জ্বলদর্চি

কৌতুক শিল্পী ভারতী সিংহ এবং তাঁর স্বামী হর্ষ লিম্বচিয়াকে মাদক যোগের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল। / গৌতম বাড়ই


কৌতুক শিল্পী ভারতী সিংহ এবং তাঁর স্বামী হর্ষ লিম্বচিয়াকে মাদক যোগের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল

মাদকের মধুরতম যোগে বলিউড

আবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবারে জনপ্রিয় কৌতুক শিল্পী ভারতী সিংহ এবং তাঁর স্বামী হর্ষ লিম্বচিয়াকে মাদক যোগের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল। কিছুদিন আগেই বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পরেই বলিউডের একাধিক অভিনেতা আর অভিনেত্রীর বিরূদ্ধে মাদক-যোগের অভিযোগ ওঠে।

এই রূপোলী জগত, এই গ্ল্যামার দুনিয়ার সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগাযোগের কথা বারবার সামনে আসছে।এই সেলিব্রেটিরা যেখানে সমাজের রোল-মডেল, সেখানে তাদের এমন বেপরোয়া জীবন-যাপন উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সাথে রাজনীতি জগতেরও যে বেশ মাখোমাখো আদুরে সম্পর্ক রয়েছে তা কারও আর অজানা নয়।
বিশ্বব্যাপী মাদকের ছোবল এখন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।আমাদের আইনরক্ষাকারীদের স্বজনপোষণ ছেড়ে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্তে আসতেই হবে। সাজা প্রণয়নের ব্যাপারে কাউকে রেয়াত করা নয়,কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে।

আমাদের মিডিয়া এবং এই নব প্রজন্মের মিডিয়াকর্মীরা যেভাবে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন তা খুবই উদ্বেগজনক। এমনটি শুধু অসচ্ছল পরিবার থেকে আসা মডেল-তারকাদের ক্ষেত্রেই নয়, তার চাইতে অধিক হারে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন অভিজাত পরিবারের সন্তানরা। যাদের অনেকেই অধুনিকতা এবং স্ট্যাটাস বজায় রাখার নামে আসক্ত হচ্ছেন এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। এর শেষ কোথায় সে বিষয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

এ ব্যাপারে আমাদের তৃতীয় বিশ্বের বা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির অবস্থান উনিশ-বিশ পার্থক্য।বাংলাদেশের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নিলুফার আক্তার জাহানের উদ্ধৃতি এখানে তুলে ধরছি, ' আমরা সাধারণত দেখি-অপরাধ জগতের অধিকাংশই কোনো না কোনো মাদকে আসক্ত। অর্থাৎ মাদকই অপরাধ জগতে প্রবেশের মূল উৎস। মাদকের সরবরাহ, চাহিদা ও ক্ষতি কমানোর জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ খুবই জরুরি।’

সার্বিক পরিস্থিতিতে মাদকের চাহিদা হ্রাসের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়াটা হবে সময়ের উপযুক্ত পদক্ষেপ। একই সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনাও জরুরি। এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহলও ।

সংবাদ সংস্থার এএনআই জানিয়েছে বলিউড দম্পতি স্বীকার করেছেন মাদক নেওয়ার কথা তার পরেই এনসিবি তাঁদের গ্রেফতার করেন।

একটা ক্ষয়িষ্ণুতা একটা অবক্ষয় আজকে সমাজের বুকে সারা বিশ্বজুড়ে প্রতিফলিত। সে পরিবেশের বিপন্নতা হোক আর সামাজিক। আজ খবরের কাগজের রিপোর্টিংয়ে দেখলাম যেখানে ভারতবর্ষের অপুষ্টির শিকার ঊনসত্তর কোটি নাগরিক, সেখানে রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভায় আজ আমাদের সংসদে সদস্যদের কোটিপতিতে ছড়াছড়ি। এই চরম বৈপরীত্য মোটেও একটা সুস্থ উদাহরণ হতে পারেনা।এ ভয়ংকর এক বীজ বপণ করে চলেছে প্রতিনিয়ত।অর্থ আর প্রতিপত্তির আস্ফালন আর চারিধারে।বিশ্বায়ন দিয়ে যার শুরু তার শেষটা বেশ্যায়নেই দাঁড়াবে এ আর নতুন কথা কী!আজ কেমন ভাবে সব মেধা সব পেশা বিকিয়ে যাচ্ছে অর্থের কাছে।রাজা তোর কাপড় কোথায়?

না,আর উচ্চারিত হবে না কারো মুখে।

আমরা দেখতেই থাকব মাদকে মধুরে যোগ বিয়োগের এই খেলা। এ খেলা চলবে নিরন্তর?

আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments