জ্বলদর্চি

খপ্পর-১০ (উপন্যাস) /(উৎসব ১৪২৮) অনিন্দ্য পাল


উপন্যাস: খপ্পর 
লেখক: অনিন্দ্য পাল 
পর্ব: দশ

চিত্র- জাহ্নবী সেন


শব্দটা লক্ষ্য করে অন্ধকারের মধ্যেই কয়েকবার ঘাড়টা ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করে ব্যানা, কিন্তু কিছুই দেখতে পায় না। কয়েকটা মৃদু কণ্ঠস্বর তার কানে এলেও তারা ঠিক কী বলছে সেটা বুঝতে পারে না। তবে, ব্যানার মনে হল গলার স্বরগুলো মেয়েদের। আজ কি তবে জৈসার সঙ্গে সব মেয়েরা এসেছে? একটু যেন স্বস্তি পেল ব্যানা। 
কয়েক মিনিট পর আবার সব চুপচাপ হয়ে গেল। ব্যানা বুঝতে পারলো না কিছু। আবার পড়ে রইলো তেমনি। 
আবার অনেকটা সময় কেটে গেল। ব্যানা আচ্ছন্নের মত পড়েছিল। হঠাৎ ঘরের মধ্যে আলো জ্বলে উঠতেই চমকে চোখ খুললো ব্যানা। জৈসা আর কয়েকজন মহিলা তখন তার খাটের পাশে দাঁড়িয়ে। তার চোখে ভয় দেখে তারা খুব আস্তে হেসে উঠলো। জৈসা একজনকে কিছু একটা ইশারা করলো, সে মেঝেতে রাখা একটা ব্যাগ খুলে কিছু বের করতে লাগলো। ততক্ষণে জৈসা আর একজন মহিলা তাকে একটা ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য সিরিঞ্জে ওষুধ ভরা শুরু করে দিল। ব্যানা জানে এর পর তাকে ওই সিরিঞ্জের পুরো তরলটা শরীরে শুষে নিতে হবে। তারপর যতটুকু সময় জ্ঞান থাকে, সেটুকু সময়ে ব্যানা আস্তে আস্তে ধবধবে সাদা কয়েকটা উলঙ্গ শরীরের ভিতরে আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে যেতে থাকে, তাকে চেটে, চিবিয়ে, চুষে খেতে হয় থলথলে মাংসের পিণ্ড, তার পর আর কিছুই তার মনে থাকে না। এরপর যখন জ্ঞান ফিরবে, তখন সমস্ত শরীরে অসম্ভব যন্ত্রণা নিয়ে আবার সে অন্য কোন একটা খাটে বাঁধা থাকবে। 
     কিন্তু আজ ব্যানা অবাক হয়ে গেল, যখন জৈসা তার বাঁধন খুলে দিয়ে বললো, 
-- যা, বাথরুম হো কর আ। অর জাদা চালাকি করনেকি কোসিশ কিয়া না 
জৈসার হাতে একটা চকচকে পিস্তল উঠে আসে। সেটা ব্যানার মাথায় ঠেকিয়ে ধরে। 
এবার জৈসা একজনকে বলে, 
-- ভিমি, যা ইসে লে কর যা। জলদি যা, বো লোগ আতেহি হোঙ্গে। 
ব্যানা দাঁড়িয়ে ছিল। একজন মহিলা মুখে হলুদ রঙের মাস্ক পরা, ব্যানার একটা হাত ধরে টেনে নিয়ে চললো বাথরুমের দিকে। ব্যানা দেখলো অন্য একজন  মহিলা একটা থালায় বেশ কিছু ভালো ভালো খাবার সাজিয়ে রাখছে। জৈসার এক হাতে পিস্তল আর অন্য হাতে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ। 
*      **          **        ***         **      ***      **     * 
ভালো করে স্নান করিয়ে ব্যানাকে অন্য একটা ঘরে নিয়ে গেল ভিমি। সেখানে আরেক জন মহিলা খাবারগুলো নিয়ে আগে থেকেই বসে ছিল। ব্যানা যেতেই তাকে খাওয়াতে শুরু করে দিলেন। পাঁউরুটির মত কোন জিনিস, ভিতরে কিসব ভরা, খেতে খুব ভালো লাগলো ব্যানার। খেতে খেতে চোখে জল এসে গেল তার। 
খাওয়া শেষ হলে ভিমি তাকে আবার ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে এল সেই খাটে, আবার তার হাত-পা আগের মত বেঁধে দেওয়া হল। 
তখনি জৈসার মোবাইলটা বেজে উঠলো মৃদু স্বরে। 
-- হ্যালো! 
