জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা / রমণীকান্ত পাত্র

   ফোটোগ্রাফি -- সৈয়দ  স্নেহাংশু 


গুচ্ছ কবিতা

র ম ণী কা ন্ত  পা ত্র


চলো, ঘুরে আসি

আসমানে ভাসে হিমসাদা মেঘ
দিক হতে দিক দিগন্তে।
মারি আজ ছুঁয়ে যায়
দেশ হতে দেশ দেশান্তরে।

ঘাসের ডগায় শিশির কণা
আলতো সোহাগে ধরে।
সবাই এখন প্রাণের টানে
আটক থাকে ঘরে।

ভোরের বাতাসে শিউলি সুবাস
আনে আগমনী বারতা।
মুখ গুলো সব মুখোশে ঢাকা
রসদ খুঁজে সারা দেশটা।

কাশ ফুল ঢেউ খেলে
নীল - রুপোলি জলে।
মা দুগগা দোলায় দোলে
আসবে এবার মণ্ডপে।

শঙ্খ বাজাও, অঞ্জলি দেবো
থাকো হাসি খুশি
সরকারি বিধি মেনে
চলো, ঘুরে আসি।


তৃতীয়

'খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো'
ঘুম পাড়াত মা চাঁদনী রাতে।
খুকু যখন জানান দিল -
সবাই তখন চমকে গেল।

ছেলেও নই, মেয়ে ও নই ।
শামুক খোলে নরম মন।
যেটা দেখে লিঙ্গভেদ -
ওটাই তো কেমন কেমন।

ছিটকে গিয়ে সমাজ থেকে -
বাসা ধরি, আমারই মতো আমার সাথে।
স্বপন দেখি যৌনতাও -
 অসফল হই অপারগে।

চোখ খেলে যায় আমায় দেখে 
মাঝ রাস্তায়, দিনে ও রাতে।
ভাবনাগুলো ঝিলিক মারে -
নিয়নবাতির আলোর সাথে।

প্রকৃতি পুরুষের ওমে -
তোমাদেরই মতো আমিও।
তোমরা সমাজে প্রথম, দ্বিতীয় 
আর,আজ আমি তৃতীয়।


ঢাকের বোল

নীল আকাশে ধলা মেঘের
উদাসী আনা -গোনা।
সোহাগ ছোঁয়া ঘাসের ডগায়
সোনালি শিশির কণা।

শরৎ এবার উড়াল দিল
অভাবী ঘরে ঘরে।
ঢাকি পাড়ায় তালিম চলে
মোরগ ডাকা ভোরে।

কাঠি দুটো বোল তোলে
ঢ়্যাং-কুরা-কুর --- কুর।
জাত ঢাকির ল্যাঙ্গা ছ্যানা
নাচে চরকি, ঝাপে -- চুর।

আঁধার নামে সাঁঝ ঘরে
জোনাকি দীপ জ্বালে।
টাক- ডুমা- ডুম বাজনা বাজে
ঘুরণি নাচের তালে।

রাত জোছনায় ঢাকের কাঠি
বিসর্জনের শেষ বাদন।
" ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ,
ঠাকুর যাবে বিসর্জন।"

দুগগা মায়ের বোধন এল
বায়না আসা -অস্তরাগে।
ঢাকির বউর আঁচল ভেজে
আশা -ভাঙ্গা জলে।


বিসর্জনের ভয় 

ঋতু মসনদে রানি ।
রোদ ছাঁকা বৃষ্টি -
বিদায়। বিদায়।

অমরের সাথে আড়ি
শিউলি তারা খসে।

মেরাপ চোয়া আলো
চাল - রাস্তায়...
ছায়ায় লুকোচুরি।

বাঁধন ছেঁড়া মন
কফিশপে...
'বনলতা'র  সাথে।

লজ্জা ঢাকা লিপস্টিক
লালারসে ভয়।

বিসর্জনের সাথে 
বিসর্জনের ভয়।


Post a Comment

0 Comments