জ্বলদর্চি

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু : যাঁর অনুপস্থিতি কোলাহলময়/সন্দীপ কাঞ্জিলাল

"গান্ধীজির মতন মানুষ এমন গদগদ হয়ে সুভাষচন্দ্রের প্রশংসা করবে ভাবিনি।"--ক্রিপস।
"সুভাষ কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট হলে পাকিস্তান প্রস্তাবই করতাম না।"---মহম্মদ আলি জিন্না।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু : যাঁর অনুপস্থিতি কোলাহলময়

সন্দীপ কাঞ্জিলাল

"আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে, গোড়া থেকেই আমি তাঁর (সুভাষের) পুনর্নির্বাচনের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিলাম। এর কারণ আজ আমি বলতে চাইনে।" অবশ্য সে কারণ গান্ধীজী কখনোই আর বাখ্যা করেননি।
 ১৯৩৯ খৃষ্টাব্দের ত্রিপুরা কংগ্রেস নির্বাচনে সভাপতির পদে প্রতিযোগিতায় প্রাথমিকভাবে অংশগ্রহণ করেন মৌলানা আজাদ পট্টভি সিতারামায়া এবং সুভাষ বসু। গান্ধীজী পট্টভি সিতারামায়াকে সমর্থন করায় মৌলানা আজাদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান এবং পট্টভি সিতারামায়াকে সমর্থন করেন। এই সময় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির অধিকাংশই পট্টভি সিতারামায়া-র স্বপক্ষে নগ্নভাবে সমর্থন জানান। এতকিছুর পরেও সুভাষ বসু জয়লাভ করেন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছিল ১৯৩৯ খৃষ্টাব্দের ৩০শে জানুয়ারি। এই নির্বাচনে সুভাষ বসু পেয়েছিলেন ১৫৭৫ ভোট,আর পট্টভি সিতারামায়া পেয়েছিলেন ১৩৪৬ ভোট। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর, গান্ধীজী এক বিবৃতিতে জানান, "পট্টভি সীতারামায়া-র পরাজয় আমারই পরাজয়।.... হাজার হোক সুভাষ বাবু দেশের শত্রু নন।... তার জয়লাভে আমি আনন্দিত। 
  যেহেতু নগ্নভাবে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির অনেক সদস্যই পট্টভি সিতারামায়াকে কে সমর্থন করেছিলেন, তাই এই দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেবার জন্য ১৯৩৯ সালের ১৫-ই ফ্রেব্রুয়ারী সেবাগ্রামে সুভাষ বসু গান্ধীজীর সাথে দেখা করেন। গান্ধী দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলার পরিবর্তে বললেন," সুভাষ ইচ্ছা করলে তার মনোমত ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করতে পারেন।" পরে যদিও তিনি এই দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দিয়েছিলেন, তবে  তা ছিল ছলনাপূর্ণ। সে ব্যাখ্যায় আমি যাব না। 

