GDP র ওপর করোনার প্রভাব
অ ভি জি ত চ ন্দ্র
প্রায় সারা বিশ্ব বর্তমানে একটি ঠান্ডা লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। প্রতিটি দেশ আজ নিজের অস্তিত্ব তুলে ধরতে চায় বিশ্বের সামনে। কিন্তু প্রশ্ন, কিভাবে তুলে ধরবে বিশ্বের সামনে? উত্তরে অনেকগুলো বিষয় উঠে আসে। প্রথম যে বিষয়টি আসে সেটি হল অর্থনীতি। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা দেশের ভিত্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে একছত্র ভূমিকা পালন করে।আর এই অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হল GDP.
'Gross domestic production' অর্থাৎ 'সকল ঘরোয়া উৎপাদন' । এখানে 'ঘরোয়া' কথার অর্থ দেশের মধ্যে বোঝানো হয়েছে। এই GDP কথার মধ্যেই এর গুরুত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু আলোচনার বিষয় হল বর্তমান পরিস্থিতিতে COVID-19 এর প্রকোপে আমাদের ভারতের GDP র কি অবস্থা। কিছুদিন আগেই ভারতের ২০২০ সালের GDP প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে আমরা দেখেছি ২৩.৯ শতাংশ কমেছে। যা দেশের পক্ষে খুবই চিন্তার বিষয়। অবশ্য এই পরিস্থিতিতে সরকারকে সম্পূর্ণ দায়ী করা যায় না।যেখানে পুরো বিশ্বের GDP নিম্নমুখী সেখানে সরকার অনেকটা চিন্তা মুক্ত। এখন বিভিন্ন সেক্টর অনুযায়ী হ্রাস- বৃদ্ধির হারগুলো দেখলে কারণটা বোঝা হয়তো কিছুটা সহজ হবে। Construction (-)50.3%,Hotel & Transportation (-)47%, Manufacturing (-)39.3%,Mining & Quarrying (-)23.3%,Finance,Real Ested & Business Service (-)5.3%, Utilities (-)7% । একমাত্র Farm sector ই (+)3.4% বৃদ্ধি করেছে। অর্থাৎ প্রভাব শহরের ওপর বেশি গ্রামের ওপর প্রভাব পড়লেও তা কিছুটা চাপমুক্ত।
অর্থাৎ শহরকেন্দ্রিক সেক্টর গুলোয় বেশি প্রভাব পড়েছে, আর তার মুখ্য কারণ লকডাউন। সহজে বলতে গেলে উৎপাদন যদি বন্ধ থাকে তবে বৃদ্ধি কীভাবে সম্ভব। প্রতিটি সেক্টরে শ্রমিকের অভাবে উৎপাদনের উপর বিশেষ প্রভাব পড়েছে। পুরো বিষয়টি একত্রিত করে দেখলে GDP র এই পতন একপক্ষে খুবই স্বাভাবিক। যদি লক্ষ্য করি দেখতে পাবো যে এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে যথেষ্ট ভয়ের সঞ্চার করেছিল, যার প্রভাব সর্বস্তরে পড়েছে। আমাদের শুধু সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন ছিল কিন্তু আমরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে বন্দী বানিয়ে ফেলেছিলাম। বর্তমানে ভয় অনেকটা অপসারিত হয়েছে এবং এই ভাইরাসকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলতে হবে তাও অনুধাবন করেছি।
তাই অনুমান করা যায় যে এই ক্ষতি খুব তাড়াতাড়ি পূরণ হবে। কারন সমাজ একটা সময় স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল, আর যখনই সে গতিশীল হবে খুব তাড়াতাড়ি আবার পূর্বের গতি ফিরে পাবে। আর একটা ব্যাপার বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়, সেটি হল মানুষের মনে স্বনির্ভর হওয়ার একটি প্রচেষ্টা জেগে উঠেছে। এই সামাজিক অস্থিরতার মধ্যেও গজিয়ে উঠেছে অনেক ছোট বড় ব্যবসা, যার ফল স্বরূপ ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়তো ভবিষ্যতে দেখা যাবে।
মনে রাখতে হবে বিপর্যয় আসে আবার চলেও যায়। কিন্তু আমাদের নিজেদের শক্ত করে ধরে রাখাটাই আসল উদ্দেশ্য। আমাদের উচিত সফলতার দিকে এখন না তাকিয়ে দৃঢ়তার দিকে লক্ষ্য রাখা। নিজেকে শক্ত কর , যথেষ্ট শক্তি সঞ্চয় কর ; তাহলেই ঘাতকে প্রতিঘাত করা সম্ভব হবে।
সর্বপরি বলা যায়, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সমাজ ও অর্থনীতি বিদ্ধস্ত। প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারে জোরালো প্রভাব পড়েছে। গরীব ও মধ্যবিত্ত জীবনে অনিশ্চিয়তার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবু আমাদের দৃঢ়চিত্তে নতুন আলোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে, পুরোনো সুখ ও সমৃদ্ধি ফেরার আশায়।
1 Comments
সমৃদ্ধ আলোচন।
ReplyDelete