জ্বলদর্চি

রয়্যাল একাডেমির বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চাঁদের হাট, আবেগে ভাসল ছাত্রছাত্রীরা


রয়্যাল একাডেমির বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চাঁদের হাট, আবেগে ভাসল ছাত্রছাত্রীরা



প্রয়াত ড. রজনীকান্ত দোলই-র প্রতিষ্ঠিত মেদিনীপুর শহরের রয়্যাল একাডেমির বার্ষিক সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হল শহিদ প্রদ্যোত স্মৃতি সদন জেলা পরিষদ হলে। দুদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বনামধন্য বহু ব্যক্তি। নাচ গান নাটকে অংশ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা ভাসলো আনন্দ উচ্ছ্বাসে।
বৃহস্পতিবার তথা ২২ ডিসেম্বর ২০২২ সকাল ৯ টায় এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ  মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী অমর্ত্যানন্দ মহারাজ। মুখ্য অতিথি হিসেবে ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শ্রী শিবাজীপ্রতিম বসু। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন গড়বেতা কলেজের অধ্যক্ষ হরিপ্রসাদ সরকার, সবং এম এন এম মেমোরিয়াল হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল মোনালিসা সেন পাল, লেখক শিশির চক্রবর্তী, রয়্যাল একাডেমির অধ্যক্ষ সত্যব্রত দোলই প্রমুখ।
দ্বিতীয় দিন (২৩ ডিসেম্বর ২০২২) বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন দাবা গ্রান্ডমাস্টার ও অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত দাবাড়ু দিব্যেন্দু বড়ুয়া, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকার সম্পাদক নিশীথ কুমার দাস, রয়্যাল একাডেমির সম্পাদক ভক্তি দোলই, জ্বলদর্চি পত্রিকার সম্পাদক ঋত্বিক ত্রিপাঠী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, রয়েল একাডেমি ইংরেজি মাধ্যমের উচ্চমাধ্যমিক স্কুল, যার সুনাম জেলা ও জেলার বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। অধ্যক্ষ সত্যব্রত দোলই জানান, "আমাদের ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করে তাদের দক্ষতা প্রমাণ করছে নিয়মিত। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীলতায়ও পিছিয়ে নেই। ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেবার জন্য আমরা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সফল এমন ব্যক্তিদের আহ্বান জানাই।  এবার আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এসেছেন দাবাড়ু দিব্যেন্দু বড়ুয়া। আমরা গর্বিত।"
উল্লেখ্য, গ্রান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া ১৯৭৮ সালে ১২ বছর বয়সে ভারতীয় জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ দাবায় সর্বকনিষ্ঠ অংশগ্রহণকারী হিসাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালে বড়ুয়া তৎকালীন বিশ্বের দুই নম্বর গ্র্যান্ডমাস্টার প্রয়াত ভিক্টর করশনয়কে লন্ডনে পরাজিত করেন। ১৯৮৩ সালে তিনি প্রথমবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। বড়ুয়া ১৯৯১ সালে ফিদে দ্বারা গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাবে ভুষিত হন। ১৯৮৩ সালে অর্জুন পুরস্কার পান। তিনি তিনবার (১৯৮৩, ১৯৯৮, ২০০১) জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন ওপেন বিভাগে। দাবা অলিম্পিয়াডে দ্বিতীয় বোর্ডে গোল্ড মেডেল জয় করেন। কমনওয়েলথ দাবায় গোল্ড মেডেল পান। ১৯৮৬ সালে সোভিয়েত ল্যান্ড নেহেরু পুরস্কার পান। পাঁচবার বিশ্ব দাবা প্রতিযোগিতায় ও সাতবার দাবা অলিম্পিয়াডে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ক্রীড়া জগতে তাঁর বিশেষ অবদান সর্বজন-সমাদৃত।
এদিন প্র‍য়াত লতা মঙ্গেশকর, বাপ্পী লাহিড়ী প্রমুখ স্বনামধন্য ব্যক্তিদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ স্লাইডশো হয়। ক্লাশ পরীক্ষার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশন করে নাচ, গান, নাটক। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি ছিলেন অভিভাবকবৃন্দ। নিজেদের সৃজনশীলতা তুলে ধরতে পেরে ছাত্রছাত্রীরা বেশ আত্মবিশ্বাসী। তারা জানায়, "সারা বছর আমরা অপেক্ষা করে থাকি এই দিনগুলোর জন্য। আর দাবাড়ু দিব্যেন্দু বড়ুয়ার মতো বিখ্যাত মানুষদের সংস্পর্শে এসে, তাঁদের কথায় আমরা পেলাম অনুপ্রেরণা। আগামী জীবনের পথচলায় পেলাম সাহস।"

পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

1 Comments

  1. অনুষ্ঠানে জ্বলদর্চি সম্পাদককে মঞ্চাসীন দেখে গর্ব অনুভব করছি।

    ReplyDelete