জ্বলদর্চি

ভোটের খেলা খেলা হবে/ সন্দীপ কাঞ্জিলাল

ভোটের খেলা খেলা হবে

সন্দীপ কাঞ্জিলাল

বক্তা 

বক্তা মঞ্চে এলেন করজোড়ে 
হাল্কা চালে নমস্কার করতে করতে 
সপ্রতিভ ভঙ্গিতে। 
যা সামনে বসা হাজার হাজার 
শ্রোতার সমীহ আদায় করে নিল।
সবাই যখন বলে সুদক্ষ বক্তা
তখন তাঁর বক্তব্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকে
যথেষ্ট সাধনা। 
যখন তিনি এটা ওটা সেটা 
বলতে বলতে, নিজের তৈরি 
বাক্যের ঘেরাটোপে আটকে যান
তখন তা থেকে বেরিয়ে আসতে কৌশলে 
উসকে দেন সীমান্ত সংঘর্ষের স্নায়ু মুখ। 
কারণ তিনি ভালোই জানেন
দেশভক্তির পোকা ধরা দাঁতগুলো ঝকঝকে করা,
অতলে তলিয়ে যাওয়ার হাত থেকে
রক্ষা পাওয়ার একমাত্র হাতিয়ার। 


সংখ্যা

যতবার ভোট আসে 
ভাবি এইবার সেইবার। 

ভোট শেষে গোণা হয় সংখ্যার। 

যদিও বা শাসক পাল্টায়
পাল্টায় না কোনো কিছুই আর।

পাচারকারীদের পেশাগত ব্যবহার 
পশুদের পিঠে লিখে দেয়
এক দুই তিন চার।

গণতন্ত্রের অসীম করুণায়
যা আমাদের সর্বোৎকৃষ্ট উপহার। 

ভয় 

যে ভয় দেখায় 
তার সব থেকে বড়ো ছল হলো
নিজেকে প্রমাণ করা
সে ভীষণ সাহসী। 

একথা মনে রাখা দরকার 
যে ভয় দেখায় 
সে তা কাকে বলে জানে
এবং তা বয়ে চলছে 
যা এক আফিমের মাত্রা 
বা
পোড়ানোর ক্ষমতাহীন আগুনের মতো। 

যদি সে সত্যি সাহসী হতো 
তাহলে কেন মৃত্যু তাকে ভয় করে না?

আর যে তাকে দেখে 
ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে দেয়, 
তখনও তার মৃত্যুর দিকে হাঁটা বিরামহীন। 


উন্নয়ন 

সদ্য কৈশোর পেরোনো মেয়ের
উন্নয়ন হলে, নিটোল বুক 
আর বেশ চিকন হয়। 
তার দিকে কেউ সোজা তাকায় 
নয়তো আড়চোখে। 

এলাকার উন্নতি হলে
আবার নাক কান গাল কাটা
মাথায় রঙিন চুল হাতে বালা উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়ায়। 

তারা কিছুতেই প্রমাণ করতে পারে না 
ঐ যুবতী মেয়েটির সমান।

আর মনেও রাখে না
জনগণ মানেই সিংহাসনচ্যুত রাজা 
এবং তারা স্বাধীনতার যোগ্য 

কারণ, তারা তা অর্জন করতে জানে।


খেলা হবে 

খেলা হবে। খেলা হবে। বলতে বলতে 
সত্যিই শুরু হলো খেলা। 
গ্যালারিতে দুপক্ষের সমর্থক 
নিজেদের দলকে চাঙ্গা করতে
যে যার নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছে। 

দিনের শেষে যে দল জিতলো
আর যারা হারলো
দু'দলের ঘড়িতে চারটে দশ।

সময়ের নেই এতটুকু হেরফের। 

যে জল ভাটায় নামছে 
জোয়ারে আবার দুকূল ছাপাবে। 

তাই সময় কোনো পক্ষই নেয় না।

খেলা হবে খেলা হবে এ-ই উন্মাদনা 
অতলে তলিয়ে যাওয়ার ভয়কে 
আড়াল করতে যথেষ্ট উপযুক্ত। 

পেজ-এ লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments