জ্বলদর্চি

অর্ণব মিত্রের তিনটি কবিতা

অর্ণব মিত্রের তিনটি কবিতা
চিত্র- কবি।

পায়রা দুটো 


পায়রা দুটো ঘরে ঢোকার চেষ্টা করছে 
জানলার কার্নিশের কাছে এসে-মুখ বাড়িয়ে
তাকিয়ে আছে, 
আমার শাসনের অপেক্ষায়।
 
আমি বসে আছি ঘরের ছায়ায় 
আরাম-চেয়ারের সাচ্ছন্দে, 

দেখছি জানলা দিয়ে বাইরের আকাশ, 
ফাল্গুনের রোদে ঝলমলে লাল মাটির পথ, 
দেখা যায় একফালি পুকুর ও তার জলে
হাওয়ার নকশা, 
পাতায় ফাঁকে ফাঁকে ফুলের খেলা ও 
দূরে
লাল মাটির গলিতে জবাফুলের অবনত ভঙ্গী,

দেখছি আমের শাখায় বকুল এসেছে,
তার থেকে ভেসে আসে ককিলের গান ,
একটি কিশোর আদিবাসী ছেলে চলেছে তার মহিষের সাথে 
পুকুরের দিকে।

মনে মনে ভাবি , 
পায়রা দুটোকে ঘরে ঢুকতে দিলে ভাল হতো
ওরাও দেখত ছায়ায় বসে উজ্জ্বল আলোর জীবন। 


ফিরে আসা 

বৈদ্যুতিক আলোর সীমানা পার হয়ে
অন্ধকারের ভিতর ঢুকছিলাম
ঢুকছিলাম স্বপ্নের ভিতর, 

বাস থেকে নেমে হালকা জ্যস্নায় দেখি
লালমাটির পথ
চলে গেছে দূরে,
গাছের জ্যস্নাছায়ায় ছোট ছোট দোকান
দুপাশে,
ঝিঁঝিঁর শব্দ ভেসে আসে নিচু জমি থেকে,
বাঁদিকে দেখি- সেই মাটির সিনেমা হল,
স্নিগ্ধ সান্ধ্য হাওয়ার সাথে সাথে
যার থেকে ভেসে আসত কত গান,

আরও কিছুটা গেলে বাঁদিকে বেঁকে গেছে
মাটির পথ।
জ্যস্না বৌধিত এই জনপদে – আমার গ্রামে 
বাড়ির ভিতর ঘুমিয়ে আছে আজকের
কত অজানা মানুষ।
দুচোখ ভরে আমি দেখি
পুকুর,গোবররাঙা উঠোন,
ধানের গোলা,ছড়িয়ে আছে খড়,
গরুবাছুরেরা জেগে আছে মনে হয় গোয়ালঘরে,
পুকুরের ধারে সেই চালতা গাছ থেকে  
ভেসে আসে এক কোকিলের গান,

পুকুরের ধারে ধারে দেখি জোনাকির আলোর নকশা 
আর শুনি মাছের ঘাই মারার মৃদু শব্দ
কেমন মিশে যায় ঢেউয়ে,

এই সুন্দর ব্যপ্ত সপ্নের ভিতর দিয়ে
তিরিশ বছর আগের
আমার গ্রামে এসেছিলাম
এবার ফিরে যাব,

সবাই কেমন ঘুমিয়ে আছে
ঘরে ঘরে।
ঘুমাক তারা,
স্বপ্ন শেষ হলে আমিও ঘুমাব
শান্তির ভিতরে।

দেখা

 দেখেছি
মহিষের আঁকাবাঁকা পিঠে বিকেলের আলো
লাল মাটির পথে বাড়ি ফেরার চঞ্চলতা,

 

দেখেছি
ইউক্যালিপটাস গাছের সারি
-দু-দিকে জলে ভরা ধানক্ষেত,
আর তার মাঝে লাল মেঠো পথে
বাচ্চাদের সউল্লাস ছুটে যাওয়া,

 দেখেছি
ঝুকে পড়া গাছের পাশে নদীর বাঁকে সন্ধ্যের শেষ আলো,
শীতের রোদে পুকুরের ঢেউয়ে দু-একটি হাসের ভেসে যাওয়া,
বর্ষার আগে লাঙ্গলে চষা জমিতে চিরুনির দাগের মত নকশা,

দেখেছি
রেললাইনের পাশে ঢালু পথ,
লাইট পোস্টের নিচ দিয়ে অদৃশ্য হওয়া গলি আর তাতে
একটি বেড়ালের চলমান ভঙ্গি ও
সাইকেল-মূর্তির দূরে মিলিয়ে যাওয়া,

 

দেখেছি
চারিদিকে পাড়া – মাঝখানে নিঃশব্দ দুপুরের মাঠ,
লেবেল ক্রসিং-এ সন্ধ্যাবাজারের চলমান বেচাকেনা,
দোকানে দোকানে উৎসবের আলো,

ট্রেনের জানলা দিয়ে,

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

4 Comments

  1. অর্ণব মিত্রের আঁকা ও কবিতা দুটোই বেশ লাগল, বিশেষ করে আঁকা। তবে প্রচুর বানান ভুল বড় দৃষ্টিকটু- যেমন ককিল, জষ্টনা, সপ্নের ইত্যাদি। এতে মনোযোগ দেওয়া দরকার।

    ReplyDelete
  2. Pathok O prokashok, Sobaike dhonyobad janai.

    ReplyDelete