জ্বলদর্চি

আগডুম রাজ্যে ১০ / অলোক চট্টোপাধ্যায়






আগডুম রাজ্যে ১০ 

অলোক চট্টোপাধ্যায়

সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে শিক্ষালয়ের ভেতরে হেঁটে বেড়াচ্ছিলাম আমি আর চটপটি। ভারি চমৎকার জায়গাটা। বড় বড় গাছপালায় ভর্তি। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে আঁকাবাঁকা লাল কাঁকর বিছোনো রাস্তা। তার ধারে ধারে ফুলগাছের সারি। নানা রঙের ফুল ভরে আছে তাতে। মাঝে মাঝে এক একটা লাল টালির ছাউনি দেওয়া মাটির ঘর। দেওয়ালে লাল, সবুজ আর সাদা রঙ দিয়ে লতা পাতার নকশা আঁকা। তাদের সামনে সুন্দর করে নিকোনো উঠোন। সেখানেও মধ্যিখানে সাদা রঙের আলপনা। দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
আমরা রাতে যেখানে ছিলাম সেটা অবশ্য একটানা এক সারি ঘরের ভেতর একটা। চটপটি বলেছিল সেটা দূর থেকে বা অন্য দেশ থেকে আসা ছাত্রদের থাকার জায়গা। 
সকালে ঘুম থেকে তুলে চকমকি আমাদের দুজনকে দাঁতন কাঠির মত দুটো পাতলা গাছের ডাল ধরিয়ে দিয়েছিল। আমাদের নিম বা বাবুলের মত। মুখে দিয়েই দেখি হাকুচ তেতো। কিন্তু মুখে জল দিয়ে ধুতেই মুখটা কি সুন্দর মিষ্টি স্বাদে ভরে গেল। মুখ ধোওয়ার পর চকমকিই কোত্থেকে যেন গোল গোল সবুজ পাতার ওপর পেঁপের মতন কি যেন একরকম ফল কেটে নিয়ে এসেছিল। খুব ভালো স্বাদ আর তাছাড়া খিদেও পেয়েছিল বেজায়, আসলে আগের দিন সেই যে চটপটিদের বাড়িতে দুপুর বেলা খাবার খেয়েছিলাম তারপর থেকে তো আমরা কেউই কিছু খাইনি। এখন একসাথে বসে সেগুলো হুশহুশ করে খেয়ে ফেললাম। চকমকি চলে গেল, ওর নাকি মুশকিল মামার কাছে পড়ার সময় হয়ে গেছে। ওর দাদাকে বলে গেল আমাকে শিক্ষালয়ের ভেতরটা ঘুরিয়ে দেখিয়ে মুশকিল মামার কুটিরে নিয়ে যেতে। যাবার আগে ওর জোব্বার ভেতরের পকেট থেকে আমার হাতঘড়িটা বার করে দিয়ে গেল। ঘড়িটা দেখলাম দিব্যি ভুলভাল কায়দায় চলছে, সেকেন্ডের কাঁটা বেনিয়মে বাঁইবাঁই করে উল্টোবাগে ঘুরছে। একটু ঠাহর করে দেখলে মিনিটের কাঁটার চলনও যে সেদিকেই সেটাও বেশ বোঝা যাচ্ছে।
গাছপালার ভেতর দিয়ে হেঁটে বেড়াতে বেশ লাগছিল। একসময়ে চটপটি, আমরা যেভাবে কব্জিতে বাঁধা ঘড়ি দেখে সময় দেখি, অনেকটা সেরকম ভাবে ঘাড় বেঁকিয়ে আকাশ পানে একবার তাকিয়ে বলল – চলো এবার  যাওয়া যাক। 
অনেকগুলো বড় গাছে ঘেরা, ঝকঝকে উঠোনের মধ্যে পাশাপাশি জোড়া কয়েকটা ঘর নিয়ে মুশকিল মামার বাড়ি। ঘরের বাইরে রোয়াকের মত উঁচু জায়গায় চাটাইএর আসন পাতা। সেখানে বসেই তিনি আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। খুব সুন্দর ফুটফুটে চেহারা। আর একহাত লম্বা খয়েরি রঙের দাড়ি। কাছে আসতেই প্রসন্ন হাসিমুখে বললেন – এসো এসো বাবা, বোসো আরাম করে। চকমকির কাছে তোমার গল্প কিছুটা শুনেছি বটে, তবে তোমার মুখ থেকেই পুরোটা না শুনলে ব্যাপারটা ঠিক বোঝা যাবে না। আর তোমার সেই যন্ত্রটাও দেখতে হবে একবার। 
