জ্বলদর্চি

ভাষাবিজ্ঞান এবং সাম্প্রতিক আলোকপাত /গৌতম বাড়ই

ভাষাবিজ্ঞান এবং সাম্প্রতিক আলোকপাত

গৌতম বাড়ই



ভাষা এবং বিজ্ঞান এই দুটোকে একসাথেই মিশিয়ে দিলেই তো ভাষাবিজ্ঞান। আর বিজ্ঞান শব্দটির মধ্যে 
লুকিয়ে আছে যা তা হল, বিশেষ ভাবে যে জ্ঞান লাভ করা হয়, যার পেছনে যুক্তি প্রমাণ গভীর অধ্যয়ন এবং সম্যক্ জ্ঞানের ও সবদেশের পণ্ডিতবর্গের মেনে নেওয়ার বিজ্ঞান। যা আবার একইসঙ্গে যুক্তিপ্রমাণ চাইবার উপযুক্ত মতামত থাকবার স্বাধীনতাও বহন করে। সম্প্রতি জ্বলদর্চির সম্পাদক মহাশয়  ভাষাবিজ্ঞান নিয়ে এমনতরো এক আলোচনার দিক খুলে দিয়েছেন। সে প্রসঙ্গে যতটা সহজ সরল ভাবে এবং ভাষায় এই বিষয়বস্তুকে তুলে ধরা যায় তার সামান্যতম চেষ্টা করছি মাত্র। 

ভাষাই যখন মূলবিষয়বস্তু তখন আমাদের মতন বহু ভাষাভাষীদের দেশে সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রসঙ্গ অবলীলাক্রমে চলে আসে। কোন ভাষা ছোট কোন অঞ্চলে,  আবার কোন ভাষা বিরাট অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত। শহুরে ভাষা আর গ্রামীন ভাষার মধ্যেও বিস্তর ফারাক চোখে পড়ে। আঞ্চলিক কথ্যভাষায় নানান অমিল খুঁজে পাওয়া যায়। তাদের উৎস, তাদের যুগে- যুগে রূপভেদ সবই এই ভাষার অনর্গল স্রোতের জন্য,  বিজ্ঞানের অন্বেষণে তাতে গবেষণালব্ধ যে সত্যি উঠে এসেছে, তাই লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। কথ্যভাষা আলাদা হলেও এক বৃহত্তর অঞ্চল একই লেখ্যভাষা বা লিখিতভাষা দ্বারা পরিচালিত হয়। আর এখানেই বিজ্ঞানসন্মত ভাবেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিও লাগে। মুখের ভাষা আর লেখ্যভাষা বারবার যুগের আবহমানতার বা বদলের উপর দিয়ে চলে। কিছু শব্দের  উৎস তো বিভিন্ন ঘটনায় আর তাৎক্ষণিক তরুণ প্রজন্মের মুখ নিঃসৃত হয়েই চলে আসে। এখানে দু -তিনটি উদাহরণ রাখছি, নকশাল,ঘ্যাম আর ঝক্কাস, আমাদের বাংলায় এই তিনটি  শব্দ বেশ ব্যবহৃত হয়েছে বা হচ্ছে আর এরকম আরও  বহু শব্দ আছে। আবার শ্লীলতা বা অশ্লীলতার গন্ডী দিয়েও কোন শব্দ কে অন্তত বেঁধে রাখা যায় না। সাহিত্যের বিভিন্ন প্রকরণ ভেদে এর ব্যবহার  হবেই। তবে মূলপ্রশ্ন ভাষাবিজ্ঞান কাকে বলব? 

এ প্রসঙ্গে আসি। 

এখানে ভাষা সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আলােচনা করা হয় বলে একে 'ভাষাবিজ্ঞান' বলে। ইংরেজি Linguistics শব্দটির অর্থ হল Science of Language বা ভাষার বিজ্ঞান।বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষাচর্চার প্রথম ধাপ হল তথ্যসংগ্রহ নথিভুক্তকরণ। তারপর সেই প্রাপ্ত তথ্যকে বিশ্লেষণ করে তার যথাযথ বর্ণনা করা হয়। 

এই ভাষাবিজ্ঞানের উৎস সন্ধানে গেলে অবধারিত ভাবে জ্ঞান- বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতন পশ্চিমী দুনিয়া বা ইওরোপ আলোচনাচক্রে এসেই যায়। 
স্যার উইলিয়াম জোনস ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেছিলেন। তবে এর অনেক পেছনে হেঁটে আমরা যদি ঘুরে আসি ভাষা বিজ্ঞানের হাতধরে ইতিহাসের অনেক দূরে তাহলে দেখতে পাই প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক পণ্ডিতরাও ভাষার উৎস সন্ধানে অনেক কাজ করেছিলেন। 

