জ্বলদর্চি

দ্য ওল্ড গার্ড / রাকেশ সিংহ দেব


দ্য ওল্ড গার্ড - অমর যোদ্ধাদের মানবিক গল্প

রেটিং : 4/5

পরিচালক – জিনা প্রিন্স-ব্রাইথউড
অভিনয় – চার্লিজ থেরন, ম্যাথিয়াস সোহেনাএর্টস, লুকা মারিনেলি, মারওয়ান কেনজারি, কিকি ল্যাইনে, হ্যারি মেলিং, চিতয়তে্‌ল এজিয়োফর।  
মুক্তি – ১০ জুলাই , ২০২০

অমরত্ব আশীর্বাদ না অভিশাপ? এই প্রশ্ন চিরন্তন।  হঠাৎ একদিন কেউ আবিষ্কার করল কোনও পরিস্থিতিতেই তার মৃত্যু অসম্ভব। তাহলে তার জীবনে কি হবে? চোখের সামনে সে তার প্রিয়জনদের বৃদ্ধ হয়ে রোগভোগে মরতে দেখবে। মৃত্যুশয্যায় প্রিয়জনেরা তার কাছে সেই অমরত্বের উপায় জানতে চাইবে, তার সাহায্য চাইবে। কিন্তু সে তা বলতে পারবেনা, কিছু করতে পারবেনা। এরপর মানুষ তাকে সন্দেহ করবে, ঘৃণা করবে, সর্বোপরি ভয় পাবে। হতাশা আর যন্ত্রনা নিয়ে তখন তাকে আত্মগোপন করতে হবে স্বাভাবিক দুনিয়া থেকে। এই ভাবনার উপর ভিত্তি করে  'দ্য ওল্ড গার্ড' নামে এক অন্য ধারার সুপারহিরো মুভি গত ১০ জুলাই মুক্তি পেয়েছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স এ। লিয়েন্দ্রো ফার্নান্ডেজ এবং গ্রেগ রুকা সৃষ্ট একই নামের ইমেজ কমিকসের জনপ্রিয় সিরিজ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘দ্য ওল্ড গার্ড’। চিত্রনাট্য লিখেছেন গ্রেগ রুকা। 
এই কাহিনি গড়ে উঠেছে একদল অমর যোদ্ধাকে কেন্দ্র করে। চার্লিজ থেরন (অ্যান্ডি), ম্যাথিয়াস সোহেনাএর্টস (বুকার), লুকা মারিনেলি (নিকি), মারওয়ান কেনজারি (জো) যেকোনো আঘাত থেকে দ্রুত সেরে ওঠার অতিমানবীয় ক্ষমতার অধিকারী এই দলের চারজন সদস্য। তারা নিজেরা জানেনা তারা কিভাবে এই ক্ষমতা পেয়েছে, তবে তারা এটা জানে যেকোনোদিন তাদের এই ক্ষমতা শেষ হয়ে যেতে পারে। নিজেদের একাকীত্ব দূর করার জন্য এই চারজন একসাথে থাকে। বর্তমান সময়ে তারা ভাড়াটে যোদ্ধা বা মার্সিনারী হিসেবে নানা দুঃসাহসী কাজ করে। নিজেদের অতিমানবিক পরিচিতি আত্মগোপন করে পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য কাজ করে বেড়ায়। আচমকাই তারা আবিষ্কার করে তাদের মতো আরেকজন অমরত্বের সত্ত্বার অধিকারীকে। যে ভূমিকায় রয়েছেন কিকি ল্যাইনে (নাইল)। অমরত্বের রহস্য জানতে তাদের পিছু নেয় শত্রুর দল। কেমনভাবে নিজেদের পরিচিতি গোপন রাখতে এবং স্বাধীনতা বজায় রাখতে তারা লড়াই করে তাই এই ছবির উপজীব্য।
এই অ্যাকশন প্যাকড হলিউড ছবিটি পরিচালনা করেছেন একজন মহিলা পরিচালক জিনা প্রিন্স-ব্রাইথউড। প্রযোজক হিসেবে রয়েছে খোদ অভিনেত্রী চার্লিজ থেরন। প্রধান ভূমিকাতে রয়েছে দুজন মহিলা। হলিউডি সুপারহিরো ঘরানার সিনেমার ক্ষেতে এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত। ছবির গল্প এবং চিত্রনাট্য বেশ টানটান। ধুন্ধুমার স্পেশাল এফেক্টস্‌-এ ভরপুর অ্যাকশন সিনেমাতে নেই। সুন্দরভাবে কোরিওগ্রাফ করা ‘ক্লোজ কমব্যাট’ এবং ‘হ্যান্ড টু হ্যান্ড’ অ্যাকশন এর দৃশ্যগুলি অতিমানবিক এর পরিবর্তে অনেক বেশী বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। অ্যাকশন নির্ভর সিনেমায় এর আগেও চার্লিজ থেরন নিজেকে প্রমাণ করেছেন আবারো করলেন। প্রত্যেক চরিত্রাভিনেতার নিয়ন্ত্রিত অভিনয় তাদের অভিনীত চরিত্রগুলিকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালো। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের লোকেশনগুলি স্বাভাবিকভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমার পোস্ট ক্রেডিট সিন থেকে পরিস্কার হয়ে যায় ভবিষ্যতে এই সিরিজের আরও সিনেমা আসতে চলেছে। 

রেটিং : 
5 অসাধারণ 
4 বেশ ভালো 
3 ভালো 
2 দেখতে পারেন
1 না দেখলেও চলবে

Post a Comment

0 Comments