জ্বলদর্চি

বেহালা আর্ট ফেস্ট /গৌতম বাড়ই

বেহালা আর্ট ফেস্ট 

গৌতম বাড়ই 

বেহালা ১৪ নাম্বার বাসস্ট্যান্ড, মহানগরের এই টুকরো অংশটি আক্ষরিক অর্থেই আজকে যেন মুক্তির আনন্দে ভাসছে। আজ শুরু হল শিল্পী সনাতন দিন্দার পরিচালনায় চতুর্থ বর্ষ " বেহালা আর্ট ফেস্ট ( Behala Art Fest ) " - এবারের ভাবনা -- Unbound ( শিল্প আর শিল্পীকে ভাবনায় ছড়িয়ে দাও ঘেরাটোপের বাইরে) । তাইতো মেলাচত্বরের কাঁটাতারে আমাদের শিয়রে প্রতিমুহূর্তে বিদ্ধ করে। নাগরিক জীবনে , যে শিল্পকে আভিজাত্যের তকমায় মুড়িয়ে ফেলা হয়, ঋত্বিকের মুখাবয়ব যেন শাসন করে এই মেকী নাগরিক জীবনকে। ১৪ নং- র অপরিসর দুই গলির বহুতলের দেয়ালে  রাস্তায় হয়েছে এই আর্টের প্রদর্শনী। যেটাও কিনা আমাদের একদম চেনা ছকের বাইরে। 
শিল্পী সনাতন দিন্দা এখানেই তার জাত চেনাচ্ছেন, তিনি যে ব্যাতিক্রম এক শিল্পের ভাবনায় নিজেকে বহন করে চলেন, তার প্রমাণ এই আর্ট ফেস্টিভাল। আমাদের চেনা গদ্য বা পদ্যের সাথে যেন খাপ খায় না তার এই রচনা। একদম ঋত্বিক ঘটকের নাগরিক বুকে ঝামা ঘষে দেওয়া এই প্রদর্শনী। প্রথমবার গেলাম , আর এক গভীর সুখানুভূতি নিয়ে ফিরলাম। এইটাই তো আত্মার আরাম, প্রাণের আনন্দ। 
অনেক বিশিষ্ট শিল্পী এখানে এসেছেন। শুনলাম বাংলাদেশের শিল্পী প্রমিতি হোসেন তাদের রিক্সার ঐতিহ্য তুলে ধরতে , আস্ত একটি রিক্সাচিত্র নিয়ে হাজির। বাউলের ভাবনা, বেণীর বন্ধন, লাট্টু আর লেত্তি এবং ঘূর্ণন, আর  ফটোগ্রাফ প্রদর্শনী, ঠিক মুগ্ধ করেছে বললে ভুল হবে, এক গভীরবোধে চেতনায় জড়িয়ে দিল। চমকে দিল আমায় বেহালা আর্ট ফেস্ট। 
অনুরোধ করব, মহানগরের এক ব্যাতিক্রমী চিত্র ভাবনার প্রর্দশনীতে সামিল হন। আর মাত্র দুইদিন । আগামীকাল ও রোববার ( ৪ ও ৫-ই ফেব্রুয়ারি) এই আর্ট ফেস্ট চলবে। একবার ঢুঁ মারতেই পারেন এই " বেহালা আর্ট ফেস্ট"- এ। মুগ্ধ করবে মায়ের লাল পাড় শাড়িতে সেই অনন্তে ধাবিত হওয়ায়। আমরা সমস্ত বন্ধন ছেড়ে ঐ মুক্তির সন্ধানেই বেড়িয়ে পড়ি। শিল্পী আর শিল্প তাই চিরটাকাল বন্ধন মানে না। নত হয় না, উন্নত তার শির আর শিরদাঁড়া। ঋত্বিক ঘটকের তীক্ষ্ণ চোখ তাই শাসন করে যায় কাঁটাতার ভেঙেচুরে বারবার। বাহবা জানাতেই হয় শিল্পী সনাতন দিন্দা ও তাঁর সহযোগী শিল্পীদের।

জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 

Post a Comment

2 Comments

  1. খুব ভাল

    ReplyDelete
  2. খুব সুন্দর লেখা✍️

    ReplyDelete