জ্বলদর্চি

জীবন্ত সন্ন্যাস / তাপস কুমার দত্ত

ফোটোগ্রাফি - সৈয়দ স্নেহাংশু  


জীবন্ত সন্ন্যাস

তা প স  কু মা র  দ ত্ত 

কালো অমাবস্যায় তোমার রূপ মেখেছি
সব দ্বিধা দ্বন্দ্বের দেওয়াল ভুলে,
অশান্ত মনকে  ডুবিয়ে দিয়েছি 
পশ্চিম সূর্যাস্তের কোলে

আজ আগুন খুঁজছি, পাপী হতে!
দগ্ধ হতে চাইছি, পুড়তে চাইছি
হারিয়ে যাওয়া ধোঁয়ায় জীবন্ত–
স্বপ্নগুলোকে ভাসিয়ে দিতে চাইছি

অনেক গুলো দাঁত, দাঁড় কাকের মতো হাসছে
বাতাসে বক্র হাসির ঝলকানি
আমি পৃথিবী খুঁজছি, প্রাণের পৃথিবী!
বীজ রোপনের গোপন জঠর খুঁজছি

সেই আকাশ চাইছি যেখানে,
শান্ত ঢেউ আর চাঁদ আমার প্রতিবেশি!
অকারন উৎকণ্ঠার ধুমকেতু নিয়ে
নাই বা ব্যস্ত হলাম

এখন নিত্যদিনে মৃত্যু পাহারা দেয় প্রতিটি দরজা
খিল নেই অবাধ আনাগোনা তোমার,
নিঃশব্দে নিঃসৃত হয় শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতিধ্বনি 
বাতাস ভেদ করে নেমে আসে অসময় বৃষ্টি

হাহাকারের আকাশ আজ থমথমে
অশ্রুদের সাথে জলীয় বাষ্প ঘর বেঁধেছে
আর আমি জলন্ত চিতায় ঘুমিয়ে আছি,
তোমার অমাবস্যা রূপ স্পর্শের প্রতীক্ষায়!

এখন সময় ঘুমিয়েছে ক্লান্ত পাখির ডানায়
উচ্চারিত স্বপ্ন গুলো, রাত্রির আড়ালে শ্বাস নেয়
মাটির গর্ভ ছুঁয়েছে ঐ কালো কাজলের রেখা
মজে যাওয়া রূপ চোখ খোলা ক্যানভাস

অলিখিত আবেগ নীল সীমান্তে তোলে ঢেউ
নির্জন রাত লিখে ফেলে জমে থাকা দীর্ঘশ্বাস 
নিঃশব্দের স্রোতে ভেসে আসে বিসর্জনের কান্না
শুধু, সেই পথ খুঁজি ভুলে যাওয়া ঠিকানায়!

আদি অনন্ত দিক দিগন্তে  মুহূর্তের আনাগোনা
বইছে আয়ূ বাতাসের কোলে আঁধারের নিশানায়
অন্তিম পথে রামধনু হাসে মিলবে নতুন ঠাঁই, 
ছাই হয়ে তাই খুঁজছি তোমায় মিলনের সীমানায়

অবাক পৃথিবী ঘুম ঘুম চোখে ভোরের সূর্য আঁকে
ফেলে আসা দিন রাত হয়ে নামে সময়ের বাঁকে বাঁকে
আমার স্বপ্ন  তোমার স্বপ্নে অমাবস্যা হাসে
শেষ পথে আজ বিদায় চিহ্ন গোধূলির চোখে ভাসে

এক আকাশেই হাসি কান্না জীবন মৃত্যু ভরা
সময়ের স্রোত,শুধু ওঠে নামে সৃষ্টি ধ্বংস খরা
তবু প্রেম আসে বাতাসের বেশে কৃষ্ণ ছদ্মবেশ! 
আলো আর কালো দুই তার রূপ বাকি নিরুদ্দেশ 

আজ বাধাহীন গতি মুক্ত আকাশ
             আর বাঁধ ভাঙা  উচ্ছ্বাস, 
এখন সব টুকু শুধু, তোমার  আমার
        বাকি সব ধুলো মাখা ইতিহাস!

   ফোটোগ্রাফি - সৈয়দ স্নেহাংশু  

Post a Comment

0 Comments