অ রি ন্দ ম প্র ধা ন
গ্রাম
ধানের শব শুয়ে আছে এক এক ভঙ্গিমায়
মাঠের পর মাঠ
চাদরের আল ধরে ভেসে ওঠে সীমা
যে যার আড়ি পাতে প্রাচীন গোলাঘরে
হেমন্তের শেষ বেলায় চাষিবউ খড় বাঁধে
গাদার ভিতর ছুঁচ হয়ে পড়ে আছে
প্রতিশ্রুতি
রাবণের গণ্ডি
মা প্রায় প্রতিটি তিথি ধরে পা ফেলে
পাঞ্জি দেখে স্নানে যায়
আহারে থাকে দুধ-সাদা ব্যঞ্জন...
কৃষ্ণ ঝোলার কাঠি গুনতে গুনতে
অবলীলায় পেরিয়ে যায় সংসার সরোবর।
শূন্য বিষাদগ্রস্ত হাতে রাবণ
সীতার মুঠি ধরে টানতে টানতে
একটা সরু মুখওয়ালা বোতলের ভিতর
আটকে রাখে সমস্ত ধর্ম-জীবন
মা ধর্মভীরু ছিল ঠিকই
কিন্তু আজ পর্যন্ত মহাভারত বুঝল না বলে
রাবণের গন্ডির মধ্যেই থেকে গেল
একটা অহিংস লক্ষণরেখা।
প্রাচীন ভাস্কর্য
আমাকে দিয়ে কিছু লিখিয়ে নিলে
স্বধর্ম-বিধর্ম-জাতপাত কিছুই মানলে না
ভেদাভেদের ধুলো সরিয়ে গড়ে তুললে
কবিজন্ম
কাঁকড়া গর্তে বাস করে সাপের সন্তাপ
প্রতি রাতে প্রাচীর তোলা আঙুল ভুলে গেছে
বিষাদের ছায়া
শেষ কবে কবিতা হয়েছিলে তুমি?
আমি কালিদাস--গাছের ডাল, কাস্তে, বসার ভঙ্গি...
কোনো কিছুই মনে রাখিনি
কবিতার ভাষা খুঁজতে এসে
তোমাকে পেলাম প্রাচীন ভাস্কর্যে ।
মন্দারমণি
সী-বীচে এতো হরিণ একসাথে দেখিনি কখনো
জ্যোৎস্নাকুচি ঘিরে ধরছে তাদের
বালির শস্য হাতে নিয়ে ছুটছে হরিণ
খাঁ খাঁ বীচে মরূদ্যান সরিয়ে ধেয়ে আসছে ঢেউ
আঁচলপাতা হরিণীর বুকে নীল ঢালছে কেউ
কেউ বুক থেকে হাত উঠিয়ে চাঁদে চলে গেল
চরকাকাটা দেবী আঁচলের গিঁট খুলে
সমস্ত জ্যোৎস্নাকুচি ছড়িয়ে দিল হরিণ-শরীরে
ঢেউ উঠে ভেঙে যায় হরিণীর চরে...
এতো চাঁদ! এতো জ্যোৎস্না!
বালির দেশে মায়াবী হরিণ
সবকটি মাছ চড়ে বসে মলয় পাহাড়ে
হরিণ চোখে বিদ্ধ করছে ঢেউয়ের নীল
পূর্ণিমা যে কেন আসে মন্দারমণির শরীরে
তরঙ্গ তুলে ডুবে যায় ছুঁড়ে দেওয়া ঢিল।
নদীবাঁধ
আমরা একদিন নদীর পাড়ে ঘুরতে যাই বাইকে চেপে
কাঁধে হাত, হাতে সম্পর্ক রেখে। পাড় বরাবর অনেকটা
চলে যেতে থাকি যেখানে ছিল পালানোর খিড়কি,
খোলামেলা পাড় ও ঘন ঘন ধেয়ে আসা গ্রীষ্ম বাতাস
জোয়ারের সময় যে মাছগুলি জলের সাথে পাড়ে
উঠে এসেছিল তাদের একঘরে করে জল সরে গেছে
এখন তারা পাড়ের শব
ঠিক এই কারণে আমরা আর বেশিদূর এগোইনি
প্রবেশের রাস্তা থাকলেও প্রস্থানে আড়াল নেই বলে
নদীবাঁধ আজও ভাঙতে থাকে, ভাঙতেই থাকে...
পড়ে থাকে শুধু চাকার দাগ
------
4 Comments
sandip kanjilal
ReplyDeleteহৃদয় ছুঁয়ে গেলো । বেশ ভালো ।
সব গুলিই ভাল। রাবণের গন্ডি বেশ।
ReplyDeleteValo laglo
ReplyDeleteপড়লাম।
ReplyDeleteভালো লাগলো