Gen Z poem and the pioneer of Gen Z poem, Poet Arun.
Dr. Ranjit Kumar Sinha
কবি অরুণ Gen Z কবিতা ভাবনার পথপ্রদর্শক ৷ তাঁর মতে পরমচেতনাই Gen Z এর কবিতাভাবনার সূচক , নিয়তি ও পরিণাম ৷
অরুণ শুধু কবি নন, তিনি একজন দার্শনিকও৷ তাঁর কবিসত্ত্বার পাশাপাশি সমান্তরালভাবে এগিয়ে চলেছে এক দার্শনিক সত্তা ৷ যার সাহায্যে তিনি খুব সহজেই মেলে ধরেন কবিতার কঠিন সব সমীকরণের অভ্যন্তরীণ সহজ দর্শন ৷
তাঁর অনুভবে কবি ও কবিতার সম্পর্ক , কবি মনন, কবিতা সৃষ্টির রহস্য , কবিতার অন্তর্নিহিত দর্শন ধরা পড়ে সহজ , সাবলীল ও স্পষ্টভাবে ৷
কবি অরুণের কবিতা বিষয়ক বিভিন্ন অনুভব তুলে ধরলেন কবি-প্রাবন্ধিক-অধ্যাপক
ড. রঞ্জিত কুমার সিন্হা ৷
Part-3
কবির নতুনত্ব সৃষ্টির উদ্দেশ্য
সৌন্দর্য রসের প্রতি মোহ, তাকে আরো গভীর ভাবে ভোগ করার ইচ্ছা সব মানুষের মধ্যে বিদ্যমান। কবির কাছে এ এক তীব্র আকাঙ্ক্ষিত বস্তু। কোনো দৃশ্য কবির হৃদয়ে উদ্দীপনা তৈরি করলে তার অনুভব, অনুরণন কবিতায় রূপ পায়। কিন্তু কবি হৃদয় যতটা আকাঙ্ক্ষা করে তা যেন অপূর্ণ থেকে যায়। এই অপূর্ণতা বিষয় যা দৃশ্যের প্রতি কবির আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দেয়। কবির সামনে নতুনত্বের নেশাকে জাগিয়ে তোলে। কবি অসীম আনন্দ, অনন্ত সৌন্দর্য ও পূর্ণ নিরবচ্ছিন্ন প্রেম আস্বাদন করতে চান। আরো নতুনভাবে একই দৃশ্য বা বিষয়ের পূর্ণ সৌন্দর্য আস্বাদনে কবির ইচ্ছা কবিতায় নতুন ভাবনা, নতুন ভাষা, নতুন দৃষ্টিকোণ তৈরি করে। আগের সৃষ্টিকে কবির অপূর্ণ, সীমায়িত মনে হয়। এই অপূর্ণতা সৃষ্টি করে কবিতার নতুন পথ।
কবির অহং
‘আমি অন্য সকলের চেয়ে পৃথক ও শ্রেষ্ঠ'—এই ভাবনা যে কোনো মানুষের মধ্যে অহং সৃষ্টি করে। এই পৃথকভাব যখন অন্য ভাবনাকে, অন্য অনুভবকে অস্বীকার করতে চায় তখন ‘অহং’ এক স্বসৃষ্ট বোকামী। এই ‘অহং’ ক্ষতিকরও। এক্ষেত্রে কবি অন্য স্বতন্ত্র ভাবনাকে অস্বীকার করে নিজের ভাবনাকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন।
আবার কবির ‘অহং’ সঠিক প্রয়োগে এক বিশেষ গুণ হতে পারে। অন্যের স্বতন্ত্র ভাব, ভাবনা ও অনুভবকে উপভোগ করলে, স্বীকার ও সম্মান দিলে, কবির ‘অহং’ এক সম্মানীয় গুণ হয়ে ওঠে।
পৃথক চেতনা, সত্যের পৃথক পৃথক রূপকে দেখার দৃষ্টিকোণকে স্বীকার করলে, এই মুক্ত ‘অহং’ কবিকে সমৃদ্ধ করে। কবির স্বতন্ত্র ভাবনার সহায়ক হয়।
অন্য কবির ব্যক্তিসত্তা-ভাষা-ভাবনা- দৃষ্টিকোণের স্বাতন্ত্র্যকে স্বীকার, কবির নিজস্ব ব্যক্তিসত্তাকে দৃঢ় করে। এই ‘অহং’ কবির জীবন ও সৃষ্টির একটি অমূল্য এবং প্রয়োজনীয় উপাদান হয়ে ওঠে।
কবির জ্ঞান
কবি ও পাঠকের মধ্যে অনন্ত জ্ঞান আছে। তার কিছু চেতনে বর্তমান, কিছু অবচেতনায় আবৃত আছে। আর কিছু চর্চাহীনতায় অচেতনে হারিয়ে গেছে।
মানুষ যে জ্ঞানলাভ করে তা তার নিজের মনের মধ্যেই থাকে। সে এই জ্ঞান অর্জন করে কখনো অবচেতনার আবরণ সরিয়ে, কখনো অচেতন থেকে হারিয়ে যাওয়া জ্ঞানকে উদ্ধার করে। বর্হিজগতের সৌন্দর্য, অনুভব ও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য কবির মনে এই জ্ঞানকে খুঁজে নেওয়ার প্রয়োজনীয় উত্তেজনা বা উদ্দীপনা তৈরি করে।
বিবেকানন্দ বলেছেন— 'মনুষ্য মনের শক্তির কোনও সীমা নাই, উহা যতই একাগ্র হয়, ততই উহার শক্তি এক লক্ষ্যের উপর আসে এবং ইহাই রহস্য।' তাঁর কথায়, 'মানুষ যত প্রকার জ্ঞানলাভ করিয়াছে সবই মন হইতে। জগতের অনন্ত পুস্তকাগার তোমারই মনে।
লৌকিক বা পারমার্থিক যা কিছু জ্ঞান তার উৎস মানুষের মন। যে জ্ঞান আমাদের স্মৃতিতে আছে তা চেতনের অংশ। যে জ্ঞান আবৃত আছে তা অবচেতনার অংশ। আবরণ সরালে এই জ্ঞান চেতনায় প্রকট হয়। কিছু জ্ঞান দীর্ঘদিন চর্চাহীনতায় অচেতনে হারিয়ে যায়। অচেতন থেকে পুনঃরুদ্ধার নতুন কিছু আবিষ্কারের মতো। সুতরাং অজ্ঞানতা, অবচেতনে আবৃত বা অচেতনে হারিয়ে যাওয়া জ্ঞানের ফল মাত্র।
প্রকৃতপক্ষেজ্ঞান, কবির বর্হিজগৎ ও মনের গভীরে সূক্ষাকারে অর্ন্তনিহিত থাকা সদৃশ বস্তুও ভাবনার মিলন।
কবির সীমা ও অসীম
সমস্ত জীবজন্তুদের মধ্যে একমাত্র মানুষেরই স্বাধীন মন আছে। এই স্বাধীন মনকে আমরা নিজের ইচ্ছানুযায়ী বিভিন্ন দিকে বিস্তৃত করতে পারি। একই দৃশ্যকে বিভিন্ন রূপে কল্পনা করতে পারি।
এই মনকে কিভাবে কতটা বিস্তৃত করবো তা নির্ভর করে আমাদের ইচ্ছাশক্তি ও মন মস্তিষ্কের অন্তর্নিহিত শক্তির উপর। এই ইচ্ছাশক্তি এবং অন্তর্নিহিত শক্তির ক্ষমতা ক্ষুদ্র হলে ভাবনা, অনুভবও ক্ষুদ্র পরিসরে বদ্ধ হয়ে পড়ে। আর এই ক্ষমতা অনন্ত হলে একই দৃশ্য বা বিষয়কে অনুভব করার অন্তহীন পথের খোঁজ পাওয়া যায়।
এক শ্রেণির কবি সীমার মধ্যে সীমিত ভাবনার পরিমণ্ডলে নিজের সৃষ্টিকে বাঁধতে চান।
অন্য এক শ্রেণি চান অনন্ত, অসীমতার আনন্দকে উপলব্ধি করতে। তাই তারা সীমার মধ্যেও অসীমকে ছুঁতে পারেন। আবার অসীমতার মধ্যেও বিভিন্ন ভাবনা, দৃশ্য, বিষয়কে সুনিয়ন্ত্রিতভাবে সীমায়িত করতে পারেন। অসীমতার মধ্যে খুঁজে নেন সার্থক সৃষ্টির পথ।
আচ্ছন্ন জ্ঞানের মুক্তি
মানুষের মন অনন্ত পাঠশালা। আমাদের সব জ্ঞানই মনের অংশমাত্র। বাইরের জগতের সৌন্দর্য আমাদের হৃদয় মনকে অনুরণিত করলে, মনের গভীরে নতুন নতুন শিক্ষণীয় বিষয় তৈরি হয়। মনের গভীরে বিক্ষিপ্ত থাকা বিষয়গুলির শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার নামই শিক্ষা। বাহ্যিক বা আত্মিক সব জ্ঞানই মনের গভীরে থাকে। এই জ্ঞানের কিছু স্পষ্ট হয়, কিছু অবচেতনার গভীরে আচ্ছন্ন থাকে। মনের গভীরে অনুরণন এই আচ্ছন্নতাকে মুক্ত করে। অজানা অচেনা জ্ঞানের ভাণ্ডার অবচেতনা থেকে চেতনায় মুক্ত হয়। ফলে অজ্ঞানতার অন্ধকার মুছে যায়। অর্থাৎ জ্ঞানলাভ আসলে অবচেতন বা অচেতনে আবদ্ধ পূর্বলব্ধ জ্ঞানের মুক্তি। পূর্বলব্ধ অনুভূতির মুক্তি। পূর্বলব্ধ সংস্কারসমষ্টি ও জ্ঞানভান্ডারের আবিষ্কার।
কবি মনের শক্তিকে একাগ্রভাবে কেন্দ্রীভূত করে কোনো বস্তুবিষয়ের অধ্যয়নই প্রকৃত কাজ। এটাই জ্ঞানের অজানা-অচেনা-রহস্যময় জগত সন্ধানের একমাত্র পথ।
অন্তর্নিহিত সত্য
আপাতদৃষ্টিতে আমরা কোনো বস্তু-প্রাণী-দৃশ্য-বিষয়ের যা কিছু দেখি তা তার বাহ্যিক সত্য। আমাদের বাসনা, কামনা ও পার্থিব বস্তুর প্রতি তীব্র আকর্ষন থেকে যে সত্য আমরা সহজে অনুভব করি তা বস্তুর বাহ্যিক সত্য। দেহাত্মবোধ দ্বারা অনুভূত সত্য।
এই সত্যের বাইরেও বস্তু-প্রাণী-দৃশ্য-বিষয়ের এক অন্তর্নিহিত মহান সত্য আছে। যা তার পরমসত্য। আমাদের হৃদয়ের সমস্ত অনুভূতি দিয়ে এই পরম সত্যকে অনুভব করতে পারলে আমরা দেহাত্মবোধ থেকে মুক্ত হতে পারবো। যা সৃষ্টির প্রকৃত সৌন্দর্যের দরজা আমাদের সামনে খুলে দেয়। আমাদের মুক্ত করে। আমাদের অনুভূতিকে গভীর-গভীরতর করে। অনুভবের এই সত্যকে উপলব্ধি করে তার সঙ্গে একাত্ম হতে পারলেই কবি জীবন পূর্ণ সার্থক হয়।
কবিতা ও জ্যামিতি
শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমের মতো কবিতাও জ্যামিতি সম্পৃক্ত। কবিতার ফর্ম এই জ্যামিতির স্বরূপ। কবিতার ক্ষেত্রে কবির আবেগ, অনুভূতি, ভাবনা ও ভাষার রূপ এতখানি প্রকট থাকে যে সেক্ষেত্রে ফর্মের জ্যামিতি অনিবার্য হয়েও তার মর্যাদা পায় না। কবিতায় ফর্ম নিয়ে গবেষণা প্রায়ই হয় না, হলেও কবি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সচেতন ভাবে করেন না। পাছে ভাবনার কৌলিন্য নষ্ট হয়, তাঁর ভাবনা যান্ত্রিকতা পায় এই ভয়ে কবিরা কবিতার জ্যামিতিক রূপকে স্বীকার করতে চান না।
আমরা জানি অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত সহ বিভিন্ন ছন্দে কবিতাকে বাঁধা আসলে বিশুদ্ধ গাণিতিক হিসাব। সনেটও গণিতের কেরামতি। কিন্তু ছন্দে কবিতা লেখা কিংবা সনেট লেখার সময় কবির ভাবনার স্বাধীনতাকে বেঁধে ফেলার কথা বলা হয় না। তখন প্রশ্ন ওঠে না কবিতার যান্ত্রিক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা নিয়েও। কিন্তু কবিতায় জ্যামিতির কথা উঠলে এক শ্রেণির সমালোচক এই প্রসঙ্গগুলি তুলে হৈচৈ করতে থাকেন।
বাস্তব সত্য এটাই যে অন্যান্য শিল্পের মতোই জ্যামিতি ছাড়া কবিতা অচল। তাই একে অস্বীকার করা অর্থহীন বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। জ্যামিতিকে অস্বীকার করলে অস্বীকার করতে হয় কবিতার অনুভবকে, কবিতাকে।
কবির বিশ্বাস ও ভিত্তি
কবিতা নির্মাণে কবির বিশ্বাস ও ভিত্তি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। ‘বিশ্বাস’ কবি মননের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে সুসমন্বয় তৈরি করে। ‘ভিত্তি’ কবিতার ভাষা-ভাবনাকে স্পষ্ট, সুন্দর, মুক্ত ও উন্নততর করে। আর এই ‘বিশ্বাস’ ও ‘ভিত্তি’-র সুসমন্বয় কবির আত্মস্বরূপকে অনুভবে সাহায্য করে। কবিকে নিয়ে যায় অমৃতচেতনার পথে।
জেড প্রজন্ম!! পরমচেতনা!!
ইতিমধ্যে Z-প্রজন্ম নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক। কিংবা অস্বাভাবিক। X, Y, Z আমার আবিষ্কার নয়। Z-প্রজন্মও আমার আবিস্তৃত সময়সীমা নয়।
আমেরিকান বিজ্ঞানী নীল হোভ এবং উইলিয়ান স্ট্রস ১৯৯১ সালে দ্য জেনারেসন থিওরিটি তৈরি করেছিলেন। প্রজন্মের X, Y এবং Z-এর তত্ত্ব তাঁদের নামাঙ্কিত থিওরি।
তাঁদের মতে, এই প্রজন্মে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দৃষ্টান্তমূলক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চিন্তাশীলতা ও বুদ্ধিবৃত্তির চূড়ান্ত উন্নতি ঘটবে। মানুষ হবে সর্বাধিক সক্রিয়, জ্ঞানসম্পন্ন ও উদ্যোগী।
Z-প্রজন্ম এমন একটা সময় যখন মনুষ্য জীবনের অবস্থান, ভিত্তি, মূল্যবোধ এক চরম স্তরে পৌঁছায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উন্নতিতে বিশ্ব অনায়াসে চলে আসে মানুষের হাতের মুঠোয়। মানুষ হয় স্বাধীনচেতা, সামাজিক শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে।
এটি কি ‘চূড়ান্ত উন্নতি’ নাকি ‘চূড়ান্ত অবনমন ? চরম বৈপরিত্যের এই দ্বন্দ্বের ভেতরই লুকিয়ে আছে Z-প্রজন্মের সত্য।
এতে এক শ্রেণীর মানুষ যন্ত্রনির্ভর, যান্ত্রিক হয়ে উঠবে। তেমনি কিছু মানুষ চাইবে
আত্মজ্ঞানী হতে। খুঁজে পেতে চাইবে চেতনার উচ্চতম স্তরকে। নতুনত্বের অন্বেষক সৃষ্টিশীল মানুষের এই উচ্চতম চেতনাকে ছুঁতে চাওয়ার ইচ্ছা ও আকুতিই যেন পরমচেতনার পরম পথের প্রবেশদ্বার।
সাহিত্য-শিল্পে মানব মননের এই সর্বোচ্চ পথের সন্ধানই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।
আমার বিনীত স্বীকারোক্তি— আমি পরমচেতনার স্রষ্টা নই। সাহিত্য-শিল্পে একে উপলব্ধি ও প্রয়োগ পদ্ধতির একজন অতি সাধারণ পথপ্রদর্শক মাত্র। এটা স্পষ্ট ও অবধারিত যে, 'পরম চেতনা’র পথ-ই Z-প্রজন্মের শিল্পসৃষ্টির সূচক, নিয়মি ও পরিণাম। তেমনি এটাও সত্য ও নিশ্চিত যে বহু হৃদয় তরুণ সৃষ্টিশীল মানুষের হাত ধরে আবিষ্কার হবে পরম চেতনার নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য, লক্ষণ, ভাব, তথ্য ও তত্ত্ব। পরমচেতনাকে ছুঁয়ে ফেলার নতুন নতুন পথ। পথেরও পথ।
জেড প্রজন্মের পথ, পরমচেতনার পথ
জেড প্রজন্মের কবিতা মানব মননের উচ্চতম চেতনা পরম চেতনার কবিতা। পরমচেতনার খোঁজ আসলে প্রকৃত সত্যের খোঁজ। বস্তু বিশ্বের মূলে থাকে এক সৌন্দর্যময় স্পন্দন। এই স্পন্দনের সঙ্গে নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে মেলাতে পারলে সীমার মধ্যে অসীমতাকে ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব হয়। এটি কবি জীবনের চরম ও পরম লক্ষ্য।
দৈহিক স্থূল আবেগকে সুনিয়ন্ত্রিত করতে পারলে বস্তুবিষয়ের বাহ্যিক রূপের বাইরে এক অনন্ত রূপের সন্ধান পান কবি। মনের উচ্চভূমিতে তিনি এক অবর্ণনীয়, আশ্চর্যময় পথের খোঁজ পান। বস্তু-বিষয়ের মধ্যেকার এক স্নিগ্ধময় আনন্দ ও অতীন্দ্রিয় রূপ ধরা দেয় তাঁর চোখে।
দৃষ্টির এই উচ্চতম অবস্থান কবির ভাষা ও অনুভবকে গভীরতম করে। কবির সামনে খুলে যায় প্রকৃত সত্যের দরজা।
আমাদের এই বাহ্যজগতের দ্বন্দ্বময় রূপকে অতিক্রম করতে পারলে কবি পৌঁছে যান এই সত্য স্বরূপে। যা তাঁকে পৃথিবী, জল, অগ্নি, বায়ু ও আকাশ থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও অতিসূক্ষ্ম অনুভবের পথে নিয়ে যাবে। প্রতিটি বস্তু ও প্রাণীর মধ্যেকার দর্শনকে অতি সহজে তিনি উপলব্ধি অনুভব করতে পারবেন। কবি অনুভব করবেন বস্তু-প্রাণী-বিষয়ের অন্তর্নিহিত ত্রিমূর্তি, ত্রিকালদর্শী পরম চেতনার সূক্ষ্ম ধ্বনিকে ৷
0 Comments