জ্বলদর্চি

অ্যাঁতেলেকত্যুয়েল বনাম আঁতেল-২৩/ সন্দীপ কাঞ্জিলাল

অলংকরণ - প্রান্তিকা মাইতি 

"তোমার দায়িত্ব অনেক। এই সমাজ সমগ্র জনতাকে জানিয়ে দিয়েছে, তুমি লেখক, শিল্পী, স্রষ্টা, তুমি-ই পারো নতুন কিছু সৃষ্টি করতে। অন্ধকারের গর্ভে যা কিছু লুকিয়ে আছে, কেবল তুমি-ই পারো তা বের করে আনতে। অসীম তোমার ক্ষমতা। তুমি বুদ্ধিজীবী,তুমি সকলের হয়ে চিন্তা করছো জনতার ধ্রুবতারা।"

 অ্যাঁতেলেকত্যুয়েল বনাম আঁতেল || পর্ব--২৩

সন্দীপ কাঞ্জিলাল

সমাজ ও বুদ্ধিজীবী -১

বুদ্ধিজীবী সম্পর্কে অনেক কথা আগে বলা হয়েছে। যার সার কথা 'চমস্কির' ভাষায় "বুদ্ধিজীবী তিনিই, যার সাথে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব থাকবে।" কারণ, ক্ষমতা চিরকাল দুর্বল, অসহায় ও অসচেতন মানুষের অধিকারকে দলিত করে। তাই বুদ্ধিজীবীর কাছে নিপীড়িত ও সাধারণ মানুষের অধিকার আমানত হিসাবে গচ্ছিত থাকে, তাই ক্ষমতার সাথে বুদ্ধিজীবীদের দ্বন্দ্ব চিরকাল সব দেশে। 
একটি দেশ কোনো বিমূর্ত ধারণা না। দেশের মানচিত্র আছে, মানুষ আছে, তার নির্দিষ্ট পরিচালন পদ্ধতি আছে। মানুষ নিজেদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য দেশের পরিচালন ব্যবস্থা এবং দেশ গঠন করে। এই সুবিধা প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার বিরাট ফারাক দেখা দিলে, তখনই জেগে ওঠে অসন্তোষ। আর যারা বলে, আমি দেশের কাছে সুবিধা চাই না, কেবলমাত্র দেশের সেবা করতে চাই, জনগণের মঙ্গল করতে চাই। তাদের সাথে দেশের লুটপাটের গোপন আঁতাত নিশ্চিত আছে। আমার মতে তাঁরাই সুবিধাবাদী আর দেশ বিরোধী। কারণ, আমি অবশ্যই দেশের কাছে সুবিধা চাই। অন্ততঃ যে সকল শর্তে দেশ গঠন হয়েছিল সেগুলো। তা না হলে সে দেশ নিয়ে আমার কি দরকার?
উপরে যা আলোচনা করলাম ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়ে। ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার বাইরে সমাজের আর সব মানুষের চাওয়া পাওয়া থাকে। সেই সব মানুষ যারা সুবিধা কেন্দ্রিক সিস্টেমের মধ্যে, যাদের যা পাওনা, তাঁরা তা পায় না। এবং তাদের পাওয়ার পথে যে সমস্ত সিস্টেম বা যাদের অপকৌশল বাধা স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়, তাঁরাও তাঁদের বিষয়ে সচেতন নন। এমনকি এই সিস্টেমকে সরানো যায়, এই সমস্ত মানুষদের যে বাধা দেওয়া যায়, তাঁরা তা-ও জানেন না। এই সব বাধাকে যে প্রশ্ন করা যায়, পরিবর্তন করা যায়, সবটাই যে মানুষের ইচ্ছের অধীন, সে সম্পর্কেও 'সাধারণ মানুষ' সচেতন নন। তাহলে প্রশ্ন, এইসব সাধারণ অসচেতন অশিক্ষিত দুর্বল মানুষদের অধিকারের দাবিকে রাষ্ট্রের কাছে নিয়ে যাবে কে? কে সমাজের দাবিকে, সাধারণ মানুষের দাবিকে নিজের গলায় উচ্চারণ করবেন? 

আজকের দিনে যত বুদ্ধিজীবী বা বিশেষজ্ঞ হিসেবে, বিভিন্ন টক্-শোতে কিংবা কলমচিকে দেখি, তাদের মধ্যে বেশী তর্কের কচকচি, আর নিজেকে জাহির করার প্রবণতা, তর্ক অবশ্যই ভালো, কারণ দুধ মুইতে মুইতে তো মাখন বা সারাংশ বেরিয়ে আসে। কিন্তু যে তর্কে শুধু তর্ক সর্বস্বতা তা ভালো নয়, যে তর্ক আমাকে মূল লক্ষ্য থেকে সরিয়ে দেয় তা-ও ভালো নয়। তর্কে বসার আগে লক্ষ্য স্থির জরুরি। এবং সে লক্ষ্য যেন অবহেলিত, বঞ্চিত মানুষদের জন্য হয়। কারণ বুদ্ধিজীবী হিসাবে যে দায়িত্ব আমার কাঁধে। সেই লক্ষ্যকে এড়িয়ে যেন উদ্ভট বুদ্ধির পাগলামি না শুরু হয়। বুদ্ধি উত্তরাধিকারসূত্রে অর্জন করা যায় না, বুদ্ধি স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির মতো পাওয়া যায় না। তাই বুদ্ধিজীবী নিজের বুদ্ধির বিকাশের জন্য যা কিছু প্রয়োজন, সে এই সমাজ থেকে নিয়েছে। আর সমাজে সেই সব উপাদান আকাশ থেকে ঝরে পড়েনি। সমাজের কিছু মানুষের কৃচ্ছসাধন, ত্যাগস্বীকারের মাধ্যমে তা পাওয়া গেছে। এই সব বুদ্ধিজীবী যাদের মোলায়েম জীবনযাপন, অফুরন্ত সময় পেয়েছে চিন্তা করার তর্ক করার, বুদ্ধিকে শানিত করার, সবই সমাজের সাধারণ মানুষের দান। তাঁরা তাঁদের সবকিছু তোমাদের দিয়েছে, তাঁদের হয়ে কথা বলবার জন্য, তাঁদের সঙ্গে নেমকহারামী করার জন্য নয়। তুমি চিন্তায় উজ্জ্বল হও, শিল্পে বিভোর হও, সৃষ্টিতে নিমগ্ন থাকো, কিন্তু তুমি তাঁদের কাছে ব্রাত্য হয়ো না। তুমি বুদ্ধিজীবী হিসেবে আরো গভীরে ডুব দাও, তুলে আনো অন্ধকারের গর্ভে লুকিয়ে থাকা ঐশ্বর্য মণিকাঞ্চন, কেউ বাধা দেবে না। কিন্তু সেই মণিকাঞ্চনের ছটায় যেন, শুধু নিজে বা নিজের পরিবার শুধু  আলোকিত হয়, তা যেন সমগ্র সমাজকে উদ্ভাসিত করে তোলে। কিন্তু এই বুদ্ধির চর্চায় যেন অহমিকা না আসে। নিজেকে যেন আলাদা শ্রেণী হিসাবে না ভাবো। কখনো যেন মনে না হয় সমাজের বাইরে আমি। তুমি বুদ্ধিজীবী, যদি মানুষকে জ্ঞান উপদেশ দিতে চাও, তবে মানুষ কি বলছে আগে শোনো, তাদের কাছ থেকে শেখো, তাদের প্রতি যেন কখনো সন্দেহ ঘৃণা না জন্মে। তাদের সঙ্গে যদি তোমার নাড়ির যোগ না থাকে, তাহলে ঐ বুদ্ধি, বুদ্ধি নয় শ্মশানের ছাই, আর তোমার বিদ্যা, বিদ্যা নয় মূর্খতায় ভরা। কারণ সারা পৃথিবীতে যত তত্ত্ব আমদানি হয়েছে, তা সবকিছু সাধারণ মানুষের উন্নতির জন্য। বড়লোকদের উন্নতির জন্য নয়। অথচ বাস্তবে দেখা যায় ধনী ব্যক্তি আরোও ধনী হচ্ছে, গরীর আরো গরীব হচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে ফাঁক কোথাও একটা থাকছে। তা তত্ত্বে নয় প্রয়োগে। মোদ্দা কথা একটাই, সাধারণ মানুষ যা ভাবছে তা দিয়ে তত্ত্ব হয় না। আর কোনো যদি কর্কট রাশির মর্কট বুদ্ধিজীবী ভাবে, তিনি সাধারণ মানুষের ভাবনা পাঁচ বছর এগিয়ে ভাবছেন, তবে তিনি মিথ্যাবাদী। কারণ কালের হিসাবে ভুল থেকে গেলে তখন তা প্রলাপ হতে বাধ্য। 
যে কোনো ঘটনায় বুদ্ধিজীবীকে একটা পক্ষ নিতেই হবে। তার বিবেক বুদ্ধি দিয়ে যেটা ন্যায় মনে হয়, সে সেই পক্ষ নেবে। সেই পক্ষ ঠিক না ভুল সেটা সময় নির্ধারণ করে, কিন্তু পক্ষ নিতে হবে। কারণ নিরপেক্ষতা মানে সুবিধাবাদিতা, অপেক্ষা করা কে জেতে, যে জিতবে সুবিধাবাদী তার সাথে! এই সুবিধাবাদী অবস্থান এর সাথে বুদ্ধিজীবীর সার্বিক সংজ্ঞা কার্যক্রম সাংঘর্ষিক। 

এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে বুদ্ধিজীবীর কাজ মোটেই রাজনীতি বা সমাজ বিচ্ছিন্ন নয়। চরিত্রগত ভাবেই বুদ্ধিজীবী একজন সামাজিক মানুষ, কিন্তু সমাজে বুদ্ধিজীবীর কাজ অন্যান্য সামাজিক থেকে কিছুটা আলাদা রকমের। তিনি সামাজিক ক্ষমতার আজ্ঞাবাহী বা ভারবাহী নন। সমাজের অন্ধকার, অন্যায় ও অসুন্দরকে তিনি মেনে নিতে চান না। বদলাতে চান একে অনেক ভাবে। এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করেন বা করতে চান। হয়তো সেই কাজ অনেক সময় সামাজিক প্রভাব বলয়ের জন্য হুমকি স্বরূপ। 
ক্ষমতার আকাঙ্খা থাকে সকল রাজনীতির কেন্দ্রে। সামাজিক সংস্কারবাদীরাও চান ক্ষমতা ও সম্মান। বুদ্ধিজীবীর কাজ ক্ষমতা নিয়ে নয়, ক্ষমতার প্রয়োগে সাধারণের হক নিশ্চিত করার জন্য কাজ করা। তার লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের মুক্তিকে ত্বরান্বিত করা এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করা। এক কথায় বলতে গেলে মুক্তির যে আন্দোলন সমাজে চলে তিনি তার সাথে যুক্ত। যদিও শেষ পর্যন্ত মুক্তি ব্যক্তিরই, কিন্তু সেই মুক্তি কিছুতেই সম্ভব নয় সমষ্টির মুক্তিকে বাদ দিয়ে। অসচেতন, নিপীড়িত সাধারণ মানুষের মুক্তির স্বপক্ষে যেই পরিবর্তন অনুভূত হয় সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোর ভিতর থেকে, বুদ্ধিজীবী সেই পরিবর্তনকে জনগণের কণ্ঠস্বরে রূপ দেন এবং মুক্তির সামাজিক আন্দোলনের অংশ হয়ে থাকেন আমৃত্যু, যেহেতু সমাজ মুক্তির এই আন্দোলন এক বহমান প্রক্রিয়া। 
নোয়াম চমস্কি একবার সুইডেনে গিয়ে দেখেন ট্যাক্সি ড্রাইভারেরা একটু বেশি আন্তরিক। তার ব্যাপারটা একটু অন্যরকম লাগলো। তিনি একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, 'কী ব্যাপার'? আপনারা সবাই এতো আন্তরিক আচরণ করছেন কেন? তখন ড্রাইভারটি তার শার্ট খুললেন। নিচে ছিল একটি টি-শার্ট এবং সেখানে চমস্কির ছবি ও একটি কথা যেটি 'কুওট শিক্ষা আন্দোলন' নিয়ে করা চমস্কির উক্তি। ড্রাইভার জানালেন এখানকার সব ড্রাইভার এই টি-শার্টটি পরে আছেন। এরপরেও কুওটে শিক্ষাব্যাবস্থার সমালোচনা (effective education, effective indoctrination) করতে থাকা চমস্কিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, 'তাহলে সমাজের স্বাধীন চিন্তার লোকেরা সব কোথায়? চমস্কি উত্তর দিয়েছিলেন, 'তারা সবাই ট্যাক্সি চালান।' 
উপরে আলোচিত প্রায় সর্বজন স্বীকৃত বুদ্ধিজীবীর আদল ও গড়ন এর ব্যতিক্রম সারা বিশ্বের মতই আমাদের দেশেও প্রায় লক্ষ্য করা যায়। চমস্কির সংজ্ঞানুসারে বুদ্ধিজীবী আমাদের দেশে বিরল। কেবল আমাদের দেশ নয় বা উন্নয়নশীল দেশ নয়, তথাকথিত উন্নত বিশ্বেও অধিকাংশ বুদ্ধিজীবী ক্ষমতার সাথে আম-দুধের মতো মিশে আছেন!
ক্ষমতা তার চরিত্রগত ও অন্তর্গত ভাবেই ভীষণ একগুঁয়ে ও উদ্ধত। সে তার দাপটে ভঙ্গিতে অভ্যস্ত। এই অভ্যস্ততায় যে কোন ভিন্ন মতকে লোভ দেখিয়ে বা ভয় দেখিয়ে বোবা করে রাখতে চায়। বুদ্ধিজীবী মাত্রই রাজনীতি ও সমাজ সচেতন। এই রাজনীতি সচেতনতা ও সমাজ মনস্কতার দরুন বুদ্ধিজীবীর দ্বন্দ্ব বাঁধে রাষ্ট্রের ও ক্ষমতার সাথে। বুদ্ধিজীবী ক্ষমতার লোভ ও ভয়ের বাইরে এসে আপন বিবেকের তাড়নায় সর্বদা সাধারণ মানুষ ও দেশের জনস্বার্থ মুখী অবস্থান গ্রহণ করেন। 