চকমকিও এসে গেল বাড়ির ভেতরের থেকে। একটা বড় থালায় অনেকগুলো ভাজাভুজি জাতীয় খাবার দাবার নিয়ে। আমরা চাটাইএর ওপর গোল হয়ে বসে সবাই একসঙ্গে খেয়ে নিলাম সেগুলো। মুশকিল মামা অবশ্য অল্পই খেলেন। তারপর সকলের খাওয়া শেষ হলে তিনি বললেন – এবার তোমার ব্যাপারটা ঠিকঠাক খুলে বল দিকি। হিসেব কষে দেখি কি ধরণের বুদ্ধি তোমার লাগবে।
আমি বাড়ি থেকে বেরোনোর থেকে শুরু করে বাজারের মারমুখি লোকেদের তাড়া খেয়ে পাঁচিল টপকে জঙ্গলে লাফিয়ে পড়ে কুয়ো জাতীয় কিছুর মধ্যে তলিয়ে যাওয়া আর তারপর জ্ঞান হয়ে এই অদ্ভুত দেশে নিজেকে আবিষ্কার করা পর্যন্ত সবকিছু বিস্তারিত বললাম। বিচারসভায় ঘড়ি নিয়ে সব আলোচোনা, সময় মাপার কথায় প্রথমে লোকজনের হাসাহাসি আর তারপরেই স্বয়ং রাজামশাইএর সে ব্যাপারে উৎসাহ দেখে বাঞ্ছারাম আর ফোড়নদাসের আমাকে ধরার চেষ্টার কথাও জানালাম। মুশকিল মামা তার খয়েরি দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে মন দিয়ে সমস্ত শুনলেন। 
-এরকম কেউ কেউ মাঝেমধ্যে অন্য কোনো সময়ের, বা অন্য জগতের কিংবা অন্য মাত্রার থেকে কেমন করে যেন আমাদের জগতে এসে পড়ে। বললেন তিনি। - আমি নিজেও অমনি দু-চার জনকে দেখেছি। একজন তো বেজায় তিরিক্ষি। হ্যাট ম্যাট গ্যাট কিসব যেন বলে বেজায় রাগারাগি করত। পরে যখন দেখল আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না তখন দিব্যি আমাদের ভাষাতেই অপদার্থ, মুখ্যু, অশিক্ষিত এইসব বলে গালমন্দ করত। তাতেও যখন লোকেরা খুব হাসাহাসি করত তখন খুব মনমরা হয়ে চুপচাপ বসে থাকত। আর একজন গ্রামের দিকে গিয়ে যারা চাষ করে, যারা কাপড় বোনে কিংবা নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরে তাদের কাছে কিসব লম্বা লম্বা বক্তৃতা দিত। তাকে অবশ্য সেপাই পাঠিয়ে ধরে এনে কিছুদিন পাগলা গারদে কিছুদিন বন্দীশালায় রেখে দিতে হয়েছিল।
-হ্যাঁ, শুনেছি এদের নাকি মাত্রাছাড়া লোক বলে। আমি বিদ্যে জাহির করলাম।
মুশকিল মামা কিছুটা বিরক্ত মুখেই বললেন – এসব ভুল কথা। মাত্রা ছাড়া মানুষ কেন, কোনো কিছুই হয় না। আসল শব্দটা হল ভিন্ন মাত্রার লোক। আমাদের জগতের থেকে তাদেরটা আলাদা। তোমার ব্যাপারটাও সেই রকম।
-তারা এখন কোথায়? আমি জানতে চাইলাম।
-সেটা ঠিক জানিনা। মামা বললেন। - হয়ত আমাদের মধ্যেই মিশে গেছে, নয়ত ফিরে গেছে নিজেদের জায়গায়।
আমি খুব উৎসাহ নিয়ে জিগ্যেস করলাম – এখান থেকে ফেরৎ যাওয়া যায়? কিভাবে?
