জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /আশিস চৌধুরী

 গুচ্ছ কবিতা
আশিস চৌধুরী


গাধা জন্ম

আমি শুধু তোমাদের ইচ্ছাপূরণের জন্য আছি
আমার ইচ্ছাপূরণের দায় তোমাদের নেই
মাঝে মাঝে চিমটি কেটে দেখি
মানুষ আছি কি না এই অমানুষের ভিড়ে
এই বেঁচে থাকার মধ্যে আনন্দ নেই
দায় আর দায়িত্বের বোঝা টানতে টানতে
গাধার দিকে চোখ পড়ে
চিনির বলদ কলুর বলদের কথা মনে পড়ে
এটাও ঠিক এই গাধা জন্মে অনেকেই সন্তুষ্ট


ওষুধ না বিষ

অন্য ওষুধের সাথে
ডাক্তারবাবুর কথামত ঘুমের ওষুধ খেতে হয়
প্রতিরাত্রে ওষুধ খাওয়ার সময় মনে হয়
যেন চিরনিদ্রায় চলে যায়
তাহলে আর এত ওষুধ খেতে হয় না
বেশি ওষুধ খাওয়া শরীরের পক্ষে কী ভয়ংকর 
ভুক্তভোগী মাত্রই জানে
ডাক্তারবাবুকে জিগ্যেস করলে বলেন
যার এফেক্ট আছে তার সাইড এফেক্ট আছে
এ যেন সেই নিউটনের তৃতীয় সূত্র
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ওষুধ আবিষ্কার করতে
মেডিক্যাল সায়েন্স তাহলে এতদিন কী করলো
কি জানি ওষুধই প্রকৃত গরল কি না
যার জ্বালা সর্বাঙ্গে অনুভূত হয়

জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 
খুব মুশকিল

হাফ-ডাক্তার হাফ-ইন্টেলেকচুয়েলদের
নিয়ে খুব মুশকিল
হাফ-ডাক্তার সব রোগেরই ওষুধ জানে
মুখে মুখে বলতে পারে
আপনি কোনও শারিরীক অসুবিধার কথা বললেই
ডাক্তারবাবুর থেকেও বেশি কথা বলবে
আর হাফ-ইন্টেকচুয়েল 
সব বিষয়েই পারদর্শী
ইতিহাস ভূগোল বিজ্ঞান কবিতা নাটক গান
আরও কত কী যে জানে নিজেই জানে না
এদের সংখ্যাটা সমাজে ক্রম বর্ধমান
ভুলে যাবেন না আপনার বাড়িতেও
একজন হাফ-ডাক্তার হাফ-ইন্টেকেলচুয়াল আছে
যে কখনও বলে না আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না
 

প্রকৃতির মার

শরীর যখন সম্পূর্ণ স্ববশে থাকে না
তার যন্ত্রণা একমাত্র ভুক্তভোগী জানে
প্রকৃতি যখন নিজের হাতে মারে
তখন কার কাছে নালিশ জানাবে?
মারে হরি,রাখে কে
এরপরেও আছে
কাছের মানুষের গঞ্জনা বঞ্চনা লাঞ্ছনার সিরিয়াল
তখন মন অবচেতনে বলে উঠবে-
'এই খেয়া বাইবো কত আর...'


মুঠো ভর্তি বালি

মাঝে মাঝে মনে হয় মুক্তো কুড়িয়ে নেওয়ার জন্য
এই ধরাধামে সাময়িক এসেছি
কিন্তু কোথায় মুক্তো দু'মুঠোয় যা তুলি
শুধু বালি আর বালি
'হেলাফেলা সারাবেলা  একি খেলা আপন সনে।'
বুঝতে পারি না
ফিরে যাওয়ার পথও তো বন্ধ
সামনে পিছনে লালবাতি জ্বলছে
লালবাতি কখন সবুজ হবে
এই আশায় দাঁড়িয়ে আছি
আর মুঠো ভর্তি বালি নিয়ে খেলছি

Post a Comment

0 Comments