জনস্বার্থ পরায়ণ সক্রিয় বুদ্ধিজীবীতার বাইরেও 'জনস্বার্থ বিরোধী' সক্রিয় বুদ্ধিজীবীতার প্রবণতা আজ সারা বিশ্বেই লক্ষ্যনীয়। একটা নির্দিষ্ট ক্ষমতা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো কেবল বল প্রয়োগের মাধ্যমেই টিকিয়ে রাখা যায় না, এর জন্য জনমত তৈরি, এমনকি যদি তা 'গোয়েবলসীয়' হয় তবুও সেটার জন্য ক্ষমতার দরকার কিছু 'পোষা বুদ্ধিজীবী।' এঁরা রাষ্ট্রের যাবতীয় শোষণ ও জনবিরোধী কাজের নায্যতা তৈরির চেষ্টা করে রাষ্ট্রীয় সুবিধা ব্যবহার করেই। এমনকি নিষ্ক্রিয় বুদ্ধিজীবী ও সমাজে থাকা অবাস্তব কিছু নয়। এসব বুদ্ধিজীবী আপন দলের স্বার্থের পক্ষে সরব হলেও দলের কোন ভুল বা সাধারণ মানুষের এমন কোন অধিকার যা নিজ দলকে বেকায়দায় ফেলে সে সম্পর্কে আপন স্বার্থে চুপ করে থাকে। 

