জ্বলদর্চি

২০২৩ জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে। শুভেচ্ছা জানালেন স্বনামধন্য লেখক শিল্পী ক্রীড়াবিদ।

২০২৩ জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে।  শুভেচ্ছা জানালেন স্বনামধন্য লেখক শিল্পী ক্রীড়াবিদ।



শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (কথাসাহিত্যিক) 


ঋত্বিক ত্রিপাঠী মেদিনীপুরের ছেলে। আর দীর্ঘদিন ধরে সে জ্বলদর্চি কাগজটি বের করছে। আমি অনেক লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশককে দেখেছি, অনেক কবি আছেন, লেখক আছেন—যাঁরা নিজেরা ছোট কাগজ বের করেন। কিন্তু ঋত্বিক দীর্ঘদিন ধরে এই কাগজটি নিষ্ঠার সঙ্গে বের করে আসছে—কখনো তার বিরাম বা যতি নেই। শুধু তাই নয়, সে বিভিন্ন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে, বার বার তাগাদা করে লেখা আদায় করে। বিশেষ করে, আমার কাছে লেখা আদায় করা তো সহজ কথা নয়, কারণ আমি ভীষণ অলস। কিন্তু সে ধৈর্য ধরে, একটুও না রেগে গিয়ে, না অসন্তুষ্ট হয়ে, বারবার বারবার সে মানুষকে লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করে। তার এই কাগজটি আমি দেখেছি, সুন্দর কাগজ, খুব রুচিশীল আর ঋত্বিক নিজে একজন কবি — বেশ লব্ধপ্রতিষ্ঠ কবি। আর সব মিলিয়ে টিলিয়ে সে এমন একটা নিজের ভাবমূর্তি তৈরি করেছে, তাকে বোধহয়, আমার মনে হয় কেউ প্রত্যাখান করে না। সে যা চায় লোকে তাই দেয়। আমিও অনেক অসুবিধে সত্ত্বেও তাকে এবং তার পত্রিকাকে আমার অন্তরের অন্তরতম থেকে গভীর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।আর আমার ভালোবাসা জেনো ঋত্বিক। তুমি এবং তোমার যে বন্ধু কবিকুল আছে সবাই যেন খুব ভালো থাকে, খুব আনন্দে থাকে। 


সমরেশ মজুমদার (কথাসাহিত্যিক) 


দেখতে দেখতে জ্বলদর্চি পত্রিকার তিরিশ বছর বয়স হল। এখন সে পূর্ণ যুবক। পূর্ণ যৌবনে এখন তাকে আরও উদ্যোগী ভূমিকায় দেখতে চাই। সমরেশ মজুমদার।


পবিত্র সরকার (ভাষাবিদ)


আমি পবিত্র সরকার বলছি। আমি জ্বলদর্চির তিরিশ বছর হচ্ছে এই খবরটা শুনে খুবই খুশি হয়েছি। কারণ জ্বলদর্চির সঙ্গে আমার অনেকদিনের যোগাযোগ, অনেক লেখা আমি সেখানে লিখেছি একমাত্র ঋত্বিকের উদ্যোগে। জ্বলদর্চি মুদ্রণে যেমন আছে, তেমনই বৈদ্যুতিক বিশ্বেও ছড়িয়ে গেছে। ত্রিরিশ বছর বয়সে পৌঁছেছে জ্বলদর্চি, রীতিমতো সাবালক হয়েছে। আমি ঋত্বিককে এবং জ্বলদর্চিকে প্রগাঢ় শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা  সকলে ভালো থাকুন।


প্রতুল মুখোপাধ্যায় (সঙ্গীতশিল্পী) 


পশ্চিমবঙ্গে তথাকথিত শিক্ষিত বাঙালির মধ্যে বাংলা ভাষাকে উপেক্ষা করার উদাহরণ খুঁজতে গবেষণার প্র‍য়োজন নেই। পশ্চিমবঙ্গে এরকম শিক্ষিত পরিবারে সন্তানকে বাংলা ভাষায় সাক্ষর করবার বিষয়েও যত্ন নেয় না। তাঁরা মনে করেন, ইংরেজি তো চমৎকার বলতে পারে, লিখতে পারে, পড়তে তো পারেই। তাহলে  আর দরকার কী! বাংলা ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং বা উচ্চতর বিজ্ঞান --এসব নিয়ে পড়ার কথা পশ্চিমবঙ্গে এখনও ভাবা যায় না। কিন্তু বাংলা ভাষায় সাহিত্য কলাবিভাগের বিষয় তারমধ্যে সঙ্গীত নাটক ইত্যাদি তো আছেই। এছাড়া অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞান, অর্থনীতি,  ইতিহাস –এইসব বিষয়ে সৃজনধর্মী এবং গবেষণাধর্মী লেখার প্রসারে লিটল ম্যাগাজিনের অবদান সেটাও তর্কের অতীত। অসাধারণ অবদান রয়েছে তাদের। বিজ্ঞান বিষয়েও কয়েকটি লিটল ম্যাগাজিন আছে। জ্বলদর্চির মতো একটি সমৃদ্ধ লিটল ম্যাগাজিনের তিরিশ বছর পূর্তির শুভক্ষণে এসব কথা মনে হল। এই এত বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম এবং একটা অন্যরকমের দায়বদ্ধতা নিয়ে সম্পাদক ও কর্মীবৃন্দ এবং অবশ্যই লেখকেরা যে প্রয়াস করেছেন, সেজন্য তাদের অন্তর থেকে অভিনন্দন জানাই। আর সম্পাদকমশাই ঋত্বিক ত্রিপাঠী, ইনি আমার অনুজপ্রতিম মানুষ — তাকে কিন্তু আমি মনে মনে অভিনন্দন শুধু নয়, শ্রদ্ধা ও প্রণতি জানাই। কারণ এ কাজ আমি অন্তত নিজে করার কথা ভাবতেও পারি না।


অনিতা অগ্নিহোত্রী (কবি, কথাসাহিত্যিক) 


জ্বলদর্চি পত্রিকা ত্রিরিশ বছরে পা দিল। এই পত্রিকা খুব সুন্দর, প্রাণবন্ত। প্রিন্টেও বেরোয়, আবার অনলাইনেও প্রত্যেকদিন প্রত্যেকমাসে তারা নতুন নতুন লেখা নিয়ে আসে। জ্বলদর্চিতে আমি অনেকদিন ধরে লিখছি, লিখে খুব আনন্দ পেয়েছি। সম্পাদকমণ্ডলী নানারকম লেখা আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে। আমি জ্বলদর্চির দীর্ঘ জীবন কামনা করি। আর আমার তরফ থেকে, জ্বলদর্চির পক্ষ থেকে সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাই। নমস্কার।


হর্ষ দত্ত (কথাসাহিত্যিক)


ত্রিশ বছর পূর্ণ করা একটি লিটল ম্যাগাজিনের পক্ষে এক গৌরবময় অধ্যায়। জ্বলদর্চি পত্রিকা সেই কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছে। তথাকথিত  ইন্টেলেকচুয়াল লিটল ম্যাগাজিন বলতে যা আমরা বুঝি জ্বলদর্চি তা নয়, বরং সেখানে লোকায়ত জীবন এবং সাধারণ মানুষের জন্য যে লেখার আয়োজন আমরা দেখতে পাই, তা অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং এই পত্রিকা এতদিন ধরে পাঠকের কাছে প্রিয় এবং বৃহৎ অর্থে জনপ্রিয় হয়ে র‍য়েছে তার স্বভাব ও চরিত্রগুণে। এই পত্রিকার সম্পাদক যিনি, তিনি সমস্ত রকম বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও এই পত্রিকাকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। তিনি সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে জ্বলদর্চিকে আরও উন্নত, আরও ভাল আরও গৌরবময় করে তুলতে বদ্ধপরিকর। ত্রিরিশ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা এই পত্রিকার সম্পাদক এবং সমস্ত কর্মীদের।


দিব্যেন্দু বড়ুয়া (দাবাড়ু) 


এবছর ২০২৩-এ জ্বলদর্চি পত্রিকা ৩০- এ পা দিচ্ছে। এজন্য আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছি।এই পত্রিকার আরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটুক — সেই শুভ কামনা করি। সকলকেই ২০২৩ -এর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা সকলেই খুব ভালো থাকবেন এবং আনন্দে থাকবেন।


জয়ন্ত ঘোষাল(সাংবাদিক ও লেখক)


তিরিশটা বছর কম কথা নয়। তিনটে দশক। জ্বলদর্চি পত্রিকাটি তিরিশ বছর অতিক্রম করেছে — এটা তো চারটিখানি কথা নয়। ঋত্বিক ত্রিপাঠী, সত্যি, আমার তো মনে হয় এক কর্মযোগের ঋত্বিক— আমাদের ঋত্বিক ত্রিপাঠী। ঋত্বিককে কয়েকবছর ধরে জানি, খুব বেশিদিনের পরিচয় দাবি করি না। কিন্তু ঋত্বিকের পরিচয় তার প্রকাশে, তার প্রকাশনায়। এই তিরিশ বছরে একটা লিটল ম্যাগাজিনকে তিল তিল করে গড়ে তোলা বাঁচিয়ে রাখা এবং শুধু তাই নয়, একটা নতুন যুগ, আমিতো বলি প্রিন্ট মিডিয়া যদি প্রথম যুগ হয়, ইলেকট্রনিক মিডিয়া দ্বিতীয় যুগ, তবে এখনতো আমরা তৃতীয় যুগে এসে পড়েছি। যেখানে ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এই প্রযুক্তির মধ্যে এই ওয়েবসাইটের দুনিয়ায় জ্বলদর্চি তার প্রাসঙ্গিকতাকে সময়োপযোগী করে এগিয়ে যাচ্ছে—এও তো একটা আধুনিক মনস্কতা। আমি ঋত্বিককে অভিনন্দন জানাই উদযাপন সমারোহে। আমি সাহিত্যিক নই, আমি গদ্যকর্মী বলে নিজের পরিচয় দিতে ভালোবাসি—সাংবাদিক ছিলাম এবং সাংবাদিক আছি এবং বিচিত্রগামী উৎসাহ রয়েছে। সেই উৎসাহকে আশকারা দেয় ঋত্বিক। ঋত্বিকের সম্পর্কে সবাই যেটা বলে— ঋত্বিক কাজটা আদায় করিয়ে ছাড়ে। তার অনুরোধ, উপরোধ, ভালোবাসা, সেটা জ্বলদর্চির প্রতি তার‍ যে আবেগ, সেই আবেগ দিয়েই বোধহয় সে দুনিয়াটাকে জ্বলদর্চির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করাতে পারে। আমি আজ ঋত্বিকের এই প্রোডাক্ট, আধুনিক ভাষায় যাকে বলে প্রোডাক্ট, যেটাকে আমরা বলব সৃষ্টি, সেই নির্মাণ ও সৃষ্টির প্রতি ঋত্বিকের যে ভালোবাসা তা অটুট থাকুক। আরও বহু বহু বছর  ধরে পাঠকের কাছে জ্বলদর্চি পৌঁছুক। এবং পাঠকদেরও আমি শুভেচ্ছা জানাই নতুন বছরের। আশাকরি তারাও এইভাবে এই প্রতিষ্ঠানকে ভালবেসে, সমর্থন দিয়ে, সবরকম সহযোগিতা দিয়ে আরও এগিয়ে নিয়ে চলবে। কেননা পাঠকই কিন্তু চলার পাথেয়। নমস্কার।


শুভ দাশগুপ্ত (কবি, বাচিকশিল্পী)


নমস্কার,  আমি শুভ দাশগুপ্ত বলছি। জ্বলদর্চির সঙ্গে যুক্ত সকলকে আসন্ন নববর্ষের শুভকামনা জানাই। যারা লেখক, পাঠক, যারা বিভিন্নভাবে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সকলকে আমার ভালোবাসা জানাই, আমার প্রণাম জানাই, শ্রদ্ধা জানাই। ২০২৩ সাল আপনাদের সকলের খুব ভালো কাটুক, খুব সুন্দর কাটুক। সকলেই শিল্পের সঙ্গে থাকুন, ভাষার সঙ্গে থাকুন। আমাদের বাংলা ভাষা আরও বেশি করে আমাদের আনন্দিত করুক।

পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

1 Comments

  1. জ্বলদর্চি শুধু ইতিহাস লেখে না, ইতিহাস সৃষ্টিও করে। সম্পাদককে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

    ReplyDelete