কয়েক সেকেন্ড কথা বলার পর চোখ-মুখ কেমন যেন কুঁচকে উঠল জৈসার। "ওকে" -- বলে ফোনটা রেখে দিয়ে একটা লেখার অযোগ্য গালাগাল দিয়ে বললো, 
-- ও লোগ আজ নেহি আ সকেঙ্গে, দুসরি কোই ডিলমে ইউপি যায়েঙ্গে। শুট করকে ভিডিও সেন্ড করনেকো কাহা। 
জৈসার গলায় কর্কশ রাগ চলকে উঠলো। 
ভিমি একটু হেসে বললো, 
-- লন্ডেকো ফায়দা হুয়া, আচ্ছা খানাবানা মিল গয়া। 
আবার রেগে উঠলো জৈসা, 
-- উল্টা সিধা মত বোল ভিমি। সুটিং কি তৈয়ারি কর। 
জৈসা এবার পিস্তলটা রেখে ব্যানার কাছে চলে এল। এক হাতে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জটা নিয়ে অন্য হাতে ব্যানার লিঙ্গটা ধরে তাতে গেঁথে দিল সিরিঞ্জের সূঁচটা।  যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলো ব্যানা। 
তার চিৎকার শুনে জৈসা ভয়ঙ্কর রেগে বললো, 
-- ভিমি তু কুছ কামকা নেহি, ইসকি মু পর টেপ ডালা কিউ নেহি? 
ঘরের উজ্জ্বল আলো ততক্ষণে নিভে গিয়ে সেখানে হালকা নীল আলো জ্বলে উঠেছে।  ব্যানা দেখলো, জৈসা একে একে সমস্ত পোষাক খুলে এগিয়ে আসছে তার দিকে, আর তার মাথার কাছে ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেউ একজন। গা-গুলিয়ে বমি উঠে এল ব্যানার। 

#এগারো 
=========  
আজ তিন দিন উমা অসুস্থ। গতকাল রাতে জ্বর একশো ছাড়িয়েছিল। দীপু ফার্মেসিতে বলে কয়েকটা প্যারাসিটামল এনে খাইয়েছে, তাতে জ্বরটা গেছে। শরীর খুব দূর্বল। কিন্তু উমা নিজের এই অসুস্থতার জন্য চিন্তা করছেন না। চিন্তা তার তপুকে নিয়ে। বিজয়ার ফ্ল্যাটেই রয়েছে কাল থেকে। কি নাকি সাজানো গোছানো হবে ফ্লাটের ভিতরটা, তাই বিজয়াই জোর করে রেখে দিয়েছে তপুকে। আজ আসবে না, আগামী কাল সন্ধ্যায় ফেরার কথা আছে। উমা বুঝতে পারছেন, ওখানে তপুর কোন ভয় নেই, বিজয়া যথেষ্টই খেয়াল রাখবেন, কিন্তু মন মানতে চাইছে না। তাই সকাল থেকে দীপুকে পীড়াপীড়ি করছেন, তপুকে একটু দেখে আসার জন্য। কিন্তু দীপু ওখানে যেতে রাজি না, তাই মুখ ভার করে শুয়ে আছেন উমা। দীপু একবাটি মুসুর ডালের মধ্যে একটা আটার রুটি ভিজিয়ে বিছানার পাশে কাঠের টেবিলটার উপরে রেখে টিউশনে গেছে। পড়িয়ে ফিরতে এগারোটা বাজবে। ছেলেটা ততক্ষণ কিছুই তেমন খাবে না। পড়ানোর বাড়িতে এক কাপ চা আর একটা বিস্কুট ছাড়া আর কিছু খায় না দীপু। ছেলেটার কথা ভেবে খুব কষ্ট হয় উমার। একটু পয়সার জোর থাকলে আর একটু এগোতে পারতো দীপু, আধা-খেঁচড়া হয়ে গেল পড়াশুনাটা। আর চাকরি-বাকরির যা অবস্থা, আদৌ পাবে কিনা ঠিক নেই। তবে দীপু চেষ্টার যে খামতি করছে না, উমা সেটা জানেন। সারাদিন টিউশন পড়িয়ে, রাতে বাড়ি ফিরে অনেক রাত জেগে পড়াশোনা করে। তপুর চাকরি নিয়ে অতটা চিন্তা করেন না উমা। মেয়ে সন্তান, আজ না হয় কাল তপুকে পরের বাড়ি যেতেই হবে। এখন বাইরে বাইরে কি সব ফিজিও থেরাপির কাজ করে দু'টো পয়সা আয় করে, তবে সে সব নিজের হাতখরচেই চলে যায়। কিন্তু মেয়েটাকে নিয়েই চিন্তায় থাকেন উমা। তপু রূপে-গুণে এই পাড়া-গাঁয়ে যে বেশ নজরকাড়া সেটা বোঝেন উমা। নিজের মেয়ে বলে নয়, তপুকে দেখে নিজেই ধন্দে পড়ে যান উমা, এত সুন্দরী ও হল কি করে? উমার নিজের দিকে বা তপুর বাবার পরিবারের দিকেও তেমন রূপের বাড়বাড়ন্ত ছিল না। উমা নিজেও বেশ শ্যামলা, যদিও বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি ঢোকার সময় সবাই এক বাক্যে বলেছিল, "কালোর উপরে বেশ সুন্দর মুখ, নাক, চোখ খুব সুন্দর বৌয়ের।" 
শুয়ে শুয়ে এসব আকাশ-পাতাল ভাবছিলেন উমা। একা থাকলেই এখন এরকম চিন্তা ভাবনা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। তেষ্টায় অনেকক্ষণ ধরেই গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। উঠে এক গ্লাস জল নিয়ে খাবেন, তেমন ইচ্ছাও করছে না। বিছানাতেই এপাশ থেকে ওপাশ ফিরে শুলেন। 
-- কাকিমা, ও কাকিমা? বাড়ি আছ? 
দরজার বাইরে কারো একটা গলার স্বরে সচেতন হয়ে উঠলেন উমা। জিজ্ঞাসা করলেন, 
-- কে? 
-- আমি সুন্দর গো, কাকিমা। একবার বাইরে এসো না! 
-- আমি ... 
"অসুস্থ" শব্দটা বলতে গিয়েও গলার কাছে এসে আটকে গেল উমার। এখনি হাজারটা প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আর শরীর খারাপ এর অজুহাতে কোনদিন যেখানে কোন কাজে পিছিয়ে আসেন নি, তাই আজও নিজেকে অসহায় দেখাতে মন চাইলো না  উমার। 
বললেন, 
-- দাঁড়া, আসছি। 
চৌকির সামনের দিকের ছত্রি দুটো এখনো দাঁড়িয়ে আছে। বাকি দুটো অনেকদিন আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। উমা একটা ছত্রি ধরে কোনরকমে উঠে দাঁড়ালেন উমা। সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে গেল মাথাটা। কয়েক সেকেন্ড আঁকড়ে ধরে থাকলেন ছত্রিটা। তারপর একটু ঠিক হয়ে আস্তে আস্তে দেওয়াল ধরে ধরে এসে দরজাটা খুললেন। 
-- বল। 
-- তোমার কি শরীর খারাপ কাকিমা? এরকম লাগছে কেন? 
