১৯৯৮) পর একটা বড় সময়ের ব্যবধানে ২০১২ সালে ‘আদম’ থেকে কবিতা সংগ্রহ প্রকাশিত হল। বাংলা কবিতার নিবিষ্ট পাঠকের মধ্যে আলোড়ন উঠল, তাঁরা যেন আবিষ্কার করলেন সম্পূর্ণ নতুন এক স্বর। তেরো বছরের একটা ব্যবধান…এই দীর্ঘ নীরবতা কি আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে বজায় রেখেছিলেন?
সুধীর দত্ত- কোনও চিন্তাভাবনা করে বা ভবিষ্যতের প্রস্তুতি হিসাবে এটা আমি করিনি। আমার ভেতর থেকে এই সময় যে কাজ করছিল সেটাকে তুমি কবিতার মৌনতা হিসাবে চিহ্নিত করতে পারো। আমি তখন সরকারী কাজ করছি কবিতা লেখার ‘ক্রিয়েটিভ’ মানসিকতা নিয়ে। ওই কাজকর্মই ছিল আমার কাছে ক্রিয়েটিভিটি। সে-সময় আমি গভীরভাবে পড়াশোনায় নিবিষ্ট ছিলাম।
পার্থজিৎ: আপনার কবিতা পড়লে অনেক সময়ে সেই পাঠের ইশারা- অবশ্যই শিল্পের রূপ ধরে- আমাদের ধরা দেয়।
সুধীর: আমি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়তে ভালবাসি। অ্যস্ট্রোফিজিক্স থেকে কসমোলজি… সমুদ্রবিজ্ঞান থেকে স্থাপত্য, সব পড়তে ভালবাসি… বেদ-উপনিষদ তো আছেই… আমাদের ভারতবর্ষের যে সনাতন ও প্রাচীন চিন্তাধারা সে সমস্ত ওই সময়ে প্রচুর পড়েছি। শুনলে তোমার ভালই লাগবে- জিওলজি, হাইড্রোলজি… এমনকি রিমোট সেন্সিং সিস্টেম নিয়েও আমি পড়াশোনা করতাম।
পার্থজিৎ: এ-প্রসঙ্গ যখন এল তখন বলতেই হয়, ব্যক্তিগতভাবে জানি গ্রামাঞ্চলে স্মোকলেস চুল্লি চালু করার ব্যাপারে আপনার প্রচেষ্টার কথা। গ্রাম-ভারত… ভারতাত্মার যাঁরা অংশ তাঁরা আপনার কবিতায় কীভাবে এসেছে?
সুধীর: আমি আসলে গ্রামের ছেলে, গ্রাম আমার রক্তে আছে। আমি এক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমি চিরকাল মনষ্কতায় একজন আধ্যাত্মিক মানুষ বলতে পারো; আবার বামপন্থায় আমার বিশ্বাস ছিল। দুটোর মধ্যে কোনও বিরোধ আছে আমি ভাবতে পারতাম না। স্টেট সিভিল সার্ভিসে যোগ দেবার পর আমার কাছে এই সুযোগটা এসে যায়। ডায়মন্ড হারবারে পঞ্চান্নটি খাল খনন করবার উদ্যোগ নিই... নেটওয়ার্ক ওফ চ্যানেলস তৈরি করি। বাঁকুড়ায় গিয়ে আমি আদিবাসী মানুষদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হই... আমার কাছে এগুলিই কবিতা; কবিতায় সে কথা এসেছেও। আমি লক্ষ করিনি, কিন্তু বাঁকুড়ার কবিরা... যেমন অনিন্দ্য (রায়), সুদীপ (চট্টোপাধ্যায়) আমাকে ধরিয়ে দেয় কীভাবে বাঁকুড়ার রুখা, লাল-মাটি আমার কবিতায় ঢুকে পড়েছে। আমার কবিতার টেক্সচারের যে আপাত-রুক্ষতা সেটা বাঁকুড়ার ইমপ্যাক্ট বলেই আমি মনে করি।
পার্থজিৎ: আপনার আনন্দ পুরস্কার প্রাপ্তির পরে জয় গোস্বামী একটি চমৎকার কথা বলেন, ‘ওঁর কবিতা সংকেতধর্মী, সংবাদধর্মী নয়।’ এটা আমার খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। লিরিক্যাল কবিতার একটা দাপট তো আছেই। আপনি যে আপনার কবিতার সারফেস- লেভেলে আপাত-রুক্ষতার কথা বললেন... যে বিচিত্র সব ‘রুক্ষ’ বিষয় আপনার মহাকাব্যধর্মী কবিতায় আছড়ে পড়ে... আপনার ভেতর সেগুলির সংশ্লেষণের মাধ্যমে কি আপনি এক বড় ভূখণ্ডকে ছুঁতে চান?
