জ্বলদর্চি

মাটিমাখা মহাপ্রাণ-১৩/ শুভঙ্কর দাস

মাটিমাখা মহাপ্রাণ

তেরো

শুভঙ্কর দাস 

"বিশ্বজোড়া ফাঁদ পেতেছ  কেমনে দিই ফাঁকি
আধেক ধরা পড়েছি গো  আধেক আছে বাকি
কেন জানি আপনা ভুলে  বারেক হৃদয় যায় যে খুলি
বারেক তারে ঢাকি"

গৃহের উঠোনে বসে জাল বুনছিলেন রমানাথ।তিনি চাষবাস করা শান্ত সৌম্য এবং নির্বিবাদী মানুষ। কিন্তু মাছ ধরার নেশা মারাত্মক। নিজের তিন-তিনটে পুকুর আছে। নিজেই জাল বুনে সেই জাল নিয়ে পুকুরে ফেলে মাছ ধরার মতো কাজ পেলে তিনি সবকিছু ভুলে যান।
অথচ এই কাজটি সুফল শুধু মাত্র পারিবারিক সীমার মধ্যে ধরে রাখেননি!

তিনি যেদিন জাল হাতে মাছ ধরে যাবেন,সেদিন গাঁয়ের গরীব প্রতিবেশীর কালী-তিসি-তুলসী-রামা-কালুর মতো ছোটো-ছোটো ছেলেমেয়েদের খুশির অন্ত নেই। কারণ রমাজেঠু লোকটি ভারি অদ্ভুত। যা মাছ ধরবে নিজের জন্য কিছুটা রেখে আর সবই গাঁয়ের বাচ্চাগুলোর মধ্যে বিলিয়ে দেন।খাওয়ার সময় পাতে রোজ মোটা চালের ভাত আর কচু শাক।এইভাবে মাঝেমধ্যে যদি পাতে মাছ পড়ে মাছ পড়ে,বাচ্চাগুলোর আনন্দ দেখার মতো হয়। আবার গাঁয়ের একেবারে শেষপ্রান্তে থাকে মানু। তার আবার একটি পায়ের পাতা বাঁকা,সে খুব কষ্ট করে হেঁটে হেঁটে আসে।হাতে থাকে না কোনো বালতি বা ব্যাগ।যখন মাছ ওঠে,সে হাততালি দেয় এবং রমাজেঠুর মুখের দিকে বিস্ময়ে দেখে। তার ভাগে যদি কোনো মাছ ওঠে,সে আঁচলে বেঁধে নিয়ে চলে যায়।আজ কিন্তু তার মাছ নেওয়ার কোনো আগ্রহ নেই। সে মাছ ধরা দেখতে এবং মাছ কুড়োতেই আনন্দ। 

কী রে মানু, মাছ নিবি না? স্নেহময় কণ্ঠে জিজ্ঞেস করেন রমানাথ। 

দুদিকে মাথা নাড়ে মানু।

কেনরে?

বাবা মারে,বলেছে,লোকের ঘর থেকে চেয়ে কিছু আনবি না, নিয়ে গেলে ড্যাসনাবাড়ি দেবে

ওহ্ তাই, তোর বাবাটা এমন কী করে কেন?

আগে করত না,নতুন মা আসার পর থেকে এমনই হয়ে গেছে,মুই কী করব?

আচ্ছা।তুই বেশি রোদে রোদে  ছুটে বেড়াস না,একবার মাথা ঘুরে পুকুরে পড়ে গেছিলি মনে আছে!

মানু মৃদু হাসল।

একথা রমানাথ বললেও তিনি জানেন, মেয়েটি সারাক্ষণ তাঁর পেছন খোঁড়া-পায়ে ঘুরে ঘুরে বেড়াবে।কী কষ্ট মেয়েটির। জন্ম থেকেই মাতৃহারা।বাবা নতুন বিয়ে করেছে।এখন সেই সৎমার মুখের নাড়া এবং মাঝেমধ্যে ঝাঁটার বাড়ি খেয়ে থাকতে হয়।একদিন তো একটু বেশি ভাত খেয়ে নিয়েছিল বলে সৎমাটি রেগেমেগে মানুকে বের করে দিয়েছিল বাড়ি থেকে।সারারাত চণ্ডীমণ্ডপতলায় বুড়ো বটগাছের মোটা শিকড়ের ফাঁকে শুয়ে ছিল, কখন কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছিল,কেউ লক্ষ্য করেনি। সারারাত ঐভাবে পড়েছিল।ভাগ্যিস,চারুর চোখে পড়েছিল। ভোররাতে ফুল কুড়োতে গিয়ে সে দেখেছিল। তাকে তুলে বাড়ি এনে মুখেচোখে জল দিতে গিয়ে দেখে, গায়ে হিম লেগে জ্বর।
চারু ও মানু সমবয়সী,দু'জনের এগারো বছর বয়স। কিন্তু মুহূর্তে মধ্যে পরিস্থিতিতে চারু যথারীতি মায়ের স্থান গ্রহণ করল। মানুর সেবা-যত্নে লেগে গেল।রমানাথ বাবা হিসেবে এই রকম কন্যার সেবাময়ী রূপ দেখে নিজেও বিস্মিত।মানু তাদের নিজেদের কেউ নয়, চারু যেন সেকথা বুঝতেই দেয় না।
অথচ দুদিন কেটে গেলেও মানুর পরিবারের তরফ থেকে কোনো খোঁজ নিতে কেউ আসেনি। যেদিন জ্বর ছাড়ল,তার হাত ধরে যেদিন রমানাথ বাড়ি পৌঁছে দিল,সেদিন তার অপোগণ্ড বাপ হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বলল,তুই বেঁচে আছিস! কত খুঁজে মরছি,এপাড়ায় সে পাড়ায়, হলদি নদীর মাঝিকে জিজ্ঞেস করি তো বেনেপাড়ার বটুকে, কেউ দেখেনি! 
এসব বলছে,আর বাপটি ঠারে ঠারে নিজের বউয়ের দিকে তাকাচ্ছে। 

বটু মানে ভূঞ্যারারচকের পাঁড় মাতাল।সে নাকি মানুর বাড়িতে বলেছে,মানু নাকি হাঁটতে হাঁটতে নদীর দিকে চলে গেছে!তার ঠাল খেয়ে নদীর জলে!
সৎমাটি যেন এইরকম মানুর ফিরে আসাটা সহজভাবে মেনে নিতে পারল না!আসলে এই সব একেবারে সাজানো নাটক।সবকিছু জেনেও সৎমাটির জন্য মানুর বাপ কিছুই ব্যবস্থা নেয়নি।
সৎমাটি দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল,কী ধাতুতে যে গড়া,মরেও না, ছাড়েও না!খুঁতো থাকলেই সংসারে অমঙ্গলই অমঙ্গল।
রমানাথের কানে কথাটা গেল।
তিনি সজল চোখে বলে উঠলেন,এরকম কথা কী করে বললে!  তোমার তো একটা ছেলে আছে,তার যদি এমন খুঁত থাকত!

রমানাথের কথাটা শেষ হল,একেবারে ঝাঁঝিয়ে উঠে সৎমাটি বলে উঠল,কী যে বলেন,কীসে আর কীসের তুলনা! কোথায় আমার সোনার গৌর,আর এতো গুয়ের মালসা, মোদের ঘাড়ের বোঝা,এ মেয়েকে কে বিয়ে করবে? এতো না হোমে না যজ্ঞে!একে তো এই ভুতনির মতো দেখতে,তার ওপর ল্যাংড়া! এমন কথা বললে কী করে,কি গো? তুমি চুপ করে আছো কেন? গাঁয়ের শীতলাতলায় সবচেয়ে বেশি টাকা দিয়েছে এবার,তা কথা শুনতে হবে কেন? বলে দাও! আহ্ বাছা আমার,বলেই সৎমাটি নিজের কাছে দাঁড়ানো পুত্রের মুখ চুমু খেয়ে, মা শীতলা রক্ষা করো মা,একে ফুলে-ফলে রাখো।

সত্যি মায়ের কাছে অপর এক মায়ের কাতর সাড়া, বেশ, সত্যি! আমার মায়েদের কোনো মুক্তি নেই! এক মাকে পায়ে পিষে অপর মাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা! 

