জ্বলদর্চি

ডাচ ইঞ্জিনিয়ার সাইমন ভ্যান ডার মির, সার্ন আর W-Z বোসন/ পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা

বিজ্ঞানের অন্তরালে বিজ্ঞানী ।। পর্ব ― ১৪

ডাচ ইঞ্জিনিয়ার সাইমন ভ্যান ডার মির, সার্ন আর W-Z বোসন 

পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা

মোট চার জাতের বল আছে এই মহাবিশ্বে― মহাকর্ষ, তড়িৎচুম্বকীয় বল, স্ট্রং ফোর্স আর উইক ফোর্স। গাছের আপেল ও পৃথিবীর মধ্যে যে টান, তা গ্র্যাভিটি। ব্রম্ভাণ্ডের যেকোন‌ও দু'টি বস্তুর মধ্যে এই বলের খেলা চলে। সুইচ অন করার সঙ্গে সঙ্গে যে টিভি চলে, পাখা ঘোরে, আলো জ্বলে― তার মূলে আছে তড়িৎ বল ও চুম্বক বল। একসঙ্গে তড়িৎচুম্বকীয় বল। তড়িৎচুম্বকীয় বল যেমন ঠিক করে আমাদের দেহে সমস্ত কণার গঠন, তেমনি মহাকর্ষ নির্ধারণ করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের চরিত্র। আবার পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন নিউট্রন প্রচণ্ড ঠাসাঠাসি করে একটুখানি জায়গার মধ্যে নির্বিবাদে থাকে স্ট্রং ফোর্সের জন্য। আর রেডিয়াম ইউরেনিয়াম থোরিয়ামের মতো কিছু পদার্থ তেজস্ক্রিয় বিকিরণ নির্গত করে উইক ফোর্সের জন্য।

এই চার জাতের বলের মধ্যে একমাত্র মহাকর্ষ বলের কোনও কোয়ান্টাম নেই। বলা ভাল, এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত। যদিও তার নামকরণ করা হয়ে রয়েছে― 'গ্র্যাভিটন'! এ যেন সন্তান জন্মানোর পূর্বে তার অন্নপ্রাশনের মেনু-নাম ঠিক করে রাখা। বাকি তিন জাতের বলের প্রত্যেকের নিজস্ব বিনিময় কণা রয়েছে। এই কণিকা অদলবদলের মধ্য দিয়ে মিথষ্ক্রিয়ার প্রভাব অনুভূত হয়। ফোটনের বিনিময় হয় তড়িৎচুম্বকীয় অভিক্রিয়ার কালে। গ্লুয়ন হাতবদল হয় যখন তীব্র বল ক্রিয়া করে। ফোটন-গ্লুয়ন উভয়ে ভরহীন। অথচ মৃদু বলের মূলে আছে তিন তিনটি ভারি কণা ― ডব্লিউ-প্লাস (W +), ডব্লিউ-মাইনাস (W–) ও জেড-জিরো (Z°)। একটি প্রোটনের চেয়ে গড়ে প্রায় আশি থেকে একশো গুণ ভারী এরা। এ হেন উইক ফোর্সের কণিকা: ডব্লিউ আর জেড বোসন কণা ১৯৮০ সালের আগে পর্যন্ত ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ল্যাবরেটরির চৌহদ্দির মধ্যে ধরা দেয়নি তারা। প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে ১৯৩৩-এ ফিজিক্সের পোপ এনরিকো ফার্মি নিঁখুত ভবিষ্যবানী করেছিলেন এদের। ষাটের দশকে শেলডন গ্ল্যাশো, আবদুস সালাম আর স্টিভেন ওয়েনবার্গ তার সঠিক তথ্য ও তত্ত্ব দিয়েছেন। অথচ এত বছর পরেও অধরা সে!

১৯৫৪-তে সার্ন পথ চলা শুরু করেছিল জেনিভায়। পৌনে তিন দশক বড়সড় আবিষ্কারের সৌভাগ্য তখনও পর্যন্ত ছিল না সার্নের চওড়া কপালে। এমন সময় ১৯৭৯ সালে প্রোটন-অ্যান্টিপ্রোটন কোলাইডর তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় সার্ন। আগের সুপার প্রোটন সিঙ্ক্রোটোন (SPS) কণাত্বরকের ক্ষমতার উন্নতি ঘটিয়ে। এসপিএস-এর ৪৫০ GeV থেকে ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ৫৪০ GeV করা হয় প্রোটন-অ্যান্টিপ্রোটন কোলাইডরে। দুবছর পর ১৯৮১-তে প্রথম প্রোটন-অ্যান্টিপ্রোটন মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটানো হয়। আরম্ভ হল দুটো ভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট― ইউ এ ওয়ান (UA-1) আর ইউ এ টু (UA-2)। পাতালে এমন পরীক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল― মৃদু বল (Weak Force)-এর বিনিময়কারী ডব্লিউ কণা আর নিস্তড়িৎ জেড কণার অনুসন্ধান। ল্যাব‍রেটরিতে তাকে হাতেনাতে ধরতে প্রকৃতির দিকে বেশ কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন পণ্ডিতগণ। ।  
      
কিন্তু সফল হওয়ার সম্ভাবনা কতখানি? ব্যাপারটা খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার মতো এত সহজ নয়। বরং হাজারটা খড়ের গাদায় একটি মাত্র সূঁচ খোঁজার সামিল! আর এমন দুরূহ কাজে আদাজল খেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ল্যাবে লেগে রইলেন সার্নের ভবিষ্যতের ডিরেক্টর-জেনারেল (১৯৮৯―১৯৯৩) কার্লো রুবিয়া এবং সার্নের ইঞ্জিনিয়ার সাইমন ভ্যান ডার মির। এসপিএস  অ্যাক্সিলেটরকে প্রোটন-অ্যান্টিপ্রোটন কোলাইডরে রূপান্তরিত করেন রুবিয়া। ভ্যান ডার মির ব্যস্ত রইলেন স্টোকাস্টিক কুলিং প্রযুক্তি (Stochastic Cooling Technology) উদ্ভাবনের নেশায়। এ হেন প্রযুক্তি ব্যতীত কোলাইডর অসম্পূর্ণ। 
   
দুজনের কঠোর অধ্যবসায়ের ফসল হাতেনাতে পাওয়া গেল দুবছর পর। ১৯৮৩-তে। ডব্লিউ আর জেড কণাদ্বয়কে চাক্ষুস করলেন তারা। ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসের তিরিশ তারিখে ইউ এ ওয়ান (UA-1, পুরো নাম Underwater Area-1) যন্ত্রে প্রথম ধরা পড়ল জেড-জিরো বোসন। অতি অল্প কাল তার স্থায়িত্ব। খুব শীঘ্র সে ইলেকট্রন আর পজিট্রন জোড়ায় ভেঙে যায়। এর পরেও ডব্লিউ-জেড বোসন কণিকা পর্যবেক্ষণের জন্য ১৯৮১ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত দীর্ঘ বারো বছর এসপিএস কণাত্বরকে প্রোটন-অ্যান্টিপ্রোটন সংঘর্ষ ঘটানো হয়।
      

অবশ্য আবিষ্কারের পরের বছর ১৯৮৪ সালে কার্লো রুবিয়া'র সঙ্গে সাইমন ভ্যান ডার মির'কে ফিজিক্সে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে এ হেন সাইমনের জন্ম ১৯২৫ সালের নভেম্বর মাসের চব্বিশ তারিখে। এক সম্ভ্রান্ত শিক্ষক পরিবারে। পিতা হাইস্কুল শিক্ষক পিটার ভ্যান ডার মির। শিক্ষিত শিক্ষক পরিবার থেকে আগত তাঁর জননী জেৎস্কে গ্রোয়েনেভেল্ড। তাদের চার সন্তানের একমাত্র পুত্র সন্তান তিনি, সাইমন ভ্যান ডার মির। এমন পরিবেশে পড়াশোনা সর্বোচ্চ প্রাধান্য পেতে বাধ্য। ইতিমধ্যে ইউরোপের আকাশ ঘনমেঘে আচ্ছন্ন। ১৯৩৩-এ জার্মানিতে স্বৈরাচারী হিটলারের অভ্যুত্থান ঘটে। ১৯৩৯-এ শুরু হয়ে গেল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এই মহাযুদ্ধকালে নেদারল্যান্ডস অধিগ্রহণ করে বসল জার্মানি। কব্জা করে নিল সমস্ত কলেজ ইউনিভার্সিটি। পড়াশোনা লাটে উঠল। উচ্চ শিক্ষার পথ বন্ধ হয়ে যাবার জোগাড়। অগত্যা হেগ শহরে একটি জিমনেশিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাইমন। সেখানে শুরু হল লেখাপড়া। ১৯৪৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগে গ্র্যাজুয়েট হলেন। কলেজের চৌহদ্দি পেরোনোর পরে আরও দুটি বছর জিমনেশিয়ামে অতিবাহিত হয় তাঁর। এবার হিম্যুনিটি অধ্যয়ন আরম্ভ করলেন। এ সময় থেকে ফিজিক্স এবং টেকনোলজির প্রতি বিশেষভাবে অনুরক্ত হয়ে পড়েন। ইলেকট্রনিক্সে বিশেষ ব্যুৎপত্তি গড়ে ওঠে তাঁর। বাড়িতে বিভিন্ন গ্যাজেটস ও অনেক ডেমনস্ট্রেশন প্রস্তুত করেন। সহযোগিতার করলেন প্রিয় মাস্টার মশাই ইউ পি লেলি। 