সুধীর: আসলে আমি কিছুই ‘ছুঁতে’ চাই না, কবিতায় কিছুই ‘করতে’ চাই না। আত্মজৈবনিক যদি নাও বলো তবুও বলতে হবে যে এটা আমার যাপিত জীবন। একটা সময় মনে হত এই ব্রহ্মাণ্ড... যা আমি জানি, বা যা আমি জানি না... সবই আমার অন্ন। কবির অন্ন এই ব্রহ্মাণ্ড। স্বতঃ-প্রকাশ হয়ে ওঠে তার সব উপাদান আমার মধ্যে। এর মধ্যে কিন্তু একটা আপাত নৈরাজ্য’ও আছে...
পার্থজিৎ : হ্যাঁ, সে তো আছেই। আমি একে বলি পবিত্র সন্ত্রাস। এখানে একটা প্রশ্ন আছে, এই যে আপনি বললেন ‘আমি’ বা ‘কবি’... এই ব্রহ্মাণ্ড কি সেলফ-ডিজাইন্ড এভাবেই ছিল যে একদিন এমন এক ধী-শক্তি সম্পন্ন ‘চৈতন্য’ তাকে দেখবে? না কি এও এক ধরনের পবিত্র অ্যক্সিডেন্ট?
সুধীর: কবির আসলে কোনও উৎপত্তি নেই। ঈশ্বর এক অর্থে কবি। স্ব-স্থানে থেকে, তাঁর নিত্যতায় থেকে তিনি বহুভাবে লীলায়িত হচ্ছেন। এর পদ্ধতি- কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে চলে যাওয়া। বিচিত্র বিন্যাসে তিনি ছুটছেন। তিনি সব কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বতঃ-নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন। ক্যাওসের মধ্যেও একটা কেন্দ্র... একটি কসমিক-দণ্ড যেন তাঁর হাতে আছে।
পার্থজিৎ: আমি আরও স্পেসিফিক হতে চাইছি...
সুধীর: না, এটা অ্যক্সিডেন্ট নয়। কার্য-কারণ নির্ণয় করতে না-পারলে অ্যক্সিডেন্ট বলা যায়। কিন্তু, এখানে তিনি নিজে বহুভাবে বিকশিত হচ্ছেন। ক্যাওস’টা একটা আপাত বিষয়।
পার্থজিৎ : আপনার কবিতায় আমরা পাচ্ছি, ‘চপ্পলবাহনা দেবী সপার্ষদ চলেছে রণে। / বাজে তুর্য, গালবাদ্য, খোল ও খঞ্জনী... / আর না, ওঠো হে চাকা, ধায় আয়ু, ধাও হে শকট / পৃথিবী শাসন করে ষণ্ড ষাঁড় খোজা ও ধর্ষক,।’ এখানে এক ধরনের মক-হিরোইক অ্যপ্রোচ রয়েছে; এই যে সভ্যতা বা অসভ্যতা তার দিকে আপনি তীর্যক চাহনি ছুড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু, আপনি একটা মহা-কালখণ্ড’কে ছুঁতে চাইছেন। শেষ পর্যন্ত সুন্দরের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন না। এই সুন্দর আপনার কাছে কীভাবে ধরা দেয়?
সুধীর: কিটসের একটি পঙ্ক্তি আছে, ‘ট্রুথ ইজ বিউটি অ্যন্ড বিউটি ট্রুথ।’ একজন কবি এবং একজন যোগীর সুন্দরের অনুভবের ভিন্নতা আছে। তামস’ও সুন্দরের অন্তর্গত। তথাকথিত কালো, অশুভ, মন্দ সবই কবির অনুভবের উপাদান। ধরা যাক, যেমন অনেকে ধরেন, রামায়ণ একটি ‘কাল্পনিক’ বিষয়। তা হলে বাল্মিকীর সাইকি’র মধ্যে রাবণের বীজ আছে। আবার রামের বীজ’ও রয়েছে। বাল্মিকী তো ‘উভয়ের’ই। এই দ্বন্দ্ব থেকে কাব্য এগিয়ে চলেছে। এই দুই বীজকেই তিনি সমানভাবে ‘নারচার’ করছেন। ম্যাকবেথ আপাত-খল চরিত্র। শেক্সপিয়ার তার সমস্ত সম্ভাবনা নিয়েই ম্যাকবেথকে ফুটিয়ে তুলেছেন।
পার্থজিৎ: এবং, শেক্সপিয়র ম্যাকবেথের সম্পূরক উপাদান হিসাবে লেডি ম্যাকবেথ’কে আনছেন...
সুধীর : একেবারেই তাই।
পার্থজিৎ: আমাদের যে দুটি মহাকাব্য আছে, ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’, এক শ্রেণীর আলোচক এদের মধ্যে রূপকার্থের সন্ধান করেন। আরেক শ্রেণী একে কাহিনি হিসাবে গ্রহণ করেন এবং আখ্যায়িকা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। আমি যদি এর পরের ধাপে চলে আসি, মিথ ও মিথের বিনির্মাণ—ধরা যাক ‘সাপ’— বিবলিক্যাল অনুসঙ্গে সাপ তো সব সময়েই টেম্পটেশন ও যৌনতাকে সূচিত করছে। আবার আমাদের তন্ত্রে ‘সাপ’ অন্য বিষয়। আপনি কীভাবে ভাবেন বিষয়টিকে?
সুধীর: যে কোনও জাতির প্রজ্ঞা, দর্শন, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, সামগ্রিক জীবন তা নিহিত আছে সে যুগের মিথে। মিথ আর পুরাণ যদিও এক নয়। যে জাতি যত গভীরে তাকাতে পারবে সে তত বর্তমান’কে সংযুক্ত করবে তার অতীতের সঙ্গে। এই যুক্ত করা মানে কিন্তু প্রাচীন’কে হুবহু ফলো করা নয়। এটা কালচারাল কন্টিনিউয়ম’কে সূচিত করে। কালেকটিভ সাবকনসাসের সঙ্গে একেবারে সাম্প্রতিক যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
পার্থজিৎ: আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি এবং তার বেশ কিছু ক্যান্টো বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হতে শুরু করেছে... আপনি একটি মহাকাব্য রচনায় যুক্ত রয়েছেন। আপনার মহাকাব্যের যে উপাদান, মৌল-লক্ষণ তা নিয়ে যদি কিছু বলেন...
সুধীর: আমি জেনেশুনে একটি ‘মহাকাব্য’ রচনায় যুক্ত থেকেছি। শেষ করেছি। এখন পরিমার্জন করছি কিছু-কিছু। এই মহাকাব্য রচনার বিষয়টা কেন জানি না কিশোরকাল থেকে আমাকে পেয়ে বসেছিল। সব কিছুর কারণ জানা যায় না; এই পেয়ে বসার কারণ’ও আমার জানা নেই। এক যোগ-সাধক একদিন জানতে চাইলে আমি বলেছিলাম আমি ‘মহাকবি’ হতে চাই। তখন আমিও যোগসাধনা করতাম। আমার বলার কথা ছিল- ‘আমি যোগসাধক হতে চাই।’ কিন্তু এই আকাঙ্ক্ষাকেই আমি বহন করছি। আমার কুড়ি-একুশ বছর বয়সে ‘মহেঞ্জদড়ো’ নামে একটি কবিতা লিখি, যার উপরে বয়ান দিই, ‘একটি এক সর্গ মহাকাব্য’। পরববর্তীকে তুমি আমার কবিতা নিয়ে লিখতে গিয়ে যে ‘মহাজাগতিক কামারশালা’র কথা লিখেছো... ঠিকই লিখেছো... জেনে, বা না-জেনে আমি তার মধ্যে পড়ে গেলাম। ‘হ্রেষা ও ক্ষুরধ্বনি’তে ওই যোগীর কথা (ন’দা) আছে। ‘তিনি থাকতেন ডিহি শ্রীরামপুর রোডে।’ ওখানেই থাকতেন তিনি। ‘ঈশ্বরের মহাফেজখানা’ দীর্ঘ কবিতা। কিন্তু, আমার তৃপ্তি হচ্ছিল না; মনে হচ্ছিল আমাকে একটা মহাকাব্য লিখতে হবে। তারপর রাহুল দাশগুপ্ত (কবি) আমাকে মহাকাব্য লেখার কথা বলে। মহাকাব্য সব সময় লিখিত হয়েছে সভ্যতার শৈশবকালে। কিন্তু, এ সময় দাঁড়িয়ে আমি তা লিখব কী করে? হঠাৎ শৈশবকাল থেকে আইডেনটিফায়েড এক চরিত্রের সঙ্গে আশ্চর্যজনকভাবে ইউটিউবের মাধ্যমে আবার ‘দেখা’ হয়ে যায়। মাত্র আঠারো বছর বয়সে তিনি তাঁর বন্ধুকে চিঠিতে লিখছেন, ‘আমি জন্মেছি, আমার জীবনে একটা মিশন ছিল’। কী মিশন! ‘I want to be an embodiment of the past, product of the present and prophet of the future…’
পার্থজিৎ: আপনি কি সুভাষচন্দ্রের কথা বলছেন?
সুধীর : হ্যাঁ… হ্যাঁ… কী আশ্চর্য! তিনটি কাল এক বিন্দুতে অবস্থান করছে। এই সুভাষচন্দ্র আর বিবেকানন্দের কথা ভেবেই আমি উনিশ-কুড়ি বছর বয়সে সন্ন্যাসী হতে গিয়েছিলাম। বেনারসে। বিবেকানন্দ নিয়ে আমি বরাবরই প্যাশনেটলি ইনভলবড… আমি দেখলাম বিবেকানন্দ’র গা’য়ে সামরিক পোশাক পরিয়ে দিলে তিনি ‘নেতাজী’। আবার নেতাজীর গা’য়ে গেরুয়া পোশাক পরিয়ে দিলে তিনিই ‘বিবেকানন্দ’। আমাকে লিখিয়ে নেওয়া হল যেন। আধুনিক কবিতার আঙ্গিকেই ওই ইতিহাস… এর মধ্যে দশ-হাজার বা তারও আগের ভারতবর্ষ রয়েছে… দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পৃথিবী… এই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ কী হবে… এই সব রয়েছে। ইভল আছে, কিন্তু সব কিছু ট্রান্সেন্ড করে পৃথিবী শুভ’র দিকে যাবে।
পার্থজিৎ: আপনি কি বিশ্বাস করেন সে সময় এই রণ, রক্ত, সফলতা থেকে বেরিয়ে মানুষ একটি উত্তরিত অবস্থায় পৌঁছাবে?
সুধীর: এই রণ, রক্ত কিন্তু চাই’ই। এই রণ, রক্তই হচ্ছে সেই দ্বান্দ্বিকতা। এর ভেতর দিয়েই সে সত্যের অভিমুখী হবে। রজগুণের সক্রিয়তা থেমে গেলে কিন্তু পৃথিবী তামসিকতায় চলে যাবে। সত্ত্বগুণ রজ’কে তম’র হাত থেকে রক্ষা করবে। এই তিনটি গুণের খেলাই সৃষ্টি… জগৎ।
পার্থজিৎ: শিল্পের প্রধানতম দু’টি উপাদান যদি বলা হয় তা হলে তা অবশ্যই ‘আনন্দ’ ও ‘বেদনা’। আপনাকে যদি খুব নির্দিষ্টভাবে বলতে বলা হয়, আপনি শিল্পের ভ্রূণের মধ্যে কোনটিকে চিহ্নিত করবেন?
সুধীর: আমার কাছে ‘বেদনা’। ওই যে তিনটি গুণের কথা বললাম, সেখান যখন সাম্য থাকছে তখন কিন্তু ‘সৃষ্টি’ নেই।
পার্থজিৎ: আপনি কি বলতে চাইছেন মৃদু অ্যনার্কি অতীব গুরুত্বপূর্ণ?
সুধীর : খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প-সাহিত্যের জন্ম অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে। কিন্তু, মনে রাখতে হবে এই অস্থিরতা ‘স্থিরতা’কে পাবার জন্য। ওই যে ‘হারাই ক্ষণে ক্ষণ…’।
পার্থজিৎ: আপনার কথার মধ্যে দিয়ে রবীন্দ্রনাথ চলে এলেন। জীবনানন্দ একটি ভাষার ক্ষেত্রে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। রবীন্দ্রনাথ, অবশ্যই তাঁর গান-সহ… না কি জীবনানন্দ… এমন কোনও সংশয়ে আপনি কখনও পড়েছেন?
সুধীর: আমি রবীন্দ্রনাথের উপর জীবনানন্দকে রাখতে পারব না।। জীবনানন্দ আমাদের রক্তাক্ত অস্তিত্বকে দেখাচ্ছেন। তাঁর কল্পনার সমমাপক ভাষা তিনি পেয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও তাপিত ক্ষণে আমি জীবনানন্দ পড়ব না। কিছু না থাকলেও রবীন্দ্রনাথের গান থেকে যাবে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। জীবনানন্দ আধুনিক কবিতা-বিশ্বে এক বিস্ফোরণ; কিন্তু, রবীন্দ্রনাথ এসবের বাইরে… আলাদা।
পার্থজিৎ: আপনার বেশিরভাগ লেখাই লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত; সে অর্থে আপনি লিটল ম্যাগাজিনেরই লেখক। একটি আদর্শ লিটল ম্যাগাজিনের আদর্শ ও ভূমিকা কী হবে, বা জ্বলদর্চির প্রতি আপনার কী বার্তা থাকবে এই সময়ে দাঁড়িয়ে?
সুধীর: লিটল ম্যাগাজিনে সমস্ত প্রকৃত ক্রিয়েটিভ লেখকদের স্থান হওয়া উচিত। লিটল ম্যাগাজিনের প্রবন্ধ সাহিত্য উন্নত হওয়া দরকার। ব্রেন-স্টর্মিং, স্টিমুলেটিভ প্রবন্ধ বেশি প্রকাশিত হওয়া উচিত। এত বেশি কবিতা যে লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হচ্ছে সেটা সম্ভবত ঠিকঠাক সম্পাদনার অভাবে। লিটল ম্যাগাজিন যাঁরা প্রতিভাবান তাঁদের কথা যেমন বলবে, তেমনই কোনও ওভাররেটেড লেখকের পুনর্মূল্যায়ন’ও করবে। জ্বলদর্চি বেশ কিছু ক্রিয়েটিভ কাজ করেছে। শ্যামলকান্তি দাশ'-এর ওপর কাজ তো অসামান্য। এই কাজগুলিই লিটল ম্যাগাজিনের প্রকৃত কাজ।
2 Comments
খুব সুন্দর লাগলো। একটা কথপোকথনের মাধ্যমে অনেক সমৃদ্ধ হলাম।
ReplyDelete"কবির কোনও উৎপত্তি নেই।"
ReplyDeleteঅসাধারণ উপলব্ধির কথা।
কবিতা জন্মায় মহাবিশ্বের নীরবতা ও মানুষের অন্তর্লোকের মিলনে। কবি কেবল সেই সেতু, যিনি শূন্যতা থেকে শব্দের জন্ম দেন।
কবি সুধীর দত্ত মহাশয় কে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই।