জ্বলদর্চি

রম্য কবিতা, পর্ব-১০/তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায়

রম্য কবিতা, পর্ব-১০
তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায়

(১)
মেঘাপসারক ঝাঁটা

উঁচু পাহাড়ের গায়ে থাকা এক ছোটো গ্রাম
প্রতিবাত ঢালে কিছু বেঁচে থাকা সংগ্রাম।
বাষ্পরা উড়ে এসে বাধা পায় প্রায়শই,
ওপরে উঠতে থাকে বেয়ে পাহাড়ের মই।
যত ওঠে বায়ু নিয়ে বিজয়ের ঝাণ্ডা,
রুদ্ধতাপ ক্রিয়ায় হয় আরও ঠাণ্ডা।
ঘনীভূত হয়ে শৈলৎক্ষেপ বৃষ্টি-
হয় যা মুষলধারে, লাগেনাতো মিষ্টি।
অনুবাত ঢালে গিয়ে বায়ু হয় শুষ্ক,
জনগণ সেথা তাইতো উসকো-খুসকো।
কতো জ্ঞান দেয় লোকে, বাতলায় বুদ্ধি,
বারবার ভেবে ভেবে হয় ভ্রমশুদ্ধি!
বসতি না সরিয়েও নিয়ে আসে মুক্তি -
স্যাঁতস্যাঁতে, একঘেয়ে জীবনে - প্রযুক্তি।
লোহার এক সুদীর্ঘ দণ্ডয় অতিকায়,
জল-বিশোষক মোড়া তক্তাকে আটকায়।
সৌরচালিত পাখা সাঁটা হয় তারপর,
এ বিশাল ঝাঁটা রয় বড় ক্রেনের ওপর।
বৃষ্টি না চাইলেই গতিপথ ঘুরিয়ে,
ধাওয়া করে, হাওয়া করে মেঘেদের উড়িয়ে;
সে গ্রাম এখন আছে প্রাণের আনন্দে,
মেঘাপসারক ঝাঁটা নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে।


(২)
ষাঁড় ও ম্যানিকিন

পোশাক প্রদর্শক পুতুলকে দেখতেই,
ষাঁড়ে কয়, “তোকে আমি খুঁজছি কাল থেকেই,
জানতিস্‌ -রাত্তিরে অন্য গোয়ালে শুই,
সে সুযোগে প্রেমিকাকে চুরি করেছিস তুই।
আজ তোকে পেয়ে প্রতিশোধ নিতে পারবো,
হয় ফেরা গাভী, নয় তেড়ে গুঁতো মারবো।
তোর মতো গরুচোর দেখেওছি খবরে,
ষাঁড়ের গোঁ বুঝে যাবি গুঁতো আর গোবরে।”

গরুচোর ভেবে করে -শোকাতুর ষাঁড়ে ভুল,
আহত হলো খামকা সমরূপী সে পুতুল।
বাইরে এসে দোকানী দেখে খুবই হল্লা,
গুঁতোয়, গোবরে গেছে পুতুলের জেল্লা।


(৩)
গোলকধাঁধা

বৃক্ষের চারপাশে আলোর বেগেয় ঘুরে -
অতীতে বর্তমান ঠেকে গেলে কি হবে?
ঘুমন্ত কারো দেখা স্বপ্নয় উড়ন্ত -
উপবাসী মানুষের ঘুম পেলে কি হবে?
জায়মান বাচ্চায় প্রসবদ্বারেতে ফের -
গর্ভেই প্রবেশোন্মুখ হলে কি হবে?
মুমূর্ষু মানুষের মহাপ্রস্থান পথে -
ভুলে যাওয়া কাজ মনে পড়ে গেলে কি হবে?
উদ্ভট ছেলে তথাগত, এরকমই কতো -
কথা ভেবে চলে বসে বসে শুধু নীরবে।

পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

3 Comments

  1. কবিতাগুলি ভালো। শেষেরটি রম্য হলেও

    ReplyDelete
  2. শেষেরটি রম্য হলেও দুর্গম ঠেকল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ। হ্যাঁ, শেষেরটি একটু বেশিই....

      Delete