জ্বলদর্চি

পল্লব তেওয়ারী


প ল্ল ব  তে ও য়া রী


আশ্রয়

একটার পর একটা দিন মুছে যায়
স্মৃতির পাতা থেকে
স্বপ্নের মায়াবী উড়ান আর
জীবন্ত অক্ষরে জেগে আছো তুমি।

রাস্তার দু'ধার থেকে 
নুড়ি আর পাথর কুড়িয়ে
তৈরি করেছিলে স্বপ্নের ইমারত,
সফেদ মেঘের মাঝে মেলেছি ডানা।

নতজানু হয়ে সমর্পণ করেছি
ভালোবাসার পায়ে নিজেকে 
পারো যদি আর একবার হাত ধরো
হৃদয় প্রসারিত হোক
পার হয়ে যাই দুজনে 
সকল বিঘ্নের পারাবার।

রূপনগর

আবছা দূরের গাছগুলো
শ্রান্ত মানুষের মতো
বোঝা মাথায় বাড়ি ফিরছে
চালচুলোহীন উঠোনে অপেক্ষারত
একদল শিশু-

পথ কিছুতেই মসৃণ নয়
শিকড়গুলো  অনেক গভীরে
সব রাস্তায় পিতাকে ছায়া দ্যায় পুত্র

বিবর্ণ বিন্দুগুলো ঝরে পড়ছে রক্তচক্ষু থেকে
জীবন্ত শরীরগুলো এভাবেই ভস্মীভূত দেখি
সকলের অগোচরে যখনই একা ফিরি
মনে শুধু ভেসে ওঠে
স্মৃতি-বিস্মৃতির রূপনগর।


গচ্ছিত রেখেছি ইচ্ছামৃত্যু

সমস্ত রাতের কাছে জমা থাকে
অঙ্ক;জীবনের, লাভক্ষতির
বিপন্নতার পথে হাঁটতে হাঁটতে
হারিয়ে ফেলেছি শক্তি পথচলার,
একটি জীবনদায়ী গাছের বাকলের নীচে
গচ্ছিত রেখেছি ইচ্ছামৃত্যু-প্রেম
সমস্ত ঢেউ যেদিন আছড়ে পড়বে পায়ের নীচে
সেদিন নদীর মোহনার মতো আমরা 
মিশে যাব বৃহৎ এক অলকানন্দায়।
                  

কৃষ্ণগহ্বর

বাতাসে বাতাসে ভেসে ওঠে
ফুটে ওঠে দেওয়ালে থিসিসে
পার্থিব সমাধির টানে ছুটে যাই,
গোগ্রাসে দু'হাতে গিলে খায়
কৃষ্ণগহ্বর-চোখের আড়ালে

ডাকটিকিট সাঁটানোর পর
অবশিষ্ট পিঠ ঢেকেছে আস্তরণে
পথকে মনে রেখে বারবার ফিরে আসি
দৃশ্যমানতার আড়াল থেকে 
চেনা যায় না গুহামুখ
লাঠি হাতে অদৃষ্টকে তাড়াই
বাঁধন ছিঁড়ে বারবার ফিরে যাই গুহাজীবনে।
                   

বৈপরীত্য

তখনো জন্ম হয়নি হিংসার
পরস্পর পাথর ছুঁড়েছিল ওরা,
ওরা আদিম গুহামানব
আর আমরা ছুঁড়ছি মারণাস্ত্র

ওরা পরিধান করেছিল গাছের
বাকল,লতাপাতা
আমরা গায়ে জড়িয়েছি
সভ্যসমাজের চাদর

যাদের হাতে ছিল না কোনো কলঙ্ক
তাদেরই ভবিষ্যপুত্র বহন করছে আজ
রক্তমাখা সভ্যতার লাশ

ওদের তো ছিল না কোনো ধর্ম,বিভেদের;
আমাদের ধর্মচক্রে বিদ্বেষের রঙ লেগে আছে
আমরা অবশিষ্ট অন্নভোজী
নিরন্নকে ঠেলে দিচ্ছি চিতার আগুনে।   

----

Post a Comment

0 Comments