জ্বলদর্চি

অ্যাঁতেলেকত্যুয়েল বনাম আঁতেল - ২৬/ সন্দীপ কাঞ্জিলাল

অ্যাঁতেলেকত্যুয়েল বনাম আঁতেল - ২৬

"ঠেঙা লাঠির দ্বারা পরোপকার হয় না। দুষ্টের দমন রাজা না করেন, 'ঈশ্বর করিবেন- তুমি আমি কে?' শিষ্টের পালনের ভার লইও- কিন্তু দুষ্টের দমনের ভার ঈশ্বরের উপরে রাখিও।" (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় /দেবী চৌধুরাণী)


সন্দীপ কাঞ্জিলাল ( পর্ব- ২৬) 


বুদ্ধিজীবী ও সমাজ- ৪

"যা নিশা সর্বভূতানাং তস্যাং জাগর্তি সংযমী।/ যস্যাং জাগ্রতি ভূতানি সা নিশা পশ্যতো মুনেঃ। (গীতা- ২য় অধ্যায়, ৬৯তম নং শ্লোক)।" এই জগতে দুই ধরনের বুদ্ধিমান লোক আছে। এক ধরনের বুদ্ধিমান লোক ইন্দ্রিয় ভোগতৃপ্তির উদ্দেশ্যে বৈষয়িক ব্যাপারে খুব উন্নতি লাভ করে, আর অন্য ধরনের বুদ্ধিমানেরা আত্মানুসন্ধানী এবং আত্মতত্ত্বজ্ঞান লাভের চেষ্টায় সদা জাগ্রত। 

