জ্বলদর্চি

কয়েকটি রম্য কবিতা-৮/ শুভশ্রী রায়

কয়েকটি রম্য কবিতা-৮/ শুভশ্রী রায়


দুষ্টু হাওয়া

হাওয়া তোমাকে বদলে দেবে না তুমি বদলাবে হাওয়াকে,
তালমিল করে হাওয়ার সঙ্গে ফের সাজাবে চাওয়া ও পাওয়াকে?
যুগের বাতাস গতি দেয় তোমাকে নাকি তুমি তাকে দাও ঠেলে সরিয়ে
বাতাস তোমার ফুসফুসে ঢুকে খুশ করে, তুমি ধরেছ কী তাকে জড়িয়ে!
হাওয়া তোমার ওড়না ওড়ায় সেও কী তোমার ওড়নার সাথে ওড়ে না,
তোমার পোষাকে চোরকাঁটাদের বাড়াবাড়ি দেখে সে কী ঈর্ষায় পোড়ে না?
বাতাসের মুখে তোমাকে জড়িয়ে কানে আসে কত মিষ্টিমধুর রটনা,
কান করে শুনে নিয়ে তুমিও কী চাও ঘটে যাক সে সব ঘটনা?
সুচতুর হাওয়া বিশেষ কারুর নাম বলে যায় কী তোমায় চুপিচুপি,
শুনেছি লুঠ করতে তোমাকে দুষ্টু হাওয়া কাছে আসে ধরে তার রূপই!


বিস্ময় কাব্য  

চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই ঘোর বিস্ময় অবিরত
পৃথিবীর লেখা কবিতায় নতুন নতুন পংক্তি, শব্দের আকর্ষক সারি
এ কবিতা অশেষ, ক্ষণে ক্ষণে বড় হয় জীবন ছোঁওয়া সৌন্দর্য টেনে, 
রূপেরসে অনন্ত কাব্যভান্ডার, আমরা কতটুকু পড়ে উঠতে পারি!
এখানে আমাদের দৃষ্টির একেবারে সামনে এমন সমৃদ্ধ কাব্য
অহোরহ নতুন সাজ প্রকৃতির, ক্ষণে ক্ষণে নতুন হয় মাটির ঘ্রাণ
সব মিলিয়ে অমলিন সহজ কবিতা আগ্রহ নিয়ে দেখলেই;
অনুভূতিযোগে অতুলনীয়, সমাপ্তিবিহীন, পড়ে মন্ত্রমুগ্ধ প্রাণ।

পেজে লাইক দিন👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 

গূঢ় বাস

নিরিবিলি ও জনারণ্যে একই রকম পরিচিতিহীন আমি
লিখে চলি ভেতরের কথা, বাহিরকেও কলমে সাধ্য মতো নিই টেনে
কখনো কবিতাকে আমি লিখি, কবিতা কখনো লেখে আমায়
উল্টে ও পাল্টে অনুভূতির চোরা স্রোতে আমাকে বারবার চেনে।

কবিতার সঙ্গে রোজ ঘরে বাইরে দেখা হয়, প্রতি বার ভিন্ন রূপ
নতুন করে পরিচয় হয় তার সঙ্গে বাজারে-হাটে, মঠে মন্দিরে
যখনি দেখি, অভিবাদন করে ধরতে যাই পূর্ণ অবয়বটিকে তার
সরে যায় রহস্য হেসে, টের পাই কবিতার গূঢ় বাস আমারই অন্দরে।



কথা কুঁড়ি

কত রকম কথা চারি দিকে!
কথায় থাকে চড়া, কোমল সব রকম সুরই
খানিকটা তার নিজের ভেতর পুরি
তার অনেকটা দেয় হাসির বুরবুরি।

কথা কত রকম ভারী, ফিকে!
আমি কথার সাথেই দিব্যি কাছে দূরে ঘুরি
কখনো বা কথার আঁচে পুড়ি
জীবনটাকে ভালো মতন খুঁড়ি।

নানা রকম কথা বলে ব্যাং ও পিকে
সব শুনে সযত্নে ফোটাতে চাই কথার কুঁড়ি
কুঁড়ি ফুটে ফুল হলে বড্ড সুখে উড়ি
সাবধান, সে ফুল হয়ে না যায় চুরি!

কথার দাম কোটি বা পাঁচ সিকে
কোনো কোনো কথা দেয় আদিম সুরসুরি
কথা ভেদে মেলে ফুল কিম্বা নুড়ি
বলার গুণে কথাই ঔষধ বা ছুরি।



আয়না ও আত্মা 

শিল্পের উদ্দেশ্য হল আত্মা থেকে প্রাত্যহিকতার ধুলো মুছে ফেলা।
                         পাবলো পিকাসো


আত্মা ঝকঝকে স্বচ্ছ হয়ে উঠতে চায়
বড় ইচ্ছা, হবে অনন্ত ব্রহ্মাণ্ডের আয়না
তার গায়ে লাগে নিত্যিকার ধুলোকণা,
মুছে নিলেই প্রতিফলিত শিল্প অমলিন;
স্পষ্ট হতে চাইছে দর্পণ, অমৃত-বায়না।


Post a Comment

2 Comments