-- হ্যাঁ, একটু। ও তেমন কিছু নয়। তুই বল কি খবর? 
সুন্দর একটু ইতস্তত করে বললো, 
-- কাকিমা, তোমাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। যে ভাবে লড়াই করে তুমি তপু আর দীপুকে বড় করেছ, আমরা তো দেখেছি। তাই তোমার কোন খারাপ হোক চাইনা। 
এই পর্যন্ত বলে চুপ করে গেল সুন্দর। 
উমা ঠিক বুঝতে পারলেন না, সুন্দরের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন স্থির দৃষ্টিতে। সুন্দর সেই দৃষ্টি সহ্য করতে পারলো না। মুখটা মাটির দিকে নামিয়ে বললো, 
-- কয়েকদিন আগে আমি একটু নিউটাউনের দিকে গেছিলাম। তপুকে একটা ছেলের সঙ্গে ... মানে তুমি বুঝতেই পারছো কি বলতে চাইছি। বলছিলাম একটু খেয়াল রেখো। বাচ্চা মেয়ে, আমার বোনের মত, শেষে কোন ক্ষতি হয়ে যাবে, তাই বললাম। কিছু মনে করো না তুমি। 
কথা গুলো বলে চলে গেল সুন্দর। উমা কিছুক্ষণ দরজাটা ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর ঘরে ঢুকে বিছানার উপর বসলেন। শরীরের কষ্টটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। উমার মাথার মধ্যে একটা তুমুল আলোড়ন চলতে লাগলো। একবার ভাবলেন ফোন করে তপুকে আজই বাড়ি ফিরে আসতে বলবেন। কিন্তু সেটা করলেন না। ভাবলেন দীপু আসুক, ওর সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবেন কি করা যায়। 
         তপুর এবার শ্রাবণ এলে তিরিশ হবে। উমা একটু ধন্দে পড়ে গেলেন। এই বয়সে তার প্রথম সন্তান এসেছিল। রাখতে পারেন নি ছেলেটাকে। একমাস দশদিন বেঁচে ছিল বাচ্চাটা। কি যে হল, কত হাসপাতাল, কবিরাজ, বদ্যি দেখানো হল কেউ কিছু করতে পারলো না। আর নার্সিংহোমে ভর্তি করার মত টাকা ছিল না দীপুর বাবার। কেউ কেউ বলেছিল, "তোমাদের বাচ্চাটাকে কেউ বান মেরেছে। নয়তো ওরকম নাদুসনুদুস একটা সুস্থ বাচ্চা মাত্র দিন তিনেক অসুস্থ হয়ে মরে যায়?" সেসব কথা বিশ্বাস করে নি দীপুর বাবা। তপু পেটে এসেছিল তার দু-বছর পর।তিরিশ বছরের মেয়েটা তো আর সেই বাচ্চাটা নেই, ওর তো অন্য ইচ্ছা, চাহিদাগুলো তৈরি হয়েছে। না হবার ও তো কিছু নেই। কথাগুলো যেন নিজেই নিজেকে বললেন উমা। এত কষ্টের মধ্যেও একটু যেন হাসি পেয়ে গেল উমার। চোখের পর্দায় তপুর ছোটবেলার দুষ্টুমির ছবিগুলো ভেসে উঠলো। উমা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলেন, এবার সময় হয়েছে, মেয়েকে বিয়ে দিয়ে বিদায় করার। দীপু আর তপুকে একসঙ্গে বসিয়ে কথা বলবেন ঠিক করলেন। 
--পুরানো সেই দিনের কথা ... 
ফোনটা বেজে উঠলো। উমা টেবিলের উপর রাখা কি-প্যাড ফোনটা তুলে নিলেন। 
-- হ্যালো! 
-- মা, আমি দীপু। শোন আমি একটু তপুর ওখানে যাচ্ছি। বিকেলের দিকে ফিরে আসবো। তুমি চিন্তা করো না। 
বুকটা ধক করে উঠলো উমার। উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন, 
-- কেন? কি হয়েছে? তুই ওখানে যাবি কেন? 
-- বিজু পিসি ফোন করেছিল। বললো খুব দরকার। এখুনি আয়। মনে হয় ফ্ল্যাটটা গোছানোর জন্য দরকার। আমি ওখানে চান খাওয়া করে নেব বুঝলে। তুমি কিছু খেয়ে নিয়ে একটা প্যারাসিটামল খেয়ে নিও। 
ফোনটা কেটে দিল দীপু। উমার মনটা কু ডেকে উঠলো আবার। কেমন যেন মনে হতে লাগলো তপুটা কোন একটা সমস্যায় পড়েছে নিশ্চয়ই। 
**    **       ***        ***       ***       ****      ***   ** 
বাস থেকে নেমেই দীপু রুহুলকে ফোনে ধরার চেষ্টা করলো। ছেলেটা বীমা এজেন্ট হলেও খুব উঁচু তলার ক্ষমতাসীন অনেক মানুষের সঙ্গে বেশ পরিচয় আছে। মাঝে মাঝেই ব্লাড-ডোনেশন ক্যাম্প, গরিবের ত্রাণ বিতরণ, একদিনের ফুটবল টুর্নামেন্ট জাতীয় অনুষ্ঠান করে আর সেখানে নেতা, মন্ত্রী, সরকারি অফিসার এমনকি পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও পায়ের ধুলো দিয়ে নিজেদের ধন্য মনে করেন। কিন্তু বেশ কয়েকবার কল করার পরও ফোনটা রিসিভ করলো না রুহুল। ফোনটা প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে তপুর বলে দেওয়া ঠিকানার দিকে এগিয়ে গেল দীপু। 
     আবাসনের গেটের কাছে এসে দীপুর একটু অবাক লাগলো। তপু বলেছিল, একজন ষণ্ডাগোছের লোক সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে থাকে। অচেনা লোককে অনেক প্রশ্ন করে। তপু বলেছিল, যদি তেমন কিছু ঘটে, তবে বিজু পিসির নাম করতে বলেছিল, অথবা বিজু পিসিকে ফোন করতে বলেছিল। কিন্তু এখানে কাউকেই দেখতে পেল না দীপু। 

       লিফটের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দীপুর একটু অস্বস্তি বোধ হল। খুব কমই লিফট চড়েছে, তাই একটু কনফিউজড হয়ে পড়লো। কোন সুইচ্ টিপতে কোন সুইচ্ টিপবে সেটা বুঝতে না পেরে, লিফটের সামনে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে এসে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে থাকে। চারতলা এমন কিছু উপরে নয়। 
     পাঁচ ফুট এগারো ইঞ্চির ব্যায়াম করা সুঠাম চেহারা দীপুর। চেষ্টা করলে পুলিশ কনস্টেবল-এর চাকরি পেতে খুব একটা অসুবিধা হত না, কিন্তু দীপু কখনও পুলিশ হতে চায় নি। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই নিজেকে যতটা সম্ভব গড়ে তুলেছে। 
     চারতলায় পৌঁছে একটু হাঁফ ধরলো দীপুর। "চারশো চার" নম্বর প্লেট সাঁটা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে একটু ধাতস্থ হয়ে নিল। পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখটা মুছে কলিং বেল টিপলো। কয়েক সেকেন্ড পরে খুলে গেল দরজাটা। দরজায় দাঁড়িয়ে যে, তাকে আগে কখনো দেখেনি দীপু।


জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments