অ র্ণ ব প ণ্ডা
দেবতা
কৃষ্ণ-অঙ্গ রাই-অঙ্গে হেলিয়া রয়েছে।
প্রাচীন মন্দির কিন্তু পরিচ্ছন্ন তার চারপাশ।
মহোৎসবে এসেছে দেশ,ভিখিরি ও কাঙাল,রাখাল।
মাটিতেই সারসার বসেছে সবাই।
ছোট বড় পাত্র নিয়ে ছোটাছুটি করছে লোকজন
অন্ন অন্ন!বহুস্বর চিৎকারে
ভরে গেছে মন্দির-প্রাঙ্গন।
মাগুর
কী মাছ দেখালে তুমি,জেলেবধূ,হাঁড়ির ঢাকনা তুলে?
মুঠোভরতি চিকন মাগুর।
সবে সন্ধে হয় হয়,অফিস-ফেরত কিছু সহাস্য পুরুষ
অর্ধবৃত্তে দাঁড়িয়েছে বধূটিকে ঘিরে।
ভেতরে কোথাও যেন জ্বলে ওঠে লো-পাওয়ার বাল্ব।
সহজে নেয় না কেউ,ঘুরে ঘুরে
মাগুর,বধূর হাতে দেখে শুধু ক্রেতার সমাজ।
লোহা
লোহার বলের মতো বোবা ক্রোধ
মাটির ওপর দিয়ে গড়িয়ে আসছে।
দুপুরে,খেলার মাঠে বালিকা বিভাগ
সেই বল তুলে নিচ্ছে হাতে।
তারপর কিশোরীরা,শরীর উগরে একে একে
ছুঁড়ে দিচ্ছে রুদ্ধ চিৎকার
লৌহ বল নিক্ষেপ করতে করতে
সূর্য দিগন্ত পেরিয়ে যায়
মনে মনে
ডুবুরি জলের নীচে চলে যাচ্ছে মাঝে মাঝে।তিনকোণা টিনের পাত্রে
তুলে আনছে কাদামাটি,পচা পাতা,ঝিঁঝিমাখা ঘন জলঝাঁঝি।
কিন্তু সোনা কই?সোনা?জলের কিনার ঘেঁষে দাঁড়িয়েছে এ গ্রামের
লোকজন,বউ ঝি ও কিছু বয়স্কারা।ডুবুরির হুঁশ নেই কোনও।
জলের তলায় গিয়ে বাইরের কোনও শব্দ স্পষ্ট শোনাও যাচ্ছে না।
সে কেবল মনে মনে খুঁজে যাচ্ছে সোনা,যে সোনায়
সামান্য শরীর-স্পর্শ আর ঘন ঘন ভুলে যাওয়া বধূটির মন লেগে আছে!
পাথর
এই পেপারওয়েট একটা সামান্য পাথর।
হাতের তালুর মাপে ধরে যায়।
বালিভরতি ট্রাক থেকে অকস্মাৎ বেরিয়ে এসেছে
নদীগর্ভ ছিল একদা। কোন নদী?
কাঁসাই? সুবর্ণরেখা?
কখনও গ্রীষ্মের দিনে লিখতে লিখতে স্পর্শ করি তাকে
কপালে ঠেকাই। ঠোঁটে ও চিবুকে ঘষি।
ঘষতে ঘষতে টের পাই
এই দেশ,ছুঁয়ে আছে নদীমাতৃক।
------
4 Comments
অসামান্য কবিতাগুচ্ছ। কবির জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দ।
ReplyDeleteঅলংকরণ মানান।
সুন্দর শব্দবন্ধ। ভালো লাগলো।
ReplyDeleteঅসামান্য বললে কম বলা হয়,,আপাতক্ষুদ্র বিষয়ের ভেতর মহত্তম উপলব্ধির সুন্দরতম প্রকাশ একজন দক্ষ শিল্পীর পক্ষে সম্ভব,,,,
ReplyDeleteওপরের মন্তব্যটি নিশীথ ষড়ংগীর,,,,
ReplyDelete