জ্বলদর্চি

দিল্লি দর্পণ- ১৭/ কালীপদ চক্রবর্ত্তী

দিল্লি দর্পণ – ১৭

কালীপদ চক্রবর্ত্তী, নতুন দিল্লি 

দিল্লিতে সাহিত্য চর্চা

বাংলা সাহিত্য চর্চা বা সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং কৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখা খুব একটা সহজ কাজ নয়। এটি ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কারও পক্ষে অনুধাবন করা বেশ কঠিন কাজ। বহির্বঙ্গে অন্যভাষার প্রাচুর্য যেখানে বেশি এবং যেখানে বাংলা ভাষায় কথা বলা হয় না, লেখা হয় না, সেখানে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বাঁচিয়ে রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যে কত কঠিন কাজ তা বহির্বঙ্গে না থাকলে বোঝা যায় না। বহির্বঙ্গে অনেক ভাল ভাল কবি, সাহিত্যিক আছেন, যাঁদের পরিচয় প্রায় অজানাই থেকে যায়। দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের শিবমন্দিরে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন, দিল্লি শাখা এবং মাতৃমন্দির কালীবাড়িতে সর্বভারতীয় বঙ্গভাষী সমিতি যে ভাবে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে অগণিত আবালবৃদ্ধবনিতাকে বাংলা শিখিয়ে চলেছেন তার খোঁজ ক’জন রাখেন? দিল্লির অন্যান্য প্রান্তেও সম্ভবত এ ধরণের আরও কর্মকাণ্ড চলছে, তার খবর আমরা অনেকেই রাখি না। দিল্লিতে বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে বিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষা পড়ার জন্য ছাত্র বৃত্তি দেওয়া থেকে শুরু করে অঙ্কন প্রতিযোগিতা, অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার  আয়োজন বহু বাঙালি স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা মুখবুজে আজও করে চলেছেন। পশ্চিমবঙ্গের আনন্দের খবরে যেমন বহির্বঙ্গের সকলে আনন্দ পায় ঠিক তেমনি দুঃখেও দুঃখ পায়। বর্তমানে দিল্লিতে অনেকগুলো লিটিল ম্যাগাজিন নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে চলেছে। এ থেকেই বোঝা যায় যে বর্তমানে দিল্লিতে সাহিত্যের প্লাবন বা জোয়ার চলছে। এটি দিল্লির সাহিত্য জগতের জন্য সত্যিই একটি সুখবর বলা যায়। এখানে বর্তমানে বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় ছুটির দিন সাহিত্যের আড্ডার আসরের আয়োজন করা হয়। এদের মধ্য প্রতি মাসে নিয়মিত ভাবে কয়েকটি আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়। মাতৃমন্দির কালীবাড়িতে প্রতিমাসের প্রথম সপ্তাহের রবিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় “সৃষ্টি সাহিত্য আসর” এবং সর্বভারতীয় বঙ্গভাষী সমিতি প্রতি মাসের তৃতীয় রবিবার একটি সাহিত্যের আড্ডার আয়োজন করে থাকেন। এই আড্ডা শুরু হয় “বাংলার মাটি, বাংলার জল ...’ গান দিয়ে এবং শেষ হয় ‘মোদের গরব, মোদের আশা ......’ গানটি দিয়ে। ‘হিন্দোল’ পত্রিকার প্রকাশক ‘অহেতুক সভা’ বলে একটি সভার আয়োজন করেন প্রতি মাসে। এছাড়াও অনেক সাহিত্যের আড্ডার খবর জেনেছি কিন্তু তার বিস্তারিত তথ্য লেখকের জানা না থাকায় তাদের সম্পর্কে লেখা গেল না। দিল্লির বা প্রবাসের সাহিত্যচর্চার সঙ্গে বাংলার সাহিত্য চর্চার অনেক পার্থক্য। প্রবাসে না থাকলে সঠিকভাবে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। তাই কয়েকটি অসুবিধের কথা উল্লেখ করছি।   
 দিল্লিতে সাহিত্য চর্চা করতে গেলে যে যে অসুবিধেগুলোর সম্মুখীন হতে হয় সেগুলো হল -  

  এখানে বাংলা স্কুলগুলোতে পড়ানো হয় না। দু-তিনটি স্কুলে বাংলা একটি বিষয় হিসেবে থাকলেও অন্যান্য বিষয় হিন্দিতে বা ইংরেজিতে পড়তে হয় এবং আজকাল বাংলা বিষয় নিয়ে পড়ার ছাত্র-ছাত্রী-র সংখ্যাও প্রতিবছরই কমে চলেছে। কারণ এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এবং ব্যবহারিক জীবনে এর ব্যবহার কম বলে বাংলার ছাত্র-ছাত্রীরাও উদাসীন। তারা বাংলা বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেয় না। এর ফলে নতুন প্রজন্মের বাংলাভাষানুরাগীদের বড়ই অভাব দেখা যায়, তাই বেশ কয়েকটি সংগঠন এসব নিয়ে আজকাল ভাবতে এবং কাজ করতে শুরু করেছেন। তাদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা ইত্যাদির ব্যবস্থা করছেন। এমনকি দুর্গাপূজার সময়েও বিভিন্ন পূজা প্যান্ডেলে এসবের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

• বাঙালিরা দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকায়, একত্রিত হয়ে কোন অনুষ্ঠান করাও বেশ কষ্টকর কাজ এবং দিল্লির আয়তন অনেক বেশি বলে এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে গিয়ে অংশগ্রহণ করাও সহজ নয় মোটেই।

• আশেপাশে অন্যান্য ভাষাভাষী লোকেদের ভিড়ে বাংলা ভাষা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা খুবই বেশি। একমাত্র চিত্তরঞ্জন পার্ক, গোলমার্কেট এবং কিছু বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা ছাড়া বাংলা বই বা পত্র-পত্রিকার অভাব দেখা যায়। 

• দিল্লিতে সব মানুষেরাই বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছেন জীবিকার সন্ধানে। অনেকেরই চাকরীস্থল হয় উত্তর প্রদেশের নয়ডাতে অথবা হরিয়ানার গুরগাঁও-তে হওয়ায় সময়ের অভাব খুব বেশি করে লক্ষ্য করা যায়। 

• দিল্লিতে বাংলা ছাপাখানার যেমন অভাব, ঠিক তেমনি বাংলা বই ছাপার খরচও পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে অনেক বেশি। 

দিল্লিতে বিভিন্ন অসুবিধে থাকা সত্ত্বেও কিন্তু বেশকিছু সাহিত্য পাগল মানুষ মুখবুজে আজও বাংলা সাহিত্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। এই স্বল্প পরিসরে সবকটি পত্র-পত্রিকার বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব হবে না তাই সংক্ষেপে কয়েকটি মাত্র পত্র-পত্রিকার নাম উল্লেখ করছি। 

১. ১৯৫৮ সালে  তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের করকমল দ্বারা রাজধানী দিল্লির বঙ্গভবনে ‘বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন’-এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় অবনী লাহিড়ীর উদ্যোগে বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ‘দিগন্ত’ সাহিত্য পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। ১৯৭৯ সালে অমরেশ গাঙ্গুলির প্রচেষ্টায় এবং সেবাব্রত চৌধুরীর সম্পাদনায় ‘দিগন্ত’ নতুন চেহারায় ‘দিগঙ্গন’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। এছাড়াও গত দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন ‘বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ’ নামে বাঙালিদের সাংস্কৃতিক বিষয়ক খবর ভিত্তিক সর্বাধিক প্রচারিত মাসিক পত্রিকাটি প্রকাশ করে আসছে। প্রতিমাসে দশ হাজারেরও বেশি কপি ছেপে নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে বাঙালিদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। বর্তমানে এ দুটি পত্রিকার সম্পাদকই তপন সেনগুপ্ত।১৯৬০ সালে জন্ম নিয়েছিল ‘ইন্দ্রপ্রস্থ’ সাহিত্য পত্রিকা। প্রথম সম্পাদক ছিলেন, চাণক্য সেন। পরে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়।

২. ১৯৬১ সাল থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে ‘অজন্তা’ পত্রিকাটি। প্রথমে এটি ছিল হাতে লেখা বার্ষিক পত্রিকা এবং ১৯৬৪ সালে এটি ছেপে বছরে তিনটি সংখ্যা করে প্রকাশিত হতে থাকে। বর্তমানে নবেন্দু সেন এই পত্রিকাটির পরিচালনার দায়িত্বে আছেন।
৩. ১৯৭১ সাল থেকে বিমল চক্রবর্তীর সম্পাদনায় ‘পূর্বাচলের কথা’ শুরু হয়।
৪. বঙ্গ চেতনা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সালে। তখন সম্পাদক ছিলেন বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং সঞ্জীবন রায়। বর্তমান সম্পাদক, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
৪. ১৯৯৪ সাল থেকে ‘উন্মুক্ত উচ্ছ্বাস’ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়ে আসছে। এতদিন সম্পাদক ছিলেন, বিকাশ বিশ্বাস( বিকাশবাবু গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি পরলোক গমন করেন) যুগ্ম সম্পাদক হলেন আদিত্য সেন।   
৫. প্রবাহ / কথাঞ্জলি – ১৯৯৮ সাল থেকে যাত্রা শুরু এবং ২০০১ সালে নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় ‘কথাঞ্জলি। তখন সম্পাদক ছিলেন দিলীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমান সম্পাদিকা স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায়। পত্রিকা প্রকাশ কিছুদিন যাবত বন্ধ আছে।
৬. আপনজন / মরুশা – আপনজন নামে ১৯৯৮ সালে শুরু হয়। পরে নাম দেওয়া হয় ‘মরুশা’। বর্তমান সম্পাদক, গৌতম চক্রবর্ত্তী।
৭. ‘দিল্লি হাটার্স’ পত্রিকাটির জন্ম হয় ২০০১ সালে। সম্পাদক – দিলীপ ফৌজদার।
৮. ‘মাতৃমন্দির সংবাদ’ – মাতৃমন্দির সমিতি থেকে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক পত্রিকা। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে এর প্রথম আত্মপ্রকাশ। আজও নিরবচ্ছিন্নভাবে ১৮ বছর ধরে নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে চলেছে। বিদেশেও এর বহু পাঠক এবং লেখক-লেখিকা আছেন। জানুয়ারি ২০০২ সাল থেকে জুলাই ২০১৯
৯. প্রতীচী – ২০০৪ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। বর্তমান সম্পাদিকা, চিরশ্রী বিশী চক্রবর্ত্তী। বেশ উন্নত মানের পত্রিকা। দেশ-বিদেশে যায়। 
১০.বিবেকানন্দ বিহার সংবাদ – প্রানজী বসাক ছিলেন এর প্রথম সম্পাদক। বর্তমানে সম্পাদিকা হলেন কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্য।
১১.আগরি – ২০০৫ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।  সম্পাদক, দীপালি মজুমদার।
১২.ঢেউ / ঢেউয়ের পর ঢেউ – ১৯৯৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় ‘ঢেউ’। ২০০৬ সাল থেকে এর নাম হয় ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ। সম্পাদক, বিমল চক্রবর্ত্তী। পত্রিকা প্রকাশ সম্ভবত বন্ধ হতে চলেছে। 
১৩.প্রভাতী-র জন্ম ২০০৬ সালে হাতে লেখা পত্রিকা হিসেবে। সম্পাদক, অমল বসাক। বর্তমানে পত্রিকাটি ছাপা পত্রিকা হিসেবেই প্রকাশিত হচ্ছে। 
১৪.আত্মজা – রিমা দাসের সম্পাদনায় ২০০৭ সাল থেকে প্রকাশিত হয়ে চলেছে। 
১৫.ধ্বনি – ২০০৮ সালে থাকে প্রকাশিত হচ্ছে। শুরুতে সম্পাদক ছিলেন নন্দন দাশগুপ্ত। বর্তমান সম্পাদক, ডঃ রঞ্জন ঘোষ।
১৬.হিন্দোল – ২০০৯ সালে এর শুরু। সম্পাদক,  বর্তমান সম্পাদক, নন্দন দাশগুপ্ত।
১৭.সাহিত্য অর্ঘ্য – নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের নিউদিল্লি শাখার মুখপত্র।
১৮.প্রাস – কবিতার পত্রিকা, সম্পাদনা করেন শর্বানীরঞ্জন কুণ্ডু।
১৯. ব্রীহি –কবিতার পত্রিকা, সম্পাদনা করেন শর্বানীরঞ্জন কুণ্ডু।
২০.বোধসন্ধ্যা – ১৯৯৫ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। বর্তমান সম্পাদিকা, দীপা ঘোষ।
২১.সর্বভারতীয় – প্রথমে নাম ছিল ‘সর্বভারতীয় বঙ্গভাষী সংবাদ’। শুরুতে সম্পাদক ছিলেন তপন কিরণ দাশগুপ্ত। বর্তমানে নাম হয়েছে ‘সর্বভারতীয়’। এই পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন,  জয়শ্রী রায়।
২২.’প্রতিভা পথিকৃত’ – এই পত্রিকাটি শুরু হয়েছে বৈশাখ, ১৪১৮ (এপ্রিল ২০১১) থেকে। সম্পাদক ছিলেন গোপাল চন্দ্র পাল। 
২৩.অন্য ঠিকানা – ২২শে অক্টোবর ২০১১ প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত।
২৪. বর্হিবঙ্গ পত্রিকা – সম্পাদক – অরুণ চক্রবর্ত্তী, বছরে একবার পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। তবে এটি এখন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। 
২৫. ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে শারদীয়া এবং আত্মপ্রকাশ সংখ্যা প্রকাশিত হল আরও একটি বাংলা সাহিত্য পত্রিকার। পত্রিকাটির নাম কলমের সাত রঙ। সম্পাদক – কালীপদ চক্রবর্ত্তী এবং সহ-সম্পাদক, অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়। পত্রিকাটির আবরণ উন্মোচন করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোষাল মহাশয়। এই পত্রিকায় লিখেছেন কলকাতার অনেক বিশিষ্ট সাহিত্যিকেরা। তাদের মধ্যে আছেন তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুস্মিতা নাথ, কবি অরুণ চক্রবর্ত্তী (লাল পাহাড়ির দেশ যাই খ্যাত) এবং আরও অনেকে।   
এ প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি উপরোক্ত সাহিত্য পত্রিকাগুলো ছাড়াও অনেক মন্দির,ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান আছেন যারা বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে রাতদিন কাজ করে চলেছেন। তাদের মধ্যে অনেকের নামই আগের পর্বগুলোতে আমি উল্লেখ করেছি। তাদেরমধ্যে আছে – বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন (ব্রততী সেনগুপ্ত এবং তপন সেনগুপ্ত নিরলস প্রচেষ্টা করে চলেছেন বাংলা ভাষা এবং দিল্লির বাঙালিদের জন্য), চিত্তরঞ্জন পার্ক কালীমন্দির সোসাইটির বর্তমান সম্পাদক, শ্রীবাস ভট্টাচার্য এবং অন্যান্য সকলে, চিত্তরঞ্জন ভবন সংস্থার জয়ন্ত রায়চৌধুরী থেকে শুরু করে প্রতিটি সদস্য বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছেন,দিল্লির বঙ্গভাষী সমিতির সভাপতি, স্বপন কুমার চক্রবর্তী এবং  সম্পাদক, রণজিৎ চট্টোপাধ্যায় বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারের জন্য নানা অনুষ্ঠান করেন। এই সংস্থার পক্ষ থেকে একটি পত্রিকাও প্রকাশিত হত। দিল্লির সাহিত্যিকেরা মিলে এবছর শারদীয়া সংখ্যা থেকে ‘কলমের সাত রঙ’ নামে একটি নতুন সাহিত্য পত্রিকা শুরু করেছেন তা আগেই লিখেছি। আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষা সংস্কৃতি সমিতির সুভাষ রায়, সোনার তরী টিভি চ্যানেলের শুভাশিস দত্ত মহাশয় এবং তার সঙ্গী-সাথীরা, চিত্তরঞ্জন  পার্কের মহিলা সমিতি এবং মর্নিং ক্লাব। 

আজকাল দিল্লি থেকে বহু ওয়েব ম্যাগাজিন শুরু হয়েছে, তার মধ্যে ‘দেহলিজ’(পীযুষ  বিশ্বাস), ‘দিল্লি থেকে’ (জ্যোতির্ময় রায়), তাৎক্ষণিক (https://tatkhanik.blogspot.com), দু কলম (সুদেষ্ণা মিত্র) ইত্যাদি ওয়েব ম্যাগাজিনগুলোর নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। এছাড়াও শম্পা দাস ফেসবুক ও ইউ টিউবের মাধ্যমে এবং আকাশবাণী মৈত্রী-ও বেশ ভাল কাজ করে চলেছেন।শ্রদ্ধেয়া মল্লিকা সরকার, জাহানরা রায়চৌধুরী এবং প্রণব দত্ত প্রতিদিন দিল্লি থেকে আকাশবাণী মৈত্রী-র বাংলা অনুষ্ঠানগুলো সুচারুরূপে পরিচালনা করে চলেছেন। পর্দার পেছন থেকে সবার প্রিয় বিজয় ভট্টাচার্য, সমৃদ্ধ দত্ত, জয়ন্ত ঘোষাল এবং আরও অনেকে সাহিত্যের জন্য  নিরলস শ্রম এবং তথ্য দিয়ে সবাইকে সাহায্য করে চলেছেন। 

উপরোক্ত সব পত্রিকাগুলো সম্পর্কে পৃথক পৃথকভাবে লিখতে গেলে এই স্বল্প পরিসরে তা সম্ভব নয়, তাই সংক্ষেপে একটি ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করা হল মাত্র।  বেশ কিছুদিন আগে দিল্লির ‘অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ – ১০০’ তে একটি খবর দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিল, লেডী আরউইন স্কুলের ছাত্রী মেধা ভট্টাচার্য নিজস্ব সম্পাদনায় ছোটদের জন্য একটি পত্রিকা বার করতে চলেছে। যার লেখক, লেখিকারা সব স্কুল পড়ুয়া। যেখানে বাংলা ভাষা নিয়ে নানা দুশ্চিন্তা সেখানে এ খবরটি উৎসাহব্যঞ্জক তো বটেই।  এ থেকেই বোঝা যায় যে দিল্লিতে কত দ্রুত গতিতে সাহিত্য চর্চা এগিয়ে চলেছে। এই গতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন সাহিত্যানুরাগীদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। আশাকরি ভবিষ্যতে আরও বেশি সাহিত্যের প্রচার ও প্রসার হবে দিল্লিতে। অনিচ্ছাকৃত-ভাবে কোন পত্রিকার নাম বাদ গেলে ত্রুটি মার্জনা করবেন। আমি দিল্লির সকল সাহিত্যানুরাগী এবং লেখক-লেখিকা ও সাহিত্যিক এবং সম্পাদকদের ধন্যবাদ জানাই তথ্য দিয়ে  আমাকে সাহায্য করার জন্য। অনিচ্ছাকৃত-ভাবে কোনও পত্রিকার নাম উল্লেখ করা না হলে তারজন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
 আরও পড়ুন।

 কবি শ্যামলকান্তি দাশের জন্মদিন। শুভেচ্ছা জানালেন কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। স্কেচ- দেবাশীষ দেব।


জ্বলদর্চি পেজ-এ লাইক দিন।👇


Post a Comment

2 Comments

  1. Please share the contact number of Mr Kalipada Chakraborty,Delhi.Thanks.

    ReplyDelete