মুশকিল মামা কথা পালটে জিগ্যেস করলেন – সে কথা পরে হবে। তার আগে তোমার সেই যন্তরটা দেখাও।
ঘড়িটা পকেট থেকে বার করে মামার হাতে দিতে তিনি তো ভারি অবাক। - এত ছোট্টো? এইটুকুনি মোটে? এর জন্যেই এত কান্ড! বিস্ময় প্রকাশ করলেন তিনি। - তবে হ্যাঁ, দেখতে ভারি সুন্দর।
-সুন্দর আবার কোথায়? চটপটি মুখ ব্যাঁকালো। - কেমন যেন ম্যাটম্যাটে। হ্যঁ, ভেতরের সাদাটা যদি হলুদ রঙের হত আর কাঁটাগুলো খয়েরি বা সবুজ হত তাহলে খারাপ দেখতে লাগত না।
কাঁটাগুলো তখনও দিব্যি উল্টো দিকে ঘুরে যাচ্ছে। চটপটি যাই বলুক না কেন, তাই দেখেই মুশকিল মামা অভিভূত। - বাঃ, কি সুন্দর নিজেরা ছন্দ মিলিয়ে ঘুরছে দ্যাখো। ভাগ্যিস গোল কৌটোটায় ভরা আছে, না হলে হাঁটতে হাঁটতে কোনটা কোথায় চলে যেত খুঁজেও পাওয়া যেত না। তবে বাপু ঐ ঘড়ি নামটা একে মোটেও মানাচ্ছে না। সময় মাপার ব্যাপার তো। এর নাম বরং রাখা যাক কালখন্ড নির্ণায়ক যন্ত্র। তবে এবার একটু বুঝিয়ে বল তো এটা কিভাবে কালখন্ড নির্ণয়ের কাজটা করে?
আমি উল্টো ছোটা ঘড়িতেই আমার সাধ্যমত সময় মাপার বিষয়টা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। চটপটি আর চকমকি দুজনে আমার প্রায় ঘাড়ের ওপর এসে রুদ্ধশ্বাসে শুনতে লাগল। কেমন করে একটা দিনকে চব্বিশটা ঘন্টার ভাগে বেঁটে প্রতিটি ঘন্টাকে আবার ষাট ভাগে ভাগ করে মিনিট নাম দিয়ে তাদের পুনশ্চ ষাট টুকরো করে এক একটা কাঁটার চলনে সেই হিসেবটা পুরে দিয়ে পুরো ব্যাপারটাকে কৌটোয় ভরে ফেলা হয়, যাতে তারা, মুশকিল মামার আশঙ্কা মত, এদিক ওদিক না চলে যেতে পারে সেই জটিল কথামালা শুনতে শুনতে চটপটির চুল খাড়া হয়ে গেল, ঘন ঘন নিশ্বাস পড়তে লাগল। চকমকিকেও খুব চিন্তিত মনে হোল, যেন সে বুঝতে পারছে এ সমস্তই আমি বানিয়ে বানিয়ে আবোলতাবোল বকছি কিন্তু কি ধরণের বুদ্ধি খাটালে সেটা প্রমাণ করা যাবে সেইটা ওর মাথায় আসছে না। আর মুশকিল মামা দাড়িতে হাত বোলানো থামিয়ে এত শক্ত হাতে দাড়িগুলো খামচে ধরে রইলেন আমার ভয় হল গোছা খানেক উপড়ে না আসে।
-ভারি জটিল অঙ্ক। অবশেষে মামা জানালেন।
-কিন্তু এত হিসেবের দরকারটা কি সেটাই তো বোঝা যাচ্ছে না। চটপটির মন্তব্য।
-না হে, এটা হয়ত কাজে লাগানো যেতে পারে। মামা চিন্তিত মুখে বললেন। - এই যে আমি তোমাদের পড়াই, কতক্ষণ কি পড়ালাম, কাকে বেশি পড়িয়ে ফেললাম  কাকে কম, কাঁটাদের ঘোরার পরিমান দেখে সেটা বোঝা যেতেই পারে। তবে এই সামান্য কারণে এত হিসেব কষা প্রায় পন্ডশ্রমই বলা চলে। কিন্তু রাজামশাইএর যখন খেয়াল চেপেছে এই নিয়ে আবার নতুন কোনো নিয়ম না বানিয়ে ফেলেন।
চকমকি বলল – কিন্তু এখন নিতাইদাদা কী করবে?
ওর কথায় মুশকিল মামা সময়ের হিসেব থেকে বেরিয়ে এসে বললেন – প্রথমে এর একটা সহজ সমাধান বলি। রাজামশাই তো বাঞ্ছারাম পন্ডিতকে সাত দিনের সময় দিয়েছেন ঐ রকম সময় মাপার যন্ত্র বানাতে। তার ভেতর আবার দুটো দিন কেটেই গেছে। আর পাঁচটা দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেই  কেল্লা ফতে। রাজামশাই নির্ঘাৎ বাঞ্ছারামকে সভা পন্ডিতের পদ থেকে বরখাস্ত করবেন, বা অন্তত মাইনে কমিয়ে দেবেন। আমি তখন সুযোগ মত তোমাকে রাজামশাইএর কাছে নিয়ে যাব। তুমি ওনাকে একটা যন্ত্র বানিয়ে দিলে উনি নিশ্চয়ই খুশি হয়ে তোমাকে রাজসভায় একটা চাকরি দিয়ে দেবেন। তখন আর চিন্তা নেই। খোদ রাজার নেকনজরে পড়েছো দেখলে বাঞ্ছারামই বল আর ফোড়নদাস, কেউ তোমাকে আর ঘাঁটাতে সাহস পাবেনা।
-তা না হয় হল। আমি আমতা আমতা করে বললাম। - কিন্তু আসল ঝামেলা তো থেকেই যাচ্ছে, কারণ সত্যি বলতে কি ঐ যন্ত্র তো আমি মোটেও বানাতে জানি না।
শুনে মুশকিল মামা যেন আকাশ থেকে পড়লেন। - বানাতে জানো না? তাহলে ওটা তোমার কাছে এল কোত্থেকে? চুরি টুরি করনি তো?
আমি প্রাণপণে তাকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম যে আমাদের দেশে ও রকম ভুরি ভুরি যন্ত্র কারখানায় তৈরি হয়, দোকানে গিয়ে কেনা যায়। এমনকি ছোটোবাচ্চাদের জন্যেও রংচঙে কালখন্ড নির্ণায়ক যন্ত্র, যেমন চটপটি চাইছিল, পথেঘাটে পাওয়া যায়। নিজে নিজে বানাবার দরকার হয় না। 
-তাহলে তো সমস্যাটা বেশ জটিল হয়ে গেল। দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে খুব চিন্তিত মুখে মুশকিল মামা জানালেন। - এক হয় তোমার যন্ত্রটাই নয় তুমি রাজামশাইকে দিয়ে দিলে। কিন্তু তাহলে তোমার কী হবে?
-কী আবার হবে? আমি একটুও না ভেবে বললাম। - আমি দেশে ফিরে ওরকম অন্য একটা কিনে নেব। অবশ্য না হলেও চলবে। আমার তো অত সময় হিসেব করার দরকার পড়ে না। আমি ওটা রাজামশাইকে দিয়েই দিতে পারি।
-তুমি কি তাহলে তোমাদের দেশে ফিরে যেতে চাও? মুশকিল মামা শুধোলেন।
চকমকি ভারি অবাক হয়ে বলল – তুমি দেশে ফিরে যাবে? কিন্তু কি করে? তুমি তো জানোই না কোথায় তোমার দেশ, সেখান থেকে কিভাবে এসেছো। 
-আর কেনই বা যাবে? আমাদের কি তোমার ভাল লাগছে না? চটপটি করুণ মুখে বলল।
আমার হঠাৎ বাড়ির কথা মনে পড়ে চোখ ছলছল করে উঠল। এখানে আসার পর একটার পর একটা অদ্ভুত ঘটনা আর বিপদের মধ্যে এ পর্যন্ত সে কথা ভাবার ফুরসৎ হয়নি। এখন দাদার কথা, বৌদির কথা, ওদের ছোট্টো বাচ্চাটার কথা, আপনাদের কথা , পাড়ার সব লোকজনদের কথা - সব হুড়মুড় করে মনের মধ্যে ভিড় করে এল। আকুল হয়ে বললাম – হ্যাঁ, ফিরে যেতে চাই। তোমরা সব্বাই খুব ভাল, এই দেশটাও ভাল – কিন্তু আমি আমার জায়গায় যেতে চাই। সেখানে যে আমার নিজের লোকেরা সবাই রয়েছে।
চকমকি একগাল দুষ্টুমি ভরা হাসি হেসে বলল – তার মানে আমরা তোমার কেউ নই? হেসেই বলল বটে, কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম ওর চোখদুটো ভিজে উঠছে। আমি জোর করে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম।
মুশকিল মামা চুপ করে অনেকক্ষন কি যেন ভাবলেন। তারপর বললেন – তাহলে তো সহজ রাস্তায় হবে না। জটিল বুদ্ধিই লাগাতে হবে। অন্য পথ নেই। তোমাকে ঐ যন্ত্রটা দিয়ে দিতে হবে একজনকে, তাকে সময় মাপার হিসেবটা শিখিয়ে দিতে হবে। তার বদলে সে তোমাকে তোমার নিজের জায়গায় ফেরৎ পাঠিয়ে দেবে। একমাত্র সেই অন্য জগতের থেকে এসে পড়া লোকেদের তাদের নিজেদের দেশে পাঠানোর কায়দাটা জানে। 
-কিন্তু ঘড়ি তো রাজামশাইকে দিতে হবে। চকমকি বলল। - না হলে বাঞ্ছারাম পন্ডিত আর ফোড়নদাসের থেকে নিতাইদাদাকে কে রক্ষে করবে?
-তারও ব্যবস্থা হবে। মামা বললেন।
-কিন্তু সেই একজন লোক কে? চটপটি জানতে চাইল।
-সেটা এখনই বলছি না। তবে তাকে তোমরা সবাই জানো। আগে আমি নিজে তার সঙ্গে আলোচোনা করে দেখি। তারপর তোমাদের জানাবো। আমাকে বললেন - এখন ক’দিন তুমি চটপটিদের বাড়িতেই গা ঢাকা দিয়ে থাকো। এখন আমি যাই। বিদ্যাদিগগজ শ্রেণীতে পড়াতে যেতে হবে। চকমকি আমার সঙ্গে থাক, ওর কিছু কাজ আছে। ও পরে যাবে।
মুশকিল মামা চলে গেলেন। চকমকিও কোথায় যেন চলে গেল। আমি আর চটপটি অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইলাম। বুঝতেই পারছিলাম আমি এখান থেকে চলে যেতে চাওয়ায় ওদের খুব খারাপ লেগেছে। কিন্তু আমিই বা কী করি?
চটপটি একসময়ে বলল – চলো, শিক্ষালয়ের বাগানে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াই। তারপর হাঁটতে হাঁটতে আমার হাতটা ধরে বলল – আমি বুঝতে পারছি তোমার বাড়ির জন্যে বড্ড মন খারাপ লাগছে। সবারই হয়। তুমি আমাদের কথা ভেবো না। মুশকিল মামা ব্যবস্থা করে দিলেই নিজের জায়গায় ফিরে যেও।
আর একটু বেলা বাড়তেই শিক্ষালয় থেকে বেরিয়ে আমরা দুজন বাড়ির দিকে রওনা হলাম। তখনও জানিনা পথে কি বিপদ আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
 

Post a Comment

1 Comments

  1. খুব ভালো। ছোটবেলার মন ভালো করা গল্পের, উপন্যাস মনে করিয়ে দেয়।

    ReplyDelete