জ্বলদর্চি

ঘেঁটুপূজা /ভাস্করব্রত পতি

পশ্চিমবঙ্গের লৌকিক উৎসব
 পর্ব - ১১

ঘেঁটুপূজা

ভাস্করব্রত পতি

দেহত্যাগের পর সতী ফের হিমালয়ের রাজকন্যা রূপে জন্মগ্রহন করেন। সেই শিবের সাথেই তাঁর বিয়ে হল। কিন্তু শিব তো ভয়ানক গরিব। দরিদ্র ভিক্ষুক। সেখানে বউটি হলেন রাজকন্যা উমা। ভিক্ষার অন্নে তাঁদের পেট চলে। ফলে উমা প্রমাদ গুনলেন। পিতা তথা হিমালয় রাজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উমা কাশীতে একটি নতুন পুরী নির্মান করেন। দুর্গাই তাঁর নাম দেন 'কাশীধাম'। শিব তা দেখলেন। কিন্তু যে মুহূর্তে উমা তাঁর অনুচরদের নিয়ে সেই কাশীধামে বসবাসের জন্য যাবেন ঠিক করলেন তার আগেই তা দখল করে বসলেন ব্যাসদেব। তিনি সেখানে শিবনিন্দার সাথে সাথে শ্রীহরি বন্দনা শুরু করলেন। মহা বিপদ! কাশীধামে তখন শিবের 'নো এন্ট্রি'। প্রমাদ গুনলেন উমা। বাধ্য হয়ে শিব নিজের মহাশক্তি থেকে জন্ম দিলেন এক বিকট রুদ্রানুচরের। তাঁর মোটা মোটা পা। মুখখানি প্রায় নেই বললেই চলে। গলা নেই। লম্বা লম্বা বড় বড় দুটি ঘন্টা বাঁধা। সেই থেকে তাঁর নাম হয়ে গেল 'ঘন্টাকর্ণ'। সেই ঘন্টাকর্ণ শিবের আদেশে চললেন কাশীধামে।

দুলতে লাগলো কানের ঘন্টা। বিকট তার আওয়াজ। সারা কাশীধাম চমকিত। ভয়ে ভীত। উদভ্রান্ত। সেইসাথে বড় বড় নিশ্বাস। যে যেদিকে পারলো ছুটে পালালো। বিপদ দেখে ব্যাসদেবও পালালেন কাশীধাম ছেড়ে। নগরী জনশূন্য হল ঘন্টাকর্ণের দাপটে। এরপর উমা এবং শিব এলেন কাশীধামে। শুরু হল জোর জনরোল। মুখরিত হল কাশীধাম।

মহাভারত রচনার বহু আগেই ভারতের অন্যতম চর্চিত এলাকা এই কাশীধাম। বৈদ্যশাস্ত্রের রচয়িতা ছিলেন কাশীরাজ দিবোদাস। কাশীকে ঘিরে পুরাণের এই কাহিনী আজও স্মরণযোগ্য। স্কন্দপুরাণের 'কাশীখল্ড'তেও হদিশ মিলবে ঘন্টাকর্ণ সম্পর্কে। রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের 'অন্নদামঙ্গলে'ও আছে একটি সরস কাহিনী। সেই কাহিনীর নায়ক ঘন্টাকর্ণের কানের দুলের মতোই দেখতে ঘেঁটু গাছের ফুল। এটি একটি ভেষজ গাছ। নানা শারীরিক ব্যাধির নিরাময়ে ঘেঁটুর ব্যবহার প্রশ্নাতিত।
পুরাণের ঘন্টাকর্ণের কাহিনীকে স্মরণ করেই প্রতি বছর ফাল্গুন সংক্রান্তি তথা 'ঘেঁটু ভাঙা সংক্রান্তি'তে এই বাংলায় পূজো করা হয় ঘন্টাকর্ণ বৃক্ষ বা ঘেঁটু গাছকে। কোথাও কোথাও ফাল্গুন সংক্রান্তির পরে তিনদিন ধরে বা সাতদিন ধরে ঘেঁটুর পূজা হয়। তবে পূজা চলাকালীন বৃষ্টি হয়ে গেলে ঐ বছরের মতো স্থগিত করে দেওয়া হয় পূজা। কেননা, বৃষ্টির জলে ঘেঁটু অন্ধ তথা কানা হয়ে যায়। আর 'কানা ঘেঁটু'র পূজা হয়না। আশুতোষ ভট্টাচার্য ঘেঁটু পূজার সময় হিসেবে ফাল্গুন সংক্রান্তিকে তুলে ধরলেও আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য তাঁর 'চিরঞ্জীৰ বনৌষধি'তে লিখেছেন ঘেঁটুপুজা হয় চৈত্র সংক্রান্তিতে। কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন যে, চৈত্র মাসের কুড়ি তারিখে ঘেঁটুর পূজার কথা। 'গণদেবতা'তে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "সমস্ত মাস ধরিয়া ঘেঁটুর গান গাহিয়া বাড়ি বাড়ি ঘুরিয়া বেড়ায়। চাল, ডাল, সিধা মাগিয়া মাসান্তে গাজনের সময় উৎসব করে।" যেহেতু গাজন হয় চৈত্র সংক্রান্তিতে, তাই 'সারা মাস' অর্থে চৈত্রকেই বোঝাচ্ছে। তিনি 'হাঁসুলি বাঁকের উপকথা' তেও লিখেছেন, "চৈত্র আসছে ঘেঁটু গানের পালা। তারই উদ্যোগপর্ব চলছে।" তবে দার্জিলিং জেলায় নেপালীরা শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীর দিন "গঠে মঙ্গল" অর্থাৎ ঘন্টাকর্ণ পূজা করে। 

চর্মাদি রােগের অধিদেবতার নাম হল ঘেঁটুঠাকুর। ইনি আসলে মঙ্গলপুত্র। এই দেবতাকে ঘণ্টেশ্বর, ঘন্টাকর্ণ বলা হয়। এই ঘেঁটু ঠাকুরের বিয়ে হয়েছিল শীতলার সাথে। তিনি আবার বসন্ত বা মসূরিকা রোগের দেবী। এই বসন্তও এক প্রকার চর্মরোগ। বসন্তকালেই দেখা যেত। এখন অবশ্য প্রায় নির্মূল হয়ে গেছে রোগটি। স্বামী স্ত্রী দুজনেই চর্মরোগের দেবদেবী। বসন্তকালেই দেবী শীতলা প্রাণীদের দয়া করতেন। লোকে বলত 'মায়ের দয়া' হয়েছে। অর্থাৎ বসন্ত হয়েছে। দেবী শীতলার স্বামী ঘণ্টাকর্ণও খোস পাঁচড়ার দেবতা। একসময় ভরা ফাল্গুনে সাধারণ মানুষের চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব হত। তা থেকে রেহাই পেতে মানুষ ঘেঁটু পূজার প্রচলন করে। বলা বাহুল্য, চর্মরোগ বা চুলকানি, খোস পাঁচড়া, কুষ্ঠের উপশমে ঘেঁটু গাছের ভূমিকার কথা জানতো গ্রামবাসীরা। একসময় যে গ্রামবাংলায় মানুষজন বিব্রত থাকতো চর্মরোগ নিয়ে, তা বোঝা যায় ঘেঁটুঠাকুরের মতো দেবতার বাড়বাড়ন্ত উপচার দেখে। এ ধরনের অধিদেবতার পূজার্চনা আজকাল তেমন নেই চর্মরোগের নানা ঔষধ আবিষ্কৃত হওয়ায়। একদিকে দৈবিক ঘটনা, অন্যদিকে ভেষজ উপকারিতা -- এই দুইয়ের মাঝে পড়েই কি রোগ উপশমে ঘেঁটুপূজার প্রচলন শুরু হয়েছে? 

লোকসমাজে বৃক্ষ হয়ে উঠেছে লোকায়তিক উপচারের অনুসর্গ। বিশ্বাস, ধর্ম আর সংস্কৃতি যদি মিলিত হয়, তবে তা হয়ে ওঠে চিরাচরিত বদ্ধমূল এক সংস্কার। ঘেঁটুপূজা তো তারই এক নিদর্শন। ঘেঁটু গাছের ফুলই ঘেঁটুঠাকুরের পূজার মূল উপকরণ। এই ঘেঁটুগাছ অবশ্য পরিচিত 'ভাঁট' বা 'ভাঁইট' গাছ নামেও। অনাদরে রাস্তার পাশেই এঁর জন্ম। ৪ ফুট দীর্ঘ গুল্মজাতীয় এই গাছটির উল্লেখ মেলে চরক সূত্রস্থান এর ২৬ তম অধ্যায়ে। শাখা প্রশাখা কম! শাখার অগ্রভাগে ৮ - ১২ ইঞ্চি লম্বা পুষ্পদণ্ড বের হয়। ফাল্গুন চৈত্র নাগাদ ঘেঁটু ফুলের দেখা মিলবে গ্রামাঞ্চলে। অথচ এই ঘেঁটুকে নিয়ে যে সংস্কৃতির বাতাবরণ, তা ক্রমশঃ হারিয়ে যাচ্ছে। ঘেঁটুকে সংস্কৃতে বলে ‘ঘন্টাকর্ণ', 'ঘন্টুক' এবং 'ভাণ্ডীর'। ওড়িয়াতে 'গেঙ্গুটি'', হিন্দিতে 'ভাঁট ফুল' বলে। তবে লোকায়তিক নাম 'ঘেঁটু'। বিজ্ঞানসম্মত নাম Clerodendron infortunatum। ভার্বিনেসী গোত্রের সাদা ফুলটি গুচ্ছাকারে ফোটে। ভিন্ন ধরণের গন্ধ। সর্বাঙ্গই তেতো।ফলগুলো পাকলে ঘোর লাল রঙের হয়। প্রাচীন বৈদ্যগণের মতেও ঘেঁটুই হল ভাঁটফুল। আর 'ভাণ্ডীর' থেকে এসেছে 'ভাঁট' কথাটি।

বাংলাদেশের কক্সবাজারে ভাইদ্দন ফুল, পাবনায় ভাটারী ফুল, সিলেটে ভাটি ফুল, রাজবংশীতে ভাওটিফুল, বাঁকুড়াতে মুড়ুর ফুল ছাড়াও তিত ভাঁট ফুল, ধবধুপি ফুল, খোস ফুল, চইগ্যাড়া ফুল, চোখ ওঠার ফুল নামেও পরিচিত এটি। জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, "বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের / মতো তার কেঁদেছিল পায়।" সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর ''দ্বারভাঙা জেলার রমণী'' কবিতাতেও এই ফুলের কথা উল্লেখ করেছেন।

ঘেঁটুপূজার অন্যান্য উপকরণগুলি হল – মুড়ি ভাজার পুরোনো এবং কালো পড়ে যাওয়া ছোট হাঁড়ি (খুলি'), হলুদ ছোপানো কাপড় যার দ্বারা হাঁড়িটিকে পুরো ঢাকা দেওয়া যায়, দুখানা গোবরের তাল এবং দুটি করে কড়ি ও তাল দুটির উপর বসাতে হবে। এছাড়া দূর্বা, ধূপ, সিঁদুর, গোবরও লাগে। আর নৈবেদ্য হিসেবে দিতে হয় চাল, মুসুর ডাল, মশলাপাতি এবং বাতাসা। হাঁড়িভাঙার লাঠিও একটি দরকার। মন্ত্র পড়ার পর লাঠিটি দিয়ে কাপড়ে ঢাকা হাঁড়িটিকে ভাঙতে হয়। যে ব্যক্তি হাঁড়ি ভাঙবে, তাঁর চোখ আগেই বেঁধে দেওয়া হয়। গ্রামবাংলায় লৌকিক 'হাঁড়ি ভাঙা খেলা'র উৎস এই ঘেঁটুর উপচারই। সংস্কৃতে নয়, বাংলা মন্ত্রেই পূজিত হন লোকদেবতা ঘেঁটুঠাকুর। এরকমই একটি মন্ত্র হল –
"সেদ্ধ চালে মুসুর ডালে / ঘেঁটু খায় বাসি পোঁদে। / ঘেঁটুকে যে করে দোমনা / তাঁর হয় খোস চুলকোনা।"

