জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /হাবিবুর রহমান


গুচ্ছ কবিতা

হাবিবুর রহমান



হুতুম পাখি 

তুমি এক হুতুম পাখি
তোমার এক ডানায় কুয়াশা
তোমার অন্য ডানায় শিশির,
আমিও ডুবে থাকি তিমিরে।


ঘরে ফেরা

রৌদ্র ওঠে 
রৌদ্র উড়ে যায় সন্ধ্যার অভিমুখে,
ম্যাজেলানীয় মেঘেদের ওড়াওড়ি দেখি
বকপাখিদের মতো ঘরে ফেরার সময়।


নির্বিকার 

বৃষ্টি এলো নূপুর পায়ে
তোমার চোখে নদী,
ঘুম ভাঙা রাতে
কোথায় রাখবে এত জল?

আলোহীন মাস্তুলে 
নির্বিকার নাবিক আমি।


মকর ক্রান্তি 

লালা ঝরে বৈধতাহীন, 
মকর ক্রান্তি উৎসবে,
জলপাই বনে নেচে ওঠে হরিণী 
ঘুঙুর বাঁধা নর্তকীর মতো।

জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 
আবার সূর্য উঠবে 

দমকা বাতাসে 
নিভে যায় ফুৎকারে
উজ্জ্বল আলোর বাতি।
পাখিপ্রবণ সকালে
আবার সূর্য উঠবে। 


বিষণ্ণ সুর

চৈতালী এক দুপুরে
ধূ ধূ কাঠপোড়া দেশে
হলুদ পাতাটির নিচে বিষণ্ণ সুর,
শূন্য থেকে উড়ে আসে
আমার মাটির ঘরে।


ঘুম 

দরজার কড়া নাড়ে কে? 
চমকে উঠি ঘুম থেকে,
পাশ ফিরি,আবার ঘুমোতে যাই,
বোকারা যেভাবে ঘুমায়।


কুশীলব 

শূন্যতা ও হাহাকারে
অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়...,
বোধহীন পাখির মতো
ঠোঁট গুঁজে রাখি পোড়া মাঠে,
চারদিকে ঝলসানো বীজের ছড়াছড়ি,
 দাউ দাউ আগুনের জিভ পুড়িয়ে দেয়...,
আমরা নির্বাক চলচ্চিত্রের কুশীলব,
আমাদের চিৎকারের শব্দ কারো কানে পৌঁছায় না
শুধু নড়েচড়ে ওঠি পর্দার ভেতর।


কারুকাজ 

পাখিদের ঠোঁটের কারুকাজে 
বিমোহিত হ‌ই,
তুমি কি বিমোহিত হ‌ও না?
খড়কুটো দিয়ে গাছের ডালে ডালে 
ঝুলন্ত নীড় তৈরি করে ওরা।

দুলে দুলে ওঠে ঝড়-বাদলের রাতে,
দু'ফোঁটা বৃষ্টি ছিটকে আসে আমার‌ও ছাদে হাড়কাঁপানো শীতে,
অতলে ডুবে থাকে আলোর চোরাস্রোত,
বাতিস্তম্ভের নিচে তখনও ঘুপচি অন্ধকার, 
পাখিদের ঠোঁটের কারুকাজ বন্ধ হয়নি কখনো।


টান

মাধ্যাকর্ষণ টান!
নাকি হৃদয়ের টানে
মুখ গুঁজে আছি আমিও 
ছাইমাখা ধূসর অন্ধকারে?

বুকের এক অশ্রু-নদীতে 
ডিঙি নৌকো চালায় কে?

অচেনা এক রাজহংসী
সাঁতরাতে থাকে সারাবেলা,
বিস্তৃত ডানার ছায়ার ভেতর আমি
ছুঁয়ে দিই তোমাকে, 
শুধু ধূ ধূ প্রান্তে একা চলা।

রাতে আসো,স্বপ্নে হাসো,
চায়ের কাপে ধোঁয়া ওঠে,
আলতামিরা গুহায় 
কার পদচিহ্ন,কে আঁকে?
মায়াবী তৃষ্ণায় চুমুক দিয়ে
তুলে আনি শেষ স্মৃতিচিহ্ন-টুকু।



Post a Comment

1 Comments

  1. ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই পত্রিকা সম্পাদক মহাশয় কে।

    ReplyDelete