দেখুন রমানাথবাবু, আপনি আমাদের সংসারে খবরদারি করবেন না,যেরকম চলছে চলুক,ওকে একটু ওর নতুন মা মেরেছে,তাই বলে ঘর ছেড়ে চলে যেতে হবে। বলে উঠল,দায়িত্ববান বাপটি।

মানু কী সব বলতে যাচ্ছিল।
তার আগেই সৎমাটি হাত ধরে টেনে ঘরের ভিতরে চলে গেল।যেতে যেতে গজ গজ করতে লাগল,নিজের মতো একটাও ব্যাটা নেই, তিন-তিনটে মেয়ের জন্ম দিয়েছে,তা ব্যাটার মর্ম বুঝবে কী করে! বাপপা, তিনি আবার মোদের বিচার করতে এসেছে, ঘরে গিয়ে আগে নিজের মেয়েগুলোকে উদ্ধার করুক,পরে এখানে বড় বড়  মুখ দেখাবে!

রমানাথ একটু দাঁড়িয়ে রইলেন।তার তিনটি কন্যা সন্তান।তাতে তার কোনো দুঃখ নেই, অথচ তার জন্য তাঁকে কত খোঁটা শুনতে হয়! এসবে তিনি অভ্যস্ত। ফিরে এলেন। কিন্তু মাঠের মাঝখানে রোদের মধ্যে দেখতে পেলেন,চারুকে।
সে যে এসেছে, তিনি জানতেন না।
কীরে মা? রোদে এমন পুড়ছিস কেন?চল, চল, তুই আবার না জ্বর পড়বি,মানু ভালো আছে,চিন্তা করিস না।

বাবা,মানুর খুব কষ্ট না?ছলছল চোখে শুধু এই কথাটি বলল চারু। 

কচিকণ্ঠে এই প্রশ্ন রমানাথকে যেন ব্যথার নদীতে নিমজ্জিত করল।তিনি জানেন,তার এই শান্তশিষ্ট ও সেবাময়ী মেয়েটি জানেই না,অজান্তেই সংসারে মেয়ে হয়ে  জন্মানোর কী অপরিসীম দুঃখ ও বেদনার কথা বলে উঠেছে।এরপর বেশ কিছুদিন মানু আর পুকুরধারে আসেনি। শোনা গেল,তাকে নাকি তার বাপ মামার বাড়িতে রেখে এসেছে। সেখানের নানা ধরণের অত্যাচার ও কুকথায় মানু নিজেই ফিরে এসেছে। এসেই প্রথমে বাড়ি যায়নি,একেবারে চারুর কাছে এসে কেঁদেছে।সে চারুর কাছেই থাকবে।রমানাথ বেশ দোটানায় পড়ে যান।
পরে মানুর বাপ জানতে পেরে মেয়েকে মারধর করে নিতে এসেছিল।কিন্তু রমানাথ এমন একটা শর্ত দেন,তাতেই মানুর বাপ স্থির হল।মানু নিজের ঘরেই থাকবে।তার জন্য মাসোহারা খরচ রমানাথ বহন করবে।
সেই থেকে চারু গাঁয়েই থেকে গেল।
প্রায় দুমাস আগের ঘটনা এটি।
তারপর আবার মানু এসেছে চারুর কাছে।পুকুর ধারে ছোট্ট প্রজাপতি মতো আনন্দে উচ্ছল হয়েছে। 

রমানাথ পুকুর থেকে ফিরে এলেন। জাল রোদে শুকোতে দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখলেন। চারু সেই আগের দিনের মতই মানুকে কাছে বসিয়ে একসঙ্গে অল্প ভাত ও ভাজা মাছ খাচ্ছে। আসলে মাছ নিয়ে গেলে বাড়িতে মারধর করে,তাই এখানেই খাইয়ে দিচ্ছে। 
রমানাথ নিজের ছোট্ট মেয়ের বুদ্ধি দেখে খুব খুশি হলেন।

এর দেড়-দুমাস পরের ঘটনা।
চারু বিদ্যালয় থেকে ফিরে বাড়িতে এসে দেখল,তার বাড়িতে বেশকিছু লোকজন উপস্থিত। উঠোনে মাদুর পেতে জলখাবারের ব্যবস্থা হয়েছে। এই ধরণেরের ব্যবস্থা কেন করা হয়, চারু অল্প বয়স হলেও জানে।কারণ তার দিদির বেলায় তাই ঘটেছিল।
চারুকে তার মা সাজিয়েগুছিয়ে বহিরাগত লোকজনের সামনে পান দিয়ে পাঠালেন। 
সেই লোকজনের মধ্যে একটু নিরীক্ষণ করলে দেখা যাবে শান্ত ও স্থির হয়ে বসে আছেন ঠাকুরদাস। তাঁকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেই,  তিনি চারুকে কাছে ডেকে আদুরে কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন,মায়ের নামটা একটু শুনি

লজ্জায় কিছু প্রথমে কিছুই বলল না চারু।তারপর রমানাথের দিকে তাকিয়ে পরিষ্কার বলে উঠল,চারুশীলা সামন্ত। 

বেশ, মা জানো তো আমরা কেন এসেছি? 

চারু দুদিকে মাথা নাড়ল।

হেসে ফেলে ঠাকুরদাস জিজ্ঞেস করলেন,এতো বড় শুভ অনুষ্ঠান আসছে, তা চারু মাকে যদি বলি, সেই অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে কী চাই? কী নিতে ইচ্ছে করছে? 

চারুর মা ঘোমটার ভেতর থেকে বলে উঠলেন,না, না এসব কী! 
রমানাথও এগিয়ে এসে বললেন,না না, ও ছোট্ট মেয়ে,কী বলতে কী বলবে,আপনি... 

কথাটি শেষ হতে দিলেন না ঠাকুরদাস।তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন চারুকে, মা তুমি বলো? কী চাই তোমার? তাহলে সেই মতো জিনিস বানিয়ে রাখব। 

চারু এবার মুখ তুলে একবার বাবার মুখের দিকে তাকাল।তারপর বলে উঠল,আমার একটা জিনিস চাই

কী বলো? 

মানু কেন পাঠশালায় যায় না! ও পাঠশালায় গেলে আমি খুব খুশি হবো,তুমি পারবে? মানুকে পাঠাতে!

এই রকম অপ্রাসঙ্গিক একটি প্রস্তাব এখানে এই মুহূর্তে আসতে পারে রমানাথ নিজেই ভাবতে পারেননি!
তিনি তাড়াতাড়ি কথাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
কিন্তু ঠাকুরদাস অন্যরকম মানুষ।তিনি পুরো ব্যাপারটা জানতে চাইলেন। প্রথমে রমানাথ একটু কিন্তু কিন্তু করছিলেন।পরে সবকিছু বলতে বাধ্য হলেন।

ঠাকুরদাসের প্রতিবেশী নিকুঞ্জ এসেছিল পাত্রীনির্বাচনে। সে বলে উঠল,এ আবার কী, ঠাকুরদা,এ মেয়ে বলে কী? দুদিন বাদে যার বিয়ে, সে কি, বলে পড়াশুনার সই চাই,আজব কাণ্ড!

তুমি থামো তো, বলে উঠলেন ঠাকুরদাস।

কেন থামব,আমরা পাত্রপক্ষ, আমাদের কুমার কলকাতায় জলপানি পেয়ে পড়তে গেছে,এমন পাত্র এঁরা কোনোদিন পাবে? মেয়েকে রান্নাবান্না,গরুর ঘাস কাটা,উল বোনা,মাছের ঝোলে কত সময় ফোড়ন পড়ে এসবই জানা দরকার, পড়ে কী তালুক হবে? তারপর আবার কে কোন খোঁড়াকানা বাপে তাড়ানো মায়ে খেদানো মেয়ের জন্য দরদ দেখানো,এসব কী পাকা দেখার আসরে চলে?

এই দরদের জন্য এই মেয়ে আমার পছন্দ, দৃঢ়কণ্ঠে বললেন ঠাকুরদাস

সেকি!  আমরা তো একে বাতিল করব ভেবেছি! তোমার এ কী মতিভ্রম হল হে?

রমানাথ হাতজোড় করে বলে উঠলেন,আপনার আমার মেয়ের আচরণে বিরক্ত হন, তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। 

ঠাকুরদাস উঠে পড়ে রমানাথের হাতের ওপর হাত রেখে বললেন,কোনো ক্ষমা চাওয়ার দরকার নেই। মনে রাখবেন রমানাথবাবু,আপনার বাড়ির মেয়ের সম্বন্ধ যখন এলো,তখন আমার পুত্রকে শোনানো হল।সে কিছুতেই এখন বিয়ের জন্য রাজি নয়। সে এখন তেইশ। তার ইচ্ছে, পড়াশোনা শেষ করে বিয়েতে ভাববে। কিন্তু আমার পরিবারের লোকজন চিন্তায় পড়ল। আমাদের গাঁয়ের মধ্যে ছেলের বয়স কুড়ি হলেই বিয়ে হয়,এখন যদি বিয়ে না হয়,তাহলে সমস্যা। এবার কী হবে?
কুমারকে রাজি করানো হবে কী করে?
সেই সময় আপনার সম্বন্ধে অনেক কথার মধ্যে একটি কথা শুনেই পুত্র একেবারে পরিবর্তন হয়ে গেল।নিজেই বিয়ে করতে চাইল। এবং আমাকেও পাঠিয়েছে আপনার বাড়িতে, আবার আমিও আসতে সম্মত হয়েছি,তা হল,আপনি হোড়খালি গ্রামে স্কুল গড়ার জন্য পাঁচ বিঘে জমি দান করেছেন। এমন ভালো কাজ কটা লোক করে! কজন গাঁয়ে আছে বলুন তো,যারা নিজের শুধু নয়,  অন্যের কথা ভাবে? নিজের মেয়েদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন, এ কি কম কথা!

রমানাথ হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে রইলেন।

যেমন বাপ,তেমনই মেয়ে,এমন মেয়েকে কেউ হাতছাড়া করে! আপনি সব ব্যবস্থা করে ফেলুন।

তারপর একদিন তেইশ বছরের কুমারের সঙ্গে এগারো বছরের চারুশীলার শুভ পরিণয় হয়ে গেল।

সেই সময় ১৯১২ সাল।

বিবাহ শেষ করে কুমার কলকাতায় ফিরে এলেন এবং ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লি পরিবর্তিত গেল। নতুন রাজধানীর উদ্বোধন করলেন লর্ড হার্ডিঞ্জ। 
এবং অদ্ভুত ব্যপার এই,যে স্বদেশীদের মারাত্মক আখড়া বলে পরিচিত কলকাতা, সেই কলকাতায় এর কোনো হিংসাত্মক প্রতিবাদ হল না। নদীয়া জেলার বিপ্লবী বসন্ত বিশ্বাস মেয়ে সেজে লীলাবতী নাম নিয়ে দিল্লির চাঁদনিচকে চলে গেল।  লর্ড হার্ডিঞ্জ এবং লেডি হার্ডিঞ্জকে বোম মেরে কলকাতার স্বদেশীয়ানা সারা ভারতে ছড়িয়ে দিল....

এ যেন আর কোনো ছোট ছোট  অঞ্চলের কথা হয়ে থাকল না,সারা দেশের মধ্যে সত্যিকারের দেশ হয়ে জেগে ওঠার পালা শুরু হল...

ক্রমশ....

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments