জ্বলদর্চি

সুকান্ত সিংহ


সু কা ন্ত  সিং হ 

কুবোপাখির গান



আমাদের ঈশ্বর দুধিলতা হতে চাইছেন
আমাদের ঈশ্বর নৌকা হতে চাইছেন
আমাদের ঈশ্বর ঝিঁঝিপোকা হতে চাইছেন 
আমাদের ঈশ্বর বসুধারা হতে চাইছেন
আমাদের ঈশ্বর আচমন হতে চাইছেন
আমাদের ঈশ্বর অন্ন হতে চাইছেন

আমরা শুধু পাপচোখে দেখে ফেলছি

মৃতের রেশন খেয়ে হেঁটে যায় সফল মানুষ



পাখিদের পালকে লেগে যাচ্ছে
কয়লার গুঁড়ো চিনিকলের ধোঁয়া
ডানা ভারী হয়ে এলে তারা ঝেড়ে নেয়
ধুলো ধোঁয়া টাওয়ার হাইরাইজ

ঝাড়তে ঝাড়তে ঝাড়তে ঝাড়তে
কখন অজান্তে খসে পড়ে ডানার কম্পাস

যতক্ষণে জানতে পারে 
ততক্ষণে পেঁচিয়ে ধরেছে ঘুড়ির সুতো



ইন্দুবালার বিড়াল সারাদিন ঘরে ফেরেনি
সরাতে ভাত পড়ে আছে দুপুরে থেকে
মাঝে মাঝেই ইন্দুবালা উঠে দেখছে
দরজাটা আড়-কপাট করা আছে কি না,
বন্ধ থাকলে যদি ঢুকতে না পারে?
দিন ঢলে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা ঢলে রাত হয়ে গেল
মনে কু ডাকছে
ভাত পড়ে আছে সরাতে
ভাত পড়েছিল থালায়

একাত্তরে ছেলে

আজ কি তবে বিড়াল?



-- ভয় লাগছে ?
-- হ্যাঁ।
-- আঙ্গুলটা ধরে থাক। আর একটা মাঠ পেরুলেই পৌঁছে যাব।
-- এখনো একটা মাঠ! তুমি যে বললে কাছেই?
-- এই দ্যাখ না, আর একটু। পা চালা।
-- পা ব্যথা করছে।
-- আর একটু।
-- জলতেষ্টা পাচ্ছে।
-- এই এসে গেলুম।
-- তোমার খিদে পাইনি?
-- ঘরে গিয়ে খাব। গরম ভাত, আলু ভাতে।
-- না আলু ভাতে নয়।
-- তুই তো ভালবাসতিস?
-- বেগুন পোড়া।
-- আচ্ছা, বেগুন পোড়া। লঙ্কা নিবি?
-- একটু।
-- পেঁয়াজ?
-- কুচোনো।
-- সর্ষের তেল?
-- হুমম।
-- কতটা ভাত খাবি?
-- অনেক, এই এত্তোটা। তুমি?
-- আমিও।
-- লঙ্কা নেবে?
-- একটু।
-- পেঁয়াজ?
-- কুচোনো।
-- সর্ষের তেল?
-- হুমম।
-- তাহলে পা চালাও। আরেকটা মাঠ পেরুলেই পৌঁছে যাব।
-- এখনো আরেকটা মাঠ! তুই যে বললি কাছেই ?



জলভরণের দৃশ্য আঁকছে নওলকিশোর
ড্রইংরুমের পূর্ব দিকের দেওয়ালে থাকবে
নীচে একটা মৃদু আলোর টেবিলল্যাম্প
ল্যাম্পের পাশে বটের বনসাই

পটুয়াপাড়ায় এখন দুপুর

-----












Post a Comment

2 Comments

  1. সহজ সরল ভাষায় আত্ম‌উপলব্ধি। পড়ে ভালো লাগলো।

    ReplyDelete
  2. মোহময় ভাষায় আশ্চর্য সুন্দরতা

    ReplyDelete