বুদ্ধিমান লোক বা 'ইনটেলেকচুয়াল’এবং বুদ্ধিজীবী বোধ হয় এক কথা নয়। 'ইনটেলেকচুয়াল’ কথাটির মধ্যে জীবিকার কোনো সম্পর্ক নেই। তাই 'ইনটেলেকচুয়াল’ এর বাংলা অর্থ বুদ্ধিজীবী, সঠিক অনুবাদ নয়। আমাদের সমাজে প্রথমত ব্রাহ্মণরা ছিল বুদ্ধিসংস্কৃতির রক্ষক এবং বুদ্ধি ভাঙ্গিয়ে তাদের জীবিকা চলতো। আবার ইংরেজদের প্রয়োজনে যে শ্রেণি আবার সংস্কৃতির ধারক হলেন তাঁরা শিক্ষাকে জীবিকার কাজে লাগাতেন। বুদ্ধি ভাঙ্গিয়ে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের বলে বুদ্ধিজীবী। তাই বোধ হয় যখন কেউ রাজনীতির জন্য মারা যায়, তখন বেশ কিছু লোক সন্ধ্যায় টিভিতে আসর জমায়। যখন কেউ না খেতে পেয়ে মারা যায়, অপুষ্টিতে মারা যায়, তখন বেশির ভাগ বুদ্ধিজীবী প্রভু বুদ্ধের মতো নির্বিকার থাকেন। তখন তাদের ভাবখানা এমন, "দুষ্টের দমন রাজা না করেন, 'ঈশ্বর করিবেন- তুমি আমি কে?' তাই ধনী শিল্পপতি, বণিক, শিক্ষিত চাকুরীজীবী, অর্থাৎ যাদের জীবনের সঙ্গে মুদ্রার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ, টাকা পয়সা যাদের মূল কথা, যাদের কাছে ন্যায় অন্যায় প্রভৃতি বিচার হয় একমাত্র মুদ্রায়, তাঁরাই মধ্যবিত্ত শ্রেণি। আর এই মধ্যবিত্ত শ্রেণি হল বুদ্ধিজীবী। তাই মধ্যবিত্ত শ্রেণির সঙ্গে বুদ্ধিজীবী শ্রেণিকে পৃথক করে বিচার করা যুক্তিহীন। সমাজে শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরই মধ্যবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি বলা হয়। তাই গীতার শ্লোকে বলা হয়েছে, এক ধরনের বুদ্ধিমান লোক ইন্দ্রিয় ভোগতৃপ্তির উদ্দেশ্য বৈষয়িক ব্যাপারে খুব উন্নতি লাভ করে। এরা বুদ্ধিজীবী। 
আর এক ধরনের বুদ্ধিমান ব্যক্তি আত্মানুসন্ধানী এবং আত্মতত্ত্বজ্ঞান লাভের চেষ্টায় সদা জাগ্রত। তাদের বলা হয় 'ইনটেলেকচুয়াল’। অর্থাৎ তাদের মধ্যে একটা 'নীতিপরায়নতা' বা যাকে ইংরেজিতে বলে 'প্রিন্সিপাল'। তাদের মধ্যে এট কাজ করে। ঐ যে রবীন্দ্রনাথের "গোরা" উপন্যাসে গোঁড়া নব্য হিন্দু অবিনাশ ও তাহার বন্ধুরা যখন বলে, "আমরা বিনয় বাবুর মতো বিদ্বান নই, আমাদের অত অত্যন্ত বেশি বুদ্ধি ও নাই, কিন্তু বাপু, আমরা বরাবর যা হয় একটা প্রিন্সিপাল ধরিয়া আসিয়াছি।" 'প্রিন্সিপাল' শব্দের অর্থ অক্সফোর্ড ডিকশিনারিতে দেওয়া আছে- 'An inward or personal view of night conduct'৷ তবে এই নৈতিকতা আমাদের পরিবেশের দ্বারা প্রভাবিত। সে পরিবেশ হতে পারে ধর্মীয় বা সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাষ্ট্রীয় পরিবেশ, নৈতিকতা সম্পর্কে একজন মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ও থাকতে পারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই দৃষ্টিভঙ্গির উপর একসময় পরিবেশের প্রভাব পড়ে, তখন তাকে আর 'দৃষ্টিভঙ্গি' না বলে 'ধারণা' বলাই ভালো। একটা সময় মানুষ সেই প্রভাবিত 'ধারণা' কে তাঁর নিজস্ব 'দৃষ্টিভঙ্গি' বলে ভাবতে শুরু করে। এই 'প্রিন্সিপল' সম্বন্ধে বুঝবার জন্য শার্লট ব্রন্টির 'শার্লি' উপন্যাসে মিসেস প্রায়র যখন বলেন, "My dear, you acknowledge an inestimable value in principle?"। তখন আঠারো বছর বয়সী ক্যারোলাইন উত্তর দিল, "I am sure no character can have true worth without it"। তবে বোঝা গেল চরিত্রবান হলে তার মধ্যে একটা নৈতিকতার সম্পর্ক থাকবে। যারা এই নৈতিকতাকে অবলম্বন করে  তাঁরাই 'ইনটেলেকচুয়াল’। আমি প্রথমে যে উল্লেখ করেছিলাম বুদ্ধিজীবী। যাদের মধ্যে অর্থের সম্পর্ক। তাঁরাই বুদ্ধিজীবী শ্রেণি। মধ্যবিত্ত শ্রেণি। মুদ্রাই যাদের প্রধান নিয়ামক এবং মুদ্রাই যাদের প্রাথমিক উপাদান।প্রাবন্ধিক বিনয় ঘোষ তাঁর "বাংলার নবজাগৃতি" গ্রন্থে বলেন,---
"মুদ্রাপ্রধান অর্থনীতিই নবযুগের সমাজের বুনিয়াদ। যা কিছু হচ্ছে, যত উদ্যম, যত প্রেরণা গবেষণা আবিষ্কার সবই এই মুদ্রার মোহে। মধ্যযুগে মুদ্রার নড়াচড়ার বিশেষ প্রয়োজন ছিল না। মুদ্রার চাইতে জিনিসপত্তরই নড়েচড়ে বেড়াত বেশি। প্রয়োজনীয় জিনিসের বদলে জিনিস পেলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে চলত, মুদ্রার প্রয়োজন হত সামান্য। কিন্তু ধনতান্ত্রিক যুগে মুদ্রার রুপান্তর ঘটল। ছোট 'চাকতি' হলে কি হবে? সেই চাকতির ঘুরপাক খাওয়ার যে প্রচন্ড শক্তি তা আর কোনও মুদ্রার কোনোকালেই ছিল না। একালের মুদ্রার আলস্যে দিন কাটানো চলে না। অলস হয়ে থাকলেই মুদ্রার আর কোনো মূল্য থাকে না। এ যুগের ব্যাংকে গিয়ে মুদ্রা যখন জমা হয় তখন সে ব্যাংকের সিন্দুকে  নিশ্চিতে ঘুমিয়ে থাকে না। লোহার সিন্দুক ভেদ করে মুদ্রা বাইরের জগতে ঘুরপাক খেয়ে বেড়ায়, সে আরও মুদ্রা প্রসব করে, ব্যাংকাররা সুদ দেয়। 
টাকা ধনতান্ত্রিক যুগের ধর্ম, টাকাই স্বর্গ। সবার উপরে টাকাই সত্য। টাকা শুধু গতিশীল নয়, টাকা সৃষ্টিশীল। টাকার গতিশীলতার উপর টাকার সৃষ্টিশীলতা নির্ভর করে। সেকালে 'সঞ্চিত ধন' একালের 'মূলধন' এর মতো সৃষ্টিশীল ছিল না। ধনতান্ত্রিক যুগে 'ক্যাপিটাল' হল 'ক্রিয়েটিভ'। বিশাল প্রাসাদ-অট্টালিকা প্রমোদ-উদ্যান আর স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে এ যুগে সঞ্চিত ধনের কবর দেওয়া হয় না। টাকার অভিযানের অন্ত নেই।" যত বেশি চলবে, যত বেশি ঘুরবে, তত বেশি টাকার দৃষ্টিশক্তি বাড়বে। টাকা নিজে রূপান্তরিত হয়ে সকলকেই রূপান্তরিত করেছে। মানুষ ও হয়েছে বেচাকেনার পণ্য, মুনাফার শিকার। ধনতান্ত্রিক যুগের টাকার প্রজনন শক্তি এত প্রচন্ড, তার সৃষ্টিশক্তি এতই প্রবল যে নারীর প্রজনন শক্তিকে ধ্বংস করে তার এক বিরাট অংশকে সে বেচাকেনার পণ্যে পরিণত করেছে। 
কার্ল মার্কস তাই বলেছেন, এ যুগের ঘূর্ণাবর্তে যা পড়বে তা-ই সোনা হবে। সেকালের কোনও মুনিঋষির হাড়ে এরকম ভেলকি খেলতো না। মুদ্রাকে মার্কস 'radical leveller' বলেছেন। একদিক থেকে বিচার করলে, মৃত্যুর চাইতেও শক্তিশালী 'লেভেরার' টাকাকে নিশ্চয়ই বলা যায়। টাকা স্বর্গ, টাকা ধর্ম তো নিশ্চয়ই, তুকতাক ঝাড়ফুঁক স্তোত্রমন্ত্র সবই 'টাকা টাকা টাকা'। তা ছাড়া টাকাই বংশ, টাকাই গোত্র, টাকাই শ্রেণি। নতুন যে শ্রেণিবিন্যাস হল সমাজে সে হল টাকার বিন্যাস। সবার চাইতে বড় কুলীন টাকা, শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ টাকা। রক্তের প্রবাহের মতন যখন টাকারও বৈশিষ্ট্য হল তার প্রবাহ, তখন 'রক্ত হল টাকা', সমাজের শিরা-উপশিরায় টাকারই প্রবাহ ছুটে চলল। ধনতান্ত্রিক সমাজের রক্তপ্রবাহ টাকা। 

এখন আর মিনার গম্বুজ না অনন্ত আকাশের দিকে চেয়ে ভক্তি গদগদ কণ্ঠে বলতে হবে না, 'হে ঈশ্বর!' এখন বলতে হবে, 'হে হিসাবের খাতা! হে লেজার!' এখন আর ভক্তি নয়, আবেগের চাপে কাঁপতে কাঁপতে মূর্ছা যাওয়া নয়, ভাবালুতা নয়। এখন জমা-খরচের লাভ-লোকসানের কড়ায়-গণ্ডায় হিসাব, বিদ্যাবুদ্ধির তীক্ষ্ণ বাণবিদ্ধ নির্মম নিষ্ঠুর যুক্তি। আবেগ-ভক্তির স্যাঁতসেঁতে রহস্যলোক পার হয়ে ধনতান্ত্রিক যুগ বুদ্ধি ও যুক্তির বিশাল শুকনো খটখটে প্রান্তরে পা দিয়েছে। 'সময় আর টাকা'র মতন 'টাকা আর বুদ্ধি, টাকা আর যুক্তি' এক হয়ে মিশে গেছে। এই বুদ্ধি ও যুক্তির অভিযান টাকার অভিযানের মতনই যুগান্তকারী।
যারা বুদ্ধিজীবী তাদের উদ্দেশ্য সহজেই অনুমেয়। তারা সরকার পক্ষ বা যে কোনো দিক থেকে সুযোগ সুবিধা ও আর্থিক প্রাপ্তি আশা করে। একজন আইনজীবীও বুদ্ধিজীবী। একবার একজন প্রশ্ন করেছিল,বলুন তো একজন আইনজীবী ও রক্ষিতার মধ্যে পার্থক্য কী? আমি কিছু বুঝতে না পেরে চুপ করে থাকতে, উনি বললেন, বুঝলেন না মশাই রক্ষিতা টাকা পেলে শুয়ে পড়ে, আর আইনজীবী টাকা পেলে দাঁড়িয়ে যান। তাই টাকা যেখানে,সেখানে বুদ্ধিজীবী এক পায়ে খাঁড়া। আর যারা ইনটেলেকচুয়াল তারা এসবের পরোয়া করে না।

এ পর্বের লেখা শেষ করবো একজন ইনটেলেকচুয়াল এর কাহিনি বলে।

১৭০০ সালের দিকে সে সময়ের সরকার ও সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম উপন্যাস লেখক ড্যানিয়েল ডিফো লিখলেন তাঁর বিখ্যাত রাজনৈতিক পুস্তিকা 'দ্য শর্টেস্ট ওয়ে উইথ দ্য ডিসেন্টার্স (The shortest way with the decenters)। ডিফো তাঁর সে বইটিতে লিখলেন- ডিসেন্টার্স শায়েস্তা করার সবচেয়ে সহজ পথ হল তাদের সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে দেওয়া। অথচ ডিফো নিজেও ছিলেন ডিসেন্টার। কত মর্মভেদী তার এই লেখা, যেন ডিফো নিজেই নিজের ফাঁসি চাইছেন। 
১৭০৩ সালের ২ জানুয়ারি ডিফোর বিরুদ্ধে "দ্য শর্টেস্ট ওয়ে" লেখার জন্য অভিযোগ উত্থাপন করা হল। ডিফো আগে থেকে খবর পেয়ে গা ঢাকা দিলেন। প্রায় সাড়ে চার মাস আত্মগোপন করে রইলেন। তারপর ধরা পড়লেন, বিচার হলো। বিচারে ডিফোর জরিমানা হল। সঙ্গে তিনি দিন পিলরিতে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয়া হল। এর মধ্যে পিলরিতে দাঁড়িয়ে থাকাটাই সবচেয়ে কঠোর সাজা। খোলা জায়গায় কাষ্ঠস্তম্ভে হাত-পা এবং গলা এমন ভাবে আটকে দেওয়া হয় যে নড়াচড়া করার উপায় থাকে না। অনেকটা কুরুশের মতো, তবে হাত-পা পেরেক দিয়ে আটকানো হয় না। ফাঁকের মধ্যে হাত-পা ও গলা ঢুকিয়ে আটকে রাখার বন্দোবস্ত থাকে যন্ত্রটিতে।
মাথার ওপর লিখে দেওয়া হয় অপরাধের বিবরণ। কৌতুহলী দর্শকের ভিড় জমে যায় তামাশা দেখার জন্য। তারপর মজা দেখার জন্য জনতা ঢিল ছুঁড়তে থাকে পিলরিতে আবদ্ধ বন্দীকে লক্ষ্য করে। রক্ষীরা বাধা দেয় না, এটা জনতার বহুদিনের অলিখিত অধিকার। কত বন্দী প্রাণ দিয়েছে ঢিলের আঘাতে, কত বন্দী জন্মের মতো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হারিয়েছে। ডিফোর ভয় এ পিলরিকে। এক দিন নয়। তিন দিন দাঁড়াতে হবে। নিজেকে ভাগ্যের হাতে সমর্পণ করলেন ডিফো। ভয়ে অন্য ডিসেন্টরা তাঁকে ত্যাগ করেছেন, টাকা দিতে পারেননি বলে আইনজ্ঞরা সাহায্য করতে এলেন না, বন্ধুরা মুখ ফিরিয়েছেন, যে হুইগ দলের নেতাদের জন্য এত করেছেন তাঁরাও তাঁর আবেদনে বিন্দুমাত্র সাড়া দিলেন না। সুতরাং নির্বিকারচিত্তে শাস্তি গ্রহণ করা ছাড়া উপায় কী? কিন্তু আশ্চর্য, জনতা ত্যাগ করেনি তাকে। 
ভিড় কম হয়নি, দলে দলে নর-নারী এসে খোলা জায়গা ভরে ফেলেছে। পিলরিতে দাঁড়িয়ে ডিফোর সব শরীর অবশ হয়ে আসছে। দূর থেকে সব ভালো করে দেখতে পাচ্ছেন না। তবু দেখতে পেলেন হাজার হাজার কপি "দ্য শর্টেস্ট ওয়ে" বিক্রি হচ্ছে। ক'মাস আগে সরকারের আদেশে এ বই প্রকাশ্যে পোড়ানো হয়েছিল। এখন নতুন করে ছাপানো হয়েছে, দর্শকরা সাগ্রহে কিনছে। অন্য সবাই ত্যাগ করলেও জনতা তাকে ত্যাগ করেনি। তাঁকে লক্ষ্য করে একটি ঢিল ও ছুঁড়লো না কেউ। বরং সম্মান দেখিয়েছে তাঁরই বইকে। কেউ কেউ পড়তে শুরু করলো পিলরির চারপাশে। 
উপরের বর্ণিত কাহিনীটি ইতিহাসের পাতা থেকে এ কারণে উল্লেখ করা হল যাতে পাঠক সমাজ অতি সহজেই বুঝতে পারেন বুদ্ধিজীবী আর ইনটেলেকচুয়াল’দের মধ্যে পার্থক্য। 

ইনটেলেকচুয়াল’দের  কেন এবং কী রকম প্রতিকূল পরিস্থিতি উপেক্ষা করেও ন্যায় প্রতিষ্ঠা, সেই সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের মানুষের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে সব সময় প্রস্তুত থাকেন।

একটা বিষয় আমার কাছে বেশ আশ্চর্য লাগে, বর্তমান গণযোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সাধারণত যেসব ইনটেলেকচুয়াল সেজে কথা বলেন, কিংবা বক্তব্য দেন আমরা ধারণা গুটিকয় ছাড়া তাদের বেশিরভাগেরই পড়াশোনার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। নেই তেমন ইতিহাসবোধ। দেশের লাখো-কোটি দর্শকের সামনে কীভাবে অবলীলায় অসত্য, অসম্পূর্ণ কিংবা ত্রুটিপূর্ণ ইতিহাস বলে যান একের পর এক! দেখলে বেশ অবাক হতে হয় বৈকি!(ক্রমশ)
--------------
আরও পড়ুন 

"ভোগবাদী অর্থনীতির এই চরম ও পরম যুগে সব রাজনৈতিক দলগুলো যখন লুটতন্ত্রের নামান্তর হয়ে উঠছে, তখন জন-অধিকার বা গণ-আকাঙ্ক্ষার শেষ মশাল হিসেবে প্রতিরোধের স্বরকে কণ্ঠ দেওয়া বুদ্ধিজীবীর কর্তব্য। কিন্তু এখন প্রশ্ন, এই বহু শিক্ষায় বিভক্ত সমাজে কোন ভাষায় কথা বলবেন বুদ্ধিজীবী?"

জ্বলদর্চি পেজ-এ লাইক দিন।👇



Post a Comment

0 Comments