জ্বলদর্চি

নূতন শিক্ষা নীতি ২০২০ (NEP- 2020) - কিছু প্রশ্ন-৩/অধ্যাপক সজল কুমার মাইতি

নূতন শিক্ষা নীতি ২০২০ (NEP- 2020) - কিছু প্রশ্ন 

অধ্যাপক সজল কুমার মাইতি

পর্ব - ৩

বিদ্যালয় বা স্কুল শিক্ষা 

আমাদের নূতন শিক্ষা নীতিতে (NEP 2020) বিদ্যালয় বা স্কুল শিক্ষা বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সেজন্য এই বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সকল সিদ্ধান্তগুলির কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ আলোচনা করা যাক।
প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল শিক্ষার প্রতিটি স্তরে সবার পড়ার সুযোগ নিশ্চিত করা 
জাতীয় শিক্ষা নীতির ( NEP 2020) লক্ষ্য হল ২০৩০ সালের মধ্যে স্কুল শিক্ষায় মোট নিবন্ধনকরন অনুপাত অর্থাৎ Gross enrollment Ratio ( GER) একশো শতাংশে নিয়ে যাওয়া। এই বিষয়ে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহন করার প্রস্তাব করা হয়েছে তা হল:
উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত পরিমানে পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা।
বিকল্প ও উদ্ভাবনমূলক শিক্ষাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা যার মাধ্যমে যে সকল ছাত্র পড়া ছেড়ে দিয়েছে তাদের মূল শিক্ষায় পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
যত্নসহকারে প্রতিটি ছাত্রকে খুঁজে তাদের শেখার স্তর বিবেচনা করে সবার শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষা পরামর্শদাতা, স্কুলের সঙ্গে যুক্ত উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সমাজকর্মী এবং স্কুল শিক্ষকদের অনবরত ছাত্র ও তার বাবা মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে যাতে স্কুল যাওয়ার যোগ্য প্রতিটি শিশু যেন স্কুলে আসছে ও পড়াশোনা করছে এটা নিশ্চিত করা।
স্কুল শিক্ষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পরিকাঠামোর ওপর এই স্তরের সাফল্য নির্ভর করছে। স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পর ও সারা দেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা গ্রামের সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। বাস্তবিকপক্ষে, দেখা যায় কয়েকটি গ্রামের জন্য একটি প্রাথমিক স্কুল। শহরাঞ্চলে কিছুটা অবস্থা ভাল হলেও গ্রামীণ এলাকার কথা যত কম বলা যায় তত ভাল। বহু প্রাথমিক স্কুলের বিল্ডিং নেই। থাকলেও রুমের সংখ্যা যথেষ্ট নয়। বাথরুম টয়লেট বহুক্ষেত্রে নেই। বহুর ছাদ দিয়ে জল পড়ে। কোন নিয়মিত রিপেয়ারিং এর ব্যবস্থা নেই। আর উপযুক্ত শিক্ষক ও তাদের সংখ্যা শহর ও গ্রামে মোটেও সন্তোষজনক নয়। বহু স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা এক। চারটি শ্রেণি এক শিক্ষকের পক্ষে সামাল দেওয়া অসম্ভব। পরিকাঠামো ও শিক্ষকের এই হাল যেখানে সেখানে উদ্ভাবনমূলক শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন অনেকটা আকাশকুসুম কল্পনা। তার ওপর প্রতিটি স্কুলযোগ্য ছাত্রছাত্রীকে স্কুলমুখী করা শুনতে ভাল লাগলেও দুরুহ ছাড়া কিছু নয়। এ হয়তো কঠিন শোনাবে, তবে অনেকটা দিবাস্বপ্নের মতো। ভারতের মতো দরিদ্র দেশ এই বিশাল আর্থিক চাহিদা মিটিয়ে এই স্বপ্নকে সফল করতে পারলে ভারতীয় হিসেবে গর্ব বোধ করবো।
প্রাক শিশু তত্ত্বাবধায়ন ও শিক্ষা (ECCE)
নূতন শিক্ষা নীতিতে প্রাক শিশু তত্ত্বাবধায়ন ও শিক্ষা অর্থাৎ Early Child Care and Education (ECCE) এ অধিক পরিমানে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ওপর মূলত এর দায়িত্ব দেওয়া হলেও আর ও বেশ কিছু ব্যবস্থার প্রস্তাব এই শিক্ষা নীতিতে আছে। স্কুল শিক্ষায় এতদিনের প্রচলিত কাঠামোর আভূল পরিবর্তনের প্রস্তাব ও রয়েছে। এই বিষয়ে আমরা পূর্ববর্তী পর্বে বিশদে আলোচনা করেছি। এখানে আর এর পুনরাবৃত্তি করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি না।
নতুন পাঠক্রম ও বিদ্যাচর্চার কাঠামো 
নূতন শিক্ষা নীতিতে স্কুল শিক্ষার পাঠক্রম ও বিদ্যাচর্চার কাঠামোগত ব্যাপক পরিবর্তনের প্রস্তাব রয়েছে। নতুন শিক্ষা পাঠক্রম ও বিদ্যাচর্চা কাঠামো হল ৫+৩+৩+৪। নিচে বয়স অনুযায়ী ক্লাসের চিত্র প্রদর্শিত হল।
বয়সের সীমা                           ক্লাস
৩ - - ৮                                      ৫
৮ - - ১১                                    ৩
১১ - - ১৪                                  ৩
১৪ - - ১৮                                 ৪
এই প্রস্তাবে যুক্তিগ্রাহ্যতার বৈজ্ঞানিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা কঠিন। কিন্তু এক পর্যায় থেকে অন্য পর্যায় রূপান্তরের ক্ষেত্রে সব ঠিকঠাক থাকলে ও সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে না আমাদের মতো এত বড় দেশে। দারিদ্র্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। 
ভিত্তিভূলক স্তর - এই স্তরের দুটি অংশ। একটি হল অঙ্গনওয়াড়ি বা প্রাক প্রাথমিক যা তিন বছরের জন্য। দ্বিতীয়টি হল প্রাথমিক স্কুল যেটি  দু বছরের জন্য। এই সময়ে প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পর্যন্ত পড়া যেতে পারে। এই পর্যায়ে মোট ৩ থেকে ৮ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের জন্য এই ব্যবস্থা। এই পর্যায়ে খেলা ও কাজের মাধ্যমে শেখার ব্যবস্থা থাকবে। এই ব্যবস্থা বহু স্তর বিশিষ্ট ও পরিবর্তনশীল  হবে। এই পর্যায়ে পাঠক্রম ও বিদ্যাচর্চার পদ্ধতি প্রাক শিশু তত্ত্বাবধান ও শিক্ষার ( ECCE) অধীন।  
প্রস্তুতিমূলক স্তর - এই স্তরে তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি অব্দি কভার করা হয়। আট থেকে এগার বছরের শিশুরা এর আওতায়। এই পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন বিষয়গুলি হল - বিজ্ঞান, গণিত, কলাবিদ্যা, সমাজ বিজ্ঞান ও মানবিক বিদ্যা ( Humanities)।
মধ্যবর্তী স্তর - এই স্তরে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি অব্দি কভার করা হয়। এগার থেকে চোদ্দ বছরের বালক বালিকা এই পর্যায়ের অন্তর্গত। এই পর্যায়ে বিষয় ভিত্তিক পাঠক্রম ও বিদ্যাচর্চার মাধ্যমে শিক্ষাদান হবে।
মাধ্যমিক স্তর - এই স্তরে কভার করা হয় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। এই স্তরে ছাত্রছাত্রীদের বয়স চোদ্দ থেকে আঠারো। এই স্তরে দুটি পর্যায় আছে। প্রথম পর্যায় আছে নবম ও দশম শ্রেণি, দ্বিতীয় পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি। এই পর্যায়ে আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য হল গভীরতা সঙ্গে মূল বিষয়ের চর্চা। অধিক বিশ্লেষণাত্মক চিন্তন, জীবনের বিভিন্ন দিকের বিষয়ে অধিক দর্শনদান। অধিক পরিবতনশীলতা, ছাত্রদের বিষয় পছন্দের অধিকার। দশম শ্রেণিতে বহির্গমন ও একাদশ শ্রেণিতে পুনঃপ্রবেশের সুযোগ। 
পাঠক্রমের লক্ষ্য হবে শিক্ষাগ্রহীতাদের বৌদ্ধিক উন্নতি। একবিংশ শতাব্দীর জন্য উপযুক্ত প্রধান দক্ষতায় দক্ষ করে তুলতে হবে। পাঠক্রমের বোঝা কমিয়ে অত্যাবশ্যক শিক্ষা, বিশ্লেষণাত্মক চিন্তন এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে শিক্ষা বৃদ্ধির ওপর অধিকহারে জোর দিতে হবে। ছাত্রদের আগ্রহ ও মেধা অনুযায়ী অধিক পরিবর্তনশীলতা ও বিষয় পছন্দের সুযোগ থাকা কাম্য। কলা ও বিজ্ঞানের মধ্যে, পাঠক্রম ও পাঠক্রম বহির্ভূত কার্যকলাপের মধ্যে, পেশাগত ও শিক্ষামূলক ধারার মধ্যে কোন দৃঢ় পার্থক্য থাকবে না। মূল উদ্দেশ্য হল বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, কলা, ভাষা, খেলাধূলা ও গনিত - সকল বিষয়ের ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। পেশাগত ও স্কুলে শিক্ষামূলক ধারার মধ্যে অধিক সংহতি কাম্য। কলা ও বিজ্ঞানের মধ্যে সহজগম্যতা সম্ভাবনা বলা যত সহজ কার্যকরী করা তত কঠিন। স্কুল ড্রপআউট বন্ধ সম্ভব হবে কিনা সেটা সময়ই বলবে। তবে যদি কিছুটা কমানো যায় সেটাও একটি অ্যাচিভমেন্ট বলা যেতে পারে।
ভিত্তিমূলক স্তর থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত যে সকল প্রস্তাব করা হয়েছে সে বিষয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। কিন্তু এই সব স্তরে উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সমাজকর্মীর যোগান সম্ভব নাও হতে পারে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর অভাব ও এই প্রস্তাব সফলে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। 
স্কুল শিক্ষার জন্য জাতীয় পাঠক্রম কাঠামো (NCFSE)- ২০২০- ২১ এর মধ্যে NCERT কে স্কুল শিক্ষার জন্য একটি নতুন ও বিস্তৃত জাতীয় পাঠক্রম তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 
NCERT একটি উচ্চ গুনমানের টেক্সট বইয়ের উপকরণ তৈরি করবে। রাজ্যগুলিতে SCERTs তাদের নিজস্ব পাঠক্রম ও টেক্সট বই তৈরি করবে নিজেদের বৈশিষ্ট্য ও গুনাগুন মাথায় রেখে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিটি আঞ্চলিক ভাষায় টেক্সট বই সহজলভ্য করতে হবে। পাঠক্রমে উপযুক্ত পরিবর্তণের মাধ্যমে ছাত্রদের বইয়ের ও স্কুল ব্যাগের ওজন হ্রাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
আঞ্চলিক ভাষায় টেক্সট বই লেখার উপযুক্ত ব্যক্তি স্থানভেদে পাওয়া সত্যিই দুষ্কর। সেইজন্য এর সহজলভ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতেই পারে। আর সিলেবাস কমিয়ে ছাত্রদের ব্যাগের ওজন কমানোর কথা বহু দিন থেকে চর্চার মধ্যে আছে, কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা অন্যরকম।
ভিত্তিমূলক সাক্ষরতা ও সংখ্যাতা অর্জন - অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভিত্তিমূলক সাক্ষরতা ও সংখ্যাতার একটি জাতীয় মিশন তৈরি করা হবে। এর মূল লক্ষ্য হবে  ২০২৫ সালের মধ্যে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে ভাষা ও গনিতের প্রাথমিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এই উদ্দেশ্যে নিম্নলিখিত কর্মকৌশল গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রতিটি প্রথম শ্রেণির ছাত্রর জন্য ক্রীড়ানির্ভর তিন মাসের স্কুল প্রস্তুতি মডিউলের মাধ্যমে স্কুল উপযোগী করে তোলা; অধিক নজর দিতে হবে পড়া, লেখা, বলা, গননা, পাটিগণিত ও গানিতিক চিন্তন; নিয়মিত মূল্যায়ন ও বোধযোগ্য পরীক্ষা; ভিত্তিমূলক সাক্ষরতা ও সংখ্যাতা বিষয়ে উচ্চ গুনমান সম্পন্ন জাতীয় সম্পদ ভান্ডার; শূন্য শিক্ষকপদ পূরন; ছাত্রদের দ্বারা শিক্ষাদান ও সেচ্ছাসেবকমূলক কার্যাবলী; প্রতিটি গ্রামে একটি করে লাইব্রেরি তৈরি করা; একটি জাতীয় পুস্তক প্রসার নীতি তৈরি করা এবং পুস্তক প্রাপ্তির সহজলভ্যতা, গুনমান নিশ্চিত করা ; অঞ্চল, ভাষা, স্তর ও প্রজন্মভেদে পুস্তক পাঠকের বিষয়ে ও ব্যবস্থাগ্রহন।
উদ্দেশ্য নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই, কিন্তু ভিত্তিমূলক শিক্ষা ও সংখ্যাতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। শহর ও গ্রামাঞ্চল নির্বিশেষে ছাত্রছাত্রীদের নমুনা যাচাই করলেই আসল সত্য উদ্ঘাটিত হতে বাধা। আর বিদেশি ধাঁচে ছাত্রদের দিয়ে পড়ানো বিশেষকরে গ্রামাঞ্চলে সম্ভব নয়।
বহু ভাষা ও ভাষা শক্তি - জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ বহু ভাষা প্রসারের ওপর গুরুত্ব প্রদান করেছে। এর লক্ষ্য যাতে আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা যাতে তাদের দেশের উচ্চমানের বিভিন্ন ভাষা সম্বন্ধে জানতে ও শিখতে পারে। কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ও বিশেষভাবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বা তার ওপর শ্রেনি পর্যন্ত মাতৃভাষার/ আঞ্চলিক ভাষার  মাধ্যমে শিক্ষাদান করা। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির মধ্যে প্রতিটি ছাত্রকে 'এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত' এর অধীন 'ভারতের ভাষা' এই প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। স্কুল ও উচ্চ শিক্ষার প্রতিটি স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভাষা হিসেবে তিন ভাষার মধ্যে সংস্কৃত একটি ভাষা হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ ছাত্রদের দিতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য ভারতীয় ধ্রুপদী ভাষা  ও সাহিত্য যেমন - তামিল, মালয়ালম, ওডিয়া, পালি ইত্যাদি ব্যাপকভাবে সহজে ছাত্রদের মধ্যে সহজলভ্য সুযোগ করে তুলতে হবে। বিদেশি ভাষা যেমন - ফরাসি, জার্মান, জাপানি, স্পেনীয়, রাশিয়ান প্রভৃতি ভাষা মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রদের পড়ার সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে। ভারতীয় স্বাক্ষর ভাষা অর্থাৎ Indian Sign Language (ISL) কে একটি উপযুক্ত মানে উন্নীত করা হবে, এবং জাতীয় ও রাজ্যস্তরে পাঠ্যপুস্তক তৈরি করতে হবে ছাত্রদের জন্য দরকার হলে শ্রবণ বৈকল্য ব্যবহার উপযোগী করতে হবা।
শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদানের কোনো বিকল্প নেই। মাতৃভাষা মাতৃস্তন্যের সঙ্গে তুলনীয়। শিশুর প্রথম খাদ্য যেমন মাতৃস্তন্য, তেমন শিশুর প্রথম ভাষা ও মাতৃভাষা। শিশু প্রথম কথা বলা শেখে মা এর ভাষায় অর্থাৎ মাতৃভাষায়। কিন্তু আমাদের দেশে সংস্কৃত বাদ দিয়ে ও আরও অনেক সমৃদ্ধ ভাষা আছে। সেই জন্য সংস্কৃতকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার কোন যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং এতে ভাষা দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হওয়ার সম্ভাবনা। মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক সহজলভ্য করা ও শ্রবন বৈকল্য এর ব্যবস্থার প্রস্তাব মহতী উদ্দেশ্য নিয়ে করা। সে বিষয়ে কোন প্রশ্ন উঠতে পারে না। কিন্তু এই সকল প্রস্তাবের বাস্তবায়ন সত্যিই দুরুহ। স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পর ও তা অধিকাংশক্ষেত্রে অধরা। তাই আশাবাদী হতে ও ভরসা হয় না।
 ( চলবে) পর্ব - ৪

পেজে লাইক দিন👇



Post a Comment

0 Comments