জ্বলদর্চি

২০২১ নতুন বছর নতুন লেখা (গুচ্ছ কবিতা)/অমিত কুমার রায়

২০২১ নতুন বছর নতুন লেখা 
গুচ্ছ কবিতা

অমিত কুমার রায়

দুটো রেখে যাও

তুমি যদি কোনো হোটেলে যাও
দুটো ভাত চেয়ে নাও,
একটা ভাত নিজে খাও
আর একটার দাম সহ
দুটো ভাতের দাম দাও।
তোমার সময় খুব অল্প 
সামর্থও খুব অল্প,
তাই এই কথা বললাম....
একটু যদি সময় হয় 
তুমি দেখতে চাও তো দাঁড়াও---
খাঁ খাঁ খিদের দুপুরে 
হোটেল ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করছে---
বাবু একটি ফাঁকা ভাত হবে !......
হোটেল ম্যানেজার ঘাড় নেড়ে বলবে, হ্যাঁ।
কারো যদি সাধ্য হয় সাধ্যমত হাত বাড়াও
তিনটে ভাত কিম্বা রুটি কিনে নাও,একটা খাও
দুটো রেখে যাও.....ওরা আসবে
দু'দুটো বুভুক্ষু ভারতবর্ষের মুখ......
                     

শীতের অন্ধকারে

ঝুপড়ি গুলো পুড়ছে দাউ দাউ করে 
কে পোড়ালো প্রশ্ন নেই... পোড়া গন্ধ 
বাইপাশ জুড়ে কালো ধোঁয়া --- ধোঁয়াশায় 
মুখ ঢাকে পথ গলিপথের আকাশ !
তার বুকের মনের ঝুপড়ি পুড়ে ছাই
নিঃস্বতার দগদগে আগুন নেভেনি
ফায়ার ব্রিগেডের গঙ্গার জলে.....
টাকা নেই, খাদ্য সাথী নেই, আধার কার্ড নেই......
 আগুনের শিখা গ্রাস করেছে ওদের বিশ্ব
আঁধার নেমেছে স্বপ্নে শুকতারাতে---
শীতের অন্ধকারে ওদের নববর্ষ নেই 
ওদের খেরোর খাতায় শূন্যতা 
গাছের নিচে রূপসী বাংলার বনলতা
ওম খোঁজে কারো সহানুভূতির ।
                     

নতুন বর্ষে নতুন হর্ষে

বিষের জ্বালায় হাঁসফাস
বিশ সালে কে বিষ ছড়াস ?
ঘরে খেলি ঘরে পড়ি
নেই চাপ নেই ছড়ি,
না পড়েই হলাম পাশ !
শিক্ষা হল বেশ তো কিছু 
হাত ধোয়াতে হইনি পিছু,
হলাম পটু জল ঘাঁটাতে
সাবান মাখি ফর্সা হাতে,
ঘাড়টা করে অল্প নিচু !
মন যে খারাপ একটু ভেবে 
নতুন বন্ধু কে আর দেবে,
বাবা বলেন নতুন বর্ষে
সবাই মাতবে নতুন হর্ষে,
মহামারী মুক্তির উৎসবে।
             

 আগামী 

কুয়াশায় মুখ ঢাকা চাঁদ 
ফিরতে চেয়েছে আগামীতে,
জ্যোৎস্না ছড়াবে ফুলে ফুলে 
তুহিন-শুভ্র রাতে.....
ফুলের উপমা দিই কেন 
একটু সাহসে বলেফেলি
তোমার হাসি যেন জ্যোৎস্না রাত
মুখখানি চন্দ্রা বেলি।
ম্লান মুখ আর কতদিন 
কুয়াশায় চাঁদ মাখা,
সময়ের ডোর ভেঙে হবে ভোর
শোনো প্রিয়তমা রাকা......
জোনাকিকে দেখো, প্রদীপ জ্বালো
দেয় বেশ কিছু আলো,
পথ চিনে চলা, পথ দেখে চলা
কাটাবে রাতের কালো।
             

বেড়াজালে বন্দি

বড়দের দেখে ছোটরা শেখে
এখন আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে ?
ওরা শিশুরা কি ভাবছে
ওরা বড় হবে কিন্তু 
ওদের বড় মন হবার পরিবেশ নেই।
শিশুরা দুঃসময়ের বেড়াজালে বন্দি !
ওরা খাঁচায় বন্দি---
ওরা ওড়া পাখি,ঘোরা পাখি 
ওরা বড়দের হাতে বন্দি !
ওরাও বেড়ে উঠছে পলে পলে
ভিসুভিয়াসের মতো....
মাথার মধ্যে মনের মধ্যে কষ্ট পাচ্ছে 
একাকীত্বের, স্বার্থের, অবিশ্বাসের পাহাড় চূড়ায় 
শিক্ষিত সংগার অংগার অভিব্যক্তি 
দূরত্বের ঋজু দর্পণ কর্তব্যের নাম
বাবা মাকে বৃদ্ধাবাসে প্রেরণ
চোখের জল মুছে ফেললেও 
ভেতর চোখের জল অতলস্পর্শী।

জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇

আরও পড়ুন


Post a Comment

0 Comments