পাশ্চাত্যে খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর গ্রিক দার্শনিকেরা প্রথম ভাষার তত্ত্বের ব্যাপারে আগ্রহী হন। ভাষার উৎস ও গ্রিক ভাষার ব্যাকরণগত কাঠামো ছিল তাদের মূল বিতর্কের বিষয়। প্লাতো ও এ্যারিস্টটল ভাষার অধ্যয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ধারণা করা হয় প্লাতো-ই প্রথম বিশেষ্য ও ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য করেন।খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে দিয়োনিসিয়ুস থ্রাক্স প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রিক ব্যাকরণ রচনা করেন। এই প্রভাবশালী ব্যাকরণটিকে পরবর্তীকালে রোমীয় বা লাতিন ব্যাকরণবিদেরা মডেল হিসেবে গ্রহণ করেন এবং অনুরূপে তাদের কাজও পরবর্তীকালে মধ্যযুগ ও রেনেসাঁসের সময় লেখা সব ব্যাকরণকে প্রভাবিত করে। এ সময় ইউরোপে প্রচলিত বেশির ভাগ ভাষার ব্যাকরণবিদেরা গ্রিক ও লাতিন ব্যাকরণকে মান ও "শুদ্ধ" ব্যাকরণ গণ্য করে তাদের নিজ নিজ ভাষার জন্য বিধানমূলক ব্যাকরণ রচনা করেন। রেনেসাঁসের পরে পাশ্চাত্যের চিন্তাবিদেরা বিশ্বের অন্যান্য ভাষার ব্যাকরণের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ব্যাকরণ তো হল ভাষার প্রামাণ্য বিজ্ঞান। আর খটমটে তাই এই কারণে, সবকিছু সবার বোধের অগম্য হয়, গভীর অধ্যয়ন না থাকলে। তাই আমাদের প্রায় সবারই কম বেশি  ভালো লাগে না। 

পাশ্চাত্যের বাইরে ভারতীয় উপমহাদেশে ভাষাবিষয়ক গবেষণার একটি স্বতন্ত্র ধারা অতি প্রাচীনকাল থেকেই বিদ্যমান ছিল। সংস্কৃত ব্যাকরণবিদেরা উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের মধ্যে পার্থক্য করেন, এবং গ্রিক ব্যাকরণবিদদের মত বিশেষ্য ও ক্রিয়াপদ ছাড়াও অনুসর্গ ও অব্যয় নামের দুটি পদ আবিষ্কার করেন। ভারতীয় ব্যাকরণবিদদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলেন পাণিনি (খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দী)। তাহলে এইসব ঐতিহাসিক প্রমাণ থেকে এইটুকু বুঝতে পারি ভাষার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে  চর্চা বহু বহুকাল আগে থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চালু ছিল। স্যার উইলিয়াম জোন্স তার ভাষাতত্ত্ব নিয়ে নিরলস গবেষণায় আমাদের সংস্কৃত ভাষার সাথে গ্রীক আর লাতিন ভাষার অনেক মিল  খুঁজে পেয়েছিলেন । এখানে ভাষা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় মোটামুটি ভাবে যা উঠে এসেছে তার কিছু আলোচনা রাখছি। 

ভাষাশিক্ষার উপযােগী যে ব্যাকরণ জন্মগতভাবেই মানব-মস্তিষ্কে অবস্থান করে বলে জানিয়েছেন নােয়াম চমস্কি, তাকেই তিনি বলেছেন 'সর্বজনীন ব্যাকরণ'। 