সমাজের কাছ থেকে তাঁরা হাত পেতে নেয়। কিন্তু প্রতিদান দেওয়ার সময় হলে তাঁরা ব্যাগ কাঁধে করে সবার আগে চম্পট দেয়। খুঁজলে দেখা যায়, তাঁর আসন ফাঁকা। যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইলের সুইচ বন্ধ থাকে। এঁরা সাধারণত নিকৃষ্ট সঙ্কীর্ণ মনের, সাধারণ মানবিক প্রলোভনে এরা দুর্বল। কারণ মানুষের চরিত্র ঋতু পরিবর্তনে পাল্টায় না। এদের সাহস চার দেওয়ালের মধ্যে আর কাগজে কলমে বড়জোর সোস্যাল মিডিয়ায়। সূর্যের আলো এদের সাহস দেখে না। কারণ সেখানে এরা নিষ্প্রভ। এটা হওয়াও স্বাভাবিক ঘটনা। সমাজ তা জানে। তাই সমাজ ও যার যতটা সাধ্য তাঁর কাছে ততটাই দাবি করে। এর বাইরে দাবি অস্বাভাবিক। কিন্তু সমাজ দাবি করে সততা। এটা কারোর কাছে অসাধ্য নয়। সমাজ দাবি করে, তোমার যা দেওয়ার ক্ষমতা তুমি ততটুকু দাও, নিষ্ঠাভরে দাও। সম্মানের সহিত দাও। অহমিকা নয়, অতিকথন নয়, চুনোপুঁটি মারার ক্ষমতা তাই মারো, তবে রাজা উজির মারতে যেও না। অবিনয় ও অভিনয় সমাজ প্রত্যাশা করে না। ক্ষুধার্ত মানুষের মিছিলে হাঁটার সময় যদি তোমার পেট ভর্তিও থাকে, তবু তুমি মনে কর তুমি ক্ষুধার্ত। যদি মিছিলে হাঁটতে অসুবিধা মনে হয়, পাশ থেকে তোমার যতটা সাহায্য করার দরকার সেটুকু করো। যারা সংগ্রামরত, তাঁরা ক্ষত বিক্ষত হলে, তোমার হাতে যেন থাকে First-Aid বাক্স। আর যা-ই করো মুখে এক কথা বলে, পেছনে অন্য কাজ করো না। তুমি তাদের হাতে সঠিক নিশানা দাও। কারণ তোমার দায়িত্ব অনেক। এই সমাজ সমগ্র জনতাকে জানিয়ে দিয়েছে-- তুমি লেখক, শিল্পী, স্রষ্টা, তুমি-ই পারো নতুন কিছু সৃষ্টি করতে। অন্ধকারের গর্ভে যা কিছু লুকিয়ে আছে, তা বের করে আনার ক্ষমতা কেবল তোমার আছে। প্রায় মরে যাওয়া গাছে, তুমি-ই দেখাতে পারো ফুল ফুটেছে। অসীম তোমার ক্ষমতা। তুমি বুদ্ধিজীবী, তুমি সকলের হয়ে চিন্তা করছো। জনতার কাছে তুমি ধ্রুবতারা। মানুষের এই আস্থাকে অবমাননা করা মানে সমাজকে অপমান। যে সমাজে তুমি বাস করছো। সমাজকে অপমান সহজে সমাজ তা ভোলে না। সে সুদে আসলে একদিন তা ফেরত নেবে।কারণ সে তোমাকে নীচের দিকে টেনে রেখেছে বলে তুমি উড়ছো। সমাজ যদি টান ছেড়ে  দেয় ,তুমি মুখ থুবড়ে পড়বে। ঘুড়ি উপরে ওড়ে ততক্ষণ, যতক্ষণ সুতো তাকে নীচের দিকে টেনে রাখে।
-----------------------
আরও পড়ুন

"পাহাড় কাটে লোহা, লোহাকে গলায় আগুন, আগুনকে নেভায় জল, জলকে শুষে নেয় সূর্য, সুর্যকে ঢেকে দেয় মেঘ, মেঘকে উড়িয়ে নিয়ে যায় বাতাস।কিন্তু মানুষের সংকল্প বাতাসকেও বাধা দেয়। তাই এ পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষের সংকল্প।"

Post a Comment

0 Comments