জ্বলদর্চি

প্রতাপ সিংহ



প্র তা প  সিং হ

চলে গেলেন প্রাণপ্রিয় কবি প্রণবদা    

প্রাণের মানুষ প্রিয় কবি প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়(জন্ম: ১৪-১০-১৯৩৭, মৃত্যু: ২২-০৫-২০২০) আজ আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেলেন। কত স্মৃতি ও সান্নিধ্য জুড়েই তিনি সঙ্গে আছেন, থাকবেন আমৃত্যু। মাঝে মাঝেই ফোনে কথা হতো, বেশ কিছুদিন ধরে শরীর ভালো যাচ্ছিল না।বড় অস্ত্রোপচার হলো, কিন্তু মনের জোরেই এ বছরের বিশ্ববাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি উৎসবে(হলদিয়াতে)  গিয়েছিলেন।  সম্পাদক শ্যামলদাকে(কবি শ্যামলকান্তি দাশ)  আগেই  বলে রেখেছিলেন যে আমাকে যেন একই রুমে রাখা হয়।সেখানেও যে গান কবিতা আড্ডার স্মৃতি সেগুলো কেবলই মনে পড়ছে। তরুণ কোনো কবির কবিতা পড়লে কী চমৎকার পাঠ প্রতিক্রিয়া দিতেন। পঞ্চাশের দশকের কবি অথচ কী চিরনতুন চিরসবুজ তাঁর লেখাগুলো।
কৃত্তিবাসের প্রায় জন্মলগ্ন(সম্ভবত দ্বিতীয় সংখ্যা) থেকেই লিখেছেন, বড় সরকারি আধিকারিকের দায়িত্ব সামলে,ব্যক্তিজীবনের কত শোক ঝড়-ঝঞ্ঝাকে সঙ্গী করে নিরবচ্ছিন্ন থেকেছেন নিমগ্ন পাঠে।কত অসংখ্য সমালোচনা ব্লার্ব তাঁর মন ও মননে ঋদ্ধ হয়েছে। কতদিন আগে বইয়ের দোকানের শো-কেসে একটি বই দেখেছিলাম, নাম - 'শো-কেসের ফুলবাবু ',তারপর সেটি সংগ্রহ করে পড়া,এরপর 'জল,তবু দগ্ধ-করা', কী আশ্চর্য সব নাম আমি তাতেই বুঁদ হয়ে যাই, এভাবেই একে একে 'এসো হাত ধরো','এত মায়া,এত মোহ' বা 'কেমন আছে এই পৃথিবী  বইগুলো মুগ্ধ হয়ে পড়েছি। অসাধারণ ছন্দবোধ, চমৎকার ছড়াগুলো,কিন্তু প্রণবদার ছড়াগুলো নিয়ে সেরকম কোনো কাজ হয়নি। আশা রাখি একদিন হবে।
খেতে ভালবাসতেন,তাঁর সঙ্গে আড্ডাতেও কত কী শেখা যেত।সংগীতশিল্পী জয়ন্তী সরেন আমি ও প্রণবদা একদিন তো রবীন্দ্র সংগীত থেকে ম্যাজিকেও মেতে উঠলাম। আমার লেখাগুলোকে নিয়ে একটা চার ফর্মার কাজ চলছিল, বলেছিলেন একটা রিভিউ লিখবেন, জীবনে অনেক কিছুই প্রাপ্তি হয় না,আমিও বঞ্চিত হলাম।হাজার মানুষের ভিড়ের মধ্যেও শুনতে পাচ্ছি এখনো প্রণবদার সেই কণ্ঠ,আমাকেই খুঁজছেন  --- প্রতাপ কোথায় আছ?
আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া তাঁর কাছ থেকে। 
--------

Post a Comment

2 Comments

  1. সন্দীপ কাঞ্জীলাল
    জলদর্চির অভিনব উদ্যোগ কে সেলাম৷।
    প্রিয় কবিকে জানাই আমার প্রণাম ।

    ReplyDelete
  2. সত্যিকথা বলতে প্রণব কুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতা বা লেখা আমার পড়া নেই। সেদিক থেকে প্রতাপবাবুর এ লেখা আমাকে খুব উপকৃত করেছে। ধন্যবাদ প্রতাপবাবুকে।

    ReplyDelete