জ্বলদর্চি

নীপবীথি ভৌমিক


নী প বী থি  ভৌ মি ক


মাছ
 
ঠুকরে ঠুকরে ওঠে মাছ
  আমি টোপ দিয়ে রাখি।

  মনের ‌ভিতরে যে সরোবর আছে
 সেখানে কতশত প্রজাপতি জন্ম নেয় মাছ জন্ম    
    নিয়ে...

    দর্পণে ফুটে ওঠে প্রতিবিম্ব। আমার।
       টুকরো টুকরো আলো ভেঙে
        ছিটকে পড়ে মুখোশের ছুরি

  এসব আর কিছুই না আসলে,
    নিজেই যখন শিকারি, মুখোমুখি বসে থাকি
       আত্ম - শিকারের।


হে দেহ

আবার নীরব হও,হে দেহ তুমি,
শরীর জুড়ে যত সুখ, যত রহস্যের মায়ামৃগ…
নীরব হয়ে বস। ছুঁয়ে থাক বরং আমাদের প্রতি জন্মের
আশ্চর্য মৃত্যু নদী;

হে দেহ ! আবার নীরব হও তুমি।
ছাই ওড়া পড়ে থাকা খই ফুল চিনিয়ে দেবে তোমায়
ঠিক, জীবন শেষের জীবন-অন্তর।
আমার বাড়ি
 
চোখ বন্ধ করে রেখেছি, চোখের আরাম বুঝে।
  শব্দ ঢোকে না কানে, সেতো অনেক দিন !

    তবে চোখে দেখি। দৃশ্য থেকে নয়!
  দৃষ্টি দিয়ে। শব্দ শুনি। আওয়াজ শুনে নয়।
    হৃদয় দিয়ে।

   আমার মায়ের নাম ভারতী
    পিতা রহমত শেখ, ভাই তেনজিং, বোন বর্ষা,
    ওকে সবাই বর্ষ নামেই চেনে।
        আর বাড়ির নাম ভারতবর্ষ।

   কাকে হত্যা করবে তুমি রাষ্ট্র আজ?
   আমার বাবাকে না মাকে ? না আমার বাড়িটাকে?

   বরং হত্যা করব আমি তোমাকে। আমি সদর্পে 
   বলব, আমি দেশদ্রোহী !  ধিক ধর্ম ধিক!
   ধিক এ রাষ্ট্র ধিক !

     আমি দেশদ্রোহী। আমার বাড়ির নাম ভারতবর্ষ।
       আর রক্তের রং ভালোবাসা।


পরিচয়

যেভাবে সন্ধ্যা নামে মেঘের গোপনে, ঠিক সেভাবেই আমাদের পরিচয়।

   দিন ছুঁয়ে ছুঁয়ে জেগে থাকা বেলার গান,
গান ছুঁয়ে ভেসে আসা গভীর থেকে গভীর রঙের শূন্যতা...
  মিশে যায় সব। বিহঙ্গ আর বৃক্ষের আকাশে।

  অন্তসলিলা নদী জেগে তো ওঠে এভাবেই !
মন খুলে বসে থাকা আমি আর আমরা
  পরিচয়ে বাঁধি নিজেদের,  পরিচয়হীনতার 
    অনিবার্য ঠিকানায়।

অন্ধকার
 
সবকিছুই অন্ধ আলোয়  ঘটে যায়!
  এই ঘরের ভিতরে ঘর, তারও ভিতর আরো কিছু ঘরকথা...
  কোথাও নেই তো আকাশের উদার আলো মাখা রং ছবি!

    মাথার ভিতর ভোঁ ভোঁ করে উড়ে চলে সব
        ভাঙা ডানাওয়ালা উড়োজাহাজের দল...

      গোলা বারুদ নিয়ে
       কারা যেন চর্চায় বসে স্বাধীনতার গলা টিপতে

    ঘরের ভিতরে ঘর। বহু ঘর,
    ভাগ থেকে  টুকরো টুকরো 
       সংঘ থেকে একাকীত্ব...
     
    এতকিছু ঘটে গেল আজ একজন্মের ঘরে।
--------

Post a Comment

2 Comments