এবার সামান্য বিস্তৃত আলোচনা হোক। 

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষাচর্চার প্রথম ধাপ হল তথ্যসংগ্রহ ও নথিভুক্তকরণ। তারপর সেই প্রাপ্ত তথ্যকে বিশ্লেষণ করে তার যথাযথ বর্ণনা করা হয়।
ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের মূল কাজটি হল----
ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান পদ্ধতিতে ভাষাবিশেষের উৎস, ইতিহাস, ক্রমবিবর্তনের রূপরেখা আলােচনা বা বিশ্লেষণ করা হয়।
বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের আলােচ্য বিষয়গুলি হল---
বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে সমকালে প্রচলিত কোনাে ধ্বনি, শব্দ, বাক্য, বাক্যাংশ ইত্যাদির স্বরূপ ও গঠনগত দিক বিশ্লেষিত হয়, এগুলির অতীতের রূপ নির্ণয় করা হয় না। আবার আলোচনাক্রমে এসে দাঁড়াচ্ছে ভাষাবিজ্ঞান এর চর্চার সাথে স্নায়ু বিজ্ঞান বলে একটি শব্দ। তাহলে একটু জেনে নেই একবার।
স্নায়ুভাষাবিজ্ঞানকে দুভাগে ভাগ করা যেতে পারে- (১) ভাষা শেখা ও প্রক্রিয়াকরণ এবং (২) ভাষাগত সমস্যার সংস্কার।
'চিন্তার পােশাক' (The dress of thought) কথাটি শুনতে পাই ভাষাবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে, 'চিন্তার পােশাক' কথাটি স্যামুয়েল ওয়েসলির। একজন লেখক তার চিন্তাভাবনাকে যেভাবে সাজিয়ে ভাষায় প্রকাশ করেন, সেই ভাষারীতিকেই বলা হয় চিন্তার পােশাক। 

সুইস ভাষাবিজ্ঞানী ফার্দিনান্দ দ্য সােস্যুর পাশ্চাত্যে বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা। তিনিই প্রথম বর্ণনামূলক ধারার সূত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথাগতভাবে শৈলীকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়- (১) মূল্যায়নভিত্তিক (Evaluative) শৈলী এবং (২) বর্ণনামূলক (Descriptive) শৈলী।


এখন প্রশ্ন হল এই মূল্যায়নভিত্তিক শৈলী কাকে বলে? 

কোনাে লেখার শৈলীর বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রকাশকেই বলে মূল্যায়নভিত্তিক শৈলী। এতে দুজন লেখকের লিখনশৈলীর প্রভেদ নিরূপণ করা হয়।


বর্ণনামূলক শৈলী কাকে বলে? 

কোনাে লেখকের কোনাে রচনার শৈলীর বিবরণ দেওয়াকেই বলা হয়। বর্ণনামূলক শৈলী। এই জাতীয় শৈলীতে কোনাে লেখকের দুটি একজাতীয় রচনার শৈলীর প্রভেদ নিরূপণ করা যায়। 

ত্রয়ােদশ শতাব্দীতে জন গারল্যান্ড অভিধান বােঝাতে প্রথম 'Dictionarius' শব্দটি ব্যবহার করেন। যা থেকে Dictionary শব্দটি পরবর্তীতে এসেছে। ভাষাবিজ্ঞানে এই অভিধান আর ব্যাকরণের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। 'Dictionary' কথাটি প্রথম পাওয়া যায় ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত থমাস এলিয়টের লাতিন ইংরেজি অভিধানে। এক ভাষার শব্দকে সেই ভাষাতেই ব্যাখ্যা করা হয় যে অভিধানে, তাকে বলা হয় একভাষিক এবং একভাষার শব্দ যখন অন্য ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়, তখন তাকে বলা হয় দ্বিভাষিক অভিধান।


ইতিহাসভিত্তিক অভিধান বলেও আমরা একটি শব্দবন্ধ পাব। কী সেই জিনিস? 

একটি শব্দের প্রথম প্রচলন কবে হয়েছিল, প্রথম প্রচলনের সময় তার বানান-উচ্চারণ এবং অর্থ কী ছিল, পরে যখন তার বানান-উচ্চারণ-অর্থের বদল ঘটল এবং শব্দটির বর্তমান রূপ ও অর্থ কী—এইভাবে শব্দের বর্ণনা দেওয়া হয় যে অভিধানে তাই ই ইতিহাসভিত্তিক অভিধান। একটি ইতিহাসভিত্তিক অভিধান হল—The Shorter Oxford English Dictionary.
এইভাবে সমাজভাষাবিজ্ঞান , নৃভাষাবিজ্ঞান ভাষাতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে এসেই পড়ে। ভাষা কীভাবে সমাজে কাজ করে এবং সমাজ কীভাবে ভাষার ওপর প্রভাব বিস্তার করে, তা যে শাস্ত্র আলােচনা করে, সেটিই সমাজভাষাবিজ্ঞান।একটি ভাষিক সমাজে ভাষার সঙ্গে সংস্কৃতির সম্পর্ক ওই সমাজের ঐতিহ্য, বিশ্বাস, প্রথা, পারিবারিক সংগঠন প্রভৃতির সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক আলােচনা করা নৃভাষাবিজ্ঞানের কাজ। যে মানসিক বাধ্যবাধকতা থেকে ভাষা ব্যবহৃত হয় সেই মানসিক প্রক্রিয়াসমূহ, ভাষার উৎপাদন, প্রত্যক্ষকরণ ও উপলদ্ধি-ক্ষমতার ওপর গুরুত্ব আরােপ করা হয়। তবে আমি এখানে ভাষাবিজ্ঞানের বেশি জটিলতার দিকে বেশি এগোবো না। মূল কতগুলি বিষয় ছুঁয়ে যাব। 

ভাষাবিজ্ঞানের অনুসন্ধানের মূল বিষয়বস্তু হল,
মানুষের মুখের ভাষা।  ভাষাবিজ্ঞানীরা কেন লিখিত ভাষার পরিবর্তে মৌখিক ভাষার ওপর গুরুত্ব দেন এই প্রশ্ন এসেই যায়। তার পেছনে অন্যতম কারণ হল--
লিখিত ভাষা মৌখিক ভাষার তুলনায় নবীনতর ও সংকীর্ণতর এবং মৌখিক ভাষা ব্যবহারকারীর সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি। তাই ভাষাবিজ্ঞানীরা মৌখিক ভাষাকেই গুরুত্ব দেন।ভাষাবিজ্ঞানের মূল কাজটি হল,
মানুষের মৌখিক ভাষার গঠন, প্রকৃতি এবং পদ্ধতি সম্বন্ধে বিজ্ঞানসম্মতভাবে চর্চা করাই ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। মানবসভ্যতায় ভাষা কীভাবে কাজ করে—তা আলােচনা করাও ভাষাবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ভাষাবিজ্ঞানের তিনটি বহুলপ্রচলিত শাখা হল-তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান, ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান এবং বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান। আপাতত এরকম একটি ধারণা ভাষাবিজ্ঞান সম্বন্ধে দিলাম। তবে জ্ঞান অনুশীলন অধ্যয়ন এর তো কোন সীমাবদ্ধতা নেই, অসীম সেই আকাশের সীমা। একজন সামান্য এই ভালবেসে কিছু লিখি বলে শব্দের বিভিন্ন ব্যবহার তার উৎস সম্বন্ধে আগ্রহ থেকেই ভাষাবিজ্ঞানের প্রতি নজর পড়ে স্বভাবতই। 

তাহলে এই লেখার শুরু করেছিলাম যা দিয়ে তাই দিয়ে শেষ করছি। আমাদের এই বহু ভাষাভাষীর দেশে ভাষাবিজ্ঞানের যেমন প্রয়োজনীয়তা আছে তেমন ব্যাপক চর্চাও দরকার। আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি বহুধা বিভক্ত হলেও তার মধ্যে যে অন্তর্লীন এক ঐক্য , যা বিস্মিত করে দেশ বিদেশের গুণীজনদের, সেখানেই আমাদের প্রয়োজন ভাষাবিজ্ঞানের। আমাদের প্রত্যেকটি ভাষার ঐতিহ্য স্বতন্ত্র, ইতিহাস স্বতন্ত্র। কোন কোন ভাষায় কথা বলে কোটি কোটি লোক আর কোন কোন ভাষায় মাত্র কয়েক লক্ষ। তামিলের মতন প্রাচীনভাষা যেমন রয়েছে , তেমনি কোন কোন ভাষার বয়স হাজার বছরের থেকে কম। অনেক ভাষা আছে ভারতে , যাদের লিপি তৈরী হয়নি। ফলে তাদের বই ছাপা হয়নি। ভাষায় ভাষায় যেমন ব্যাকরণগত পার্থক্য, তেমনি সামাজিক পার্থক্য আছে। এইসব পার্থক্য নিয়েই ভারতবর্ষের ভাষাগুলি কয়েকহাজার বছর ধরে বেঁচে আছে। সংস্কৃত আর পালি আজ আর সাধারণের মধ্যে প্রচলিত ভাষা নয় কিন্তু বহু মানুষের ধর্মজীবনে তাদের স্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভাষাবিজ্ঞানীদের  কাছে এই ভারতীয় উপমহাদেশ তাই আক্ষরিক অর্থেই তাদের গবেষণার অনন্তভাণ্ডার বা আকর হয়ে উঠতে পারে। আশা করব যদি এই কর্মে আগামীদিনে উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে আসবে , আমাদের বিভিন্ন  ভাষার শব্দের বাক্যের অনন্ত জগতের অনেক মণিমাণিক্যের কৃষ্টি সংস্কৃতির ইতিহাসের খোঁজ আমরা পেতেই পারি। 

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇



Post a Comment

0 Comments