জ্বলদর্চি

ধুলোগন্ধের রূপ /সুপ্রভাত মেট্যা



ধুলোগন্ধের রূপ  

সুপ্রভাত মেট্যা 


আলো হও।
আনন্দে ছড়িয়ে দাও খুশি।
গভীর ডানার মেঘে উড়ো অন্ধকার
জল হয়ে গলিয়ে দাও সুখ।
প্লাবন জ্যোৎস্নার হাসি খুঁজে নাও হৃদয় থেকে।
বড় হও, স্বপ্ন এলে তন্দ্রা সরিয়ে সুদূর আকাশে, উদার।
আদরের ভাইকথা লিখে যাও স্নেহে,
সুন্দর গ্রামের ছবি, হলুদ ধানের শিসে ক্ষীর জমে উঠলে, 
তুমি, আহা ফলাও ফসল!
দুগ্ধমনে উড়িয়ে দাও পাতা।
কখনও কবিতা হলে সবুজ সময়, 
ধুলোগন্ধের রূপ তোমার শরীর,
ঘোর শ্রাবণে এসে কাদা হয়ে যাও।
 

ও কৃষ্ণসন্ধ্যার তারা  

ও কৃষ্ণসন্ধ্যার তারা,
তুমি চন্দন কপালে ফোঁটা হয়ে ফুটতেই
রাধিকাকুঞ্জে কেমন চাঁদ নেমে এল!
তুমি কলঙ্কনির্ভর বলবে? ওকে? সই?

ও গোঁসাই শোনো, 
আমিও প্রশ্ননামে, জিজ্ঞাস্যের চিহ্ন হয়ে 
কেমন রাত্রি ধরে আছি!
কিছু কি বলবে?
আমার দু'চোখ অন্ধকার, অশ্রুমেঘের রাশি সুবিস্তৃত 
সংসারের করুনকাহিনী স্থির হয়ে আছে।
কিছু তো বলবে?

ও কৃষ্ণসন্ধ্যার তারা, তুমি শোনো,
তুমি আমার প্রেম, পূর্ব, আদিম মায়ের মাটি-আলো থেকে 
একটি কবিতা এনে দেবে?


অমৃত সরণি 

দৃশ্য শুধু নির্জন দুপুরে,
হৃদয় তোলপাড় করা মেঘ ঝড়ের রূপ নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে।
আকাশ পড়লেই ভেঙে, 
জল হবে সমস্ত দুপুর ও পাড়া।
ভেসে যাবে গ্রাম। নাম ভেসে উঠবে তোমার।

তুমি নিদ্রাহীন চোখে,
সে এক নতুন বধূ, স্বপ্ন ফেরি করবে রাতের বিছানায়।
ম্লান আলো জ্বলে উঠবে নীল।
সোনালী হাওয়া স্বর্গের আভা পেয়ে 
জানলার ফাঁক গলে ঢুকে পড়বে তোমার।
তারপর খুব রাত হয়ে এলে গভীর,
নেয়ে ওঠা মধুর সজলে তোমার পাশবালিশের স্নান,
মৃদু স্বরে জেগে উঠবে; আহা যেন অমৃত সরণির ঢেউ......

🍂


হারানো কথা 

ডালভাত খেয়ে বড় হয় সে।
কালের নদী বেয়ে জল হয় স্রোতের।
ভরাট মাঠে, আঠারো সময়ের বুদবুদ ভেসে ওঠে তার ডুব দিয়ে।
শ্রাবণ রাতে তেষ্টা মেটানোর মাটি কাদা হয়। 
সংসার যাপনে গানিতিক ভুল
হাঁড়ির দূরত্ব রচনা করবে বলে সে একা থাকে। 
সম্পর্ক ফিকে হয়, দূর......
তারপর একসময় বৈবাহিক আলো থেকে দূরে 
হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে যাওয়া ভাবতে ভাবতে সে
কখন অন্ধকার হয়ে যায়।
তার হারানো কথা তখন ফিরে পাওয়া রাস্তার হাত ধরেও
ঘরে আর ফেরে না।


এমনটা ভাবিনি 

যখন কথা হয়,
তোমার সকাল আমাকে দেখে ভালো হয়ে যায়।
আমি কী সুন্দর মেয়েদের গল্প হয়ে উঠি!
সাদা থাকা মানুষের পৃষ্ঠায় লিখে যাই জীবন।
আলোকে কলম ভেবে দেখি,
অন্ধকার লিখে কতটা বৃষ্টির তুমি,
তোমাকে কথা বলিয়ে হালকা করবে বলে
বিকেলের রোদ এসে ছুঁয়ে যায় তোমার দু'ঠোঁট।
অপরাহ্ন পাখির স্বরে ডেকে যায়
বাড়ি ফেরা পাড়ার শিশুরা: "দি, চলে এসো।"

তবু তুমি এলে না! গোধূলির হিম হয়ে বসে থাকলে চুপ।
তারপর অনেকটাই অলস হয়ে এলে বেলা,
মধুসন্ধ্যাকে ঘিরে মৃদু আলোর যে বাতি-
যেন চাঁদ, টিপ ছায়ায় তোমার কলঙ্ক কপালে, দূরে......

Post a Comment

2 Comments

  1. কমলিকা ভট্টাচার্যAugust 31, 2025

    সুন্দর লেগেছে কবিতা গুলো।

    ReplyDelete
  2. Extraordinary use of liquid lanuage. Miles to go

    ReplyDelete