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার কোথাও কোথাও আজও যৎসামান্য ঘেঁটু পূজা হয়ে থাকে। হাওড়া জেলাতেও ঘেঁটু পূজার চল রয়েছে। তবে আজ এই লৌকিক ঘেঁটু পূজার চল প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। লুপ্ত হয়ে গিয়েছে ঘেঁটু পূজার গানগুলিও। হাওড়ার বিশিষ্ট লোক গবেষক প্রত্যুষ কুমার রীত লিখেছেন, "ঘেঁটু পূজার পর ছেলেমেয়েরা ভাঙা পাখির খাঁচা বা বাঁশের টুকরো দিয়ে পালকির আকারে ঘর তৈরি করে। তা পুরানো ক্যালেন্ডার, রঙিন কাগজ, ঘেঁটু ফুল, পুতুল (= ঘেঁটু দেবতা), ধূপ প্রভৃতি দিয়ে সাজায়। তারপর বাঁশ দিয়ে পালকির মতোই শিশুরা তা বয়ে নিয়ে যায় বাড়ি বাড়ি। এবং ঘরে ঘরে গান গেয়ে, যা চাল আলু তেল পয়সা পাওয়া যায় কয়েক সন্ধ্যায়, তা দিয়ে অংশগ্রহণকারী শিশুরা একদিন বনভোজন করে। শিশুদের এটি একটি আনন্দদায়ক উৎসব ছিল। আগে ছেলেরা সারাবছর এর জন্যে অপেক্ষা করে থাকত। কিন্তু এখন সমাজ সময় যুগ বদলেছে!" 

প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে, উমা তথা দুর্গার প্রতিষ্ঠিত কাশীধামে ব্যাসদেব শিবের পূজা না করে শ্রীহরির পূজা চালিয়েছিল। এরপরই শিবের থেকে জন্ম নেওয়া ঘণ্টাকর্ণ দেবতা কাশীধাম থেকে দূর করে দিয়েছিলেন শ্রীহরির উপাসক ব্যাসদেবকে। ফলে সবসময়ই ঘেঁটুঠাকুর হলেন হরিবিদ্বেষী দেবতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘেঁটুপূজা হয় ঘেঁটুঠাকুরকে তুষ্ট করে রাখার জন্য। তবে আশুতোষ ভট্টাচার্য তাঁর "বঙ্গীয় লোকসঙ্গীত রত্নাকর (প্রথম খণ্ড)" গ্রন্থে ঘেঁটুপূজার অন্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে ঘেঁটুঠাকুর যেহেতু হরিবিদ্বেষী, তাই ফাল্গুন মাসে ঘেঁটু পূজা করা হত ঘেঁটুদেবতাকে অপমান করার জন্য। এজন্য হাটের মাঝখানে একটি 'কালো হাঁড়ি' রেখে সবার সামনে লাঠি মেরে তা ভাঙা হত। ঐ কালা হাঁড়িকেই ঘেঁটু জ্ঞানে ভাঙা হত। আর সারা ফ্লাল্গুন মাস জুড়ে রাখাল ছেলেরা সন্ধ্যা বেলায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে গাইতো ঘেঁটুর গান। রাখালদের একজন হত ঘেঁটুদেবতা। অন্যেরা গানের ভিতর তাঁকে হরিবিদ্বেষী বলে গালাগাল করত। 

ঘেঁটুকে নিয়ে বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টি হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রবাদ প্রবচনও। "ঘেঁটুপুজাতে চিনির নৈবেদ্য”- প্রবাদটি কালীপ্রসন্ন সিংহর "হুতোম প্যাঁচার নক্সা" গ্রন্থেও উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া আরকটি প্রবাদ "ঘেঁটুপূজাতে ডোল সানাই" এর ব্যবহারের চল রয়েছে গ্রামবাংলায়। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর 'দেনাপাওনা' গল্পেও ঘেঁটুকে নিয়ে লিখেছেন আরেকটি প্রবাদ "যজ্ঞেশ্বর জানলেন না, খবর পেলেন ঘেঁটু মনসা”। বিভূতিভূষণের 'আরণ্যক' এ ঘেঁটু গাছ ও ঘেঁটু ফুলের কথা মেলে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ও লিখেছেন ঘেঁটু ফুল নিয়ে। কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর 'চণ্ডীমঙ্গল'-এর 'বনকৰ্ত্তন' অধ্যায়ে পাই, – 'ঘাটুফুল ঘাটুকাল কাটিল কেয়া'। ঘেঁটু দেবতার উল্লেখ মেলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বর্গীয় প্রহসন নাটিকায়। রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রায় লিখেছেন, 'ঘণ্টাকর্ণ নন্দী মহাকাল'।

আশুতোষ ভট্টাচার্য সংগৃহিত 'ঘেঁটুর গান' অবশ্য আজ আর শোনা যায় না। তবুও পাঠক স্বার্থে কিছু গান তুলে ধরা হলো।
“ঐ ডাবর বাজা, এই কাঁসর বাজা। / এলো এলো দ্বারে ঘেঁটু রাজা। / ধামা বাজা তোরা কুলো বাজা / এলো এলো দ্বারে ঘেঁটু রাজা।"
এরকম আরেকটি ঘেঁটুগান -
"এই ই ঘণ্টাকর্ণ, ওগো এই ই ঘন্টাকর্ণ / যেন ছেঁড়া ছাতা বর্ণ / কানের ঘন্টা তোরা বাজা বাজা / কানে ঘন্টা বাঁধা আমাদের এই ঘেঁটু রাজা"
এই ঘেঁটুর গানটি ২৪ পরগনা জেলা থেকে সংগৃহিত হয়েছিল। আরেকটি গানও এই ঘেঁটুকে নিয়েই। তা হল -
"আজ হবে গো ঘেঁটুর বিয়ে চল সব শাঁখ বাজিয়ে, / চল সবে পরে শাড়ি জল ভরিতে যাই তাড়াতাড়ি। / নিয়ে আয় মঙ্গলা হাঁড়ি, যায় সব কুলো মাথায় লয়ে / নিয়ে তখন বরণ ভালা, আনন্দে সব কুলবালা / আনন্দে হয়ে উতলা, জল সহিতে চলিত ধেয়ে।। / আজ হবে গো ঘেঁটুর বিয়ে, যাব আমার উলু দিয়ে / শাঁখ বাজিয়ে বরণ ডালা, ঘরে যাব আমরা আনন্দেতে"।।

ঘেঁটুগাছ যে একসময় আমাদের সমাজ জীবনে কতখানি প্রভাব ফেলেছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। দিন বদলের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন লোকায়ত উপচার। নগরায়নের যুগে রাস্তার পাশ থেকে হারিয়ে যাবে নিতান্ত অপাংক্তেয় এই 'ঘেঁটুগাছ'। আর হারিয়ে যাবে ঘেঁটু তথা ঘন্টাকর্ণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এক লোকায়ত সংস্কৃতি।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
 

Post a Comment

0 Comments