১৯৪৫ থেকে জনজীবন স্বাভাবিক হল। সেবছরই Delft University of Technology-তে ভর্তি হয়ে গেলেন তিনি। বিষয় টেকনিক্যাল ফিজিক্স। প্রযুক্তিবিদ্যার বিভিন্ন ধাপে অতীব পারদর্শীতা অর্জন করেন সি জে ডি এম ভার্হাগেন-এর অধীন।  ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পার্টিকেল অ্যাক্সিলেটর শাখায় তুখোড় বিশেষজ্ঞ হিসাবে কৃতিত্বের নজির গড়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন। সেটা ১৯৫২ সাল। 

ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ণ হলে পর এক্সপার্ট হয়ে যোগ দিলেন ফিলিপস রিসার্চ ল্যাবে। সেখানে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের উপরে হাই-ভোল্টেজ ব্যবস্থাপনায় হাত পাকিয়ে ফেললেন। ইলেকট্রনিক্স হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যান জ্ঞান। ১৯৫৬-তে হঠাৎই চলে গেলেন সুইজারল্যান্ড। বিপুল অর্থ ব্যয়ে জেনেভায় তখন সদ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সার্ন (European Organization for Nuclear Research) গবেষণাগার। ল্যাব‍রেটরির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কাজে যোগ দিলেন। সার্নে আন্তর্জাতিক আবহাওয়ার সঙ্গে সত্যিকারের পরিচয় ঘটল তাঁর। নিজেকে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিলেন বিভিন্ন প্রোজেক্টে। প্রধানত টেকনিক্যাল ডিজাইন বিষয়ে। ১৯৬০ সাল নাগাদ পৃথক অ্যান্টিপ্রোটন কণার স্রোত তৈরিতে মনোনিবেশ করলেন। এর ফলস্বরূপ ১৯৬১-তে তৈরি হল 'ভ্যান ডার মির হর্ন'। উচ্চ কারেন্ট সম্মৃদ্ধ ফোকাসিং যন্ত্র। নির্দিষ্ট সময়াবকাশ অন্তর অন্তর ফোকাসিং-এ সক্ষম। লক্ষ্য নিউট্রিনো কণিকার স্রোতের তীব্রতা বাড়ানো। ১৯৬৫ সাল অব্দি এতে এতটা সময় ব্যস্ত রাখলেন নিজেকে যে অন্য কোনও গবেষণায় খুব একটা মনোযোগ দিলেন না। তারপর দ্বিতীয় 'জি-২' (g-2) এক্সপেরিমেন্ট দলের ছোট্ট গ্রুপে যোগ দিলেন। তৈরি করলেন ছোট্ট স্টোরেজ রিং― যা ল্যাবে পরীক্ষার সব কাজে লাগে। এটা শুধু এক্সপেরিমেন্টের সকল কাজে লাগে তা না, পরবর্তী সময়ে অ্যাক্সিলেটরের জটিল ও কঠিন নীতি প্রনয়নে সাহায্যও করেছিল। উচ্চ শক্তির ব্যবহারিক কণাত্বরক উদ্ভাবনের পথে সঠিক দিশা দেখায়। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত আরও বেশি করে টেকনিক্যাল গবেষণায় নিযুক্ত হয়ে পড়লেন। প্রথমে ইন্টারসেকটিং স্টোরেজ রিং (Intersecting Storage Ring বা ISR) এবং পরে ৪০০ GeV  পর্যন্ত শক্তি সম্পন্ন এসপিএস কণাত্বরক যন্ত্রে চুম্বকের পাওয়ার সাপ্লাই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। 
   
এর মাঝে ১৯৬৬ সালে একবার সুইস পর্বতমালা ভ্রমণে গেলেন বন্ধুদের সঙ্গে। শ্বেতশুভ্র বরফ চূড়ায় যেন প্রেমের রক্তিম আলো এসে পড়ল। দেখা হল ক্যাথারিনা এম কুপম্যান-এর সঙ্গে। হৃদয়ে গোপন অনুভূতি সিঞ্চিত হচ্ছিল যেন। দুর্নিবার সে আকর্ষণ। অমোঘ তার টান। ঠেলে দূরে সরানো দায়। এত অবাধ্য মন। অল্প সময়ের পরিচয়ে গাঢ় হয় বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব প্রনয়ে পরিনত হতে বেশি সময় নিল না। অল্প সময়ের ব্যবধানে দুজনে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন। দুহাত চারহাত হল। শুভ পরিনয়ে আবদ্ধ হলেন তারা। আরও রঙিন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠল তাদের দাম্পত্য জীবন। ভূমিষ্ঠ হল দুই সন্তান― ১৯৬৮ সালে এস্থার আর ১৯৭০-এ ম্যাথিজস্। 
      
তারপর এল সে-ই বহু কাঙ্ক্ষিত সন্ধিক্ষণ। উদ্ভাবন করলেন স্টোকাস্টিক কুলিং সিস্টেম। যার সাহায্যে কণাত্বরকের বিছানো নিশ্ছিদ্র জালে ধরা পড়ল ডব্লিউ বোসন আর জেড-জিরো বোসন কণিকা। ১৯৮৪ সালে ঘোষিত হল ফিজিক্সে নোবেল পুরস্কার। ডব্লিউ বোসন আর জেড-জিরো বোসন কণিকা আবিষ্কারের জন্য নোবেল জিতে নিলেন তিনি― ডাচ বিজ্ঞানী সাইমন ভ্যান ডার মির; ইতালিয়ান কার্লো রুবিয়া'র সঙ্গে। আর্নেস্ট লরেন্স-এর পর তিনিই একমাত্র দ্বিতীয় অ্যাক্সিলেটর ফিজিসিস্ট যিনি নোবেল পেয়ে বিরল কৃতিত্বের নজির গড়লেন। নোবেল প্রাপ্তির বাইরেও ১৯৮৪-তে তিনি রয়্যাল নেদারল্যান্ডস একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স-এর সদস্য হয়েছিলেন। 

তারপর তাঁর জীবন খুব সহজ সরল ভাবে এগিয়ে চলল। নোবেল জয়ের পরেও তিনি মাটির মানুষ। আদ্যোপান্ত নিপাট ভদ্রলোক। ১৯৯০ সালে সার্ন থেকে অবসর। সার্ন এসময় লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডরের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ব্রহ্মাণ্ডের শেষতম মৌলিক কণিকা 'ঈশ্বরকণা'র অস্তিত্ব প্রমাণে উঠে পড়ে লেগেছে। ঈশ্বরকণার খোঁজে তোলপাড় চলছে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশক। পৃথিবী জুড়ে সাজো সাজো রব তখন। কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গেছে। এমন সময় সার্নে নেমে এল শোকের ছায়া। 

২০১১ সালের চৌঠা মার্চ পঁচাশি বছর বয়সে জেনেভায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ডাচ বিজ্ঞানী সাইমন ভ্যান ডার মির― আধুনিক কণাবিজ্ঞানের একজন প্রকৃত অসাধারণ দানব। আশ্চর্য উদ্ভাবনী ক্ষমতার অধিকারী। তাঁর সহ-নোবেল যোদ্ধা বিজ্ঞানী কার্লো রুবিয়া'র উপলব্ধি― 'আমার কাছে এটা খুব গর্বের এবং সম্মানের যে আমি তাঁর সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল প্রাইজ ভাগ করে নিয়েছি।'
তিনি আরও বলেন― 'তিনি একজন সত্যিকারের অসাধারণ মানুষ। তাঁর মস্তিষ্ক প্রসূত ধারণাগুলি ছিল একদম স্বতন্ত্র আর সকলের কাছে তা খুব সহজবোধ্য।' 
   
কণাবিজ্ঞানে তাঁর বিশাল অবদান ভোলার নয়। ইলিনয়ের ফার্মিল্যাবের টেভাট্রন কণাত্বরকে এখনও তাঁর উদ্ভাবিত কুলিং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা আর জাপান আবারও একটি ভ্যান ডার মির প্রযুক্তি 'ম্যাগনেটিক হর্ন' ব্যবহার করছে। নিউট্রাল নিউট্রিনো কণা পাকড়াও করতে। এ হেন নিউট্রিনো কণার স্রোত লক্ষ নিযুত কোটি সংখ্যায় আমাকে-আপনাকে-মায় পৃথিবীসুদ্ধ মানুষকে, এমনকি পৃথিবীকেও এফোঁড়-ওফোঁড় করে চলে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। অথচ তার আঘাতের সামান্যতম আঁচড় কারও গায়ে লাগছে না। বলা ভাল, বোধগম্য বা অনুভূত হচ্ছে না। স্ক্যান মেশিন অথবা জেরক্স মেশিনে স্ক্যান করার সময় চোখ ধাঁধানো যে আলোর আনাগোনা, যা কিনা সাদা কাগজে রঙ-বেরঙ আঁচড় কাটতে সিদ্ধহস্ত; তাঁর প্রযুক্তি 'ভ্যান ডার মির স্ক্যান টেকনিকস' বর্তমান সময়ের আশির্বাদ। সমকালীন সমাজে আজও তাই বড্ড বেশি প্রাসঙ্গিক তিনি। বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে তাঁর আবিষ্কার। এ হেন মহান বৈজ্ঞানিককে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম আর অকুণ্ঠ ভালোবাসা জানাই।

পেজ-এ লাইক দিন👇
আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments