জ্বলদর্চি

তিনটি কবিতা / ভাস্করব্রত পতি

অলংকরণ - পবিত্র দাস 

তিনটি কবিতা 

ভাস্করব্রত পতি

দুষ্টুরা কখনও দুষ্ট হয় না 

সে অনেক দিনের কথা।
আমি তখন খুবই ছোট্ট টি !!
এক্কেবারে পুতুল পুতুল তখন ।
নরম তুলতুলে ।
আমার খেলার সঙ্গী ছিলো অনেকেই -- 
রাজু , তনু , রুমি , গাবলু , রিঙ্কিরা !! 
এঁদের সাথেই বেড়ে গেলো আরও একটা নাম --
         "দুষ্টু " !! 
এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকে !
আর আমাদের সাথে রোজ খেলতে আসে ।
এটা ওর আসল নাম নয় ।
কিন্তু আমি বলতাম ।
আসলে , এই নাম বলে রাগাতাম খুব ! 
বাপরে ! কি রাগটাই না রাগতো ঐ দুষ্টু ছেলেটা !
বললাম না , এটা ওর আসল নাম নয় ।
অন্য কিছু ছিলো হয়তো --
সে আমি জানার চেষ্টা করিনি তখন !
আমার কাছে শুধুই দুষ্টু !!
ব্যাস, যেই না বলা 
অমনি একটা ছড়ি নিয়ে কি ছুট ছোটাতো আমাকে ।
আমি কি পারি ওর সাথে ছুটতে ?
ধরে ফেলতো পেছন থেকে ।
তারপর, 
আলতো করে পিঠে দু তিন ঘা দিয়ে বলতো --
" আর বলবি কোনোদিন " ??
কতবার মা'র কাছে নালিশ করেছি ওর নামে ।
মা সবসময়ই ওর হয়ে ঝোল টানতো ।
বলতো , ' তুই ওকে রাগাস কেন রে ' ??
আমি মনে মনে 
খুব মজা পেতাম ।
আমাদের বাড়ির পাশের ভূবনদিঘীর পাড়ে 
আমরা খেলতাম বরবউ, কুকলুকুনি , এক্কা দোক্কা ।
সবচেয়ে দস্যি ছেলে ছিলো 
ঐ দুষ্টুটা ।
আমার সাথে প্রতিদিনই চলতো এরকম রাগারাগি ।
সেই রাগ অনুরাগে বদলে যাওয়ার আগেই
হঠাৎই হারিয়ে গেলো দুষ্টু !
আর আমাদের সাথে খেলতে আসেনা ।
আর দেখতেও পাইনি কোনোদিনই !
কোথায় যে গেলো দুষ্টুটা ? 
আমার সেই 
খেলার সাথীটার কথা
 মনে পড়তো বারবার !
আসলে এখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে 
ওর বাবা মা রেখে গিয়েছিল ।
ক্লাস ফাইভ থেকেই ও ফিরে যায় ওর বাড়ি ।
এমনি করেই কেটে গেলো কয়েকটা বছর !
আমি বড় হোলাম ।
বড়ো, মানে বড়ো হোলাম !
আমি এখন বুঝতে শিখেছি অনেক কিছুই ।
আমার মনের গহিন বনে এখন
পাখি ডাকে , গান গায় !
আমি এখন নাইনে পড়ি ।
আরে , এ তো সেই দুষ্টু না ??
আমাদের স্কুলে 
ইলেভেনের ছাত্র এখন !
আমার স্মৃতিপটে থেকে একটুও হারায়নি দুষ্টু ।
কথা বলতে গিয়েও পারলাম না বলতে !
যদি আবারও মারে !!
ও আমায় দেখতো আড়চোখে ।
কিছু যেন বলতে চাইতো , 
কিন্তু বলতে পারতোনা !
বুঝতাম, 
সেই ছোটবেলার কথা ভেবেই
একটু যেন আড়ষ্ঠতা !
আমাদের গ্রামের সেই আত্মীয়ের বাড়িতে থেকেই ওর উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা ।
" এই যে , পাপুন আছে ? 
এই নোটটা একটু দিয়ে দেবে তো ! "
পাপুন আমার দাদা ।
দাদার সাথেই পড়ে তো ! 
" হ্যাঁ দিয়ে দেবো --- 
    দুষ্টু !! " 
বলেই ছুউট ! 
কই, আজ তো আর আমাকে ছোটালো না ?
আমাকে তো আর আগের মতো মারলো না ?
শুধু আড়চোখে তাকিয়ে ঠোঁট চেপে মিস্টি হাসি !
কি মিষ্টি সেই হাসিটা ! 
আমি বুঝতেই পারিনি 
এটা ওর রাগ না অনুরাগ ! 
যতবারই দেখা হোতো রাস্তাঘাটে , স্কুলে , বাজারে -- 
পুটুস ক'রে "দুষ্টু" বলেই মুখ ঘুরিয়ে নিতাম ! 
এই দু বছরে একবারও কথা বলিনি ।
এখন তো আর 'বরবউ' খেলার বয়স নয় ।
ভূবনদিঘীর মাঠেও
 খেলতে যাইনা ।
আমি যে বড়ো হয়ে গেছি গো ।
আর সেই পুতুল পুতুল নই তো !!
 এখন তো সবাই আমায় ' পরী ' বলে ! 
সবাই বলে - " কি সুন্দর হয়েছিস রে তুই !"
কিন্তু 
আমি তো একজনের কাছেই শুনতে চেয়েছিলাম তা !
না , কোনোদিনই শুনিনি !
একটা অদ্ভুত নীরবতা লুকিয়ে ছিলো 
দস্যিটার দুই চোখে !
আমি ভাবতাম কেবল 
বেশ মানাবে আমাদের দুজনকেই !
একই কাস্ট , একই গড়ন ! 
পড়াশোনাতেও ভালো ! 
বাড়িতে অমত করবেই না কেউ !
কিন্তু , আমিও কোনোদিনই বলতে পারিনি 
আমার মনের ভাবনা গুলো !
কতবার বলতে গিয়েও আটকে গিয়েছি
দুষ্টুটার নীরব চাউনি দেখে !
ও কি আমাকে আদৌ চায় ? 
বুঝতে পারিনি একবারও ।
আর জানা হয়ে ওঠেনি তা ।
আবারও হারিয়ে গেলো আমার দুষ্টু ! 
মনের কোনে দ্বিতীয় বার উঁকি দিয়েই 
কোথায় চলে গেলো কেউ বলতে পারলোনা ! 
জানতেও চেষ্টা করিনি আর !!
আমি কি এতোই খারাপ ?
আমি কি ওর যোগ্য নই একদম ?
এরপর কেটে গেলো অনেকগুলো বসন্ত !
আমার জীবনে রং লেগেছে ।
পুতুল থেকে পরী হয়ে আমি এখন প্রতিমা ! 

আঙুল দিয়ে ঘোরানো ফোনের যুগ আর নেই । 
এসেছে অ্যান্ড্রয়েড !
ফেসবুক , হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার এখন
আমাদের বন্ধু !
সেই ফেসবুক আমায় তৃতীয়বারের জন্য খুঁজে দিলো দুষ্টুকে ! 
সেই একই নীরব চোখের চাউনি !
সেই যন্ত্রণাকাতর অস্ফুট ঠোঁটের পরিবর্তন হয়নি এতটুকুও ! 
তবুও মনের জোর এনে ফ্রেণ্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দিলাম  !!
যা করা উচিত ছিলো অনেক বছর আগেই !
কিন্তু তখন তো ফেসবুক ছিলো না !
প্রতিদিনই দেখতাম 
আমার রিকোয়েস্ট একসেপ্ট হোলো কিনা !
হয়নি !
দুষ্টু এখন চাকরি করে !
হয়তো কাজের চাপে হয়ে উঠছেনা ।
নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতাম এভাবেই ।
কিন্তু, আমার রিকোয়েস্ট কি ও দেখেনি ? 
না হয় আমি এখন অন্যজনের সম্পত্তি !
কিন্তু সেই ছোটবেলার
 রাগ থেকে অনুরাগ কি ওর নিজের হয়নি ? 
আমি কি একদমই যোগ্য নই ?
লজ্জার মাথা খেয়ে ম্যাসেঞ্জারে লিখলাম - 
" হাই দুষ্টু ! আমায় চিনতে পারলে ? "

কোনো জবাব নেই ! 
জবাব মেলেনি । 
রিকোয়েস্টও অ্যাকসেপ্ট হয়নি ।
আসলে খবরের কাগজে
 " খবর " হয়েছিল দুষ্টু !

"মিড ডে মিলের চাল চুরির অভিযোগে গ্রেফতার 
প্রধানশিক্ষক " !! 

জানতে পেরেই রাগে দুঃখে রিকোয়েস্ট ফিরিয়ে নিয়েছিলাম তৎক্ষণাৎ !
এ আমার সে "দুষ্টু" নয় ! 
এ সত্যিকারেরই "দুষ্ট" লোক !
জেলের মধ্যেই সুইসাইড করেছিলো 
ঐ দুষ্ট লোকটা ! 
হয়তো কৃতকর্মের সাজা অন্যভাবে নিতে চায়নি সে ।
যে লোক ছেলেমেয়েদের চাল চুরি ক'রে পেট ভরায় --
তাঁর শাস্তি আরও কঠিন হলেও মনে দাগ পড়বে না !

ভুলেই গিয়েছিলাম সব !
হঠাৎই একটা খবর চুরমার করে দিলো- 
আমার ঘৃণা , 
আমার অহংকার, 
আমার সত্বা !
আমি মানুষ চিনতে ভুল করেছি !
'দুষ্টুরা কখনো দুষ্ট হয়না' !
এটা আমি কেন বুঝতে পারিনি ?

খবরের কাগজে বেরিয়েছিল --
"জেলে হেডটিচারের আত্মহত্যার আসল রহস্য" ! 

পাড়ার দাদারা সম্মেলনের জন্য চেয়েছিলো 
মিড ডে মিলের পাঁচ বস্তা চাল !
ঐ দুষ্ট লোকটা তাতে রাজি হয়নি ! 
দাদারা প্রতিশোধ নিয়েছিলো 
চাল চুরির ষড়যন্ত্র কষে ! 

আমার দুষ্টু আমার চোখেই 
হয়ে উঠেছিলো দুষ্ট লোক ! 
দাদাদের শাস্তি হয়নি।
খবরের কাগজে আর ফলোআপ নিউজও হয়নি ! 
চেপে গিয়েছিল সবাই । 

অন্ধকার ঘরে একা একা বসে আছি আমি ।
টপ টপ করে চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল ।
মনে পড়ছিলো
সেই ভূবনদিঘীর কথা !
সেই দুষ্টু ছেলেটার কথা !
যে আমায় রোজ মারতো দুষ্টু বলার জন্য !
আজ আবারও মারলো আমাকে ! 

কেন তুমি বলতে পারলেনা যে 
তুমি চাল চুরি করোনি ?
কেন সত্যটাকে সামনে আনলে না ?
চিরদিন চেপে রাখা স্বভাবটা 
তোমাকে দুষ্টু ছেলে থেকে দুষ্ট লোক বানিয়ে দিলো !

আমি তোমার অপেক্ষায় রইলাম ।
কোনোদিন যদি ইচ্ছে হয় 
একবার অন্তত জানিও -- 
তোমার মনে আমার যায়গা আছে কিনা !
একবার --
শুধু একবার !! 

পিছু থেকে ডেকোনা আমায় আর  

আমি চ'লে যাচ্ছি !! 
অনেক দূরে .... 
তোমার ছোঁয়ায় আর থাকবোনা ।
জানি , আমাকে তুমি ভুলবে না ।
কেননা , আমিই তোমার হাতে তুলে দিয়েছি 
তোমার জন্য একটা ছোট্ট উপহার ! 
তোমার মনের মানুষ কে ! 
একরাশ জমানো বেদনার পাহাড় নিয়ে 
ভালো থাকার চেষ্টা কোরো ।
দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ , হতাশা নিয়ে 
ভালো রাখার চেষ্টা কোরো । 
আমি আর তোমার পাশে থাকবো না ! 
আমি আর তোমার কানে কানে ব'লবো না -- 
"দাও , ওর গালে আবীর মাখিয়ে" !
আমি আর তোমাকে গাইতে ব'লবো না -
" আবার দেখা যদি হ'লো সখা প্রাণের মাঝে আয় " ! 
সত্যিই চ'লে যাচ্ছি গো !! 
আজ রাতের পর আমি হারিয়ে যাবো চিরতরে !! 
শুধু প'ড়ে থাকবে -- 
আমার স্মৃতি ভরা কঙ্কালসার দেহটা ! 
তুমি ভালো থেকো ।
খুব ভালো থেকো । 
যাঁকে পেয়েছো , 
তাঁর সাথে সম্পর্ক রেখো । 
" অন্যের " নয় , শুধু " তোমার " !!
আমার যে আর থাকার অনুমতি নেই গো ! 
থাকার সুযোগ দিলে -- 
সযতনে সাজিয়ে দিতাম তোমাদের দুজনকেই !
চাঁদকে ব'লে দিতাম, 'একটু বেশি ক'রে জোছনা দিও'!
ফুলকে ব'লতাম , 'খোঁপায় জড়িয়ে থেকো' !
আর , বাতাসকে ব'লতাম , 'চুম্বনের কনাগুলো উড়িয়ে নিয়ে যেওনা' ! 
আজ আমার ডাক এসেছে যে ! 
ধুর বোকা , এভাবে কেউ কাঁদে ??
এটাই তো নিয়ম ।
আসছে আরেকজন ।
সে তোমায় আমার চেয়েও অনেক বেশি আবিষ্ট ক'রবে ।
লক্ষ্য রাখবে । 
যত্ন নেবে । 
আদর ক'রবে । 
তোমার পাশে পাশে থাকবে ।
তোমার মনের মানুষটাকে আগলে রাখবে ।
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা ! 
আমায় যেতে দাও এবার ।

আমায় তোমার ভালো লাগতো, ভালোবাসতে না

আসলে,
আমায় তোমার ভালো লাগতো,
ভালোবাসতে পারোনি কখনও।
ধুলো মাখা গাঁয়ের পথ
আদুল গায়ের রঙচটা বর্ণমালা
ধঞ্চে গাছের ছড়ি 
গলায় ঝোলা দাঁতে চিবোনো মাদুলি
আর হাড় জিরজিরে ল্যাকপ্যাকা একটা ছোকরা
তিড়বিড় করে ছুটতো বাঁশবন দিয়ে বাড়ির উঠোন
সব মনে আছে তোমার
শুধু তাঁকে নিজের করতেই মনে ছিলনা।
আসলে,
আমায় তোমার ভালো লাগতো,
ভালোবাসতে পারোনি কখনও।

এখনো মনে আছে সেই আড়চোখে তাকানো!
একবার তাকিয়েই নামিয়ে নিতাম চোখ
আবারও তাকাতাম লুকিয়ে লুকিয়ে
কি গভীর চাওয়া 
ঠিকরে বেরোতো চোখে মুখে
তিনমাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম 
শুধু তোমায় এক পলক দেখার জন্য
যেদিন শুনলাম
তোমার জন্য তোমার বাবা চায় 
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার 
বা আরো বড় কোনো চাকুরে..
খুব চমকে গেলাম মনে মনে
কাঁচের মতো ভেঙে খানখান সব ভাবনা, সব কল্পনা 
আর তোমার থেকেও কোনো সাড়া জোটেনি সেদিন
আমি যেন আর আমিতেই নেই তখন
আসলে আমার সেই যোগ্যতাই ছিলনা
সোনার চামচ মুখে ছিল তোমার
লাউডাঁটা চিবোনো সইতোনা আমার ঘরে।
আসলে,
আমায় তোমার ভালো লাগতো,
ভালোবাসতে পারোনি কখনও।

অবশেষে তীব্র অভিমানে 
সকলের চোখ এড়িয়ে চলে গিয়েছিলাম।
তুমি জানতে পেরেছিলে সেদিন
তবুও চুপ করে ছিলে।
কোনদিনও খোঁজ নাওনি আমার।
আমার নাকি খোঁজ দেওয়ার কেউ ছিলনা তোমার!
আর কোনদিনও তোমার জীবনে
পথের কাঁটা হয়ে উঠিনি।
আসলে,
আমায় তোমার ভালো লাগতো,
ভালোবাসতে পারোনি কখনও।

শুনেছি কলেজ জীবনে অনেকের প্রেমে 
হেল্প করেছো তুমি।
কলেজ পালিয়ে দুই প্রেমিক প্রেমিকাকে 
মিলিয়ে দিয়েছো কতবার।
চিঠি পৌঁছে দেওয়া থেকে উত্তর লিখে দেওয়া! 
কিন্তু নিজের বেলায়?
সত্যিই যদি আমাকে চাইতে
তবে কেন খুঁজলেনা আমায়?
কেন প্রেম করলেনা আমায়?
কেন লুকিয়ে ছিলে আমার চোখ এড়িয়ে?
কেন আমার জন্য অপেক্ষা করলেনা একটুও?
আসলে, 
আমায় তোমার ভালো লাগতো,
ভালোবাসতে পারোনি কখনও।

আজ এতো বছর পরে ওসব কথার 
কোনো মানেই হয়না আর।
আজ সেদিনের রূপকথার গল্পগুলো শুনলে মনে হয়
এখানে শুধুই হাড়মড়মড়ি ব্যারাম!
কড়ির পাহাড়, হীরার পাহাড়
রাক্ষস খোক্ষস আর মরণকাঠির দাপাদাপি।
কিন্তু রাজপুত্র রাজকুমারী নেই।
নেই পক্ষীরাজ ঘোড়া  
নেই কোনও জিওনকাঠির জাদুছোঁয়া।
আসলে, 
আমায় তোমার ভালো লাগতো,
ভালোবাসতে পারোনি কখনও।

বর্ষার বিকেলে খোলা জানালায় 
বসে আছি
ঝপাং করে পেছন থেকে গলাটা জড়িয়ে 
একটা আলতো চুমু!
নরম হাতটা বাড়িয়ে
'এই নাও চা'।
চমকে ফিরে দেখি তুমি!
না, আমি এতক্ষন কল্পনার ক্লাসে ছিলাম।
আসলে,
আমায় তোমার ভালো লাগতো,
ভালোবাসতে পারোনি কখনও।

Post a Comment

0 Comments