জ্বলদর্চি

ভালোবাসার ভাবনারা/পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

ভালোবাসার ভাবনারা
পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়


ভাবনা

নিজেকে যখন ভাবি,
কচু পাতায় নোঙর করা জল।
আমার এ আবেগ শুধু,
ভালোবাসার শেষটুকু সম্বল।
স্বপ্ন আগুন লেগে,
পোড়ার দোষে ছাই।
আমি বরবাদ হয়ে যাই।


চোর

যা কিছু রামায়ণে নেই।
খানিক মহাভারতের।
এমন ভাবে ভেবে  ভেবে
কাটাই মলিনতা ঢের।
ভিতর ভিতরের ধারা
কখনো নীরবেই শেষ।
চল হে বেপরোয়া, গড়ি
সিঁধ কাটার পরিবেশ।


কথা

আমার দৃষ্টি এতটাও নয় অন্ধ। 
যাতে তুমি হবে নিরুপায় গান্ধারী।
পিঠ ঠেকে যাওয়া দেওয়ালের বুকে দাঁড়িয়ে,
আপাতত শুধু এ কথা বলতে পারি।


জাতে ওঠা

শিকড় হয়েছি,
তাই ,কই ছুঁতে পারি পাতা, ফুল?
জীবনের বাঁচা মরা
জলেরও তো খোঁজ করে, তাতে।
কখনো যা হয় মনে
পুরোটাই  ভুল হয়ে গেছে।
আসলে সঠিক মানে
প্রেমিক এভাবে ওঠে জাতে।


কি আসে যায়?

বেনো জল ভেবে যাকে
দিয়েছ বালির বাঁধ, সেও-
যখন বিপদে থাকো
বদলিয়ে তার পরিধেয়,
অকপটে বাঁচায় তোমাকে।
তুঘলকি  ভাবনাতে
কখনো কি কেউ টিকে থাকে?


নিশ্চেষ্ট

চেষ্টা করিনা কিছু,
যা জোটে তা জোটে।
ইদানিং বিশ্বাসে দাম নেই।
লাগাতার
মিছিমিছি আবেগে বিরাম নেই।
তাই-
ফুল, ফুটবার জন্যই ফোটে।


অভিমানী

কখনো,
দামের কথা ভাবতে ভাবতে।
যা কেনার কথা নয়,
জোটে নিজে থেকে।
অভিমানী হয়ে তার পায়ে চলা পথও-
কাছের দরজা থেকে দূরে যায় বেঁকে।
অপ্রেমিক এরকমই হয়।
মনিমুক্ত যা থাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
সবার জন্য সব নয়।


অবুঝ

না বলি যদি,
না হলে তাতে শোনা,
তাহলে কেন বলো
সকলই বোঝো!
নীরবতাতে যখন ফোটে ভাষা।
তাতেও বুঝি কথার মানে খোঁজ?


ভেবে দেখো

মানুষে মানুষে,
রাস্তায় দেখা হলে,
যেরকম ভাবে কথা বলে।
আমরা তেমন ভাবে যদি কথা বলি,
ভেবো, তা সঠিক ঘরে বেঁচে থাকা? নাকি-
অবোধের ভুল অঞ্চলে?


ছোয়াঁ

নিজেকে মশাল ভাবি,
তবুও আগুনে।
শিশিরের ছুঁয়ে দেওয়া
নিয়তি ফাগুনে,
নিভু নিভু তাপ মরে, তেতে।
আগুন কখনো বুঝি
হৃদয়ের ছোঁয়া পেলে জেতে?


অন্ধ

সব কিছু লেখা হলে কবিতায়।
আবেগেরা হয়ে ওঠে ছবি, তাই-
উড়ুক পাখিরা, খাঁচা বন্ধ।
কবিরা বড্ড বেশি অন্ধ।


বুনো

যা যা মনে আছে,
তা তা বনে থাকুক।
তারা সবাই ভিতর  ভিতর 'বুনো'।
গোপনে তেমনই থাকি, থাকো।
বাইরে বরং লোকের মাঝে
অন্য কথা শুনো।


ই.এম.আই

সভ্যতাকে
মানুষগুলো সর্বদা নিঃসাড়ে।
সুখ, দুঃখ, আবেগ-
সবই কিনে চলেছে ধারে।
বেচছে যারা-
যখন যেমন পারছে, দিয়ে যায়।
কারোর কিছু দায়িত্ব নেই
ভরসা ই.এম.আই 


মনের স্বরূপ

'রাঁধার সাথে চুলও বাঁধো,
দুই নৌকোর যাত্রী।
একে শরীর, আর একে মন
দমার বুঝি পাত্রী?'
এমন যদি ভাবনা তোমার
বলতে হলাম বাধ্য।
মনের স্বরূপ বোঝায় হয়নি
এখনো সেই সাধ্য।


বুকি

ভিতরটাকে দেখতে গিয়ে
নিওনা যেন ঝুঁকি।
সেখানে বহু ভিন্ন ধারা
ভিন্ন আঁকিবুকি।
সব কিছুতে করলে মানে,
কি যে দশা, কেই বা জানে!
জেতার বাজি হয়তো শেষে
হাতিয়ে নেবে বুকি।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments