জ্বলদর্চি

আমি সূর্যের কাছে যাব /পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

আমি সূর্যের কাছে যাব

পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়


আমার কিছু যায় আসেনা
অন্যরকম ভাবও যদি।
আজ জানি, মোহনার  আশায়
দিব্যি বাঁচে স্বপ্ন-নদী।

যে তাপের কোনও অনুবাদ হয় না
তাকে সূর্য বলে।
যে বিক্রিয়ার কোনও অনুঘটক হয় না
তাকে বলে সূর্যের আলো।

আমি অনুবাদকের অর্থহীন অনুভূতি না হয়ে, 
তাই সূর্যের কাছে যাব।

যদি সে বলে, আমিই আমার অনুবাদক,
তাহলে নিজেকে পোড়াবো সে তাপে।
আমি আলোর কাছে যাব।
আমি সূর্যের কাছে যাব।

পৃথিবীর চারদিকে শ্যাওলা।
শ্যাওলার চারদিকে পাঁক।
পাঁকেদের চারদিকে আলেয়ার জোনাকিরা
কানাঘুষো জ্যোৎস্না ছড়াক।

জ্যোৎস্নাতে অশোকের বন।
তাতে বসে শপথের সীতা।
ভুলে গেছে রাম তার কে ছিল আদতে
সে কি স্বামী, ভূস্বামী নাকি পিতা?

আমাদের রোজ খাওয়া রুটি।
আমাদের তৃষ্ণার জল।
সূর্যের তাপ থেকে দূষিত কনাকে মেরে
পুণ্য'কে মানে সম্বল।

নাভিকুণ্ডের ছেঁড়া নালী।
যেখানে মায়ের সেই ছোঁয়া।
ঝাপসা স্মৃতির ভিড়ে বন্দিনী হয় তাতে
প্রাণহীন হতাশার ধোঁয়া।


এ সবের থেকে মুক্তি পেতে চাই।
'মুক্তি তোমার সহজ নয়।' তা বলে,
সূর্য আমার মুক্তি খোঁজার বেলা
অজ্ঞাতবাস অন্তরালে চলে।

অন্তরালে অনেকগুলো ঘর।
ঘরের বাইরে পরদা দেওয়া নদী।
নদীর বুকে আসমানী রঙ হাজার খেয়া চলে
চলার পথে চিরসঙ্গী হতাম যদি।


এই ভাবে রোজ জীবন কাটে পথে।
পথের মধ্যে ছড়িয়ে আছে কাঁটা।
কাটার অহং পা ছিঁড়ে দেয়, রক্তপাতের মধ্যে থাকে
লুকিয়ে বাঁচা তুচ্ছ ঘটনাটা।

ঘটনা রোজ পুজোর ডালি নিয়ে।
ফুল তোলে তার মনের আঙিনায়।
সেখানে সব ইচ্ছাগুলো ধুলোর মতো ছন্নছাড়া
সেই ধুলোতে আমারও নাই ঠাঁই।

এসব কিছু বহুদিনের ভাবনা, ভাবার শেষে।
কবিতাদের ব্যর্থ অনুবাদ।
নাই কোনও তার অর্থ আবেগ,
নাই কোনও তার ছন্দপতন,
সব মিলে তা একরোখা বিস্বাদ।

তাই ঠিক করেছি,
যে তার তাপ ও আলোর অনুবাদ নিজে করে 
সেই সূর্যের কাছে যাব।

একা ভালো থেকো সব
জীবনের শিকারীর দল।
আমার জীবনে হোক
সূর্যের তাপ সম্বল।

কি আছে উল্টো পিঠে
জানে কে বা? নাই তাতে ভয়।
জীবন, জীবনিকার মিলে হোক
তার সঞ্চয়।


জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇



Post a Comment

1 Comments