  সুভাষ বসু সভাপতি হওয়ার পর ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম সভা ২২ শে ফেব্রুয়ারী  অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সভায় ব্যক্তিগত কাজের অজুহাতে গান্ধীজী যোগদান করেননি। আর স্বাস্থ্যগত কারণে সুভাষ বসু অনুপস্থিত থাকেন। ফলে সুভাষ বসু ছাড়াই সভার কাজ শুরু হয়। একরকম বিনা কারণেই ১২ জন ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য পদত্যাগ করেন। অবশেষে ৫ ই মার্চ সুভাষ বসু জ্বর নিয়ে ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। প্রচন্ড জ্বর এর জন্য তাঁকে হাসপাতলে পাঠানো হয়। সভাপতির চেয়ারে রাখা হয় তাঁর প্রতিকৃতি। তাঁর পক্ষে লিখিত ভাষণ পাঠ করে শোনান তাঁর মেজদাদা শরৎচন্দ্র বসু। ২১ শে এপ্রিল সুভাষ বসু সুস্থ হয়ে কলকাতায় ফেরেন। নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির অধিবেশনে যোগদানের জন্য গান্ধীজি কলকাতায় আসেন ২৭ শে এপ্রিল। ২৮ শে এপ্রিল ওয়েলিংটন স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে গান্ধীজির এবং সুভাষ বসুর দীর্ঘ আলোচনা হয়। তবু গান্ধীজি সুভাষ বসুর বিরুদ্ধে থেকে যান। শেষ পর্যন্ত সুভাষ বসু পদত্যাগ করেন এবং সাথে সাথে তা গৃহীতও হয়। এরপর নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন বাবু রাজেন্দ্র প্রসাদ।
  এরপর থেকে কংগ্রেসের সাথে ক্রমান্বয়ে তাঁর বিরোধ হতে থাকে। ৪ঠা জুন গান্ধীজী একটি নির্দেশে সারাদেশে সত্যাগ্রহ আন্দোলন বন্ধ করে দেয়। এই ঘোষণায় আরও বলা হয় কংগ্রেস মন্ত্রিসভা সম্পর্কে কোথাও কিছু বলা যাবে না। ৯ জুলাই সুভাষ বসু জাতীয় সংগ্রাম সপ্তাহ উদযাপন করেন। এবং কংগ্রেসের এই অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমের প্রতিবাদ করেন। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে বাদানুবাদ চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটি গুরুতর নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য সুভাষচন্দ্র বসুকে বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সমিতির সভাপতি পদের অযোগ্য বলে ঘোষণা করলো। এবং ১৯৩৯ সালের আগস্ট মাস থেকে তিন বছরের জন্য তিনি কোন নির্বাচিত কংগ্রেস কমিটির সদস্য হতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দিল।
  এর ভেতর ১৯৩৯ সালের ৩ মে  সুভাষ বসু অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি দল গঠন করেন। জার্মান বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে শুরু হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সুভাষ বসু এই সুযোগে তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নেন। পক্ষান্তরে যুদ্ধকালীন সময়ে বিট্রিশদের পক্ষে থাকার সিদ্ধান্ত নেন গান্ধীজি।
নাগপুরে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রথম একটি সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে একটি অস্থায়ী জাতীয় সরকারের আহ্বান করা হয়। এই সময় কলকাতায় হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণের দিন ধার্য হয় ৩ জুলাই। ব্রিটিশ সরকার আগের দিন ২ রা জুলাই সুভাষ বসুকে গ্রেপ্তার করে এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে প্রেরণ করে।২৯ শে নভেম্বর তিনি জেলের ভিতর অনশন শুরু করেন মুক্তির দাবিতে। ৭ দিন অনশন করার পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে তিনি পুলিশের নজরে থাকলেন। 

  ইতিমধ্যে তিনি ব্রিটিশের শত্রু হিসেবে জার্মান রাশিয়া ইতালি প্রভৃতি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এইসব দেশের সহযোগিতায় দেশকে স্বাধীন করা। এইসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকা সত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, ১৯৪১ সালের ১৬ ই জানুয়ারি রাত ১-২৫ মিনিটে পশ্চিমী মুসলমানদের ছদ্মবেশে কলকাতা থেকে গোপন যাত্রা শুরু করেন। বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে অবশেষে তিনি বার্লিনে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে ১৯৪১ সালের ৩ এপ্রিল  শ্রীমতী শেঙ্কলকে একটি চিঠি লেখেন। এই চিঠির একজায়গায় তিনি লিখলেন, "আমার পাসপোর্ট আমার নামে নয়। ওটা "orlando mazzotta" এই নামে আছে। সুতরাং আপনি যখন লিখবেন, আমাকে "orlando mazzotta" নামে লিখবেন।.... আপনার দেখা পেলে কত খুশি হবো বুঝতে পারছেন।" 
   এদিকে ১৯৪৬ সালে ২৬ শে এপ্রিল তদানীন্তন কংগ্রেস সভাপতি মৌলানা আবুল কালাম আজাদ নতুন সভাপতি হিসেবে জওহরলালের নামে বিবৃতি দেয়। তারপর ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে, মোলানা আবুল কালাম আজাদের লেখায় দেখতে পাই, "যখন আমি ঠিক করলাম নিজে দাঁড়াবো না, তখন সর্দার প্যাটেলকে সমর্থন না করাটা আমার ভুল হয়েছিল। বহু প্রশ্নে আমাদের মতের অমিল থাকলেও এ বিষয়ে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, আমার পর তিনি যদি কংগ্রেস সভাপতি হতেন, তিনি দেখতেন যাতে ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনার সার্থক রুপায়ণ হয়। এই পরিকল্পনা নষ্ট করার সুযোগ মিঃ জিন্নার হাতে তুলে দিয়ে জওহরলাল যে গলদ কাজ করেছিলেন, প্যাটেল কোনোদিন তা করতেন না।যখন আমি ভাবি এই ভুলগুলো যদি আমি না করতাম, তাহলে হয়তো ইতিহাস পাল্টে যেতো। তাই আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারি না।"
   ১৯৪৬ সালে ৭ই জুলাই এ.আই.সি.সি র বোম্বাই অধিবেশনে জহরলাল কংগ্রেস সভাপতি হলেন। মুসলিম লীগ আগেই ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। তাই এই অধিবেশনে যখন ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা গ্রহণের পর, জহরলাল সাংবাদিক সম্মেলনে জহরলাল জোর দিয়ে বলেন যে, কংগ্রেস রাজী হয়েছে গণপরিষদে যোগ দিতে এবং তিনি মনে করেন যে, তেমন বুঝলে কংগ্রেস অবাধে ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা রদবদল বা ইতরবিশেষ করতে পারে। 
   ধরে বেঁধে মুসলিম লীগকে দিয়ে ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা মানিয়ে নেওয়া হয়েছিল। স্বভাবতই, এ ব্যাপারে মিঃ জিন্না খুব একটা খুশি ছিলেন না। মুসলিম লীগ কাউন্সিলে তিনি পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন যে, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়া যায়নি বলেই তিনি এটি গ্রহণ করার পক্ষে মত দেন। 
২৭শে জুলাই বোম্বাইতে মুসলিম লীগ কাউন্সিলের বৈঠক বসে। মিঃ জিন্না তাঁর উদ্বোধনী বক্তৃতায় পাকিস্তান দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন যে, মুসলিম লীগের পক্ষে এ ছাড়া গত্যন্তর নেই। তিন দিন ধরে আলোচনার পর ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে মুসলিম লীগ কাউন্সিল থেকে একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়। তাতে এটাও ঠিক হয় যে, পাকিস্তান অর্জনের জন্যে লীগ প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পথে যাবে। 
   এমন এক টলমল সময়েই জিন্নার মুম্বাইয়ের বাড়িতে এক বৈঠকে উপস্থিত সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, মৌলানা আবুল কালাম আজাদসহ মোট পাঁচজন। সেখানেই একথা সে কথার মাঝেই জিন্না বলেছিলেন, সুভাষচন্দ্র যদি কংগ্রেসের নেতা হিসেবে থেকে যেতেন তাহলে পাকিস্তান দেশ গড়ার ভাবনা মাথায় এলেও তিনি তা থামিয়ে দিতে পারতেন। যেহেতু তা হয়নি। সেই দাবি আরও জোরালো করেন জিন্না। 
   কিন্তু যে জিন্না পাকিস্তান নিয়ে সরব হয়ে রয়েছেন সেই তিনিই কি এমন কারণে নেতাজীর জন্য তাঁর সমস্ত 'স্বার্থ' ভুলে যেতে পারেন, এমন কথা বলছেন। অর্নিবাণ গুপ্তের লেখা থেকে জানা যাচ্ছে, 'কংগ্রেসের নীতি নিয়ে মতান্তর হয়েছিল জিন্নার। প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ আলাদা হলেও নেতাজীর সঙ্গেও মতে মেলেনি কংগ্রেসের। এই কারণে নেতাজীর দিকে অনেকটাই হেলেছিলেন জিন্না। পাশাপাশি ১৯৪০ সালে মুসলিম নবাব সিরাজদৌল্লা হয়ে কথা বলাও জিন্নাকে নেতাজীর প্রতি শ্রদ্ধা বাড়িয়ে তুলেছিল। ঠিক এই কারণেই হয়তো নেতাজী দল না ছাড়লে পাকিস্তান তৈরির প্রস্তাব তুলে নিতেও পারতেন পাকিস্তানের 'জাতির জনক'।এর উপর সুভাষ বসু অন্ধকূপ হত্যার মনুমেন্টটিকে রাখতে চাননি।তারজন্য অনেক মুসলিম তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।  সুভাষ বসুর জাগরণ মঞ্চের দাবি সাম্প্রদায়িকদায়িক ভাবে এক করে তুলেছে বলে জিন্না মানতেন।

   ১৯৪১ সালের ২৬ শে জানুয়ারি প্রচার হলো তিনি দেশ ছেড়ে ভারতের বাইরে চলে গেছেন। একবছরেরও বেশি তার সম্পর্কে আর কিছু শোনা যায়নি; তিনি বেঁচে আছেন কি মারা গেছেন সে সম্পর্কেও লোকে নিশ্চিতভাবে কিছু জানতো না। ১৯৪২ এর মার্চ মাসে তিনি একটি বক্তৃতা দেন এবং তা বার্লিন বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয়। এর ফলে, সব সন্দেহের অবসান ঘটে। এবার এটা পরিষ্কার হল যে, তিনি বার্লিনে পৌঁচেছেন এবং সেখান থেকে একটি ব্রিটিশবিরোধী ফ্রন্ট গড়বার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে ভারতে ব্রিটিশ অধিকারের বিরুদ্ধে জাপানি প্রচার ভারতের বহু সংখ্যক লোকের মনে ছাপ ফেলেছিল। জাপানিদের প্রতিশ্রুতিতে অনেকেই আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং তাঁরা বিশ্বাস করেছিলেন যে জাপান ভারতীয় স্বাধীনতা এবং এশীয় সংহতির স্বপক্ষে কাজ করছে। তাঁরা বলতে লাগলেন যে, জাপানি আক্রমণ যেহেতু ব্রিটিশ শক্তিকে দুর্বল করছে, অতএব তা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সহায়ক এবং আমাদের উচিত এই সুযোগের ষোল আনা সদ্ব্যবহার করা। এর ফলে, আমাদের দেশে জনমতের একাংশ জাপানের প্রতি উত্তরোত্তর সহানুভূতিসম্পন্ন হয়ে উঠল। 
 এই সময় ক্রমেই গান্ধীজীর কেমন যেন মনে হতে থাকে যে মিত্রপক্ষ যুদ্ধে জিততে পারবে না। তাঁর ভয় হল, শেষ পর্যন্ত হয়তো জার্মানি ও জাপান জিতে যাবে কিংবা বড় জোর স্থিতাবস্থা দেখা দেবে।
 
   যুদ্ধের ফলাফল কী দাঁড়াবে সে সম্বন্ধে গান্ধীজী খুব স্পষ্ট করে কিছু না বললেও, যুদ্ধে মিত্রপক্ষের জয় সম্পর্কে তিনি ক্রমশ সন্দিহান হয়ে উঠেছিলেন। সুভাষ বসুর জার্মানিতে পালানোর ব্যাপারটা গান্ধীজীর মনকে বেশ ভালোভাবে নাড়া দিয়েছিল। তাঁর অনেক কাজ ইতিপূর্বে গান্ধীজীর অপছন্দ হলেও এই সময় তাঁর মনোভাবে বেশ একটা পরিবর্তন এসেছে।সেই সময়ের তাঁর নানা মন্তব্য শুনে বলা যায় যে,  ভারত থেকে পালানোর ব্যাপারে সুভাষ বসু যে সাহস আর বলবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে তা গান্ধীজীর মন কেড়েছিল। সুভাষ বসু সম্পর্কে তাঁর এই গুণগ্রাহীতা তাঁর অজান্তে সমগ্র যুদ্ধপরিস্থিতি সম্পর্কে গান্ধীজীর মতামতকে কিছুটা প্রভাবিত করেছিল। 
একটি জোর খবর ছিল যে, সুভাষ বসু বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। ভারতে এই খবর রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং অন্যান্যদের মধ্যে গান্ধীজীও এতে গভীরভাবে মর্মাহত হন। সুভাষ বসুর মা'র কাছে তিনি একটি শোকবার্তা পাঠান। তাতে তাঁর সন্তান ও তাঁর দেশসেবা সম্পর্কে পঞ্চমুখে প্রশংসা করেন। পরে জানা যায় খবরটি ছিল মিথ্যে। যাই হোক ক্রিপস্ পরে মৌলানা আবুল কালম আজাদের কাছে এই বলে অনুযোগ করেছিলেন যে,  গান্ধীজীর মতন মানুষ অমন গদগদ হয়ে সুভাষ বসুর প্রশংসা করবেন এটা তাঁর কাছে ছিল অপ্রত্যাশিত।

চিত্র- শুভ্রাংশু আচার্য
আরও পড়ুন

Post a Comment

1 Comments

  1. এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদেরকে উপহার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। নেতাজির বাণী পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিসিট করুন।

    ReplyDelete